5 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
সৃষ্টি জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবজাতি, অতি সম্মানী মানবজাতি। তবুও সে দুর্বল, কারণ সে সৃষ্ট। তার চেয়ে সবল, তার চেয়ে সম্মানী মহান ¯্রষ্টা আল্লাহ তাআলা। জ্ঞান-গরিমা, বুদ্ধি-বিবেচনা, শক্তি..
TK. 80TK. 73 You Save TK. 7 (9%)
Product Specification & Summary
সৃষ্টি জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবজাতি, অতি সম্মানী মানবজাতি। তবুও সে দুর্বল, কারণ সে সৃষ্ট। তার চেয়ে সবল, তার চেয়ে সম্মানী মহান ¯্রষ্টা আল্লাহ তাআলা। জ্ঞান-গরিমা, বুদ্ধি-বিবেচনা, শক্তি-সামর্থ, ইজ্জত-সম্মান সবদিক থেকে তিনি মানুষের উপরে। এটা চিরন্তন সত্য যে, সবল দুর্বল ছাড়া চলতে পারে, কিন্তু দুর্বল সবল ছাড়া চলতে পারে না। তাই মানবজাতি আল্লাহ তাআলার সাথে সম্পর্ক স্থাপন বিহীন চলতে পারে না। পারলেও পূর্ণাঙ্গ সফলতা অর্জন করতে পারবে না। তার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের মধ্যেই মঙ্গল নিহিত। তার সান্নিধ্য অর্জনই মানুষকে সীমাহীন উন্নতি ও উৎকর্ষের পথে চলতে সাহায্য করে। তার সন্তুষ্টি অর্জনের পরই মানুষ কেবল শতভাগ তৃপ্ত, শান্ত ও আশ্বস্ত হতে পারে। তাকে বাদ দিয়ে যার সাথেই মানুষ সম্পর্ক স্থাপন করবে তার দ্বারা মানুষের মান-সম্মান বিনষ্ট হবে। নিচু হবে, লাঞ্ছিত হবে। একপর্যায়ে সে পশুর চেয়েও অধম হয়ে যাবে।
তাই আল্লাহ তাআলার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের কোনো বিকল্প নেই। সেই মহামন্বিত, মধুর সম্পর্ক স্থাপনে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নামাজ। শত ব্যস্ততা, হাজারো সংশ্লিষ্টতা, সকল প্রকার সম্বন্ধের বন্ধন ছিন্ন করে মহান রবের সান্নিধ্য লাভের এক অনুপম সুযোগ করে দেয় এই নামাজ। নামাজ ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ। অন্যতম ইবাদত। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়। মুসলিম ও কাফেরের মধ্যে পার্থক্যকারী। বিচার দিবসের প্রথম জিজ্ঞাসার বিষয়। নামাজ জান্নাতের চাবি। চক্ষুর শীতলতা ও হৃদয়ের শান্তি। নামাজ জাহান্নাম হারামকারী। কিয়ামতের দিনের নুর। ইমানের দলিল, মুক্তির উসিলা। আল্লাহর জিম্মায় চলে যাওয়ার সুযোগ। নামাজ বান্দার জন্য আল্লাহ পাকের দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহার, বড় নেয়ামত।
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই নামাজ পড়া হচ্ছে, কিন্তু মুসলমানদের জীবনে নামাজ ফলপ্রসু হচ্ছে না। তার জন্য মোটামোটি নি¤েœাক্ত কারণগুলো বিশেষভাবে দায়ী।
১. নামাজের সুরা-কেরাত ও দোয়া-দুরুদ সঠিকভাবে উচ্চারণ না হওয়া।
২. নামাজের অত্যাবশ্যকীয় মাসআলা-মাসায়িল সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা।
৩. নামাজের সময়ের প্রতি অবহেলোা ও নামাজে খুশু খুযু না থাকা।
৪. নামাজের শিক্ষাকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন না করা।
উল্লিখিত কারণসমূহ থেকে দুই নাম্বার অর্থাৎ নামাজের অত্যাবশ্যকীয় মাসআলা-মাসায়িল সম্পর্কে এই পুস্তিকা। যার মূল লেখক হলেন আমার উস্তাযে মুহতারাম, উম্মুল মাদারিস দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান মুফতি, আল্লামা হাবিবুর রহমান খায়রাবাদী দা. বা.। ঈসায়ি সন ২০০৫, অধম তখন মাদরে ইলমি দারুল উলুম দেওবন্দে অধ্যয়নরত। সর্বপ্রথম যখন এই পুস্তিকা নযরে পড়ে সাথে সাথে তা ক্রয় করে পড়তে শুরু করলাম। মনে হলো যেন হারানো মানিকের সন্ধান পেয়েছি। দীর্ঘদিন যাবত আমি একেই খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম। কারণ আমি তো ভুক্তভোগি। ছাত্রাবস্থায় কিছুদিন ইমামতি করে যারপরনাই পেরেশানি ভোগ করেছি। নামাজের মধ্যে ছোট বড় ভুল হয়। তখন মাসআলা জানা না থাকলে কত পেরেশানির সম্মুখীন হতে হয় তার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। দেওবন্দে থাকা অবস্থায় সংকল্প করেছিলাম দেশে ফিরেই বইটির বঙ্গানুবাদ করব। কিন্তু দেশে এসে হরেক রকমের ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে অনেকগুলো বছর অতিক্রম হয়ে গেল। মনের সেই ইচ্ছাটা পূর্ণতায় পৌঁছাতে পারিনি। কিন্তু মন এমন এক জিনিস, তার মধ্যে যা একবার গেঁথে যায় তা বারবার উঁকি দিয়ে আহ্বান করে।
দ্বিতীয়ত : প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে বর্তমান সময়ে আমার যে অভিজ্ঞতা তা হলো, সাধারণ মুসল্লি, বহু উলামা, তুলাবা ও মসজিদের ইমামগণের শরিয়তের অন্যান্য মাসায়িল সম্পর্কে মোটামোটি জানা থাকলেও নামাজের সাহু সেজদার মাসায়িল সম্পর্কে জানা-শুনা তুলনামূলক অনেকটাই কম। যার ফলে দেখা যায়, প্রায় সময়ই নামাজের মধ্যে ছোট বড় ভুল হওয়ার পর মুসল্লি ও ইমামগণ নামাজের ভেতরেই পেরেশান হয়ে যান যে, উক্ত ভুলের কারণে সাহু সেজদা ওয়াজিব হয়েছে কি-না। যদি ওয়াজিব না হয়ে থাকে, আর সাহু সেজদা দেয়া হয় তাহলে নামাজ শুদ্ধ হবে কি-না। তারপর উলামা ও তুলাবাদের নিকট সমাধান জিজ্ঞাসার পর তারাও মাসআলা জানা না থাকলে পেরেশানির সম্মুখীন হন। উক্ত পেরেশানী দূর করা ও নামাজকে বিশুদ্ধভাবে আদায় করার জন্য আমার মনের মধ্যে আবারো আগ্রহ সৃষ্টি হলো হযরতের সেই ছোট রিসালাটির যদি বঙ্গানুবাদ করি, তাহলে আমার বিশ্বাস উম্মতের অনেক অনেক বেশি উপকার হবে। কারণ গ্রন্থটি ছোট হলেও শ্রদ্ধেয় উস্তাদ খায়রাবাদী সাহেব অনেক মেহনত করে, নামাজের তাকবিরে তাহরিমা থেকে নিয়ে সালাম পর্যন্ত প্রত্যেকটা বিষয়ের বাস্তব ও সম্ভাব্য ভুলের দিকগুলো একত্রিত করেছেন এবং উক্ত ভুলসমূহের সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এমনকি তারাবির নামাজ, বিতিরের দোয়া কুনুতের ভুল ও তার সমাধান নিয়েও আলোচনা করেছেন। সাথে সাথে বিশ্বাস ও ভরসার জন্য প্রত্যেকটি মাসআলার পেছনে গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য ফাতাওয়ার কিতাবের উদৃতি দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা হযরতকে জাযায়ে খায়ের দান করুন। তাই সাহসের সঙ্গেই বলতে পারি পুস্তিকা আপনার হাতে থাকা মানে, নামাজ সংক্রান্ত একজন বিজ্ঞ মুফতি আপনার হাতের নাগালে থাকা। সুতরাং পাঠকের নিকট আরজ হলো, হাতে পাওয়া মাত্রই অমূল্য সম্পদ মনে করে এই পুস্তিকা সংগ্রহ করুন এবং অন্যকে সংগ্রহ করতে উদ্বুদ্ধ করুন।
পরিশেষে সম্মানিত পাঠকের নিকট বিনীত নিবেদন, যদি কোথাও অনাকাক্সিক্ষত কোনো ত্রুটি বা অসংগতি দৃষ্টিগোচর হলে অনুগ্রহপূর্বক অবহিত করবেন। আপনার পরামর্শ সাদরে গ্রহণ করতঃ পরবর্তী সংস্করণে শুধরে নেব ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তাআলার নিকট মিনতি, তিনি যেন এই অধমের শ্রমকে কবুলিয়্যাত দান করেন এবং পরকালে নাজাতের উসিলা বানিয়ে দেন। আমিন।