26 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
ভূমিকা
মেসবাহ কামাল
ভূমিকা ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিবেচনায় যে ভূখণ্ডটি ‘বঙ্গদেশ’ বা ‘বাংলা' হিসেবে চিহ্নিত, ১৯৪৭ সালে ঔপনিবেশিক শাসকদের হাতে সাম্প্রদায়িক ভিত্ত..
TK. 9350TK. 8041 You Save TK. 1309 (14%)
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
ভূমিকা
মেসবাহ কামাল
ভূমিকা ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিবেচনায় যে ভূখণ্ডটি ‘বঙ্গদেশ’ বা ‘বাংলা' হিসেবে চিহ্নিত, ১৯৪৭ সালে ঔপনিবেশিক শাসকদের হাতে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে তার বিভাজন “সম্পূর্ণ পৃথক রাজনৈতিক বিকাশের সূচনা করেছে এবং নির্মাণ করেছে দুটি ভাগে বিভাজিত এক নতুন আঞ্চলিক পরিচিতি। দু’বাংলাকে ‘একাঙ্গবদ্ধ যমজ' (Siamese twins) রূপে দেখা যেতে পারে, যাদের পৃথক করা হয়েছে এবং যারা নিজের পৃথক পরিচিতিকে প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে এই পৃথকতু বা স্বাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ১৯৪৭ উত্তরকালের বিষয়। জনসমাজের গঠন এবং ১৯৪৭ পূর্ববর্তী সময়কালের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও অর্থনীতি পর্যালোচনায় গোটা বঙ্গদেশকে একটি একক সত্তা হিসেবে দেখার কোনো বিকল্প নেই।
আর এখন ‘বঙ্গদেশকে (বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে) সাধারণভাবে দেখা হয় সম-সংস্কৃতির এলাকা হিসেবে, যেখানে কেবল বাংলা ভাষারই প্রচলন এবং বসবাস করেন কেবল বাঙালিরা। কিন্তু এ চিত্রায়ন মাঠ পর্যায়ের যে বাস্তবতা তার প্রতিফলন নয়। বাঙালির বাইরেও দু’বাংলাতেই এমন বেশ কিছু জাতির মানুষ বাস করেন, যারা নিজেদের 'বাঙালি' বলে মনে করেন না এবং অন্যদের কাছেও ‘বাঙালি' হিসেবে বিবেচিত হন না। যদিও এসব মানুষের অধিকাংশই দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলায় কথা বলেন, তাদের বেশির ভাগেরই নিজেদের ভিন্ন মাতৃভাষা রয়েছে। তাদের সংস্কৃতিও পৃথক এবং ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার আলোকে তারা নিজেদের পৃথক পরিচয় দেন।
এ গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় বাঙালি ভিন্ন সেসব জাতিসমূহ, বিশেষত তারা যারা নিজেদের পরিচয় দেন, অথবা একসময়ে পরিচিত ছিলেন, আদিবাসী হিসেবে।
আদিবাসীর সংজ্ঞা
‘আদিবাসী' শব্দটি এসেছে সংস্কৃত থেকে। ‘আদি’ অর্থ মূল’ এবং বাসী’ অর্থ অধিবাসী। সুতরাং আদিবাসী কথাটির অর্থ ধরা যায় দেশীয় লোক’ (Indigenous People) হিসেবেও। ইদানিংকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষত ভারতে আদিবাসীর একটি প্রতিশব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে, যাকে জনপ্রিয় করার জন্য প্রচেষ্টাও চলছে, সেটি হলো “বনবাসী” (forest dwellers)। এদের অনেকের বসবাস বনকেন্দ্রিক। তবে বাংলাদেশের সমতলের জন্য ব্যাপারটা এখন ভিন্ন। উত্তরবঙ্গের আদিবাসীরা মূলত বরেন্দ্র ভূমির বাসিন্দা এবং বনবাসী নন, ‘লোকালয়ের অধিবাসী। তবে অন্যান্য স্থানের আদিবাসীদের মতো তারাও নিজস্ব বা আদি-অধিবাসীর মতানুসারে জীবনযাপন করছেন। কিন্তু তাদের স্বাতন্ত্র, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আলাদা জীবনযাত্রাকে অস্বীকার করার একটি প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় বিভিন্ন বিশ্লেষণে।
আদিবাসী বলতে বোঝায় এমন একটি জনগোষ্ঠী যারা মোটামুটিভাবে একটি অঞ্চলে সংগঠিত, যাদের মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক ঐক্য এবং যার সদস্যরা মনে করেন যে তারা একই সাংস্কৃতিক এককের অন্তর্ভুক্ত।