"বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
একটু বুঝ হবার পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযােদ্ধা সম্পর্কে জানার আগ্রহ ছিল ভীষণ রকমের। টিভি দেখে, পত্রিকা ..
TK. 200TK. 150 You Save TK. 50 (25%)
Product Specification & Summary
"বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
একটু বুঝ হবার পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযােদ্ধা সম্পর্কে জানার আগ্রহ ছিল ভীষণ রকমের। টিভি দেখে, পত্রিকা পড়ে, বই পড়ে যা জেনেছি, তাতে মন ভরতনা কখনােই। সবসময়ই ইচ্ছে হত, যদি মুক্তিযােদ্ধাদের সাথেই গল্প করতে পারতাম স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে! যদি তাঁদের কারও মুখ থেকেই শুনতে পারতাম সেই দিনগুলাের কাহিনী! এই ইচ্ছে একদিন আল্লাহ রাব্দুল আলামিন ঠিকই পূরণ করেন। ৫-১-২০২০ তারিখে আমার সেজো বােনের শ্বশুরবাড়ি নরসিংদীর চরসিন্দুতে যাই। ওখানে বােনের মামাশ্বশুর মুক্তিযােদ্ধা গ্রুপ কমান্ডার সাঈদুজ্জামান (ফরহাদ) মামা, আর দুই মুক্তিযােদ্ধা ভাশুর আওলাদ হােসেন ও সাইদুর রহমান (আনার) এর দেখা মেলে। তাদের মুখ থেকে অনেক কিছু শােনার সুযােগ হল। সেই কথাগুলাে যেন আমার মতাে আগ্রহীরা পড়ার সুযােগ পায়, সেজন্যেই এ বইটি লেখার চিন্তা আসে মাথায়। তাঁদের কাহিনীর সাথে সাথে আমার পরিবারের মুক্তিযুদ্ধকালীন বেশ কিছু স্মৃতিও এই বইয়ে তুলে ধরেছি। আমার বাবা সরকারি কো-অপারেটিভ সােসাইটির এসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার ছিলেন। ১৪ই ডিসেম্বরে পাকিস্তানিদের বুদ্ধিজীবিদের তালিকায় আমার বাবার নাম (আলহাজ্ব মােঃ হাবিব উল্লাহ শেখ) নাকি ছিল। বইটি লিখতে যেয়ে আমার অনেক অনেক কিছু জানা হয়েছে। আশা করি আপনাদেরও অনেক কিছুই জানা হবে বইটি পড়ে। ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। ভালাে লাগলে, তাও জানাবেন দয়া করে।
ছােটবেলা থেকেই আমার মধ্যে ছিল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তীব্র আগ্রহ। সেটা নিয়ে আরও কথা বলবার আগে আমার পরিবারের কিছু গল্প করে নিই।
আমার বাবা আলহাজ্ব মােঃ হাবিব উল্লাহ শেখ একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন, পদবী ছিল এসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার অব কোঅপারেটিভ সােসাইটি। আর আমার মা ছিলেন একজন সুগৃহিনী। তিনি পীর বংশের একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে নারী ছিলেন, যেখানে মেয়েদের জন্যে বাড়ির বাইরে যাওয়া একদম নিষিদ্ধ ছিল, প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশােনার তাে প্রশ্নই আসে না। তারপরও আমার মা প্রচণ্ড উৎসুক ছিলেন পড়াশােনায়, এবং বাড়িতেই অত্যন্ত পর্দার মধ্যে পড়াশােনা করেছেন যদ্দুর সম্ভব। তাঁর বই পড়ার প্রতি তীব্র একটা ঝোক ছিল। খবরের কাগজটাও প্রতিদিন না পড়লে চলতই না। এগুলাের পাশাপাশি মা-বাবা দুজনেই প্রচুর ইসলামিক বই পড়তেন। এসব কারণে আমাদের ঘরে প্রচুর বই ছিল। মা-বাবার অভ্যাসটা থেকেই হয়ত পেয়েছিলাম আমরাও ভাইবােনেরা সবাই-ই কমবেশি পড়তাম নানান রকমের বই। সেই বইয়ের তালিকাতে প্রচুর বই থাকলেও পুরােপুরি একজন মুক্তিযােদ্ধার মুখ থেকে শােনার আমার প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। কখনও মিটবে কিনা তাও জানতাম না। মুক্তিযােদ্ধারা কেমন ছিলেন? কোথায় ছিলেন? কীভাবে খাওয়া-দাওয়া করতেন? কীভাবে গেলেন যুদ্ধে? কোথায় ট্রেনিং দেওয়া হতাে? কী ট্রেনিং দেওয়া হতাে? এত অস্ত্র উনারা কোথায় পেলেন? -এরকম হাজারও প্রশ্নে কিলবিল করত মন। কিন্তু কখনও জানার সুযােগ হয়নি। মুক্তিযােদ্ধাদের মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগ্রহটা আমার মনের সংগােপনে রয়ে গেলাে।