21 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
প্রোডাক্টিভ মুসলিম,
ঘুরে দাঁড়াও
“মুক্ত বাতাসের খোঁজে” বইটির ভূমিকাঃ
কতো তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গিয়েছি...
এই তো কয়েকদিন আগেই হাফ প্যান্ট পড়া দশ বছরের কো..
TK. 623TK. 486 You Save TK. 137 (22%)
Product Specification & Summary
প্রোডাক্টিভ মুসলিম,
ঘুরে দাঁড়াও
“মুক্ত বাতাসের খোঁজে” বইটির ভূমিকাঃ
কতো তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গিয়েছি...
এই তো কয়েকদিন আগেই হাফ প্যান্ট পড়া দশ বছরের কোঁকড়া চুলের এক বালক। তার স্কুল মাঠের কড়াই গাছের নিচে বসে নদীর দিকে উদাস হয়ে তাকিয়ে থাকতো পায়ের কাছে আছড়ে পড়তো দলবেঁধে অনেক দূর পাড়ি দেওয়া ঢেউ। মাঝে মাঝে সে ঢেউ গোনার ব্যর্থ চেষ্টা করত। কিন্তু খেই হারিয়ে ফেলতো একটু পরেই। আবার উদাস হয়ে তাকাতো নদীর দিকে। কখনোবা আকাশের দিকে। দুপুরের বৃষ্টিভেজা রোদে মাঝে মাঝে একটা সোনালী ডানার চিল উড়ে বেড়াতো করুন সুরে ডেকে উঠতো হঠাৎ হঠাৎ। বালক আরো উদাস হয়ে যেত।
কখনো কখনো বালক স্কুল থেকে ঘরে ফেরার সময় অবাক হয়ে দেখাতো আকাশ কালো করে বৃষ্টি আসছে। বালকের ছাতা ছিলো না। কাজেই সেই ঝুম বৃষ্টির কবল থেকে বই খাতা বাঁচাতে একহাতে স্যান্ডেল আর একহাতে বই নিয়ে ভোঁ দৌড় দিত। মাঝে মাঝে রাস্তার কাদায় পিছলে পড়ে যেত। কাঁদা মাখা ভুত হয়ে ফিরতো বাসায়। মা ব্যর্থ চেষ্টা করতো আঁচল দিয়ে মাথা মুছে দেয়ার। মায়ের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে বালক দৌড়ে লাফিয়ে পড়তে পুকুরে। পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে বৃষ্টির ফোঁটা অদ্ভুত শব্দ করত। বালক অবাক হয়ে শুনতো সে শব্দ। দীর্ঘসময় পুকুরে দাপাদাপি করার পর চোখ লাল করে সে ফিরতো মা আঁচল দিয়ে মাথা মুছে দিতো শান্ত ছেলের মতো পুঁটি মাছের ভাজি দিয়ে গোগ্রাসে গরম ধোঁয়া উঠা ভাত গিলে, গল্পের বই নিয়ে কাঁথামুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়তো বালক।
টিনের চালে তখন একটানা বৃষ্টি পড়তো ।
বাইরে সজনে গাছটা উড়ে চলে যেতে চাইতো হাওয়ার সাথে । কলাগাছের পাতায় চলতো বাতাসের দাপাদাপি। বালক গল্পের বইয়ে ডুবে যেত। দুষ্টু বাবার কবল। থেকে নৌকা নিয়ে পালাচ্ছে হাকল বেরি ফিন... সে কি নিরাপদে পালাতে পারবে? ওর বাবা ওকে ধরে ফেলবে? টান টান উত্তেজনা!
একসময় ঘুমিয়ে পড়তো বালক ঘুমের ঘোরেই ভয় পেত বিদ্যুৎচমকের শব্দে। মা মাঝে মধ্যে পাশে এসে শুয়ে থাকতো ঘুমের ঘোরে সে জড়িয়ে ধরতো তার মায়ের গলা- এই পৃথিবীতে তার সবচেয়ে আপন মানুষটিকে......
ফ্লাপের কথাঃ
আর কতকাল পথ ভুল করে ভুল রাস্তায় হেঁটে বেড়াবে উদ্ভান্তের মতো?
আর কতকাল? তারচেয়ে বরং এসো খোলা জানালায়৷ এক ঝলক ঠাণ্ডা বাতাস এসে শীতল পরশ বুলিয়ে দেবে।
কোসার স্নিগ্ধ মুখটাতে৷ বাইরে চেয়ে দেখো ঝকঝকে রোদে ভেসে যাচ্ছে চারিদিক, উঠোনকোণের পেয়ারা গাছটার পাতার আড়ালে
মিষ্টি সুরে গান গেয়ে যাচ্ছে বুলবুলি, দূরের ঐ নীল আকাশে ডানা মেলেছে সোনালি ডানার চিল;
হাতছানি দিয়ে ডাকছে তোমায়,
যেন তুমি বেরিয়ে পড়ো
মুক্ত বাতাসের খোঁজে...
‘প্রোডাক্টিভ মুসলিম’ একটি আত্মোন্নয়নমূলক বই। বইটির পাতায় পাতায় মুখর হয়ে উঠেছে—আত্ম-জাগরণ, আত্মনির্মাণ ও আত্মবিকাশের বিভিন্ন দিক নিয়ে জীবনঘনিষ্ট আলোচনার আসর। এতে আছে স্রষ্টার দেওয়া অমূল্য উপহার—আমাদের মেধা সময় ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগঠন, ক্যারিয়ার উন্নয়ন এবং সামাজসেবামূলক কর্মোদ্যোগের মধ্য দিয়ে নিজেকে এক নতুন পৃথিবীর স্বপ্নদ্রষ্টা এবং একনিষ্ঠ কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার বাস্তবধর্মী কর্মকৌশল।
লেখক কুরআনের রত্নভান্ডার, নবিজির সুন্নাহর মুক্তো-প্রবাল থেকে শুরু করে Dr John Ratey, Graham Allcott সহ আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান এবং ব্যবসায়িক কর্মকৌশলের অসাধারণ সব তথ্য ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন বইটিতে।
ইসলামের শাশ্বত শিক্ষা এবং আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের মিশেলে রচিত এই বইটিতে যে প্রোডাক্টিভ লাইফ-স্টাইলের মডেল তুলে ধরা হয়েছে, তা একজন মানুষকে পার্থিব জীবনের সাফল্যের শেকড় ছুঁয়ে দিয়ে নিজেকে পরকালীন জীবনের শিখরে পৌঁছে দিতে এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হয়ে পথ দেখাবে।
বিশেষভাবে এই বইটি থেকে জানতে পারবেন : *
কীভাবে স্পিরিচুয়াল প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধি করবেন *
কীভাবে ঘুম, পুষ্টি ও ফিটনেস নিয়ন্ত্রণ করবেন *
কীভাবে ব্যক্তিগত জীবনের বাইরে সামাজিক পরিমণ্ডলেও প্রোডাক্টিভ হয়ে উঠবেন *
কীভাবে ব্যক্তিজীবন, সামজিক জীবন, ক্যারিয়ার এবং দ্বীন-দুনিয়ার মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করে চলবেন *
মানসিক বিচ্ছিন্নতা এড়িয়ে কীভাবে আপন লক্ষ্যে ফোকাস ঠিক রাখবেন *
কীভাবে প্রোডাক্টিভ হ্যাবিট গড়ে তুলবেন এবং ইফেক্টিভ রুটিন তৈরি করবেন *
কীভাবে সময়ের সদ্ব্যবহার করে দুনিয়ার পাশাপাশি পরকালের জীবনকে সমৃদ্ধ করবেন *
রমাদানে কী করে প্রোডাক্টিভিটি বজায় রাখবেন ইত্যাদিসহ আরও অনেক কিছু।
এই বইটি কি কেবল মুসলিমদের জন্য প্রযোজ্য? *
বইটি বিশেষত মুসলিমদের উদ্দেশ্য করে লেখা হলেও মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে এ থেকে উপকৃত হতে পারবে। এই বইয়ে আলোচিত—আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কী? মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব; মানুষ, সৃষ্টিকর্তা এবং মহাবিশ্বের আন্তঃসম্পর্ক; মানবজাতির প্রতি আমাদের দায়বোধ; পৃথিবীর কাছে ঋণস্বীকার—এসব কমন ভ্যালুজ আমাদের প্রত্যেকের জানা দরকার, যেন বৃহত্তর মানবিক স্বার্থে একটি বসবাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ সবুজ পৃথিবী গড়ে তুলতে আমরা একে অপরের পরিপূরক হয়ে কাজ করতে পারি। *
অন্যান্য প্রোডাক্টিভিটি বইয়ের তুলনায় এর বিশেষত্ব কী? *
‘দেহের একটি আত্মা আছে—বিষয়টি এমন নয়, আসলে আমাদের ‘আত্মার জন্য এ-দেহটি। সৃষ্টি হিসেবে মানুষ যতটা-না দৈহিক, তার চেয়ে বেশি আত্মিক। পশ্চিমা ধ্যানধ্যারণার আলোকে প্রোডাক্টিভিটি কিংবা পার্সোনাল ডেভেলপমেন্টের ওপর লিখিত যাবতীয় বইয়ের প্রধান দুর্বলতা—এই আত্মা ও আধ্যাত্মিকতার মতো একটি শাশ্বত সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া । *
আমাদের দেহ দুর্বল, ভঙ্গুর ও পঁচনশীল। পক্ষান্তরে আমাদের আত্মা হলো শাশ্বত। তাই আত্মা ও আধ্যাত্মিকতাকে অস্বীকার করে যে কর্মকৌশল দাঁড় করানো হয়, তাতে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু সফলতা অর্জিত হলেও, জীবনের বৃহত্তর সফলতার প্রশ্নে তা চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। এ জন্য মানবসত্তার পূর্ণ বিকাশ এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থায়ী সফলতার জন্য দরকার এমন এক অত্যুজ্জ্বল জীবনদৃষ্টি ও কর্মকৌশল, যা একজন মানুষকে দুনিয়াতে প্রেডাক্টিভ হওয়ার পাশাপাশি অনন্তকালের পরকালীন জীবনের ব্যাপারেও প্রোডাক্টিভ হতে সাহায্য করতে পারে। এই এখানটাতে প্রোডাক্টিভ মুসলিম বইটি এই ইন্ডাস্ট্রির পশ্চিমাধারার আর-সব বই থেকে আলাদা এবং এক অপার্থিব স্বকীয়তায় উজ্জ্বল।
অনেক আঁধার পেরিয়ে
স্বপ্ন ঠিক করে দেয় ওরা...
বড়সড় একটা ফ্ল্যাট, সিক্স ডিজিট স্যালারির জব, সুন্দরী বউ, গ্যারাজে লেইটেস্ট মডেলের গাড়ি, বছরে দুবার ট্যুর অথবা সাদা চামড়ার দেশের গ্রিন কার্ড... ব্যস তুমি সফল।
সততা? আদর্শ? মূল্যবোধ?
ধুর, ভুলে যাও ওসব! ছলচাতুরির চাদর গায়ে জড়িয়ে নাও নির্দ্বিধায়, দুরভিসন্ধির খেলা খেলে যাও শর্তহীনভাবে। সফল হতেই হবে নাহলে তুমি পিষ্ট হয়ে যাবে জন-অরণ্যের-সামাজিকতার-চাপে। তোমার জীবন হবে ষোলো আনাই বৃথা।
আমরা ভুল করি। স্বপ্ন-সুখ ছোঁয়ার মাতাল নেশায় মত্ত হয়ে আর সবকিছুকে দূরে সরিয়ে গৃহপালিত জীবনযাপন করে পার করে দিই মাটির পৃথিবীর এই এক জীবন। সুখ পাই না। যারা লক্ষ্যে পৌঁছে তারাও অবাক হয়ে দেখে সেখানেও সুখ নেই। সুখ তা হলে কোথায়?
কিছু কিছু মানুষ থাকেন ব্যতিক্রম। সুখ, সফলতা, স্বপ্নের আলেয়াকে ঠিকই তারা চিনতে পারেন। স্বপ্ন-বেচা চোরাকারবারিদের মধুর কথাও ভোলাতে পারে না তাদের। ঠিকই তারা চিনে নেন চিরসুখের, চিরশান্তির, চিরসফলতার সেই পথ। সুখ সন্ধানীদের ভালোবেসে চিনিয়ে দেন...
পথিক, সুখ এই পথে, এ পথেই আছে...
কী সেই পথ ?