33 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
‘নিজের ভাষায় মার্কেটিং’ বইয়ের লেখকের কথাঃ
মার্কেটিং নিয়ে একটা বই লিখবো ভাবছিলাম অনেকদিন থেকে। শুরু করেছিলাম ২০১৪ সালে। সেটা ছিল ইংরেজিতে। কিছুদূর লেখার পর অনুধাবন করলাম, ইং..
TK. 450TK. 338 You Save TK. 112 (25%)
Product Specification & Summary
‘নিজের ভাষায় মার্কেটিং’ বইয়ের লেখকের কথাঃ
মার্কেটিং নিয়ে একটা বই লিখবো ভাবছিলাম অনেকদিন থেকে। শুরু করেছিলাম ২০১৪ সালে। সেটা ছিল ইংরেজিতে। কিছুদূর লেখার পর অনুধাবন করলাম, ইংরেজিতে কেন? বাংলাতেই তো এই বই বেশি দরকার। আমার দীর্ঘ কর্ম জীবনে দেখছি অনেক তরুণ মার্কেটারেরই মার্কেটিং এর মৌলিক জ্ঞান (ফাউন্ডেশন) অনেক দূর্বল। অনেকেই শিক্ষাজীবন বা পরবর্তীতে জীবনে শেখা কিছু শব্দকে ভিত্তি করে নিজেদেরকে মার্কেটার হিসাবে জাহির করতে সব সময় সচেষ্ট থাকেন। তবে সেগুলোর অর্থ বা ব্যবহারিক প্রয়োগ বোঝেন না। বিষয়টা অনেকটা সুর, তাল, লয় সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান ছাড়াই শুধুমাত্র কণ্ঠের মাধুর্যতার উপর নির্ভর করে গানের সিডি বের করার মতন। এটা অত্যন্ত পীড়াদায়ক, কেননা এতে করে তাদের সাথে কাজ করতে গিয়ে অন্যরা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন।
“ভাই, এত কঠিন কঠিন ইংরেজিতে লেখা সব, পুরাই মাথার উপর দিয়ে যায়”!
মার্কেটিং এর সব মৌলিক বা টেক্সট বই মূলত ইংরেজিতে লেখা, যা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য একটা বিরাট বাধা। ইংরেজীতে সবার দক্ষতা সমান নয়। আবার অনেকের মধ্যে ইংরেজি ভীতি কাজ করে, তাই তারা সব সময় থিওরি বা তত্ত্বগুলো এড়িয়ে চলেন। কিন্তু পরবর্তীতে চাকরি জীবনে এসে হিমসিম খান। শিক্ষকতাকালীন সময়ে দেখেছি মার্কেটিং এর তাত্ত্বিকজ্ঞান আহরণে ছাত্রদের উদাসীনতা। দুঃখজনকভাবে আবার অনেকেই মনে করেন, তত্ত্ব শুধু পরীক্ষায় পাশ করার জন্য, এর কোন ব্যবহারিক প্রয়োগ নেই! সব ভাবনা চিন্তার পর প্রায় এক বছর পরিশ্রম করে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাতেই লেখাটা শেষ করলাম।
শিক্ষার্থী ছাড়াও অনেক উদ্যোক্তা এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেখেছি যাদের মার্কেটিং এর সঠিক জ্ঞান না থাকলেও নিজেদেরকে এ বিষয়ে স্বশিক্ষিত ভাবেন। তারা বিভিন্ন ধারণামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের বিপুল অর্থ ব্যয় করেন। তাতে কার্যত অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়াই হয়। ৭০ এবং ৮০'র দশকে পণ্য বা সেবা বিক্রির জন্য মার্কেটিং এর বিশেষ
প্রয়োজন না হলেও বর্তমানে এ বিষয়ে বিশেষায়িত জ্ঞান প্রয়োজন আছে, কেননা তখন উৎপাদনকারীর সংখ্যা অনেক কম ছিল তাই বিক্রির জন্য বিশেষ কিছু জানার প্রয়োজন ছিল না; শুধু কম দাম, ভালো ব্যবহার আর কিছু বিজ্ঞাপনের উপর ভর করেই বছরের পর বছর টিকে গেছেন অনেকে। কিন্তু '৯০ এর দশক থেকে এই অবস্থা বদলানো শুরু করেছে। এখন ক্রেতার সামনে বিকল্প অনেক, তাই এখন চলছে কৌশলগত মার্কেটিং এর যুগ। এখন পণ্য বা সেবার মার্কেটিং নিয়ে গভীর জ্ঞান না রাখলে এবং পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন।
“অমুক এজেন্সি তো কাজ করছেই, আপনাদের এ নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই, কিভাবে বিক্রি বাড়ানো যায় আপনারা শুধু সেই কথা ভাবেন”। এমন মন্তব্য শুনেছেন কখনো?
অনেকেই অভিজ্ঞ বিজ্ঞাপনী সংস্থার উপরে মার্কেটিং এর সিংহভাগ ছেড়ে দেন, এটা সহায়ক হতে পারে, কিন্তু মনে রাখতে হবে উৎপাদনকারী এবং বিজ্ঞাপনী সংস্থা দু’জনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং লক্ষ্য সব সময় এক নয়। অধিকাংশ সংস্থা নিজেদের মুনাফা আর সুনামের জন্য বিজ্ঞাপনের নান্দনিকতা আর অপ্রয়োজনীয় প্রচারণার উপরেই বেশি জোর দেন, তাতে তার ক্লায়েন্ট উপকৃত হচ্ছেন কি না তা থাকে গৌণ। কাজেই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মার্কেটারদের বুঝতে হবে কোন কর্মকাণ্ড কেন, কখন, কোথায়, কিভাবে করা হচ্ছে এবং এতে প্রতিষ্ঠানের কোন উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সাশ্রয়ের জন্য বিকল্প আছে কি না তা যাচাই করে দেখাও একজন মার্কেটারের নৈতিক দায়িত্ব।
এ সকল বিষয় বিবেচনায় রেখেই আমার এই বইটি পুনরায় বাংলায় লেখার প্রয়াস। আশাকরি মার্কেটিং নিয়ে আগ্রহী উদ্যোক্তা, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, ছাত্র-ছাত্রীসহ মার্কেটিং নিয়ে যারা জানতে চান তাদের সবারই উপকারে আসবে এই বইটি।
মার্কেটিং একটি মহাসমুদ্রের মত, এখানে বিষয়ের কোন কমতি নেই। একটি বইয়ের মধ্যে অনেক বিষয়ের উপর ব্যখ্যা দিতে গেলে তার কলেবর এবং মূল্য উভয়ই বৃদ্ধি পাবে, তাই বইটির টার্গেট কাস্টমারদের কথা বিবেচনায় রেখে আমার উদ্দেশ্য অর্থাৎ স্ট্রাটেজিক মার্কেটিং প্ল্যান করার মত দক্ষতা অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন পর্যন্ত পুরাে বিষয়কে আমি তিনটি অংশে বিভক্ত করেছি। এটি সিরিজের প্রথম বই যেখানে আমি মার্কেটিং এর ভিত্তিমূলক বিষয় নিয়েই আলােচনা করেছি। সিরিজের দ্বিতীয়
বইতে ব্র্যান্ডিং নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করবো এবং তৃতীয় বইতে এই সকল বিষয়ের সমন্বয়ে কিভাবে স্ট্রাটেজিক মার্কেটিং প্ল্যান করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করবো।
“মার্কেটিং জানলেই যদি সব হতো তাহলে কখনও কোন প্রোডাক্ট ফ্লপ করতো না”।
পাশাপাশি এটাও সত্য যে মার্কেটিং অর্থনীতির মতই শুধু ধারণা প্রদান করে। এতে ধ্রুব বলে কিছু নেই। যেহেতু এতে তথ্য-উপাত্ত্বের উপর পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, সেহেতু এর যত বেশি গভীরের জ্ঞান অর্জন করা যায় ততই তা সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সহায়তা করে। তা অবশ্যই ফাউন্ডেশন (ভিত্তি) দিয়েই শুরু করতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণে অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান ছাড়া মার্কেটিং-এ সফলতা অর্জন। ঝড়ে বক মরার মতই কাকতলীয়।
মার্কেটিং এর সকল তত্ত্ব ইংরেজিতে লেখা। বইটি বাংলায় লিখতে গিয়ে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ইংরেজি টার্মিনােলজির যথার্থ বাংলা প্রতিশব্দ খুঁজে বের করা। বাংলা ভাষায় আমার উচ্চমার্গের দক্ষতা নেই, কাজেই এই বইটি শেষ করতে সময় লেগেছে অনেক। আমি চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব। বাংলা প্রতিশব্দ ব্যবহার করার জন্য। কিন্তু অনেক শব্দ আছে যেগুলোর ইংরেজি শব্দই আমাদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে গিয়েছে। আবার অনেক শব্দ আছে যেগুলোর বাংলা প্রতিশব্দ ব্যবহার করলে তার অন্তর্নিহিত অর্থের পরিবর্তন ঘটে। তাই সেসব শব্দ আমি ইংরেজিতেই রেখে দিয়েছি।
মানুষের পরিবেশ, পরিস্থিতি, দর্শন, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি নানাবিধ কারণে একই তত্ত্ব-উপাত্ত্বের বিশ্লেষণ একেক জন একেক ভাবে করতে পারে। তাই আমার বিশ্লেষণের সাথে যদি কারো বিশ্লেষণ না মেলে অথবা কোথাও কোন ভুলত্রুটি দেখতে পান, তাহলে আমাকে ই-মেইলে জানালে বাধিত হব এবং সেসব ভুলত্রুটি ভবিষ্যত সংখ্যায় সংশোধন করে নিব।
সবার জ্ঞান তৃষ্ণা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক।
তৌফিকুর রহমান
বনানী, ঢাকা সূচীপত্রঃ
লেখকের কথা
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
শুরুর কথা ১১
বাজার গবেষণা : মার্কেটিং এর শুরু যেখানে ১৫
মার্কেটিং মিক্স বা মার্কেটিং এর মূল স্তম্ভসমূহ ২১
মূল্য ৪৩
স্থান ৫১
প্রচার ৫৭
মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বা কৌশল ৭৭
নতুন যুক্ত “তিন পি” ৮৯
পরিশিষ্ট ৯৪
গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং' এর বই পরিচিতিঃ
যেকোনো নতুন উদ্যোক্তার যন্ত্রণার আরেক নাম মার্কেটিং। আমাদের দেশে এটি অনেক বড় সমস্যা। কারণ আমাদের উদ্যোক্তারা কষ্টেসৃষ্টে নিজের পণ্য বা সেবাটি কোনো রকমে তৈরি করতে পারেন। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীই তাকে ফিরিয়ে দেন, একটি পর্যায় পর্যন্ত যেতে না পারলে। আবার একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় যেতে হলেও তার বিপণনের ব্যাপক প্রয়োজন। মার্কেটিংয়ের ফান্ডের অভাবে বেচারা তখন পড়ে যান বিপদে। এ থেকে উত্তরণের একটা উপায় হলো মার্কেটিংয়ের ব্যাপারটাকে নিজের পণ্য বা সেবার সাথে যুক্ত করে ফেলা। এমনভাবে কাজটা করা, যাতে কম খরচে, এমনকি ন্যূনতম খরচে যেন মার্কেটিং করা যায়।
গ্রোথ হ্যাকিং হলো এমন একটি মার্কেটিং-পদ্ধতি, যার সঠিক ব্যবহার, শুধু নবীন উদ্যোক্তা নন, প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তাদেরও গ্রোথ বাড়াতে সহায়তা করে। কোনো কোনো সময় এটি একেবারে নিঃখরচায়ও করা যায়।
এ বইটি সে রকম মার্কেটিং-পদ্ধতির একটা বই। দেশ-বিদেশের নানান উদাহরণ দিয়ে এখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে একজন উদ্যোক্তা তার উদ্যোগের সম্প্রসারণে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন।
বইটির কলেবর খুবই ছোট। কিন্তু কাজে লাগাতে পারলে এ বইটি হয়ে উঠবে উদ্যোক্তার মার্কেটিংয়ের অব্যর্থ অস্ত্র।