জীবন হচ্ছে একটি যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে প্রতিনিয়ত মানুষকে করতে হয় বেঁচে থাকার সংগ্রাম। এ সংগ্রামে মানুষের চাওয়া-পাওয়ার অঙ্কটা কখনো ক্যালকুলেটর দিয়ে হিসেব করার মতো নয়। জীবনজগতে সকল মান..
TK. 200TK. 150 You Save TK. 50 (25%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Related Products
Product Specification & Summary
জীবন হচ্ছে একটি যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে প্রতিনিয়ত মানুষকে করতে হয় বেঁচে থাকার সংগ্রাম। এ সংগ্রামে মানুষের চাওয়া-পাওয়ার অঙ্কটা কখনো ক্যালকুলেটর দিয়ে হিসেব করার মতো নয়। জীবনজগতে সকল মানুষের মনোরাজ্যে বাসা বাঁধে হাজারো ইচ্ছে, জাগে হাজারো রঙিন স্বপ্ন। সে ইচ্ছে ও স্বপ্নগুলো কারো জীবনে আলোর মুখ দেখতে পেলেও অনেকের ইচ্ছে ও স্বপ্নগুলো অঙ্কুরেই ভেঙে যায়। আলালের ঘরের দুলালি নদী মেয়েটিও স্বপ্ন বুনেছিল বিয়ের পর সুখে স্বামীর সংসার করার। বিয়ে তো হলো, বিবাহিত জীবনে সুখে আলোর বিচ্ছুরণও হলো। কিন্তু বিয়ের মাস যেতে না যেতেই নিজের স্বামী সাগর এক ভয়ানক ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হলে নিভে যায় সাগরের জীবনবাতি। নদী হয়ে গেল বিধবা, সুখের সংসারে নিমিষেই নেমে এলো ঘনকালো হতাশার আঁধার।
স্বামী হারানোর বেদনাকে সঙ্গী করেই একমাত্র শাশুড়ি মা রহিমা বানুর সাথে জীবনের বাকি দিনগুলো কাটাতে থাকে নদী। দুইবউ-শ্বাশুড়ীর জীবন-জীবিকার উৎস ছিল সাগরের রেখে যাওয়া একটি ফলবাগান। ভঙ্গুর সংসারেও তেড়ে আসে আব্দুর রাজ্জাক সরদার নামে এক অশুভ দখলদার মাস্তান। যে মাস্তান একদিন তার দুষ্টু দলবল নিয়ে শান্তশিষ্ট ধৈর্যের মূর্তপ্রতীক নদীর প্রিয় ফলবাগানে প্রবেশ করে, প্রস্তাব দেয় তাকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে গ্রহণ করার, অন্যথায় শেষ অবলম্বন ফলবাগানটি সরদারের নামে লিখে দেওয়ার। দুটো প্রস্তাবই নদী ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। তাতে হিংসের আগুনে জ্বলে উঠে সরদার, সেদিন সরদার ফিরে গেলেও কোনো একরাতে সে তার দলবলের মাধ্যমে নদীকে তার বাড়ি থেকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেদিন নদীকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গিয়েছিল তার শাশুড়িমা। অপহরণকারীদের লাঠিরাঘাতে তার স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলে।
অন্যদিকে ফলবাগানের জমির দলিল সরদারের নামে লিখে দেওয়ার জন্য অপহরণের পর থেকে নদীর উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। সব নির্যাতন সহ্য করেও নদী দলিলে সই না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকে। সরদার এবার কৌশলের আশ্রয় নেয়, বলে- দলিলে স্বাক্ষর করলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে, না করলে তার শাশুড়িমাকে আস্তানায় ধরে এনে নির্যাতন চালানো হবে। শাশুড়িমাকে সরদারের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষার স্বার্থে নদী দলিলটি তার নামে লিখে দেয় এবং তাকে ছেড়ে দিতে বলে, কিন্তু সরদার নদীকে ছেড়ে দিতে অসম্মতি জানায়। একপর্যায়ে সরদারকে আহত করে তার আস্তানা থেকে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে পরিচিত এক শিক্ষকের বাড়িতে। যে শিক্ষকের মাধ্যমে মানুষের উপকারে নিয়োজিত একটি মানবাধিকার সংস্থার সহযোগিতায় আদালতে দায়ের করে একটি মামলা। চেষ্টা চালায় তার ফলবাগানের দলিলটি ফিরে পাওয়ার জন্য। এদিকে আদালতে যাতে সাক্ষ্য দিতে না পারে, সেজন্য নদীর শাশুড়িমাকেও অপহরণ করে। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার শেষ ভরসা পুলিশবাহিনী অভিযান চালিয়ে নদীর শ্বাশুড়িমাকে উদ্ধার করে আদালতে হাজির করে। কিন্তু সেদিন সরদারের বাহিনীর আঘাতে স্মৃতি হারিয়ে ফেলায় আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ঘটনাই যেন মনে পড়ে না তার, চিনতে পারছে না তার ছেলের বিধবা স্ত্রী নদীকেও। এ সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে সরদার পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাম যুক্তি ছুঁড়ে দেয় বিচারকের বিবেকের কাছে, চেষ্টা চালায় সরদারকে আইনের হাত থেকে বাঁচাতে। সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্ব-সংঘাতই পৃথিবীর ইতিহাস। শেষ পর্যন্ত আদালতে তর্কযুদ্ধে বিজয়ের ইতিহাসে কার নামাঙ্কিত হলো? সত্যাশ্রয়ী বিধবা নারী নদীর? নাকি জবরদখলকারী মিথ্যাবাদী সরদারের? জানতে হলে পড়–ন সম্পূর্ণ কাল্পনিক নির্ভর শিহরিত বেদনা-বিধুর ঘটনায় ভরপুর বই ‘আহত গোলাপের গল্প’।
মহিউদ্দীন চৌধুরী
বন্দর, চট্টগ্রাম।
১০ ডিসেম্বর ২০২০