3 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
আমাদের দেশে একসময় যৌথ পরিবারের খুব কদর ছিল। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে এই পরিবারগুলো ছোট থেকে একদমই ক্ষুদ্র হয়ে যাচ্ছে। এর নানাবিধ কারণ অবশ্য আছে। এই পরিবারে যিনি কর্তা থাকতেন তিনি..
TK. 160TK. 138 You Save TK. 22 (14%)
Get eBook Version
US $2.02
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
আমাদের দেশে একসময় যৌথ পরিবারের খুব কদর ছিল। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে এই পরিবারগুলো ছোট থেকে একদমই ক্ষুদ্র হয়ে যাচ্ছে। এর নানাবিধ কারণ অবশ্য আছে। এই পরিবারে যিনি কর্তা থাকতেন তিনি অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে তার দায়িত্ব পালন করতেন। আর অন্যরা নিজেদের রয়েল ফ্যামিলির বা খানদানি ফ্যামিলির লোক মনে করে ভালো পোশাক-আশাক পরে ঘুরে বেড়াতেন। আর বাড়িতে প্রায় দিনই কারণে-অকারণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাম করে বা বিভিন্ন আত্মীয়র উছিলায় একটা উৎসবের আয়োজন চলত। যার ফলে এই পরিবারের ব্যয় বহনকারী কর্তাব্যক্তিরা মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে চাপের মধ্যে থাকতেন। পরিবারের ঐক্য ও শান্তি রক্ষার স্বার্থে অনেকেরই নিজের স্ত্রী ও সন্তানের সাথে মানসিক দূরত্ব হয়ে যেত। তারা সংসারে অধিক রোজগার করে বা অধিক পরিশ্রম করলেও শেষ পর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের কাছে অবহেলার শিকার হতেন।
আর যারা খানদানি ফ্যামিলির ভাব নিয়ে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক কাজ না করে পরিবারের জন্য কাজ না করে গায়ে সুগন্ধি মেখে ঘুরে বেড়াতেন তাদেরই অভিযোগ বেশি থাকে সেই মহানুভব কর্তার ওপর। অথচ নিজের মা-বাবা ভাই-বোনদের সুখের জন্য জীবনের সমস্ত আয়-রোজগার সুখ-আহ্লাদ নীরবে বিসর্জন দিয়েছেন। একসময় তার এই ত্যাগের কথা, অবদানের কথা কেউই স্বীকার করে না। অনেকেই ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সংসারের দায়িত্ব নিয়ে ছোট ভাইদের প্রতিষ্ঠা করেন, বোনদের ভালো ঘরে বহু টাকা-পয়সা খরচ করে বিয়ে দেন।
তিন পুরুষের আত্মীয়র সাথে যোগাযোগ রাখেন। পরিবারের সদস্যদের সম্মান সবার ওপরে রাখেন। কিন্তু সেই আপন ভাই-বোনদের কাছ থেকে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত হন। শেষ বয়সে তারা খুব অসহায় হয়ে পড়েন পরিবারের কাছে। এ বিষয়ে বাড়ির মহিলাদের মধ্যেও তর্কের সৃষ্টি হয়। বাড়ির কাজ ও রান্না নিয়ে জায়ে জায়ে ঝগড়া করেন, রেষারেষি করেন। এতে ধীরে ধীরে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অনাস্থা প্রকাশ হয়, অবিশ্বাসের বীজ বৃদ্ধি পায়। শেষ পরিণতিতে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হয় এবং পরিবারে ভাঙন দেখা দেয়।
তা ছাড়া দিনে দিনে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, আস্থার অভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ হচ্ছে। রক্তের বন্ধন ছিন্ন হচ্ছে। রক্তের টান কমে যাচ্ছে। মানুষ একা থাকতে পছন্দ করছে। সবার ওপরে আজকের যুগের মেয়েরা স্বামী-সন্তান নিয়ে একা থাকতে পছন্দ করছে। এরা সংসারের কাজকর্মের চেয়ে সেজেগুজে থাকতে পছন্দ করে। সারাক্ষণ টিভি চ্যানেলের সিরিয়াল ও ফেসবুক নিয়ে থাকতে পছন্দ করে। সবার ওপরে বর্তমানে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আর সেই অবস্থায় নেই, একার রোজগারে পরিবারের সবার ব্যয় বহন সম্ভব না। জীবনযাত্রার ব্যয় বহুগুণে বেড়ে গেছে। একা বাঁচতেই নাভিশ্বাস উঠছে। সব মিলিয়ে যৌথ পরিবার প্রথা হারিয়ে যাচ্ছে। একসময়ের দেশের ঐতিহ্যবাহী এই যৌথ পরিবার ব্যবস্থা যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
যৌথ ফ্যামিলির সুখ-দুঃখ আর পারিবারিক সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে আমার এই লেখা। চরিত্রের কোনো কথায় বা বক্তব্যে কেউ কোনো ধরনের কষ্ট পেয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।