77 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
"ব্যবহারিক বাংলা বিপরীত শব্দের অভিধান" বইটির ভুমিকা থেকে নেয়াঃ
‘ব্যবহারিক বাংলা বিপরীত শব্দের অভিধান' বাংলা ভাষা চর্চা ও প্রসারে আগ্রহীদের প্রয়ােজনের কথা স্মরণ ক..
TK. 400TK. 300 You Save TK. 100 (25%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
"ব্যবহারিক বাংলা বিপরীত শব্দের অভিধান" বইটির ভুমিকা থেকে নেয়াঃ
‘ব্যবহারিক বাংলা বিপরীত শব্দের অভিধান' বাংলা ভাষা চর্চা ও প্রসারে আগ্রহীদের প্রয়ােজনের কথা স্মরণ করে সংকলন করা হয়েছে। শব্দ হলাে পরম ব্রহ্মের মতাে, যার কোনাে বিকল্প হয় না। যেমন : ‘বালার্ক’ ও ‘মার্তণ্ড’ দুটোই সূর্যের সমার্থক শব্দ হিসেবে স্বীকৃত; কিন্তু সার্বিক বিচারে এ দুটো পূর্ণ সমার্থক নয়। বালার্ক হলাে ভােরবেলার সূর্য আর ‘মার্তণ্ড হলাে মধ্যাহ্নের খরতাপবর্ষী সূর্য। কেউ যদি লেখেন, দিবসের সূচনাতে মার্তণ্ডের আলােয় আমার ঘুম ভেঙে গেল-বাক্যটি যথার্থ হবে না। কারণ দিবসের সূচনাতে ‘মার্তণ্ড' পাবার কোনাে সুযােগ নেই। এখানে ‘মার্তণ্ড’-এর বদলে ‘বালার্ক লিখতে হবে। অতএব, সূর্যের সমার্থক শব্দ হিসেবে গৃহীত হলেও ‘বালার্ক’ ও ‘মার্তণ্ড’ পৃথক, অনন্য ও নিজস্ব গুণধারী শব্দ। তেমনি সবিতা, রবি, দিবাকর ইত্যাদি শব্দও আপন আপন অর্থ ও বিভূতি ধারণকারী। তাই বলা হয়, শব্দ পরম ব্রহ্মের মতাে-এর তুলনা সে নিজেই। বাংলায় যতাে শব্দ আছে প্রতিটি শব্দই এক একটি পৃথক ‘ইমেজ ধারণ করে। ভাষাকে ভালােভাবে জানতে হলে এই ইমেজধারী শব্দগুলাে গভীরভাবে আত্মস্থ করা জরুরি। শব্দের সমার্থক প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিপরীতার্থক প্রকাশের ধারণাও বর্তমান। কিন্তু এটাও সত্য বিপরীত শব্দগুলােও আসলে পৃথক ইমেজধারী। আমরা বিপরীত শব্দ ভাবার অবকাশ নিই না, এটাই বাস্তবতা। অধিকাংশ মানুষই ‘অ’ বা ‘না’ জুড়ে দিয়ে শব্দকে বিপরীত করতে চাই। যেমন : স্থাবরএর বিপরীত করতে চাই ‘অস্থাবর দিয়ে। কিন্তু যা অস্থাবর তার একটি শব্দ প্রকাশ আছে এবং তা হলাে ‘জঙ্গম’-এই শব্দটি আমাদের জানা চাই। আবার ‘অদূর’-এর বিপরীত শব্দ কী? অনেকে বলবেন, ‘দূর'। আসলে তা নয়। দূর’ হলাে মূল শব্দ। ‘অ’ দিয়ে কম দূরত্ব বােঝানাে হয়েছে। তাই ‘সু' দিয়ে অধিক দূরত্ব বােঝাতে হবে। অদূরের বিপরীত শব্দ হবে সুদূর। আর এক ধরনের বিপরীত শব্দের দিকে লক্ষ রাখতে হবে। যেমন, ‘গুপ্ত’ শব্দের বিপরীত শব্দ হলাে ‘প্রকাশ্য। কিন্তু ‘গুপ্তচর’ যদি মূলশব্দ হয় তবে এর বিপরীত শব্দ হবে ‘সহচর'। এটি একটি ধারণাগত বিপরীত শব্দ। এখানে প্রকাশ্যচর’ হবে না। আবার ‘গুপ্তহত্যার বিপরীত শব্দ প্রকাশ্যহত্যা’ও হবে না, ‘সহহত্যা’ও হবে ; হবে ‘গণহত্যা'। এভাবে বিপরীত শব্দগুলাে আত্মস্থ করা প্রয়ােজন। একটি কথা আছে : তিনি সেই ভাষা ভালাে জানেন, যিনি ঐ ভাষার বেশি বেশি সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ জানেন। কথাটি মিথ্যে নয়। আজ বাঙালির হাতে একটি কঠিন দায়িত্ব এসেছে যে, তার ভাষাকে সর্বত্র বিস্তার করার। প্রায় আটাশ কোটি বাঙালির মাতৃভাষা বাংলা এখন পৃথিবীর চতুর্থ মৌখিক ভাষা। দাপ্তরিক ভাষা হিসেবেও পৃথিবীতে বাংলার স্থান দশম। বহির্বিশ্বের অনেকেই বাংলা ভাষা শেখায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তাঁদের আগ্রহ আরাে বেশি। ভাষাশেখার এক পর্যায়ে তাঁরা মূলশব্দের সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ সন্ধানে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। আসলে বাংলার সর্ববিস্তারী ক্রমাগ্রসরতা আমাদের সবারই আরাধ্য বিষয়। এই পরিপ্রেক্ষিত স্মরণে রেখেই বর্তমান গ্রন্থ প্রস্তুত করা হয়েছে। সবার কাজে লাগলেই আমরা আনন্দিত হবাে।