26 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
১৯১৩ সালে উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন ‘সন্দেশ’ তাঁর মৃত্যুর পর সুকুমার রায় ও সুবিনয় রায়ের প্রয়াসে প্রায় ১৯৩১ পর্যন্ত চলার পর সন্দেশের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। একে..
TK. 1600
In Stock (only 2 copies left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
বইটি বিদেশি সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে সংগ্রহ করতে ৩০-৪০ দিন সময় লাগবে।
Product Specification & Summary
১৯১৩ সালে উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন ‘সন্দেশ’ তাঁর মৃত্যুর পর সুকুমার রায় ও সুবিনয় রায়ের প্রয়াসে প্রায় ১৯৩১ পর্যন্ত চলার পর সন্দেশের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। একেবারে নতুন করে সত্যজিৎ রায় যখন ‘সন্দেশ’-এর প্রকাশনা শুরু করলেন সময়টা ছিল ১৯৬১। কমিক্স তার পছন্দের তালিকায় ছিলই ১৯৬২ সালে সন্দেশে প্রকাশিত হল ‘ঋণশােধ’একেবারে নতুন আঙ্গিকে বাংলা কমিক্স, শিল্পী প্রসাদ রায়। প্রকৃত নাম শক্তিপ্রসাদ রায়চৌধুরী...পরে আর একটা ছদ্মনাম নিয়েছিলেন ‘ময়ূখ চৌধুরী। বস্তুত সেই নামে বাংলা কমিকসের আধুনিকতা আর সাবালকত্ব এনে দিলেন ওই অজ্ঞাত শিল্পী। সন্দেশে আরও কয়েকটি কমিক্স উপহার দিয়ে আর একটি প্রকাশনা সংস্থার পূজাবার্ষিকীতে বর্ণময় যে-চিত্ৰকাহিনিটি তিনি উপস্থাপনা করলেন সেটি হল ‘শয়তানের দ্বীপ’। অতঃপর ওই সংস্থার মাসিক পত্রিকায় ‘খাপে ঢাকা তলােয়ার’ ধারাবাহিক বাংলা কমিকসের সূত্রপাত ঘটাল যা একাধারে মৌলিক কাহিনি নির্ভর অন্যদিকে রােমাঞ্চের পটভূমিকায় আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে সেই কাহিনির অসামান্য চিত্ররূপ। কমিকসের ছবি যে নিছক ছবি নয় তার একটা নড়াচড়া আছে আর ফিল্মের ক্যামেরার ফ্রেমের মতাে তারও যে একটা ফ্রেম আছে তা আমরা বুঝতে পারলাম। কমিক্সের বিষয়বস্তু নির্বাচন করতে গিয়ে ময়ুখ বেছে নিলেন অ্যাডভেঞ্চার, বন্যপ্রাণী জগৎ, ইতিহাসকে। ময়ুখের কমিকসের বৈশিষ্ট্য কী? যা তাকে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র করে রেখেছিল ও সেই বৈশিষ্ট্যগুলির মাধ্যমে ময়ুখের কমিক্সগুলি হয়ে উঠেছিল পাশ্চাত্য কমিকসগুলির প্রায় সমকক্ষ।
প্রথমেই আসবে কাহিনির পশ্চাৎপটের সঙ্গে বিশ্বাসযােগ্যভাবে তার চরিত্রাঙ্কন, কাহিনির গতি, চরিত্রদের শানিত সংলাপ ও বাস্তবমুখিতা। আরণ্যক পরিবেশ ও বন্যপশুদের প্রতি ময়ূখের পক্ষপাতিত্ব ছিল তাই কমিসের পাতাতেও তার প্রাধান্য। প্রতিটি প্রাণীর শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও চলাফেরার ছন্দকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরতে শিল্পীর জুড়ি মেলা ভার। এইসব ছবিকে নিখুঁত করতে শিল্পীকে যে কতটা ব্যাবহারিক জ্ঞান অর্জন করতে হয়েছে তা আমরা বুঝতে পারি। কমিকসের মনুষ্য চরিত্রগুলিকে নির্বাচন করতে গিয়ে ময়ূখ কল্পনা ও সত্যের মিশ্রণে এমন অবয়ব গঠন করেছেন যা সাধারণ হয়েও অসাধারণ। সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে তার কমিকসের ক্রমােন্নয়ন ঘটেছে। এসেছে রং-এর ব্যবহার। তবে কমিক্সকে বর্ণময় করে তােলার ক্ষেত্রে ময়ূখ কখনাে চড়া রং ব্যবহার করেননি। কমিক্সের বেলায় একটি কথা নির্দ্বিধায় বলা চলে, ভালাে গল্প না হলে কমিক্স জমে না, সেক্ষেত্রে ময়ূখ একজন নির্ভরযােগ্য গল্পকার তার পরিচয় তাে আমরা ময়ুখের লেখা নানা গল্প ও রচনার মাধ্যমে পেয়ে গেছি। অধিকন্তু ময়ুখের অসাধারণ গতিময়, সুনিয়ন্ত্রিত ভাষা পাঠককে ভালােলাগার রাসায়নিক জুগিয়েছে। বিজ্ঞাননির্ভর পশ্চাৎপট তিনি সেভাবে কাজে লাগাননি দু-একটি ছাড়া। পাশ্চাত্য কমিসে বিজ্ঞানভিত্তিক কাহিনির বড় একটা প্রভাব থাকলেও ময়ূখ নিজের কমিসে সচেতনভাবে বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনি খুব একটা ব্যবহার করেননি। ময়ূখের লেখা পড়ে জনপ্রিয় রহস্য অ্যাডভেঞ্চার লেখক হেমেন্দ্রকুমার রায়ের নাম স্মরণে আসে। ছােটোবেলায় যাঁরা হেমেন রায়ের লেখার ভক্ত ছিলেন অনিবার্যভাবে ময়ুখের লেখা তাঁদের অতীতের ভালােলাগার জগতে নিয়ে যাবে।