9 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
"হিরোশিমার মেয়ে" বইয়ের ভূমিকা থেকে নেওয়া: হিরােশিমা ও নাগাসাকি দুটি অবিস্মরণীয় নাম। মানব ইতিহাসে কারণে-অকারণে নির্মমতার দৃষ্টান্ত বিরল নয়। তবু এই দুটি শহর-ধ্বংসের তুলনা..
TK. 260TK. 192 You Save TK. 68 (26%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
"হিরোশিমার মেয়ে" বইয়ের ভূমিকা থেকে নেওয়া: হিরােশিমা ও নাগাসাকি দুটি অবিস্মরণীয় নাম। মানব ইতিহাসে কারণে-অকারণে নির্মমতার দৃষ্টান্ত বিরল নয়। তবু এই দুটি শহর-ধ্বংসের তুলনা মেলা ভার। সবচেয়ে বড় কথা, ওর মূলে উত্তেজনা, উন্মাদনা বা নিছক সামরিক প্রয়ােজন ছিল না। জাপানের পরাজয় ও আত্মসমর্পণ এমনিতেই বেশি দিন টিকিয়ে রাখা যেত না। তাছাড়া, কোনাে নির্জন জায়গায় আনবিক বােমার ক্ষমতা দেখিয়ে জাপানকে বশ করার সম্ভাবনাও ছিল। সে চেষ্টাও করা হয়নি।
আণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে জটিল কার্যকারণ নিহিত ছিল। যুদ্ধের শেষের দিকে জাপানের রাষ্ট্রনায়করা দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন। সম্রাট ও তােগাের নেতৃত্বে এক দল বুঝেছিলেন আর যুদ্ধ চালানাে অসম্ভব। তারা বাধ্য হয়ে শান্তির পক্ষে ঝুঁকেছিলেন। অন্যদল, প্রধান সেনাপতিদের নেতৃত্বে, পরাজয় স্বীকার করতে কিছুতেই রাজি ছিলেন না। মিত্রশক্তির পােস্টম প্রস্তাব এদের কাছে গ্রহণযােগ্য মনে হয়নি। ১৯৪৭-এর ২ আগস্ট জাপান এক পালটা প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ ছাড়া আর কিছু মিত্রশক্তি শুনতে রাজি ছিল না। ৬ আগস্ট, সকাল সােয়া আটটায় বােমা পড়ে। উপন্যাসে এ ঘটনার বর্ণনা মন থেকে মােছার মতাে নয়। হিরােশিমা ছিল হােম দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড় বন্দর, একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক, সামরিক, শিল্প ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। তার জনসংখ্যা ছিল সিকি মিলিয়নের মতাে। সেখানে বােমা পড়ার পরও যুদ্ধের পক্ষপাতীরা পরাজয় মানতে অস্বীকার করে। তারা ঘটনার গুরুত্ব কমিয়ে দেখাতে চায়। তারপর আসে নাগাসাকির ট্র্যাজেডি। এবার শান্তিপক্ষের দল আর ইতস্তত করল না। সম্রাট নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ ঘােষণা করলেন। সেনাবাহিনীর বিদ্রোহের প্রচেষ্টা দমন করা হলাে। জাপানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও মিত্রশক্তির প্রতিক্রিয়া নিঃসন্দেহে আণবিক বােমা ফেলার অন্তরালে কাজ করেছিল। তাছাড়া বােমা ফেলে যুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ করা গেছে, স্বদেশের সৈনিকদের জীবন বাঁচানাে হয়েছে, মার্কিন কংগ্রেস ও জনগণের সামনে এমন যুক্তি হাজির করা ছিল প্রশাসনের লক্ষ্য। আণবিক গবেষণার বিপুল ব্যয় এভাবে সার্থক প্রমাণ করা হয়েছিল।
আরেকটি বড় কারণ ছিল রাশিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন আগে আগে সােভিয়েত রাশিয়াকে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করতে অনুরােধ করেছিল। কিন্তু সত্যই যখন রাশিয়া সে কাজ করল, তখন তার মিত্ররা বিশেষত ওয়াশিংটন খুশি
বিশ্বাসযােগ্যভাবে সুমিকো ও পাড়ার কয়েকটি শিশু তখন পুতুল নিয়ে ঝগড়া করছিল। পুতুল খেলার জগৎ থেকে সুমিকো মুহুর্তে চলে যায় জীবন-মৃত্যুর জগতে। সুমিকোর চরিত্র আগেই আলােচিত হয়েছে। অন্য চরিত্রগুলােও ছাঁচে ঢালা নয়। প্রত্যেকের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ও বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। মার্কিন-জাপানি দালাল ও গুপ্তচর নিশিরা চিত্রিত হয়েছে তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গের রেখায়।
পঞ্চাশের দশকে, “হিরােশিমার মেয়ে”-এর স্বচ্ছন্দ বাংলা অনুবাদ করে ইলা মিত্র ধন্যবাদের পাত্রী হয়েছিলেন। আজ আবার আণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধ-প্রতিবাদে সারা বিশ্বের মানুষ সােচ্চার হয়ে উঠেছে। দুই বৃহৎ শক্তির দ্বন্দ্ব পৃথিবীর ওপর টেনে এনেছে তৃতীয় মহাযুদ্ধের ছায়া। আজ এই উপন্যাস আমাদের নতুন করে ভাবাবে।