8 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
“ওল্ডম্যান অ্যান্ড দি সী" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
হেমিংওয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রিক লেখক। কল্পনাভিত্তিক রচনায় তার আগ্রহ নেই। অথবা, বাস্তববাদী লেখকরা যেমন ঐতিহাসিক কিংবা সমাজতা..
TK. 150TK. 111 You Save TK. 39 (26%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Related Products
Product Specification & Summary
“ওল্ডম্যান অ্যান্ড দি সী" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
হেমিংওয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রিক লেখক। কল্পনাভিত্তিক রচনায় তার আগ্রহ নেই। অথবা, বাস্তববাদী লেখকরা যেমন ঐতিহাসিক কিংবা সমাজতাত্ত্বিক দলিলের সাহায্যে কাহিনী রচনা করেন হেমিংওয়ের সে পদ্ধতি নয়। জীবনের যে দিকটার সঙ্গে তাঁর মুখােমুখি পরিচয় হয়েছে। তাই তাঁর রচনার বিষয়বস্তু। হেমিংওয়ের রচনা তাঁর জীবনের সুস্পষ্ট প্রতিফলন। শুধু অন্তৰ্জীবনের প্রতিফলন নয়; সে তাে সকল সাহিত্যিকের পক্ষেই সত্য। আর কত বিচিত্র সেই অভিজ্ঞতা! নানা দেশ, নানা ঘটনা, নতুন নতুন পরিস্থিতি, জীবনের বিভিন্ন স্তর থেকে উঠে আশা অসংখ্য চরিত্র! প্যারিসের নির্বাসিত জীবন, যুদ্ধ, ষাঁড়ের লড়াই শিকার প্রভৃতির অভিজ্ঞতা নয়; হেমিংওয়ে যে-সব জায়গায় কিছুকালের জন্য বাস করেছেন তারা তার কাহিনীর পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আমেরিকা ছাড়া প্যারিস, ইটালি, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, আফ্রিকা, কিউবা প্রভৃতি যে-সব অঞ্চলে তিনি বাস করেছেন। তাদের কোনাে-না-কোনাে গল্প উপন্যাসের পটভূমিতে পাওয়া যাবে। বিদেশের এই অপরিচিত পরিবেশ আমেরিকান পাঠকের নিকট আকর্ষনের বস্তু।
হেমিংওয়ে প্রধানত তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করে গল্প-উপন্যাস রচনা করেছেন। তাই দার্শনিক তত্ত্ব প্রচারের সুযােগ নেই তার। কিন্তু জীবন সম্বন্ধে তার ধারণা কী সে বিষয়ে পাঠক একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবেন রচনাগুলি মন নিয়ে পাঠ করলে। তাঁর রচনায় কামােন্মাদনা এবং মানুষের চরিত্রহীনতার অনেক দৃশ্য আছে। কিন্তু মনের যে কোনাে প্রবৃত্তিকে স্বাভাবিক নামাঙ্কিত করে। তিনি সমর্থন করেন না। বিকৃত কামনা স্বাভাবিক নয়। দেহের সহজ কামনা সমর্থন করতে তিনি সর্বদাই প্রস্তুত।
এ কথা অবশ্য স্বীকার করতে হবে যে হেমিংওয়ের রচনার কোনাে সুস্পষ্ট জীবন-দর্শন নেই। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জীবনের তিনি কাহিনীকার। ইন্দ্রিয়ানুভূতির অতীত যে জীবন তার সমস্যা তাঁর মন আলােড়িত করেনি, সে সমস্যা সমাধানের জন্য পথ নির্দেশ করবার দায়িত্বও তাঁর নয়। পূর্বেই বলেছি, হেমিংওয়ের নায়িকারা পুরুষের হাতে ক্রীড়নক মাত্র। আর তার পুরুষ চরিত্রগুলিও শিখার করে, মাছ ধরে, ষাঁড়ের লড়াই দেখে, আড্ডা দেয় এবং শখ বা পােশাকী আদর্শের তাড়নায় যুদ্ধ করে। তাদের জীবনযাত্রার বাধ্যবাধকতার কঠোরতা নেই। একমাত্র ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দি সী'-র নায়ক এর ব্যতিক্রম। সে শখ করে নয়, প্রয়ােজনের তাগিদে মাছ ধরতে বেরিয়েছে। মাছের সঙ্গে লড়াই করতে বৃদ্ধ জেলে যে সুদৃঢ় আশাবাদ ও অসীম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে তার মধ্যে মানব-চরিত্রের মহাকাব্যোচিত গুণের পরিচয় পাওয়া যায়।
তীক্ষ্ম, উজ্জ্বল, সাবলীল ভাষা এবং আশ্চর্য রচনাকৌশল হেমিংওয়ের কাহিনীগুলির বিপুল জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ। আর কিছুর জন্য না হােক, নিপুণ গল্পকার এবং দক্ষ ভাষাশিল্পী হিসেবে হেমিংওয়ে সাহিত্যের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।