2 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
শুভ সন্ধ্যা, হে সুন্দর গভীরতা : সুইডিশ কবি টোমাস ট্রান্সট্র্যোমারের নির্বাচিত কবিতা
১৯৯০ সালের প্রথমার্ধে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে কূটনৈতিক পদে ..
TK. 450TK. 403 You Save TK. 47 (11%)
Product Specification & Summary
শুভ সন্ধ্যা, হে সুন্দর গভীরতা : সুইডিশ কবি টোমাস ট্রান্সট্র্যোমারের নির্বাচিত কবিতা
১৯৯০ সালের প্রথমার্ধে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে কূটনৈতিক পদে দায়িত্ব পালন কালে তিনি টোমাস ট্রান্সট্র্যোমার ও তাঁর কবিতার সঙ্গে পরিচিত হন। নিসর্গ ও নির্জনতার পূজারী অথচ ইতিহাস সচেতন এই কবির কাব্যমানস ও প্রকাশভঙ্গীর সঙ্গে তিনি তাঁর প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশের সূক্ষ্ম সাদৃশ্য লক্ষ্য করেন এবং তাঁর কবিতা বাংলায় অনুবাদ সহ তাঁর কাজ সম্পর্কে গবেষণাধর্মী মূল্যায়নের উদ্যোগ নেন। এ কাজে কবি স্বয়ং ও তাঁর স্ত্রী মনিকা, স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য বিভাগ ও সুইডিশ ইনষ্টিটিউট এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি ক্ষেত্রে কয়েকজন বিশিষ্ট সুইডিশ ব্যক্তিবর্গ সহায়ক ভূমিকা পালন করেন।
“শুভ সন্ধ্যা হে সুন্দর গভীরতা” ১৯৯৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মনোজ্ঞ প্রকাশনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে কবি ও কবি-পত্নী সহ সুইডেনের শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বের সমাগম হয়। সুইডেনের বৈদেশিক উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী পিয়ের শোরী প্রধান অথিতি ও প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ওলফ পালমের পতœী লিজবেথ পালমে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। সাহিত্যের জন্য নোবেল কমিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান ও স্বয়ং একজন প্রখ্যাত কবি প্রফেসর শেল এস্পমার্ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে যথেষ্ট উৎসাহ দেখা যায়। ১৯৯৭ সালে ঢাকায় বাংলা একাডেমীর বই মেলায় “পাঠক সমাবেশ” -এর মাধ্যমে কিছুসংখ্যক বই বিপণন করা হলে টোমাস ট্রান্সট্র্যোমার বাংলাদেশের কবিতা- প্রেমিকদের কাছে সর্বপ্রথম পরিচিত হন এবং পত্র-পত্রিকায় বইটি সম্পর্কে ইতিবাচক আলোচনার সূত্রপাত হয়। উভয় দেশের সমালোচকদের মতে ট্রান্সট্যোমারের মূল ভাবধারা ও কাব্যকৌশল অক্ষুন্ন রেখে তাঁর কবিতার সার্থক বাংলা রূপান্তর করতে আজীজ রহমান বহুলাংশে সফল হয়েছেন। ট্রান্সট্র্যোমার তাঁর শুভেচ্ছা বানীতে বলেছেন, বিশ্বস্ত অনুবাদকের মাধ্যমে কবিতা দেশ, ভাষা, ভৌগলিক সীমারেখা অতিক্রম করতে পারে। “শুভ সন্ধ্যা”য় এই বিশ্বস্ততার উপলব্ধি পাওয়া যায়।
লেখক পরিচিতি টোমাস ট্রান্সট্র্যোমার
জম্ম: স্টকহোম ১৯৩১। সুইডেনের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট কবি হিসাবে বিশ্বব্যাপি সুপরিচিত। তাঁর খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার মূলে রয়েছে ১৯৫৪ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত প্রকাশিত ১১টি কবিতার বই ও একটি আত্মকথা। ইতিমধ্যে তাঁর কবিতা প্রায় ৫০টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। অনুবাদকদের মধ্যে রয়েছেন ইউরোপ ও আমেরিকার কয়েকজন বিখ্যাত কবি। সুইডেনের আর কোনো কবির কবিতা এতো বেশী পরিচিত ও সমাদৃত হয়নি তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্মানজনক পুরস্কার পেয়েছেন। সা¤প্রতিক কালে, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতি বছরই তিনি মনোনীত হয়ে আসছেন। পেশাগতভাবে তিনি একজন মনস্তত্ববিদ। ১৯৯০ থেকে তিনি স্ট্রোকজনিত কারণে আংশিক পক্ষাঘাত গ্রন্থ ও বাকশক্তিব্যাহত, কিন্তু তবু শরীরের ডান অংশ সচল বলে কিছু লেখা ও পিয়ানোবাদনে সক্ষম। ১৯৯৬ সালে প্রাকশিত তাঁর সর্বশেষ বই “বিষন্ন গন্ডোরা” প্রকাশিত হলে সুইডেনের কবিতাঙ্গনে আবার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
আজীজ রহমান (আজীজুল রহমান) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন)-এর সদস্য হিসাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।
আজীজ রহমান
ট্রান্সট্র্যোমার মূলত নিসর্গের কবি, নির্জনতার কবি; কিন্তু একজন ইতিহাস সচেতন কবি। রূপসী বাংলার কবি জীবনানান্দ দাশের সংগে তাঁর ভক্ত পাঠক একটি সূক্ষè সাদৃশ্য খুঁজে পাবেন। উত্তর ইউরোপের কবি ট্রান্সট্যোমারের মধ্যে-চিন্তাধারা, দৃষ্টিভঙ্গী, প্রকাশভংগী ও কাব্যকৌশলের দিক থেকে। সমসাময়িক ইউরোপে বাস করেও তাঁর কাব্যে ঈশ্বর ও পাশ্চত্য ধ্রুপদী সংগীতের প্রভাব বিস্ময়কর। ট্রান্সট্র্যোমারের কবিতা সম্পর্কে সমালোচকদের অভিযোগ, তাঁর কবিতায় নাকি নির্জনতা অতি বেশী প্রকট, তবে তাঁরা স্বীকার করেন “চিত্রকল্প-সর্বস্ব নির্জন মানুষের নির্জনতা- সমৃদ্ধ চিত্রকল্প” এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। ট্রান্সট্র্যোমার চলমান সুইডিশ সমাজের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসেছেন একটা “পলায়নী মনোবৃত্তি” নিয়ে। তিনি গতানুগতিক সুইডিশ তথা আধুনিক মানসের দ্বিধা ও দ্বন্দ্ব অবশ্যই উপলব্ধি করেছেন, দেখেছেন মানুষের মনমানসকে দু’দিক থেকে দু’টি দেয়াল চেপে ধরেছে। দেয়াল ভাঙ্গার আকুতি তাই তরঙ্গায়িত হয়েছে তাঁর কবিতায়। এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তিনি ছুটে গেছেন অরণ্যের কাছে, সজারুর কাছে, শালিকের কাছে, কথা বলেছেন গাছের সাথে, খেলেছেন পাথর নিয়ে-এমন পাথর যা কিনা বলে দিতে পারে পৃথিবীর পরিচয়। ট্রান্সট্র্যোমার লেখেন কম, কিন্তু বলেন “লাইনের ভিতরে পড়ো, আমাদের দেখা হবে দুই শ’ বছর পরে”।
(টোমাস ট্রান্সট্র্যোমারের কবিতা আধুনিক সুইডিশ সাহিত্যে এক অনবদ্য স্থান দখল করে আছে)।