16 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
‘নাফ নদীর ওপারে (আরাকান প্রদেশের মুসলমান রোহিঙ্গা জাতির অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ)’
পৃথিবীতে মানব সন্তানদের ক্রমবিকাশের প্রথম পর্যায় থেকেই কলহ চলমান। যুদ্ধ-বিগ্রহ করেই মানব অস্..
TK. 3415TK. 2374 You Save TK. 1041 (30%)
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
‘নাফ নদীর ওপারে (আরাকান প্রদেশের মুসলমান রোহিঙ্গা জাতির অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ)’
পৃথিবীতে মানব সন্তানদের ক্রমবিকাশের প্রথম পর্যায় থেকেই কলহ চলমান। যুদ্ধ-বিগ্রহ করেই মানব অস্তিত্ব টিকে আছে সুখের আশায়। অন্ধকার সময়কে পেছনে রেখে পৃথিবীকে মানুষ করেছে অতি আধুনিক।
সময়ের তালে ভূ-পৃষ্ঠের সকল অন্যায়কে অপরাধ বলতে শিখেছে মানুষ। মানুষের অধিকারের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাতিসংঘসহ নানান মানবাধিকার সংগঠন।
তারপরও এক শ্রেণির মানুষ প্রতিনিয়ত হচ্ছে নিগৃহীত। পৃথিবীর সর্বত্র নিগৃহীত সেইসব মানুষদের একটাই পরিচয়, তারা মুসলমান। ফিলিস্তিন থেকে কাশ্মীর-আফগানিস্তান-ইরাক-লিবিয়া-সুদান-বসনিয়া-চেচনিয়া-ইয়েমেন থেকে আরাকানে ধ্বনিত হচ্ছে রোহিঙ্গা মুসলমানদের হাহাকার। কিন্তু কেনো এই মানুষগুলোর এই মানুষগুলোর ওপর এত নিপীড়ন-নির্যাতন? রোহিঙ্গাদের ওপর কেনো নেমে এলো এই নির্মম নির্যাতন?
এই প্রশ্নের উত্তর এবং ব্যাখ্যা নিয়ে লেখক আসাদ পারভেজ রচনা করেছেন ‘নাফ নদীর ওপারে’ বইটি। এই গবেষণা এবং অনুসন্ধানমূলক ‘নাফ নদীর ওপারে’।
‘রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস’ বইয়ের ভূমিকাঃ
সতেরো শতকে মূলত আরাকান সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়, বাংলা সাহিত্যকে আরাকান সাহিত্যে রোসাঙ্গ নামে অভিহিত করা হয়। আরাকান ছিল বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় ইতিহাসের সাহিত্যাপিঠ। একসময় আরাকান ছিল চট্টগ্রামবাসীর নিকট ঢাকার চেয়ে প্রিয়স্থান।
আরাকান রাজদবারের পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত হয়েছে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কাব্য।
আরাকান রাজসভার উল্লেখযোগ্য কবিরা হলেন-আলাওল,দৌলত কাজি, কোরেশি মাগন ঠাকুর প্রমুখ। আরাকান রাজসভার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি আলাওল (১৫৯৭-১৬৭৩) তার ১ম ও শ্রেষ্ঠ কাব্য ‘পদ্মবতী রচনা করেন রাজা সাদ উমাদারের প্রধানমন্ত্রী কোরোশি মাগন ঠাকুরের পৃষ্ঠপোষকতায়। মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ কবি আলাওলের ‘সপ্তয়কর।’ সাহিত্যকর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন রাজচন্দ্র সুধর্মীর সমর সচিব সৈয়দ মুহম্মদ। শ্ৰী সুধৰ্মী রাজার উজির (১৬২২-১৬৩৮)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় কবি মরদিন (১৬০০-১৬৪৫) রচনা করেন "নাসিরানামা’ কাব্য। নবরাজ মজলিশ-এর পৃষ্ঠপোষকতায় আব্দুল করিম খন্দকার রচনা করেন “দুল্লা মজলিস’ কাব্যটি। রোসাঙ্গের প্রধান উজির ও আলাওলের পৃষ্ঠপোষক কোরেশি মাগন ঠাকুর নিজেই ‘চন্দ্রাবতী’ নামক বিখ্যাত কব্যটি রচনা করেন।
অষ্ট ‘সৎ জীবনাচারণের ধর্ম হলো বৌদ্ধধর্ম। জীবে দয়া করাই বৌদ্ধধর্মের মূলমন্ত্র। যারা ক্ষুদ্র পিঁপড়ে মরার ভয়ে ঝাড়ু দিয়ে চলত। আজ তারাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ হত্যায় মত্য। মানুষ নিধনে বিশ্ববাসীর নিকট আজ আরাকান-বৌদ্ধ নিন্দিত। ভারত ও চিনের অনুদানে নির্মিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠান ও সড়ক। এরজন্য দরকার জলাশয়ের পাশের ময়দান। ফলে এসব স্থানে বসবাসরত মুসলমান ও হিন্দুকে মরতে হচ্ছে নির্মমভাবে। নিজ প্রাণ বাঁচাতে মাতৃভূমি ত্যাগ করে আশ্রয় নিতে হচ্ছে চট্টগ্রামে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা আরাকান অধিকার করে। আরাকানকে বার্মার একটি প্রদেশে পরিণত করেন। আরাকানের অনুকরণে রাজা বিচার ব্যবস্থা, মুদ্রা ব্যবস্থা প্রভৃতি চালু করার জন্যে তিন হাজার সাতশত মুসলমানকে আরাকান থেকে জোর করে বাৰ্মায় নিয়ে গিয়েছিলেন।
বর্তমানেও নিজেদের বার্মার লাভের জন্য দেশের সন্তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। কী নির্মম চিন্তধারা! ১৯৫৮ সালে জেনারেল নেউইন-এর নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বার্মার প্রশাসনিক দায়ত্বি গ্রহণ করার পর আরাকান রোহিঙ্গাদের বিরক্তদ্ধে এক বেপরোয়া উচ্ছেদ অভিযান শুরুত্ব করে। এই উচ্ছেদ অভিযারের শিকার হায়ে প্রায় বিশ হাজার রেহিঙ্গা।উদ্বাস্থ কক্সবাজর সীমন্তে পালিয়ে আসে। তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানে গর্ভনর জাকি হোসেন নেতৃত্বে পাকিস্তান পক্ষ ও বার্মা পক্ষের মধ্যে কক্সবাজারে উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয় এ বর্মি পক্ষ একে আকিয়াবে একটি সাম্পদায়িক মগ গোষ্ঠীর করসাজি বলে অভিহিত করেন এবং সকাল উদ্বাস্তুদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেন। আবার ইমিগ্রেশন কতৃক উপস্থাপিত সংশ্লিষ্ট ছাপানো পরমে মংডুর মহকুমা প্রশাসক কোন বিচার-বিবেচনা ব্যতিরেকে দস্তখত করেছেন, যার অর্থ ছিল বেআইনিভাবে কিছু দেশের নাগরিককে তাদের আবাসভূমি থেকে বিতাড়িত করা এবং একজন নাগরিকে অধিকারকে অস্বীকার করা। বিজ্ঞ বিচারক উল্লেখ করেন। যে, দেশে একজন নাগরিককে স্বীয় আবাসভূমি থেকে তিাড়ন করা মৃত্যুর দণ্ডাদেশ দেয়ার সামিল। বর্তমানে বর্মি সৈন্যরা মগ-দসু্যর মতো শুরু করে বর্বর অত্যাচার, হত্যা, রাহাজানি ও লুণ্ঠন। বর্মি সৈন্যরা যত্রতত্র আরাকানিদের বন্দি করে মুক্তিপণ আদায় করতে থাকে। মুক্তিপণ আদায় না করলে পাশবিক নির্যাতনের মাধ্যমে বন্দিদের হত্যা করতে থাকে আগুনে পুড়িয়ে।
একসময় চট্টগ্রাম ছিল অশান্তির স্থান শান্তির জন্য দলে দলে মানুষ আরাকানো যেত। আর এখন (২০১৭) মানুষ চট্টগ্রামে আশ্রয় নিচ্ছে। এই গ্রন্থে ভুক্তভোগী কয়েকজন রোহিঙ্গার নির্যাতনের নির্মম কাহিনি স্থান পেয়েছে যা পড়ে আরাকানের আসল চিত্র চখের সামনে ভেসে ওঠে। কষ্টে হুহু করে ওঠে। বুক। আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যগুলো মানুষকে আশা অরা দেখায়।
এসব বিষয় চমৎকারভাবে লেখক এনাম রেজা “আরাকান রাজসভা থেকে কক্সবাজার : রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস’ গ্রন্থে তুলে ধরেছেন। অনেক অজানা তথ্য-উপাত্তে ভরা গ্রন্থটি। রোহিঙ্গাদের ইতিহাস জানার সাথে সাথে তাদের নির্মম-আচরণও জানা যাবে। গ্রন্থটিতে। লেখক বহু পরিশ্রমের মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সঠিক রাখার চেষ্টা করেছেন। আশা করি গ্রন্থটি সমাদৃত হবে। আর গ্রন্থটি সমাদৃত হলে লেখকের পরিশ্রম সার্থক হবে। হাসান রাউফুন
নয়াটোলা, ঢাকা
৮ অক্টোবর ২০১৭
সূচি
প্ৰথম অধ্যায় ০১১-০২০
প্ৰাগ ঐতিহাসিক পর্ব/মুসলমানদের আরাকান আগমনে প্রথম কাল/মুসলমানদের আরাকান আগমনে দ্বিতীয় কাল/গৌড়ের করদ রাজ্য হিসেবে ভ্রউক-উ রাজংশ/স্বাধীন ম্রাউক-উ রাজবংশ/আরাকানে মুসলমানদের আগমনের তৃতীয় কাল/শাহ সুজা হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণার্থে ভারতীয় মুসলমানদের আরাকান আগমন।
দ্বিতীয় আধ্যায় ০২১-০৪০
আরাকান-বাৰ্মা সম্পর্ক ও আরাকানিদের সর্বনাশ/রোসাঙ্গ বাজ্যে বাংলা সাহিত্যচর্চা/রোহিঙ্গা শব্দের উৎপত্তি/বাংলা আরাকান সম্পর্ক ও আরাকান সভ্যতা/রোহিঙ্গা পরিচিতি/আরকান সম্পকির্তা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য/বঙ্গোসাগরের মগপর্তুগিজ জলদসু্য/শাহ সুজার আরাকান গমণ ও আরাকান রাজশক্তির পতন/দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও আরাকান/দক্ষিণ চট্টগ্রাম চাকমা জাতি/টেকনাফ সর্বশেষ সীমানা হলো কি করে/আরাকানিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম/কক্সবাজারের নামকরণ/কক্সবাজারের জনবসতী।
তৃতীয় অধ্যায় ০৪১-০৫৭
রোসাঙ্গের কবি সাহিত্যিকদের বর্ণনায় আরাকানের ইতিহাস/লস্কর উজির আশারাফ খান/কোরোশি মাগন ঠাকুর/মহাকবি আলাওলের বর্ণনায় আরাকানের রাজনৈতিক ইতিহাস।
চতুর্থ অধ্যায় ০৫৮-০৬৯
স্বাধীন আরাকান পতনকাল/শাহ সুজার আরাকান গমন ও তার পরবর্তী রাজনীতি/শায়েস্তা খানের আগামনকালে বাংলার সামাজিক অবস্থা/নাবাব শায়েন্ত খান চট্টগ্রাম বিজয়।
পঞ্চম অধ্যায় ০৭০-০৭8
মগা-রাখাইন বিতর্ক।
ষষ্ঠ অধ্যায় ০৭৫-০৭৯
ম্রাউক-উ রাজবংশের মুদ্রা।
সপ্তম অধ্যায় ০৮০-০৯২
আরাকানের রাজনৈতিক ইতিহাসের উত্থান পতন/প্রথম বাংলা-বাৰ্মা যুদ্ধের পটভূমি : আরাকানের প্রাচীন ইতিহাস /বার্মা রাজার আরাকান দখল/গৌড়ীয় সৈন্যদের আরাকান দখল/দ্বিতীয় বাংলা-বার্ম যুদ্ধ/প্ৰথম অ্যাংলো বাৰ্মা যুদ্ধ /১৮৫২ সালের দ্বিতীয় অ্যাংলো বাৰ্মা যুদ্ধ/১৮৮৫ সালে তৃতীয় অ্যাংলো-বাৰ্মা যুদ্ধ।
আষ্টম অধ্যায় ০৯৩-১১৬
রোহিঙ্গ জাতির স্বাধিকার আন্দোলনের ইতিবৃত্ত/বৃটিশ শাসনকালে বর্মি মুসলমানদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড/বার্মা মুসলিম কংগ্রেস /আরাকেরন নৃংশশতম গণহত্যা/বার্মার জাতীয়াবদী শক্তির জাপান বিরোধিতা/বার্মা মুসলিম কংগ্রেস আত্মপ্রকাশ/মুসলিম বণিক শ্রেণি ও রেঙ্গুন চেম্বার অব কমার্স/বার্মা মুসলিম কংগ্রেস বানম মুসলমানদের সংঘাতসমূহ সাধারন সংস্থা/ঐতিহাসিক প্যানলং সম্মেলন ও আজরেক সংখ্যালঘু সমস্যা/রোহিঙ্গা মুমলমানদের স্বাধীকার আন্দোলন/বার্মার নাগরিকত্ব আইনের উপর দুটি বিখ্যাত মামলা /বর্মিজতির রাজনৈতীকি সংস্কৃতি ও সংখ্যলঘু সমস্যা।
নবম অধ্যায় ১১৭-১৫০
বর্তমান মিয়ানমার এবং সংখ্যালঘুদের অবস্থান/রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার/রাষ্ট্রহীন এক জনগোষ্ঠী/তেরঙা কার্ডে ঠাই হয়নি/নিজ গ্রামের উন্মুক্ত কারাগারে/বিয়েতে বাধা, সন্তান ধারণে নিয়ন্ত্রণা!/চিকিৎসায় বাধা প্রদান/শিক্ষায় সীমিত অধিকার/শরণার্থী সমস্যা/বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী/বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী/দায় আন্তর্জাতিক মানবগোষ্ঠীর/বাংলাদেশের মানবিকতার প্রশংসা বিশ্বজুড়ে/রোহিঙ্গা মুসলমানদের যা যা করণীয়/বাংলাদেশের যা যা করণীয় হতে পারে/রোহিঙ্গাদের দেখে আপ্লুত সাংবাদিকরাও/রোহিঙ্গা গ্রামে গিয়ে যা দেখলেন ব্রিটিশ সাংবাদিস/শরণার্থীদের কান্না/অশ্রুর কাছে হেরে কষ্টের নোনাজল/ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় সেনারা পিটিয়েছে/সব হারানো দুই শিশু/পাতা খেয়ে সাত দিন/রক্ষা পায়নি। ১৩ দিনের শিশুও/কোটিপতি পরিবারটি পথের ফকির/“নুর কাজল রোহিঙ্গা বলছি/রোহিঙ্গা ইসু্যতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে /আশ্রয় দিয়েছি মানবিক কারণে/মুসলিম বিশ্ব এক থাকলে তারা সাহস পেত না / সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে/ষোল কোটি মানুষ খেলে তারাও খাবে/জাতিসংঘে এ বিষয়ে বক্তব্য দেব/প্রয়োজনে খাবার ভাগ করে খাব কিন্তু নদীতে ঠেলে দেব না/বিশ্ব গণমাধ্যমে এক মানবিক রাষ্ট্রনায়ক।
দশম অধ্যায় ১৫১-১৬০
এক নজরে বর্তমান মিয়ানমার ও তার সামরিক শক্তি/মিয়ানমারের কাছে অস্ত্ৰ বেচে কারা?/মানবসম্পদ/এয়ার ফোর্স/সেনাশক্তি/নেভির শক্তিমত্তা/লজিস্টিক/অর্থনৈতিক সক্ষমতা/ভৌগোলিক অবস্থান ও গঠন/পরিমাণু অস্ত্র নেই/বন্ধু চিন/রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে লুকোচুরি/শিশুদের হাতেও তুলে দেয় মারণাস্ত্ৰ!/অস্ত্রভান্ডার/উপসংহার।
‘রোহিঙ্গা নয় রোয়াইঙ্গা (অস্তিত্বের সংকটে রাষ্ট্রহীন মানুষ)’
‘রোহিঙ্গা’ বলে যাঁদেরকে আমরা জানি, তাঁরা সবসময় নিজেদেরকে ‘রোয়াইঙ্গা’ বলে পরিচয় দেন। যে জাতি নিজেদেরকে ‘রোয়াইঙ্গা’ বলেন, তাঁদেরকে আমরা ‘রোহিঙ্গা’ কেন ডাকব? প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘবছরের চর্চা এবং উপস্থাপনার ভেতর দিয়ে ‘রোয়াইঙ্গা’ হয়ে উঠেছে ‘রোহিঙ্গা’। তাই, এ বইয়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘রোয়াইঙ্গা’, যার প্রাথমিক বাসনা হচ্ছে রোয়াইঙ্গা জাতির ‘বিকৃত’ নাম থেকে ‘প্রকৃত’ নামে ফিরে আসা। ‘রোয়াইঙ্গা’ একটি রাষ্ট্রবিহীন জাতি, যাঁরা উপস্থাপিত হন ‘পৃথিবীর সর্বাধিক নির্যাতিত নৃগোষ্ঠী হিসাবে’। ২০১৭ সালে সংঘটিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ঘটনা ‘রোয়াইঙ্গা’কে যেমন দেশী-বিদেশী মিডিয়া-শিরোনামের বিষয় বানিয়েছে, তেমনি মানুষেরও নিত্যদিনের আলোচ্য বিষয়ে পরিণত করেছে। মিয়ানমার যখন নিষ্ঠুরতার চরমতা দিয়ে রোয়াইঙ্গাদের বিতাড়িত করছে, বাংলাদেশ তখন মানবতার সর্বোচ্চতা দিয়ে রোয়াইঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের জীবনে প্রায় এক মিলিয়নাধিক রোয়াইঙ্গাদের প্রভাব ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। তাই প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে আর কতোদিন? এ রোয়াইঙ্গা আসলে কারা? তাঁদের জীবন কেন আজ সংকটাপন্ন? রোয়াইঙ্গারা কি উগ্র-জাতীয়তাবাদিী রাজনীতির শিকার, নাকি পুঁজিবাদি অর্থনীতির বলি? রাষ্ট্রবিহীনতার ধারণা কি আধুনিক রাষ্ট্র-ব্যবস্থারই ফসল? নাকি মানুষের সমাজের ক্রমবর্ধমান শ্রেণিবৈষম্য ও (ঢেকে রাখা) বর্ণবাদের প্রতিফল? এ গ্রন্থে তাত্ত্বিক এবং অভিজ্ঞতালব্ধ বিশ্লেষণ দিয়ে এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।