37 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
আমার পেশা জীবনের সাথে এই বইয়ের নামকরণের শতভাগ মিল আছে। আমি এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্ম জীবনে প্রবেশ করেছিলাম এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্ম জীবনের সমাপ্তি টেনেছি।
এদেশের অসং..
TK. 400TK. 342 You Save TK. 58 (14%)
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
আমার পেশা জীবনের সাথে এই বইয়ের নামকরণের শতভাগ মিল আছে। আমি এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্ম জীবনে প্রবেশ করেছিলাম এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্ম জীবনের সমাপ্তি টেনেছি।
এদেশের অসংখ্য শিক্ষিত বেকার, ক্রমাগত শিক্ষা সমাপন করে পেশা জীবনে প্রবেশ করা ইয়ং জেনারেশন, কর্পোরেটে কর্মরত উচ্চাকাঙ্ক্ষী সহকর্মী ও অসংখ্য উদ্যোক্তার জন্য মূলত এই বইটি লেখা।
এক্সিকিউটিভ বা এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কোনোটাই হওয়ার যোগ্যতা আমার ছিল না। আমি ইংরেজি সাহিত্য ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের ছাত্র। আমার অন্যতম পজিটিভ দিক হচ্ছে কোনো কাজ করতে যেয়ে বাধার সম্মুখীন হলেই আমার ভিতরে এক বল্গাহারা, অপ্রতিরোধ্য মানসিক ও শারীরিক শক্তির যুগলবন্দী শুরু হয়। শুরু হয় বাধা ডিঙানোর খেলা।
আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম না। কিন্তু জীবনের প্রথম চাকুরী ফাইজারের মতো আমেরিকান বহুজাতিক ঔষধ কোম্পানিতে নিতে যেয়ে আমাকে বিজ্ঞানের অনেক কিছু শুরু থেকে শিখতে হয়েছে। সন্ধ্যায় বই নিয়ে বসেছি আর সকালের সূর্য ওঠা দেখেছি জানালা দিয়ে। কঠিন জিদ নিয়ে ট্রেনিং করেছি যাতে শত শত প্রার্থীর মধ্যে একজনকে নিলেও যেন ফাইজার আমাকে নির্বাচিত করে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচিত চার জনের মধ্যে আমি ছিলাম একজন।
আমাদের সময়টা ছিল ফার্মাসিউটিকাল-এর স্বর্ণযুগ। জ্ঞান নির্ভর ছিল সেই পেশা। যে যত পেশাগত জ্ঞানে উৎকর্ষ লাভ করতে পারবে সে তত শক্ত ভীত তৈরী করে উন্নতি লাভ করতে পারবে।
আমার পরের চ্যালেঞ্জ ছিল অটোমোবাইল। রানার মোটরস-এ চাকরি নিয়ে দিল্লিতে গেলে ভলভো-আইশারের ইঞ্জিনিয়ার বলেছিলো "how come a pharma guy in Automobile..... !!" আমি মনে মনে বলেছিলাম দেখা হবে কিছুদিন পর। প্রমাণ হয়ে গিয়েছিল আমি আমার টিম নিয়ে কিভাবে অটোমোবাইলে পরিবর্তনের ঢেউ এনেছিলাম। পরের চ্যালেঞ্জ ছিল Akij Food and Beverage এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে।
আমার বিজ্ঞানের জ্ঞান ছিল না। আমার বাবা-চাচা-মামা-খালু-আইন-বাবা তথা কেউ ছিল না। ছিল আল্লাহর রহমত ও তাঁর দেওয়া দেয়া ১০০ মিলিয়ন নিউরন। বাবা মায়ের প্রাণখোলা দোয়া আর আমার সততা, শৃঙ্খলা, কঠোর পরিশ্রম, কখনো কখনো ক্ষেপাটে পরিশ্রম, পাহাড়ের মতো ধৈৰ্য, নিষ্ঠা আর একাগ্রতা।
এই বইতে আমি বলতে চেয়েছি আমার কিছুই ছিল না কিন্তু বিশেষ কিছু গুণাবলির চর্চা আর ধৈর্যের সাথে কঠোর পরিশ্রম আমাকে এক্সিকিউটিভ থেকে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পর্যন্তু নিয়ে গেছে। আপনি চেষ্টা করলে অবশ্যই আপনিও হয়তো আমার বয়সের আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেন।
সিনিয়রদের যথোপযুক্ত সন্মান দেখায়েছি। পীরের খানকার তাজিমের মতো সন্মান করেছি। তাঁদের আগে চেয়ার-এ বসিনি, তাঁদের সামনে আগে হাঁটিনি, তাঁদের আগে কথা বলিনি, কোনো প্রতিবাদ করিনি, সমালোচনা করিনি, নিজের কণ্ঠ-স্বর তাঁদের কণ্ঠ-স্বরের চেয়ে উচ্চগ্রামে তুলিনি।
শুধু একটা কাজই করিনি তাহলো, হাত কচ্লাইনি, মোসাহেবি করিনি, তৈলচর্চা করিনি। কিছু অসুবিধা হয়েছে সাময়িক কিন্তু শেষ হাসি আমিই হেসেছি।
আমি দীর্ঘাঙ্গী না। আমার মেরুদণ্ডের দৈর্ঘ্যও অনেক লম্বা না। কিন্তু জীবনে এই শক্ত মেরুদণ্ড কোথাও বাঁকা করিনি। জীবনে দুই জায়গায় শুধু মেরুদণ্ড বাঁকা করেছি: রুকু এবং সেজদায়। এবং করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
আমি বলতে চেয়েছি: প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকলেও তা গড়ে নেওয়া যায় যদি ভিতরে জ্বালা থাকে, অস্থিরতা থাকে অর্জন করার । বিজ্ঞানের কিছু কঠিন বিষয়ের ব্যাতিক্রম ছাড়া যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদির ক্ষেত্রে জীবনের শুরু থেকেই তৈরী হতে হয়। তবে যে কোনো বয়সেই ব্যাতিক্রম হওয়া যায় সাধনার মাধ্যমে। তিল তিল করে নিজেকে তৈরী করতে হয়, অসীম ধৈর্য্য নিয়ে লেগে থাকতে হয়। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মেরুদন্ড বাঁকা না করেও আত্মমর্যাদা, আত্মসম্মান ঠিক রেখেও পেশাজীবনের শীর্ষে ওঠা যায়।
এসবের নিখুঁত বর্ণনা আছে এই বইতে। পেশাগত বিষয়ের পাশাপাশি আমি প্রতিদিনের পড়ার ও চর্চা করার বিষয়গুলোকে সাহিত্য , দর্শণ, ধর্ম, বিজ্ঞান, সংগীত, ইতিহাস ইত্যাদি বিষয়ের প্রাসঙ্গিক অনুষঙ্গ এনে নিরস বিষয়কে সরস করার চেষ্টা করেছি।
প্রতিটা মাসে এক একটা গুণাবলির বিস্তারিত আলোচনা আছে সারা বৎসরের দিনগুলোতে। প্রতিদিনের জন্য একটা একটা লেখা। পড়তে পড়তে ৩৬৫ দিন শেষ হয়ে যাবে। পরের বৎসরের জানুয়ারি থেকে আবার শুরু করবেন এবং বর্ণিত গুণাবলির আমলের পরিপূর্ণতা, পরিপক্কতা আনার চেষ্টা করবেন। ক্রমাগত পড়তে থাকবেন।
দেখবেন আপনি ঠিকই একসময় আপনার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেন। সাথে সাথে তৈরী হবে অনেক নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের যা আজকের দিনে দুর্লভ হয়ে উঠছে এবং আমরা সামাজিক ভাবে ক্রমেই নিচে নামছি।
এক কোথায় এই বইকে "প্রফেশনাল-ধর্মগ্রন্থ" বলা যেতে পারে। যে ভাষাতেই লেখা হউক না কেন এবং যে শব্দের চয়ন ও বিন্যাসে লেখা হউক না কেন জীবনের উন্নতির মূলসূত্র গুলো কম বেশি এগুলোই।
আপনারদের জীবনের কল্যান কামনা করছি।