7 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে যত নেয়ামত দিয়েছেন তার মধ্যে। সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে ঈমান। কেননা ঈমান যদি না থাকে তাহলে তারকোন আমল আল্লাহপাকের নিকট গ্রহণযােগ্য হবে না। সে হবে দুনি..
TK. 300TK. 174 You Save TK. 126 (42%)
Product Specification & Summary
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে যত নেয়ামত দিয়েছেন তার মধ্যে। সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে ঈমান। কেননা ঈমান যদি না থাকে তাহলে তারকোন আমল আল্লাহপাকের নিকট গ্রহণযােগ্য হবে না। সে হবে দুনিয়া
ক্ষতিগ্রস্ত এবং চির জাহান্নামী। তাই ঈমানের চেয়ে বড় কোনাে নেয়ামত আর হতেই পারে না। ঈমানের পরে দ্বিতীয় বড় নেয়ামত হচ্ছে ইলম । ইলম থাকলে ঈমানের দাবী পূরণ করা যায়। আর ইলম না থাকলে ঈমানের কখন কি দাবী তা সে উপলব্ধি করতে পারে না। তার অবস্থা হয় চোখ থাকতে অন্ধের মত। ইলম অর্থ হচ্ছে কুরআন হাদীসের ইলম, আসমানী ওহীর ইলম। দুনিয়াবী কোনাে বিদ্যা নয়। কেননা দুনিয়াবী বিদ্যা দ্বারা আল্লাহকে চেনা যায় না। প্রভুর মারেফত লাভ করা যায় না। আর যে বিদ্যা দ্বারা মহান স্রষ্টার পরিচয় লাভ করা যায় না শরীয়তের পরিভাষায় তাকে ইলম বলা হয় না। উল্লেখ্য
কারআন-হাদীসের এই ইলম মাদরাসায় শিক্ষা দেয়া হয়, বিশেষ করে কওমি মাদরাসাগুলােতে। এই মাদরাসাগুলাে যদি না থাকে তাহলে ইলমের চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে। সমাজে বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়বে। আল্লাহপাকের নাফরমানী বৃদ্ধি পাবে। যুব সমাজ ধ্বংস হবে। আল্লাহপাকের সাহায্য উঠে যাবে, ফলশ্রুতিতে। একটা মুসলিম দেশকে সাম্রাজ্যবাদের ক্রীড়নকে পরিণত করা সহজ হবে।
মাদরাসা শিক্ষার এই ধারা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর যুগ থেকে শুরু হয়েছিল। মক্কায় সর্বপ্রথম মাদরাসা শুরু হয়েছিল, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নবুওয়তপ্রাপ্তির বছরখানেকের মধ্যে সাফা পাহাড়ের পাদদেশে দারে আরকামে। নতুন মুসলিমদেরকে সেখানে পাঠিয়ে দেয়া হত আর নবীজী (সা.) স্বয়ং তাদেরকে কুরআন-হাদীস শােনাতেন। এর পরে দ্বিতীয় মাদরাসা প্রতিষ্ঠা হয়েছিল মদীনায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর হিজরতের তিন বছর আগে হযরত মুসআব ইবনে। উমায়েরকে মদীনাবাসীদের শিক্ষা-দীক্ষার জন্য মদীনায় প্রেরণ করা হয়েছিল তিনি সেখানে গমন করে মদীনার প্রথম মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এভাবেই শুরু হয়েছিল মাদরাসার শিক্ষা ধারা এর পরে ধীরে ধীরে এতে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। মক্কা-মদীনা, কুফা-বছরা, শাম, ইয়েমেন, বাগদাদ, স্পেন প্রভৃতি মুসলিম শহরে অসংখ্য মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেখান থেকে অসংখ্য মনীষী পয়দা হয়েছেন এবং ইসলামের নির্ভেজাল শিক্ষাবিস্তারে তারা অতুলনীয় পালন করেছেন।
মােগল রাজবংশ এবং অন্যান্য মুসলিম রাজন্যবর্গ প্রায় সাত শত সক শাসন করেছে। এসময়ে ভারত বর্ষের বিভিন্ন শহরে অগণিত মাদরাসা হয় এবং ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে তা বিশ্বব্যাপি পরিচিতি লাভ করতে সক্ষম হয়। মােগল আমলে শুধুমাত্র রাজধানী ও ১০০০ (এক হাজার) মাদরাসা ছিল। আর বঙ্গদেশে মাদরাসার সহ ৮০,০০০ (আশি হাজার)। এসব মাদরাসার ব্যয় নির্বাহের জন্য মাদরাসার জন্য জমি ওয়াকফ করে দেয়া হয়েছিল, যাতে মাদরাসা চালানোর জন্য কারাে নিকট হাত পাততে না হয়।
ষােড়শ শতাব্দীতে ইংরেজ বেনিয়ারা ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির ছদ্মাবরলে ভারত বর্ষে আগমন করে তখন ভারত বর্ষের অগণিত সম্পদরাজী তা প্রলুব্ধ করে এবং তারা এই সম্পদ কুক্ষিগত করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করতে থাকে। বাণিজ্য কুঠির নামে বিভিন্ন জায়গায় তারা দূর্গ নির্মাণ করে সে অস্ত্র-শস্ত্র মজুত করতে থাকে। কিন্তু মাদরাসা পড়ুয়া উলামায়ে কেরা সতর্কর্তার কারণে তারা খুব সহজে নিজেদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সমর্থ না হত কূটিল চানক্যনীতি অবলম্বন করে। মুসলমানদের মধ্যে একটি গাদ্দার শ্রেণী তৈরী করে তাদের সাহায্যে ১৭৫৭ সালে তারা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে ভার স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তারা আগেই উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে, আমাদের ক্ষমতা পাকাপােক্ত করার পথে এই মাদরাসাগুলিই হচে অন্যতম বাধা, তাই তারা সর্বপ্রথম দৃষ্টি দিল এই মাদরাসাগুলির উপর । মাদরাসার সাথে যেসব হাজার হাজার একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল তারা। সেই বরাদ্দ বাতিল করে হিন্দুদের মধ্যে তা বণ্টন করে দিলে এতে করে । রাতারাতি অনেক হিন্দু নব্য জমিদারে পরিণত হল অন্যদিকে মাদরাসাগুলি পড়ল। আর্থিক সংকটে, এই সংকটের কারণে একে একে মাদরাসাগুলি বন্ধ হয়ে যেতে। লাগল। যখন মাদরাসা বন্ধ হয়ে গেল তখন ইলমের চর্চা হ্রাস পেল। মানুষের। মধ্যে থেকে ধর্মীয় রীতি-নীতি বিদায় নিতে শুরু করল ফলে সমাজের মধ্যে। শিরক, বিদআত, নানা কুপ্রথার উদ্ভব হল। মুসলমানদের হিন্দুয়ানী নাম রাখা। হতে লাগল, হিন্দুদের মত মুসলমানরাও ধুতি পরতে আর মাথায় টিকি রাখতে শুরু করল। দাড়ি রাখার উপরে ট্যাক্স ধার্য করা হল, গরু কুরবানী নিষিদ্ধ করা। হল। এভাবে ইসলামের নাম-নিশানা মুছে ফেলার গভীর চক্রান্ত চলতে লাগল । দ্বীনের ধারক-বাহক উলামায়ে কেরাম এই অবস্থায় নিশ্ৰুপ বসে থাকতে পারলেন