27 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
"হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাযালী (রহ.) জীবন-দর্শন ও উপদেশ" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম আবু হামেদ মুহাম্মাদ গাযালী (রহ) হিজরী পঞ্চম শতাব্দির প্রখ..
TK. 200TK. 120 You Save TK. 80 (40%)
Product Specification & Summary
"হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাযালী (রহ.) জীবন-দর্শন ও উপদেশ" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম আবু হামেদ মুহাম্মাদ গাযালী (রহ) হিজরী পঞ্চম শতাব্দির প্রখ্যাত আলেম, আরেফ, দার্শনিক ও মুজাদ্দিদ ছিলেন। তিনি তাফসীর, হাদীস, ইসলামী আইন, নীতিবিদ্যা, যুক্তি বিদ্যা, কালামশাস্ত্র ও ইহসানশাস্ত্রে শতাধিক মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার এসব অনন্য গ্রন্থাবলী এতােটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করে যে, তাঁর জীবদ্দশাতেই তাঁর শিক্ষা ও চিন্তাদর্শন ইসলামী দুনিয়ার সর্বত্র এমনকি সুদূর ইউরােপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং সুদীর্ঘকাল পর্যন্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিন্তাদর্শন ও অনুশীলনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকে।
ইমাম গাযালী (রহ) তাঁর যুগে ধর্মদ্রোহী তার্কিক ও গ্রীক দার্শনিকদের ভ্রান্ত মতবাদসমূহের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে মুসলমানদের ঈমান আক্কীদা, চরিত্র ও আমলকে পরিশুদ্ধ, পরিচ্ছন্ন ও পরিস্ফুটিত করেন। সত্য কথা এইযে, ইসলামী দর্শনশাস্ত্রে তার মত বলিষ্ঠ ও হৃদয় স্পর্শী কলমসৈনিক দ্বিতীয় আর একজনের জন্ম হয়নি। এক্ষেত্রে তার তুলনা তিনি নিজেই।
ইমাম গাযালী (রহ)-এর দর্শন পবিত্র কুরআন ও বিশুদ্ধ সুন্নাহ নির্ভর। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, অন্তরে আল্লাহর ভয় ও পরকালীন জীবন সম্পর্কে সুদৃঢ় বিশ্বাস পয়দা না হলে মানুষের জীবন ও পশুর জীবনে কোন পার্থক্য থাকে না। তিনি আরও বিশ্বাস করতেন যে, প্রকৃত মনুষত্যের জাগরণ শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক শিক্ষা বা গতানুগতিক ধর্মাচরণ দ্বারা সম্ভব নয়। তার কারণ, মানুষের শত্রু তার নিজের অভ্যন্তরেই অবস্থান করে। নরূপী সে শত্রুই শয়তানের বাহন। কাজেই এই শত্রুর মুখে তাক্ওয়ার লাগাম লাগাতে না পারলে তাকে বসে আনা যায়না। তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতির মাধ্যমে তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই প্রকৃত মনুষত্যের স্তরে উপনীত হওয়া যায়। সে কারণেই তিনি জীবন ছায়াহ্নে এসে শরীয়তনিয়ন্ত্রিত সূফী সাধনায় লিপ্ত হন। বস্তুত হযরত ইমাম গাযালী (রহ)-এর পথ ধরে শত শত বছর যাবত বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ চেষ্টা-সাধনা ও অনুশীলনের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার খাঁটি বান্দায় পরিণত হওয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে।
গত ৫ই জানুয়ারী, ২০১১ জাতীয় প্রেসক্লাব কনফারেন্স লাউঞ্জে এই মহা মনিষীর জীবন ও কর্মের ওপর মুসলিম বিশ্বে ইসলামী দার্শনিক ইমাম গাযালী (রহ)-এর দর্শন এবং আজকের প্রেক্ষিতে তাঁর অবদান শীর্ষক এক জ্ঞানগর্ভ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ইমাম বুখারী (রহ) একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মওলানা মুহাম্মদ খলীলুর রহমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মাননীয় সভাপতি জনাব মজিবর রহমান এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী প্রখ্যাত আলেম মাওলানা নুরুল ইসলাম ও ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বাংলাদেশস্থ মাননীয় রাষ্ট্রদূত জনাব হাসান ফারজান্দে। আলােচনায় অংশ নেন হাইকোর্ট মাজার শাহী মসজিদের খতীব মাওলানা আবু তালেব মােহাম্মদ আলাউদ্দীন। এই মহতী সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সুযােগ এই নগণ্য বান্দার হয়েছিল। বক্ষমান গ্রন্থটি সেই প্রবন্ধের সুবিন্যাস্ত সংস্করণ। এতে হযরত ইমাম গাযালী (রহ)-এর সংক্ষিপ্ত জীবন, তাঁর চিন্তাদর্শন, তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ এহইয়াউল উলুমের বৈশিষ্ট্য, মিনহাজুল আবেদীনের মূল বক্তব্য, যুগসংস্কারে তাঁর অবদান এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষণীয় বিষয়সমূহের সংক্ষিপ্ত আলােকপাত করা হয়েছে। একই সাথে ইমাম গাযালী (রহ) কর্তৃক লিখিত তার জনৈক শিষ্যকে লেখা একটি উপদেশমূলক পত্রও সংযােজন করা হয়েছে।