কাব্যগ্রন্থ্য ‘সূর্যাস্তের সাথেই যাব’ গ্রন্থটিতে কবির রোমান্টিকতা দিয়ে শুরু হলেও এ গ্রন্থে হতাশার পরিবেশ থেকে উত্তরণের প্রতিবাদী চেতনাও প্রকাশ পায়। সূচনা কবিতাটি নিপাট প্রেমের কবিত..
TK. 150TK. 129 You Save TK. 21 (14%)
Get eBook Version
US $1.99
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
কাব্যগ্রন্থ্য ‘সূর্যাস্তের সাথেই যাব’ গ্রন্থটিতে কবির রোমান্টিকতা দিয়ে শুরু হলেও এ গ্রন্থে হতাশার পরিবেশ থেকে উত্তরণের প্রতিবাদী চেতনাও প্রকাশ পায়। সূচনা কবিতাটি নিপাট প্রেমের কবিতা- ‘এক টুকরো বিকেল প্রেমিক চোখে’। এমনি আরো রয়েছে ‘এসো প্রিয় চুপিসারে প্রণয়ে’, ‘মৃদু বাতাসে নাচে মাতঙ্গি’, ‘শারদ প্রিয়া’, ‘কথা হয়েছিল ভালোবাসবে’। যেখানে বিরহ সেখানেই- বিরহ প্রেমের ঐশ্বর্য, প্রেমকে তীব্র করে তোলে সম্পূর্ণতায়। কবির কবিতায় হারানোর ব্যথা, হারানোর সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছে। যেমন- ‘বর্ণমালা আজো দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে’, ‘চাঁদের সাথে আলাপন’, ‘ভালোবাসা আজো জ্বলছে’, ‘অতঃপর যা হলো’।
নাম কবিতাটি কবি উৎসর্গ করেছেন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত আনিসুল হককে। তিনি একজন চবিয়ান এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। কবি তার সাথে একাত্ম হয়েই যেন চলে যেতে চান- সূর্যাস্তের সাথেই যাব। কবির স্পষ্ট উচ্চারণ-
‘জীবন নদী একাকী অভিযান
বীরের জীবন বাহবা অফুরান
ঢেউয়ের দাপটে বজ্রমুষ্টি চেপে
পালেতে লাগাই রঙ, নাও বাঁধি ঘাটে ঘাটে
বিকিকিনি ভালোবাসা কত আহ্লাদে প্রসাদে
অথচ আমিতো সূর্যাস্তের সাথেই যাব’
একই কবিতায় বলছেন-
‘শেষ অশ্রæটুকু শোকের ¯্রােতে বাড়াবে নাব্যতা
নতুন অভিযাত্রী উড়াবে নতুন বার্তা
নতুন পালে ছড়াবে রঙ, নতুন ফসল
গোধূলির ওপার থেকে আবার বাজবে হুইসেল।
সেও সূর্যাস্তের সাথেই যাবে।
আমিতো সূর্যাস্তের সাথেই যাব।’
এখানে কবি প্রকাশ করেছেন পরম্পরায় ধরনিতে আসবে যাবে মানুষ।
রঙিন রঙিন কেতন উড়িয়ে আসবে নতুন অভিযাত্রী, পুরনোরা সূর্যাস্তের মতোই বিদায় নেবে ধরা থেকে।
এই কাব্যগ্রন্থে মানবিক চেতনায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিধনযজ্ঞ নিয়ে প্রতিবাদী কবিতা রয়েছে। সমাজ সচেতনতা, সমাজের দুর্বল দিকগুলো উন্মোচন করতে চেয়েছেন কবি। একটি দ্বীপ ছিল কবিতায় কবির বলিষ্ঠ উচ্চারণ...
‘একটি দ্বীপ ছিল
চারিদিকে ভারি বাতাস
অক্সিজেন ছিল না বলে
দ্বীপটি আলো ছড়ায়নি।
একটি দ্বীপ ছিল
সলতের ফাঁক গলে ঢুকে যায়
পিঁপড়ের দল
তেলটুকু চুরি হয়ে যায়
দ্বীপটি নিভে যায় অকালেই।’
রূপকভাবে কবি সমাজের দুর্নীতি আর শোষণের কথা বলেছেন, সমাজ আলো ছড়াতে পারছে না।
সার্বিক অর্থে দেশের উন্নয়ন বিলম্বিত হয় যেসব কারণে তার দিকেই কবির দৃষ্টি নিবন্ধ।
‘দ্বীপটি এখন আঁস্তাকুড়ে
হাহাকারের বাতাসে
দিকহীন গড় গড় শব্দ করে শুধুই গড়ায়।’
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্মৃতি নিয়ে এ গ্রন্থে উল্লেখযোগ্য কবিতা গুলো হলো-
১/অতঃপর যা হলো ২/দেখবো বলে প্রথম প্রহরে- এই কবিতাটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাত মউয়ের দোকানের মউকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
দেশ ও সমাজ সচেতনমূলক ‘বিজয় দেখেছি’- কবিতায়
‘আমি যুদ্ধ দেখেছি, দাউদাউ জ্বলছে ঘরবাড়ি বাজার
আগুনের মাঝেই দেখেছি পাকিদের উল্লাস, সংহার
দেখেছি লুটেরা লোকেরা লুট করে মালঘর পোড়ার ভিতর
মানব চরিত্র কত বীভৎস বিকার।
আমি দেখেছি খুন ধর্ষণ আর অগ্ন্যুৎসব হায়েনাদের
ভয়ের বীভৎসতায় পালাতে দেখেছি বৃদ্ধ শিশু মায়েদের।’
‘ভাত দে মানচিত্র খাব না’- কবিতাটি প্রয়াত শ্রদ্ধেয় কবি রফিক আযাদ স্মরণে লেখা।
‘এখনো ন্যায্য দাবি বিফলে কেঁদে মরে
এখানো গফুর-আমেনারা খোলা চিঠি লিখে
এখনো রাস্তার ধারে স্টেশনে ঘোরে উলঙ্গ কিশোর
এখনো লাশ পড়ে থাকে রাস্তায়...
এখন সাহস করে বলার কেউ নেই
‘ভাত দে হারামজাদা তা না হলে মানচিত্র খাব।’
‘রক্ত দিয়ে লেখা’ কবিতাটি শহিদ স্মরণে লেখা।
‘চারিদিকে বসন্তের জোয়ার টগবগে আগুন
সেদিন ও ছিল বসন্ত রক্তে শপথ কঠিন
বায়ান্নর একুশে খুন রাঙিয়েছে রাজপথ
মেডিক্যাল থেকে টিএসসি রফিক বরকত
সহ¯্র ফুল ঝরেছিল বুলেটের আঘাতে।’
মায়ের ভাষা প্রাণের ভাষা রক্ত দিয়ে লেখা
অ আ ক খ আমরি বাংলা ভাষা।’
সমাজ সচেতনতা উপলব্ধি আর জাগরণী কবিতা-
১/যুদ্ধ শেষ হয়নি ২/ রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করনি ৩/ বাজেটের কুপে।
এ ছাড়া প্রেম রোমান্স সমৃদ্ধ কবিতাগুলো রয়েছে, যেমন- ১/ ক্যামেলিয়া ২/জোসনায় বিজন রাতে ৩/কিছু স্বপ্ন কিছু কথা।
প্রয়াত শ্রদ্ধেয় কবি সৈয়দ শামসুল হককে উৎসর্গিত কবিতা ‘দুঃস্বপ্নের ঘোর’। হলি আর্টিজান ঘটনার কবিতা- ‘একফালি চাঁদ দুঃস্বপ্নের সমাধি’। ‘যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি লেখা’, ‘লাল-সবুজ’, ‘সভ্যতার সহমরণ’ এসব কবিতা এই কাব্যগ্রন্থ্যটিকে সমৃদ্ধ করেছে।