15 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
"মোমের জাদুঘর" বইটির 'পূর্বকথা' থেকে নেয়াঃ
১৯৮০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর।
সকাল বেলা।
চুলার উপর টাউস পেতলের গামলাটা বসানাে। অল্প আঁচে ফুটছে ভেতরের তরল। মনে..
TK. 187TK. 140 You Save TK. 47 (25%)
Product Specification & Summary
"মোমের জাদুঘর" বইটির 'পূর্বকথা' থেকে নেয়াঃ
১৯৮০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর।
সকাল বেলা।
চুলার উপর টাউস পেতলের গামলাটা বসানাে। অল্প আঁচে ফুটছে ভেতরের তরল। মনে হতে পারে সকালের নাশতার জন্য পরিজ তৈরি করছে কেউ। সে রকমই দেখতে। আসলে না।
জিনিসটা মোেম। তরল মােম। জ্বাল দেয়া হচ্ছে। পাশে দাঁড়িয়ে আছেন মহিলাটা। বেশ স্থূল শরীর। মােটা। মেদ জমেছে প্রচুর। চোখে গােল রিমের চশমা। হাতের মাটির তৈরি ছাঁচ। একটা মুখের আকৃতির, ওটার ভেতরে তরল মােম দিলেই মুখােশ তৈরি হয়ে যাবে। মােমের মুখােশ।
অনেক সময় নিয়ে মাটির ছাঁচটা পরীক্ষা করলেন মােটা মহিলা। বেশ সন্তুষ্ট মনে হলাে তাকে। হ্যাঁ তাইতাে! জিনিসটা বেশ সুন্দর।
হাসি হাসি মুখে সামনের দিকে তাকালেন। জানালার পাশে সাদা ডাইনিং টেবিল। খটখটে কয়েকটা চেয়ার আছে। টেবিলের উপর সকাল বেলার নাশতা।
লা, পাউরুটি, মাখন, জগভর্তি দুধ। একটা বাউল ভর্তি ভুট্টার চিড়ে আর দই। ছােট একটা ছেলে বসে ধীরে ধীরে নাশতা করছে। ছােট্ট হাতের মুঠোভর্তি করে তুলে নিচ্ছে চিড়ে আর দই মাখানাে ফলার।
শান্ত।
খটাস করে দরজাটা খুলে গেল।
প্রবেশ করলেন মধ্যবয়স্ক এক ভদ্রলােক। কোলে আরেকটা বাচ্চা ছেলে। হউমাউ করে কাঁদছে বাচ্চাটা। চিৎকার করছে। নখ দিয়ে আঁচড়ে-খামচে দিতে ইছে নিজের বাপকে।
এই দ্যাখ।' বিরক্তমাখা গলায় বললেন ভদ্রলােক।
আবারও, আবারও তােমার ছেলে এমন করছে। দিন দিন একটা আস্ত পিশাচ হয় যাচ্ছে শুয়ােরের বাচ্চাটা। ইস্। জন্মের সময় কেন যে মেরে ফেললাম না।
মােটা মহিলা মাটির ছাঁচটা টেবিলের উপরে রেখে দ্রুত সামনে চলে এলেন।
টান দিয়ে একটা চেয়ার বের করে আনলেন। অদ্ভুত রকমের চেয়ার। হাতলের সাথে অনেকগুলাে চামড়ার বেল্ট সেট করা।
ভদ্রলােক বাচ্চাটাকে চেয়ারে বসানাের চেষ্টা করতে লাগলেন। বাচ্চাটা বসতেই চাচ্ছে না। বিকট শব্দ করে কাঁদছে। হাত-পা ছুড়ছে। ছােট হলেও শরীরে শক্তি বেশ অস্বাভাবিক।
লাথি লেগে প্রথমেই টেবিলের উপর থেকে মাটির ছাঁচটা মেঝেতে পড়ে ভেঙে চৌচির হয়ে গেল। তারপর দুধের জগটাও পড়ে গেল।
ইতােমধ্যে মহিলাটা অদ্ভুত দক্ষতার সাথে চেয়ারের সাথে ফিট করা চামড়ার বেল্ট দিয়ে বাচ্চাটার হাত পা বেঁধে ফেললেন।
বাচ্চাটার দুটো হাতের কজি আর পায়ের গােড়ালিতে দগদগে ঘা। বােঝা যায় তিনবেলা হাত পা বেঁধে খাওয়াতে হয়। অন্য সময়ও বােধহয় বেঁধে রাখতে হয়!
বেশ করসত করতে হলাে মহিলাকে। ততক্ষণে টেবিলের অবস্থা লণ্ডভণ্ড। দুধের জগ ভেঙে মেঝেতে সাদা দুধের বন্যা।
অন্য বাচ্চাটা দূরে বসে চুপচাপ খেয়েই যাচ্ছে। কোন বিকার নেই। মা-বাবা আর ভাইয়ের নাটক দেখার মুড নেই তার। প্রতিদিনই দেখে। নতুন কিছু নয়।
হাত-পা বাঁধার পরও দ্বিতীয় ছেলেটা চেঁচিয়ে যাচ্ছে।
মহিলা একটা বাউল ভর্তি চিড়ে, দই আর কলা মাখাতে মাখাতে স্বস্নেহে চিকার রত ছেলের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন।
খাওয়াবেন।
ছেলেটা ঝুঁকে পড়ে মায়ের হাতে বিরাট এক কামড় বসিয়ে দিলাে। এতটুকু বাচ্চার চোয়ালে এত জোর কে বলবে? মুহূর্তের মধ্যে কামড়ের জায়গাতে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হয়ে এলাে।
ব্যথায় গুঙিয়ে উঠলেন মহিলা।