16 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বঞ্চনা
অর্পিত সম্পত্তির সাথে বসবাস
শত্রু সম্পত্তি আইন বিধিবদ্ধকরণ ও বাস্তবায়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি আইন নামে এর ধারাবাহিকতা বজায়ের ..
TK. 250TK. 224 You Save TK. 26 (11%)
Product Specification & Summary
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বঞ্চনা
অর্পিত সম্পত্তির সাথে বসবাস
শত্রু সম্পত্তি আইন বিধিবদ্ধকরণ ও বাস্তবায়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি আইন নামে এর ধারাবাহিকতা বজায়ের মূলে রয়েছে গভীর এক ঐতিহাসিক চক্রান্ত দর্শন- যার ভিত্তি ধর্ম ভিত্তিক পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। পাকিস্তানীকরণের উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রথম থেকেই তাদের উদ্দেশ্য ছিল সংখ্যা গরিষ্ঠ বাংঙ্গালীদের বাঙালী সংস্কৃতিকে সমূলে উৎখাত করা। শত্রু/অর্পিত সম্পত্তি আইনের কার্যকরীতার অভিঘাতগুলো খুবই স্পষ্ট। এটি বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতা ও মুক্তি চেতনার প্রতি সম্পূর্ণ অস্বীকৃতী জ্ঞাপন এবং সুপরিকল্পিতভাবে তাদের সামাজিক-সাস্কৃতিক, অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক বঞ্চনার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ। সংশ্লিষ্ঠ জাতীয় বিপর্যয়টি এমনি যে, গত চার দশকে (১৯৬৫-২০০৬ সময়কালে) ২৭ হিন্দু খানার মধ্যে ১২ লক্ষ খানা বা হিন্দু ধর্মের ৬০ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং ব্যাপকভাবে শত্রু/অর্পিত সম্পত্তি আইনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন; হারিয়েছেন ২৬ লক্ষ একর ভূ-সম্পত্তি। ভূ-সম্পত্তি পাশাপাশি হারিয়েছেন অন্যান্য স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। অর্পিত সম্পত্তি আইনে মোট আর্থিক ক্ষতির মূল্যমান (৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৭৫ ভাগের সমপরিমান (২০০৭ সনের মূলের ভিত্তিতে)। এছাড়াও মানব পূজি গঠনের ক্ষেত্রে জাতীয় ক্ষতি হয়েছে অপরিমেয়। যার মধ্যে আছে হিন্দু সংখ্যালঘুদের জোর পূর্বক গণহারে দেশত্যাগে বাধ্য করা, পারিবারিক বন্ধন ভেঙ্গে দেওয়া, অন্যায় নিষ্পেশন ও পারস্পরিক অবিশ্বাস, মর্মবেদনা, মানবিক সম্ভাবনাগুলোর ক্ষয়, সাম্প্রদায়িক সমপ্রীতি ব্যাহত হওয়া, স্বাধীনতাহীনতা, সাংস্কৃতিক বিচ্ছিন্নতা, সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে ইন্ধন যোগানো এবং ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান ইত্যাদির মাঝে সুস্পষ্ট। এসবই হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষমতাহীনতা, অসায়ত্ব, শারিরিক ও মানসিক দুর্বলতা, দারিদ্র ও বিচ্ছিন্নতা বঞ্চনার এক চিরস্থায়ী চক্র সৃষ্টি করেছে। সমগ্র এ বিষয়টি হিন্দু সাম্প্রদায়িক দুঃখ-দুর্দশা, বঞ্চনা সৃষ্টি ও পুন-সৃষ্টিসহ সাম্প্রদায়িক মানস-কাঠামোকে ঐতিহাসিক ভাবে একটি অসাম্প্রদায়িক পরিপ্রেক্ষিতে প্রাতিষ্ঠাণিকীকরণে সহায়ক হয়েছে।
এ আইন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনার মূল চেতনা এবং সাংবিধানিক “সমতা, ন্যায্যতা, স্বাধীনতা এবং সমস্ত নাগরিকের জন্য ন্যায়-বিচার” ইত্যাদি চেতনার পরিপন্থি। এ আইন সাম্প্রদায়িক, অমানবিক এবং অগণতান্ত্রিক। বাংলাদেশে মানব উন্নয়নের জন্য একটি সত্যিকারের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শত্রু/অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিলসহ এ আইনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রকৃত মালিক এবং/অথবা উত্তরাধিকারীদের কাছে সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই। শত্রু /অর্পিত সম্পত্তি আইনে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সংখ্যালঘুদের বঞ্চনার সমস্যা সমাধানে উষ্ণ-হৃদয় অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন সাহসী নেতৃত্ব এবং সেই সাথে সমগ্র প্রক্রিয়ায় জনগণের বলিষ্ঠ অংশগ্রহণ প্রয়োজন। ভবিষ্যত বাংলাদেশে সত্যিকারের মানব উন্নয়নের উপায় এবং লক্ষ্য হিসাবে স্বাধীনতা, মুক্তি ও চয়নের অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া একান্ত জরুরী।