26 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
ফ্ল্যাপে লিখা কথা
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজীবন ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশ থেকে দেশান্তরে। কখনও নিজের কথায় আবার কখনও তাঁর কাছের মানুষের স্মৃতিচারণায় কবির ভ্রমণকাহিনী বিভিন্ন ভ..
TK. 460TK. 345 You Save TK. 115 (25%)
Product Specification & Summary
ফ্ল্যাপে লিখা কথা
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজীবন ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশ থেকে দেশান্তরে। কখনও নিজের কথায় আবার কখনও তাঁর কাছের মানুষের স্মৃতিচারণায় কবির ভ্রমণকাহিনী বিভিন্ন ভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে। ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’ এ ধরনেরই একটি রচনা। পর্যটন কেন্দ্র দার্জিলিংয়ের মংপু কবিগুরুর অবকাশ যাপনের অন্যতম পছন্দের একটি জায়গা। বিভিন্ন সময়ে তিনি এখানে এসেছেন। জীবনের প্রায় শেষ সময়েও ভ্রমণের জন্য তিনি মংপুতেই যেতে চেয়েছিলেন। মৈত্রেয়ী দেবীর সাথে কারি পরিচয় দীর্ঘদিনের। তাঁর জীবনের প্রথম কবিতার বইয়ে কবি সানন্দে ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন মংপুতে কবির অবকাশ যাপনের দিনগুলিতে মৈত্রেয়ী দেবী ছিলেন তাঁর অন্যতম কাছের মানুষ। বলতে গেলে মৈত্রেয়ী দেবীর আতিথ্যেই মংপুতে কেটেছিল কবির দীর্ঘ অবকাশকাল। কবির সাহচর্যের সুখানুভূতির সেই দিনগুলোর কথামালা, মৈত্রেয়ী দেবী এ গ্রন্থে তুলে ধরেছেন। তাঁর অসাধারণ রচনাশৈলীতে মংপুতে কবির অবস্থানের ঘটনাগুলি হয়েছে সরস ও প্রাণবন্ত। এই বইটি পড়ে পাঠক অন্য এক রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পরিচিত হবেন-যিনি শুধু কবি নন, অনন্য এক মানুষ।
নিবেদন
১৯৩৮ এর ২১ শে মে পূজনীয় গুরুদেব প্রথমবার কালিমপং থেকে মংপু এসছিলেন। ৯ জুন পর্যন্ত এখানে কাটিয়ে আবার কালিমপং ফিরে যান। দ্বিতয়িবার ১৯৩৯ এর ১৪ মে পুরী থেকে মংপু এসে গ্রীষ্মাবকাশটি কাটিয়ে ১৭ই জুন নাগাদ কলকাতায় নেমে গেলেন। ঐ বৎসরই শরৎকালে ১২ সেপ্টেম্বর মংপুতে এসেছিলেন এবং দুই মাসের কিছু অধিককাল থেকে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কলকাতা নেমে যান। চতুর্থবার ১৯৪০ সালের ২১শে এপ্রিল এখানে আসেন, ২৫ শে বৈশাখের উৎসব এখানেই সম্পন্ন হয়, তারপর কালিমপং যান। সেই বৎসর শরৎকালে আবার আসবার কথা ছিল, সেজন্য তাঁর জিনিসপত্র সবই রেখে গিয়েছিলেন, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্যবশত আর তাঁর আসা হয়নি। ১৯৪০ এর সেপ্টেম্বরে অসুস্থ শরীরে, মংপুর মত ডাক্তারহীন গণ্ডগ্রামে আসা উচিত হবে না বলে প্রথম কালিমপং এলেন। কথা ছিল একটু সুস্থ হলে মংপু আসবেন। কিন্তু তা আর হলো না। হঠাৎ দারুণ অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ২৮ মে সেপ্টেম্বর অজ্ঞান অবস্থায় তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হলো।
আমার এই রচনার উপাদান ছিন্ন ছিন্ন পৃষ্ঠায় ইতস্ততভাবে লেখা ছিল, প্রত্যেক দিনের তারিখও দেওয়া ছিল না। সেজন্য বইতে উপযুক্তভাবে তারিখ দিতে পারিনি। ইতিহাস রক্ষা বা সাহিত্য সৃষ্টি কোনোটাই আমার উদ্দেশ্য ছিল না। অবসর পেলেই আমি তাঁর মুখের কথাগুলি লিখে রাখতাম এবং কাজের মধ্যে মনে মনে আবৃত্তি করে মনে রাখতাম , সে কেবল আমার নিজের আনন্দের জন্যই।আর একটি কথা এখানে জানানো কর্তব্য যে, আমার এই রচনা যদিও তিনি বার বার দেখতে চেয়েছেন, রহস্য করেছেন, কিন্তু কখনো দেখেনটি। যে কথাগুলি নিতান্ত ঘরোয়াভাবে বলেছেন, যে কথা ছাপাতে গেলে তিনি হয়হত অন্যভাবে বলতেন, তাও এখানে থাকতে পারে। ঘরের কথা হাটের মাঝখানে এলে, অপরাদ ঘটা অসম্ভব নয়। তবু তাঁর মুখের কথায় সমস্ত দেশের অধিকার স্মরণ করে এই ডায়েরি প্রকাশ করলাম।
মৈত্রেয়ী দেবী