রোল নং ১৭ দোলা মিত্র কোয়েল তালুকদারের চতুর্থ গল্প গ্রন্থ। কোয়েল গল্প বলার মানুষ। কোয়েল গল্প লেখার মানুষ। সে দুশতাধিক ছোটগল্পের রচয়িতা। তার রচিত গল্পগুলির মধ্যে আছে মানবজীবনের ছোট ..
TK. 300TK. 225 You Save TK. 75 (25%)
Product Specification & Summary
রোল নং ১৭ দোলা মিত্র কোয়েল তালুকদারের চতুর্থ গল্প গ্রন্থ। কোয়েল গল্প বলার মানুষ। কোয়েল গল্প লেখার মানুষ। সে দুশতাধিক ছোটগল্পের রচয়িতা। তার রচিত গল্পগুলির মধ্যে আছে মানবজীবনের ছোট বড় দুঃখ ব্যথা বেদনার কথা, আছে প্রকৃতির মধ্যে বিচরণশীল মানুষের অন্তর্গত পরিচয়ের কথা। কল্পনা ও সৌন্দর্যের অনুভূতিতে রহস্যময় জগতের কথাও আছে। এই গ্রন্থে সন্ধ্যার মেঘমল্লার গল্পে এমনই শ্বাশত বাংলার চিরায়ত প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। গল্পে গত শতাব্দীর ত্রিশ দশকের বাংলা ও পল্লী সমাজ জীবনের ছবি প্রতিফলিত হয়েছে। গল্পটি পড়লে মনে হয় যেন বিভূতিভূষণ পড়ছি।
একটু উদ্ধৃত করছি – ‘তারপর জীবনে কত কিছু পেলাম। কত ডিগ্রি নিলাম। কত বড় কর্তাব্যক্তি হলাম। কত বড় ঘরের মেয়েকে বিয়ে করলাম। কত শিক্ষিত সে। কত দেশ ঘুরেছি। কত মানুষ দেখেছি। কত মৌন নদী। কত পর্বতের গাত্রে দেখেছি কত লতাগুল্ম, পাহাড়ি ফুল। কত পূর্ণিমা রাত্রি উপভোগ করেছি। সবকিছুর ভিতর একজন অনাদৃত, একজন উপেক্ষিত, একজন দলিত বিধবা মেয়ের মুখ মনে পড়েছে। কত রাশি রাশি আনন্দের মাঝে, সেই কবেকার কতদূরের এক পল্লীবালা অপার্থিব অশ্রু ঝরিয়ে গেছে আমার জীবনের সকল আনন্দ বেদনার উপর। এখনো কী সন্ধ্যার মেঘমল্লারে সেই অনাদরের সন্ধ্যামণি ফুলটি অশ্রু জলে ভেজে?’
এই বাংলার অকিঞ্চিৎকর গাছপালা, ফলমূল, পশু পাখি, নদী বিধৌত পলিমাটি ও পথের উপরের ধুলোর উপকরণ দিয়ে আপন চৈতন্যের অলৌকিক শক্তি মাধুর্য মিশিয়ে কোয়েল গল্প লিখে গেছে জীবন শিল্পীর মতো। সৃষ্টি করেছেন তার নিজস্ব সাহিত্যলোক। প্রেয়সী নারীর প্রেম প্রাকৃতিক পুষ্প-পত্রের মতোই সহজ ও স্বয়ংপুষ্ট। জীবন জটিলতায় ভারাক্রান্ত এক আনমনা লেখক সে। স্বপ্নলোকের ভারহীন স্বাদ আর অধরা সুরভিতে সমগ্র চেতনাকে অপূর্ব শিল্পশৈলীতে এঁকে গেছেন তার প্রতিটি গল্পে। কোয়েল যেন বাংলা ছোটগল্পের উজ্জ্বল শিল্পদূত।
আমাদের এই যানজটের শহরে যখন গাড়ির কর্কশ হর্ন বাজে, শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ হয় মানুষ, তখন আপনি ধ্যানমগ্ন হয়ে পড়তে পারেন কোয়েলের গল্প। দেখতে পাবেন সেখানে − পদ্মা যমুনার কলকলিত ছলাৎছলাৎ জল, নীল আকাশ, উদাস চরাচর, মৌন বটবৃক্ষ। শুনতে পাবেন ভাটিয়ালী গান, ভোরের পাখিদের কিচিরমিচির। আর গন্ধে আকুল হবেন ঘাটফুল ও সোনাল ফুলের সুবাসে। বাংলার মাঠ, নদী, নিরালা বন প্রান্তরের সুমুখ জ্যোৎস্না রাত্রির যে মায়ারূপ কোয়েল অঙ্কিত করেছে তা আসলেই বিস্ময়কর! কোয়েলের লেখা গল্প পাহাড়, নদী, অরণ্যের নির্জনতায় দিকচক্রবালে দীর্ঘ নীল রেখার মতো স্বপ্ন আনে মনে। প্রকৃতি ও মানুষ যেন একই গ্রন্থিতে সৃষ্টি। তার সব গল্পের কথার মালা গাঁথা- একই সুতোয় বাঁধা যেন।
সাধারণভাবে তাঁর ভাষা বহুলাংশে কবিতাধর্মী বা কাব্যিক। কোয়েলের লেখায় কখনও অতি রোমান্টিক, কখনও আবার বিরহ বিষণ্ণতার ধূসরতা লক্ষণীয়। তার গল্পে বেদনার্ত প্রেমের রূপ পাওয়া যায়। তাই তিনি কল্যাণ কামনায় নারীকে সর্বোচ্চভাবে সম্মান দেখিয়েছে।
কোয়েল তালুকদারের ছোটগল্প পাঠককে আবিষ্ট করে রাখে। ওর লেখা পড়ার পর পাঠক চলে যায় এক স্বপ্নীল জগতে। আর এই কারণেই প্রকৃতিপ্রেমী এই লেখক বাংলা কথাসাহিত্যে একটি আলাদা স্থান করে নেবে, এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।’ - আফজালুল বাসার
জনপ্রিয় কথাশিল্পী কোয়েল তালুকদারের ৫ম গ্রন্থ “রোল নং ১৭ দোলা মিত্র” একটি গল্পগ্রন্থ। ১৫৪ পৃষ্ঠায় মোট ২৮টি গল্পের সম্ভার।