2 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
ছোট্ট একটি গ্রাম নাওঘাট। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই গ্রামেরই তরুণ ছেলে ফরিদ- মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ ফরিদ। গাঁয়ের ডেপুটি বাড়ির তেজী সন্তান- আলোচ্য গ্রন্থের গ্রন্থকার। ‘ফেলে আসা ৭১ ও মুক্ত..
TK. 150TK. 129 You Save TK. 21 (14%)
Get eBook Version
US $1.99
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
ছোট্ট একটি গ্রাম নাওঘাট। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই গ্রামেরই তরুণ ছেলে ফরিদ- মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ ফরিদ। গাঁয়ের ডেপুটি বাড়ির তেজী সন্তান- আলোচ্য গ্রন্থের গ্রন্থকার। ‘ফেলে আসা ৭১ ও মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো’ তারই স্মৃতিদরদি কলমের আবেগপুষ্ট লেখনি আর বইয়ের শিরোনামই বলে দেয় বইয়ের সারবত্তা।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে লেখক যৌবনের দ্বারপ্রান্তে। যৌবনের গান ও কবিতায় উদ্দীপ্ত লেখকও মনে করেন ‘এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।’ সেই তাড়না থেকেই লেখক যুদ্ধে যেতে ব্যাকুল হন। ‘ফেলে আসা ৭১ ও মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো’- গ্রন্থ জুড়ে যুদ্ধে যাবার সেই আকুলি-বিকুলিতে অস্থির। স্মৃতি তর্পনে লেখক প্রকাশ করেছেন- যুদ্ধে যাওয়ার অর্থটা কী?
যুদ্ধ কি শুধু অস্ত্র হাতেই করতে হয়? আর প্রশিক্ষণের জন্য যেতে হবে সীমান্ত পেরিয়ে কোনো শিবিরে?- হ্যাঁ, চৌকষ ও সশস্ত্র যোদ্ধা হলে তেমনটিও চাই।
গ্রন্থের শুরুতে তাইতো লেখককে প্রশিক্ষণ নিতে সীমানা পেরিয়ে যেতে উদগ্রীব দেখি কিন্তু পরিবার-পরিজন আর মাতৃবন্ধন তাকে ছাড়ে না। তারপর সারাটা বই জুড়ে নয়টি মাস ‘হায় আফসোস’ আর ‘অতৃপ্ততা’ নিয়ে এক অন্যরকম মুক্তিযুদ্ধ অংশ নিয়ে অবশেষে রেসকোর্স ময়দানে হাজির হন। তিনি দেখেছেন নিয়াজীকে মাথা নিচু করে পরাজয়ের মুচলেকা দিতে। আলোচ্য গ্রন্থের নাটকীয়তা এখানেই।
আলোচ্য গ্রন্থটি একধরনের স্মৃতিকথন, যুদ্ধদিনের ঘটনাপঞ্জী এবং ঐতিহাসিক কাহিনিও বটে। লেখক একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি তার আলোচ্য স্মৃতিগ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নিজ এলাকার দৃশ্যপট বর্ণনা করেছেন। তার বর্ণনার আওতাধীন এলাকা- কুমিলা শহর, চট্টগ্রাম শহর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্রাম ও শহর, ঢাকা শহর এবং সীমান্ত ঘেঁষভ আগরতলা-ত্রিপুরা।
লেখকের বর্ণনা মতে, ৭ মার্চের সময় তিনি কুমিলায় ছিলেন। যুদ্ধের শুরুতে চলে যান চট্টগ্রাম। বীর চট্টলা থেকে স্বাধীনতার অগ্নীস্ফুলিঙ্গের উত্তাপ নিয়ে তিনি চলে আসেন নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এখান থেকেই আগরতলা যাবার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু পারিবারিক বন্ধন এবং আপন এলাকার মুক্তিতে অতন্ত্র হবার তাগিদে তার আর সীমান্ত পার হওয়া হলো না। মনের মধ্যে থেকে গেল মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র ট্রেনিং-এর জন্য সহযোদ্ধাদের সঙ্গে আগরতলা যেতে না পারার অতৃপ্ত বাসনা। পাতায় পাতায়, ছত্রে, ছত্রে লেখকের সেই আহাজারীতেই পরিব্যাপ্ত। তবু লেখক যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধের জন্য ফেরার হয়েছেন। দেশের এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে ফেরার হয়ে যুদ্ধের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। খুব সাহসিকতার সাথে সহযোদ্ধাদের গোয়েন্দা তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে ধন্য হয়েছেন। এভাবে তিনি দীর্ঘ নয় মাস কুমিলা থেকে চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা এবং শেষে স্বাধীন পতাকা নিয়ে তিনি নিজ গ্রাম নাওঘাটে ফিরে আসেন।
‘ফেলে আসা ৭১ ও মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো’ বইটিতে পাঠক নাওঘাট গ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী ভবানীপুর ও খারঘর গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল মুক্তিযোদ্ধার তালিকাও পাবেন। গ্রন্থ রচনা ও উপস্থাপনায় লেখকের অভিনবত্ব আছে। তিনি গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন কাব্যভাষায়।
সব মিলিয়ে বইটি মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাসের একটি মূল্যবান দলিলও বটে। স্বনামধন্য, সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা সাহিত্যদেশের একটি সুচিন্তিত প্রকাশ এই বইটি। ঝকঝকে ছাপার ৯৬ পৃষ্ঠার এই বইটির দাম ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা মাত্র। তথ্য বহুল মুক্তিযুদ্ধকালীন আলোক চিত্র নির্ভর প্রচ্ছদ এঁকেছেন জমিস উদ্দিন।