12 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
ভূমিকা
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে গেরিলা যুদ্ধ একটি অতি পরিচিত নাম। কোনো শক্তিশালী বাহিনীকে মোকাবেলা করার মতো অনুরূপ বা ততোধিক শক্তিশালী বাহ..
TK. 800TK. 600 You Save TK. 200 (25%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Related Products
Product Specification & Summary
ভূমিকা
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে গেরিলা যুদ্ধ একটি অতি পরিচিত নাম। কোনো শক্তিশালী বাহিনীকে মোকাবেলা করার মতো অনুরূপ বা ততোধিক শক্তিশালী বাহিনীর অভাবে গেরিলা যুদ্ধই একমাত্র অস্ত্র যার দ্বারা অতি শক্তিশালী বহিনীকেও পরাস্ত করা সম্ভব হয়। বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে ভিয়েতনাম যুদ্ধে শক্তিশালী আমেরিকান বাহিনীর পরাজয় তার অন্যতম উদাহরণ। ১৯৭১ সালে শক্তিশালী পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সফল গেরিলাযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য হয়ে থাকবে। শক্তিশালী পাকিস্তানি বাহিনীকে গেরিলাযুদ্ধের মাধ্যমেই মুক্তিযোদ্ধারা এমন ভয়াবহ পর্যায়ে ঠেলে দিয়েছিল যে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া তাদের গত্যন্তর ছিল না।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে দেশের অভ্যন্তরে ব্যক্তি-প্রচেষ্টায় যে ক’টি আঞ্চলিক গেরিলাবাহিনী গড়ে ওঠে কৃতিত্বের সঙ্গে পাকবাহিনীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল, ফরিদপুর-বরিশাল অঞ্চলের হেমায়েত বাহিনী তার অন্যতম। ভারতে প্রশিক্ষণের পর নিয়মিত বাহিনীর গেরিলারা দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এসব আঞ্চলিক গেরিলাবাহিনীর সহায়তা ও সহযোগিতায়ই পাকিস্তানি বাহিনীর নাভিশ্বাস ঘটাতে সক্ষম হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর বা বিভিন্ন স্তরের কমান্ডারদের রাচিত যুদ্ধের ইতিহাসে গেরিলাযুদ্ধের দারুণ সে সফলতা না থাকলে পাকিদের পরাজয় আরও বিলম্বিত হতো এবং তা’হলে মুক্তিযুদ্ধের নিট ফলাফলেও ব্যতিক্রম ঘটতে পারতো। কিন্তু আমাদের গেরিলা যোদ্ধাদের সাহস, মনোবল, যুদ্ধ-কৌশল এবং দৃঢ়তায় পাকিদের সর্বপ্রকার যুদ্ধ-পরিকল্পনা ও মনোবল ধূলিসাৎ হয়ে যায়, যার অপরিহার্য পরিণতি ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ পাকিস্তানি বাহিনীর লজ্জাজনক আত্মসমর্পণ। বিচ্ছিন্নভাবে হলেও হেমায়েত বাহিনীর উত্থান ও সফলতার উপর কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ সফিকউল্লাহর’র দূরবীণী (টেলিস্কোপিক) অনুসন্ধান মুক্তিযুদ্ধে গেরিলাদের অবদানের আলোকোজ্জ্বল প্রতিবেদন তুলে ধরতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। সত্যনিষ্ঠ ইতিহাসের স্বার্থে যে-কোনো ঘটনা বিভিন্ন উৎস থেকে তার যথার্থতার সত্যপ্রতিপাদনের (ভেরিফিকেশন) পরই বস্তনিষ্ঠ ঐতিহাসিক ঘটনারূপে তুলে ধরা প্রয়োজন। লেখকের {মুক্তিযুদ্ধে বাংলার নারী’ শীর্ষক অপর গ্রন্থে} দূরবীনী অনুসন্ধানগুলি অণুবীক্ষণী (মাইক্রোস্কোপিক) বিশ্লেষণ করা হয়নি যার ফলে “মেজর জিয়া-পত্নী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে ৮-ইবিআর” -এই মিথ্যা ও বিকৃত তথ্যটি তার প্রতিবেদনে স্থান কপ্লে নিয়েছে। এটা প্রমাণিত যে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ভারতে যাবার পরিবর্তে করচি যাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে পাকি অফিসারদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং বাধ্যতামূলকভাবেই পরবর্তী আট মাস ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থান করেন। অণুবীক্ষণতার অভাবে এমনি আরও ভুল তথ্যের অনুপ্রবেশ ঘটেছে কিনা তা নিশ্চিত বলা যায় না। তথ্যের বিভিন্নমুখী অনুসন্ধান বা ক্রস-ভেরিফিকেশন এর মা্যেমেই শুধু ভুল তথ্যের অনুপ্রবেশ রোধ করা সম্ভব। লেখক কর্তৃক সব তথ্য-উৎস প্রদানে কার্পণ্য না করাই সমীচীন। পরিশেষে এই দুঃসাধ্য কাজ সমাধা করার আন্তরিক উদ্যেগের জন্য কর্নেল মোহাম্মদ সফিউল্রাহকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি।