27 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
এ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস ও আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা আর্নেস্ট হেমিংওয়ের বিশ^খ্যাত উপন্যাস ‘এ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস’। আমেরিকান যুবক ফ্রেডরিক হেনরি প..
TK. 500TK. 437 You Save TK. 63 (13%)
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
এ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস ও আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা আর্নেস্ট হেমিংওয়ের বিশ^খ্যাত উপন্যাস ‘এ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস’। আমেরিকান যুবক ফ্রেডরিক হেনরি প্রথম বিশ^যুদ্ধে ইতালিতে রেডক্রসের অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে যোগ দেন। যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যে ফ্রেডরিক হেনরি’র সাথে ইংরেজ নার্স ক্যাথরিন বার্কলে’র পরিচয়। ক্যাথরিনের বাগদত্ত যুদ্ধে আহত হয়ে অবশেষে ফ্রান্সে নিহত হন। ক্যাথরিন বার্কলে তখন মিলান হাসপাতালে কর্মরত। তার সাথে হেনরির পরিচয় থেকে প্রেম। দুজনার গভীর ভালোবাসা উপন্যাসের আবেদনে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। দুজনের বিয়ে-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রবল বাসনা থাকা সত্ত্বেও তা হয়ে ওঠেনি। তবে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করে। ফ্রেডরিক হেনরি’র কিছু সহযাত্রীকে গুলি করে হত্যা করা হলে এবং মিলিটারি পুলিশ হেনরিকে জার্মান গুপ্তচর সন্দেহ করতে পারে ভেবে অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সে পালিয়ে আসে। পরে হেনরি স্ট্রেসায় এসে গর্ভবতী ক্যাথরিনকে নিয়ে নৌকায় অনেক ঝড়-ঝাপ্টা, উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে সুইজারল্যান্ড আসতে সক্ষম হয়। সেখানে তাদের গ্রেপ্তার করা হলেও বৈধ কাগজপত্র থাকায় ছেড়ে দেয়া হয়।
শেষ পর্যায়ে হেনরি ও ক্যাথরিন মনত্রোতে বসবাস শুরু করে। ক্যাথরিনের প্রসবব্যথা শুরু হলে তাকে লুজানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর অসুস্থ ক্যাথরিনের দেহে অস্ত্রোপচারের করা হয় এবং সে এক মৃত পুত্রসন্তান প্রসব করে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ক্যাথরিনের বেঁচে থাকার আকুতি আর হেনরি’র ভালোবাসার মানুষটিকে হারানোর করুণ মর্মযন্ত্রণা উপন্যাসে এক বেদনাবিধুর অধ্যায়ের সৃষ্টি করে। অবশেষে অবিরাম রক্তক্ষরণের ফলে ক্যাথরিন মারা যায়। বৃষ্টিমুখর রাতে শুরু হয় হেনরি’র নিরুদ্দেশ যাত্রা। উপন্যাসের নায়ক চরিত্র ফেডরিক হেনরি যেন লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের প্রতিচ্ছবি। আর্নেস্ট হেমিংওয়ে নিজেই যুদ্ধে যোগ দিয়ে আহত হয়েছিলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে নিজের চোখে দেখা বিভিন্ন জায়গার ভৌগোলিক বর্ণনা, প্রকৃতিগত গুরুত্ব, সামাজিক বোধ তাঁর লেখায় জীবন্ত হয়ে ধরা দেয়।
যুদ্ধের বিভীষিকার মাঝে নর-নারীর চিরন্তন প্রেমের অপরূপ গাথার সুরে অস্ত্রকে বিদায় জানানর আকুতিই আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ‘এ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস’। যুদ্ধ না হলে হেনরি ও ক্যাথরিনের ভালোবাসা জন্ম নিত না-এখানেই লেখক দুঃখের মাঝে এর সৌন্দর্যকে খুঁজে পেয়েছেন। হেমিংওয়ের অনেক লেখার মতোই ১৯২৯ সালে প্রকাশিত ‘এ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস’ মানবজীবনের দুঃখ-দুর্দশা, হতাশা ও মোহমুক্তির এক বাস্তব দলিল। যুদ্ধ-বিগ্রহ ও প্রেমের অপূর্ব নিদর্শন হয়ে সর্বকালের সেরা উপন্যাসের অন্যতম বলে বিবেচিত। এখানে যেমন রয়েছে ভালোবাসার প্রগাঢ় অনুভূতি তেমনি রয়েছে দুঃখবোধের অসহনীয় যন্ত্রণা।
আর্নেস্ট হেমিংওয়ের সাহিত্যকর্মের পরিধি ব্যাপক। তাঁর প্রকাশিত রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘থ্রি স্টোরিস অ্যান্ড টেন পোয়েম্স’ (১৯২৩), ‘দি টরেন্টস্ অব স্প্রিং’ ও ‘দি সান অলসো রাইজেস’ (১৯২৬), ‘মেন উইদাউট ওমেন (১৯২৭)’, ‘ডেথ ইন দি আফ্টারনুন’ ও ‘উইনার টেক নাথিং’ (১৯৩২), ‘দি গ্রিন হিল্স অব আফ্রিকা’ (১৯৩৫)। স্পেনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তার লেখা উপন্যাস ‘ফর হুম দি বেল টোল্স’ প্রকাশিত হয় ১৯৪০ সালে। ১৯৫২ সালে প্রকাশিত হয় তার কালজয়ী উপন্যাস ‘দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দি সি’। মানুষ ও প্রকৃতির অপূর্ব বন্ধন নিয়ে লেখা এ নীতিগর্ভ রূপক-কাহিনি তাকে ১৯৫৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ের সম্মান এনে দেয়।
আমেরিকার ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের ওক পার্কে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৮৯৯ সালের ২১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন আর্নেস্ট মিলার হেমিংওয়ে। তার পিতা ছিলেন চিকিৎসক ও অপেশাদার খেলোয়াড়। ছেলেবেলায় হেমিংওয়ে বনে-জঙ্গলে ঘুরে ও মাছ ধরে সময় কাটাতেন। ওক পার্ক হাইস্কুলে পড়াশোনাকালীন সময়ে তিনি লিখতে শুরু করেন। ১৯১৭ সালে স্কুলের লেখাপড়া শেষ করে তাঁর সাংবাদিকতা শুরু। পরের বছর ইতালিয়ান সেনাবাহিনীতে অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯১৯ সালে আমেরিকা ফিরে এসে আবার সাংবাদিকতায় নিয়োজিত হন। ১৯২১ সালে তিনি হার্ডলি রিচার্ডসনকে বিয়ে করে আমেরিকা ছেড়ে ইউরোপ চলে যান এবং সাংবাদিকতা শুরু করেন।
১৯২৭ সালে হার্ডলি’র সাথে তার বিয়েবিচ্ছেদ ঘটে। তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে ভেঙে গেলে তিনি সাংবাদিক মার্তা গেলহমকে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে তিনি পলিন ফেফারে’র সাথে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯২৮ সালে হেমিংওয়ে ইউরোপ ছেড়ে ফ্লোরিডায় বসবাস শুরু করেন। স্পেনের প্রতি আকর্ষণের কারণে তিনি সেখানে গিয়ে স্পেনের গৃহযুদ্ধের সময় যুদ্ধবিরোধী সংবাদদাতার দায়িত্ব নেন। এরই মধ্যে তাঁর বেশ কটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধে তিনি আমেরিকার আটলান্টিক সৈকতে সাবমেরিনের পশ্চাদ্ধাবকের দায়িত্ব নেন এবং ১৯৪২ সালে পুনরায় যুদ্ধ-সংবাদদাতার কাজ শুরু করেন।
১৯৫৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তির পর তিনি অনেকটা নিরিবিলি জীবনযাপনে আগ্রহী হয়ে স্ত্রীর সাথে মাছশিকার করে সময় কাটাতেন। ১৯৫০-এর শেষদিকে হেমিংওয়ে বেশ কয়েকবার অসুস্থাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। বন্দুকের গুলির ক্ষতস্থানে সংক্রমণজনিত কারণে দীর্ঘ রোগভোগের পর ১৯৬১ সালের ২ জুলাই হেমিংওয়ের মৃত্যু ঘটে। মরণোত্তরকালে ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত প্যারিসের স্মৃতি নিয়ে তার লেখা ‘এ মুভাবেল ফিস্ট’ বিক্রির শীর্ষে চলে আসে।
-
মুসাহিদ উদ্দিন আহমদ
ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১৮