236 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
নিশ্চয় সকল প্রশংসা আল্লাহর। আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর সাহায্য কামনা করি ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমরা নিজেদের নফসের অনিষ্ট ও নিজেদের ব..
TK. 280TK. 196 You Save TK. 84 (30%)
Get eBook Version
US $2.66
In Stock (only 3 copies left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
নিশ্চয় সকল প্রশংসা আল্লাহর। আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর সাহায্য কামনা করি ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমরা নিজেদের নফসের অনিষ্ট ও নিজেদের বদ আমলের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। আল্লাহ যাকে পথ দেখান, তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তাকে কেউ পথ দেখাতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া উপাসনার যােগ্য কেউ নেই, তিনি এক, তাঁর কোনাে শরীক নেই। আমি আরাে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ঞ) তাঁর বান্দা ও রাসূল।
অনেকের ধারণা এই বিষয় নিয়ে লেখালেখি করার অর্থ ইলমের শাখাগত বিষয় নিয়ে সময় ব্যয় করা। তারা এই বিষয়ের আলােচনা তাড়াহুড়া করে শেষ করার পক্ষপাতী এবং এ ব্যাপারে গভীর চিন্তাভাবনা করতে নারাজ। তারা ভাবেন যে, এই বিষয় অধ্যয়ন করার ফযিলত সামান্যই। তাঁরা আরাে মনে করেন এই বিষয়ে অজ্ঞ হলেও আপত্তির কিছু নেই।
কিন্তু আমি কোনাে গুরুত্বহীন বিষয়ে হাত দেইনি। মানুষ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে গবেষণা করছে এই বিষয়টি উদঘাটন করতে যে, নিকটবর্তী গ্রহগুলােতে প্রাণী আছে কি না বা প্রাণের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব কি না। অথচ এই টাকা দিয়ে পৃথিবীর দূরতম প্রান্তগুলােতেও দারিদ্র্য মিটিয়ে ফেলা যেত৷ এমন একটি অজানা বিষয়ের পেছনে বিজ্ঞানীরা কতাে সময় ও সম্পদ খরচ করছেন! তাহলে এ পৃথিবীতেই আমাদের মাঝে বসবাস করা একটি অস্তিত্বকে নিয়ে গবেষণা করা কতটা গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে? তারা আমাদের ঘরেই বাস করে। আমাদের সাথেই পানাহার করে। এমনকি তারা আমাদের চিন্তাচেতনা ও অন্তরকে দূষিত করতে সচেষ্ট ও সক্ষম। এই জীবগুলাে আমাদের নিজেদের ধ্বংস করতে ও পরস্পরের রক্তপাত ঘটাতে প্ররােচিত করে। তারা আমাদের বাধ্য করে যেন আমরা তাদের অথবা অন্য কোনাে সৃষ্টির উপাসনা করি, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রতিপালকের ক্রোধের শিকার হবাে। প্রতিপালকের ক্রোধ আমাদের উপর আপতিত হবে। আর যারাই আমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে, তাদের পরিণাম হলাে প্রজ্জ্বলিত অগ্নি। কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে এসব বিষয়ের যে জ্ঞান আমাদের কাছে পৌঁছেছে, তা অমূল্য। এই উৎসগুলাে থেকে আমরা জিন জাতির রহস্যময় জগৎ সম্পর্কে জানতে পারি। তাদের জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এগুলােতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ তথ্য। এই সৃষ্টির সাথে মানুষের শত্রুতা কত গভীরে প্রােথিত, সে সম্পর্কেও এতে বলা হয়েছে। আমাদের পথভ্রষ্ট ও ধ্বংস করার জন্য এরা কত চরম ও নিরলসভাবে কাজ করে যায়, তাও জানানাে হয়েছে।
জিন ও শয়তান সম্পর্কে কুরআনের যেসব আয়াতে আলােচনা করা হয়েছে, তার সংখ্যা দেখলে আপনি এই বিষয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা পাবেন।
এই আয়াতগুলাে পড়লেই বােঝা যায় যে, মানুষের জীবন তার আর শয়তানের মাঝে এক সংগ্রাম ছাড়া কিছুই নয়। শয়তান চায় তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং তাকে ধ্বংস ও সর্বনাশের মুখে ফেলতে। যেই মানুষকে আল্লাহ্ তাঁর নূর দিয়ে পরিপূর্ণ করে দেন, সে তার প্রতিপালকের সরল পথে অটল থাকতে আর অন্যদের অটল রাখতে জোর প্রচেষ্টা চালায়। এ কাজে সফল হতে হলে তাকে অবশ্যই নফসের খাহেশাত, অন্তরের চিন্তা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার ময়দানে এই শত্রুর সাথে লড়াই করতে হবে। তাকে তার নিকটবর্তী ও দূরবর্তী লক্ষ্য-উদ্দেশ্যগুলাে সবসময় যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যে রাখতে হবে। তাহলেই সে জানতে পারবে প্রতিপালকের সাথে তার নৈকট্য কেমন। জানতে পারবে সেই শত্রুর কবল থেকে নিজেকে সে কতটা পবিত্র করতে পেরেছে। এই শত্রু তাে সবসময়ই চাইবে তার গলার রশি ধরে তাকে নিজের পছন্দের পথে নিয়ে যেতে, যেভাবে কৃষক তার গাধার গলার রশি ধরে টেনে নিয়ে যায়।
আমি এই বিষয় সংক্রান্ত কুরআনের আয়াত ও হাদিসগুলাে সংকলন করেছি। সেই সাথে উল্লেখ করেছি এই বিষয়ের উপর অভিজ্ঞ আলিমদের বক্তব্য। তাঁদের লেখনী নিয়ে আমি চিন্তাভাবনা করেছি। যার ফলাফল হলাে ছয় অধ্যায়বিশিষ্ট এই বই। প্রথম অধ্যায়টি এই প্রজাতিকে চিহ্নিতকারী বৈশিষ্ট্য ও তাদের পরিচয় নিয়ে। যেমন তাদের উৎস, সৃষ্টি, নাম, প্রকারভেদ, খাদ্য ও পানীয়, সঙ্গী, বাসস্থান, পােষা প্রাণী এবং আল্লাহ্ তাদের যেসব সামর্থ্য দিয়েছেন সেসব। এই অধ্যায়ে পাঠক এদের অস্তিত্বের প্রমাণ এবং যারা এদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে, তাদের যুক্তিখণ্ডনের দেখা পাবেন।
দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলােচিত হয়েছে তাদের সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য, যে উপায়ে তারা প্রতিপালকের বাণী লাভ করে থাকে এবং জিন ও মানুষ উভয় জাতির প্রতি নবিগণের দাওয়াতের প্রযােজ্যতা।
তৃতীয় অধ্যায়কে বলা যায় এই বইয়ের হৃদপিণ্ডা এখানে আলােচিত বিষয়গুলাে হলাে (১) মানুষ ও শয়তানের মধ্যকার শত্রুতার কারণ; এই শত্রুতার প্রবলতা ও গভীরতার প্রমাণ; আর এই শত্রুর ব্যাপারে আমাদের প্রতি আল্লাহর সতর্কবার্তা। (২) শয়তানের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য।