2 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
কবি কাব্যক্ষুধাকে ধারণ করে শিল্পের সুষমায় বিমূর্তকে মূর্তরূপে বিকশিত করেন। কবিতাকে শিল্প করে তোলে উপমা। জীবনানন্দের চিত্রকল্পগুলো শিল্প ও জীবনের সৌন্দর্যকে চিত্রিত করেছে। উপমার..
TK. 600TK. 450 You Save TK. 150 (25%)
In Stock (only 2 copies left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
কবি কাব্যক্ষুধাকে ধারণ করে শিল্পের সুষমায় বিমূর্তকে মূর্তরূপে বিকশিত করেন। কবিতাকে শিল্প করে তোলে উপমা। জীবনানন্দের চিত্রকল্পগুলো শিল্প ও জীবনের সৌন্দর্যকে চিত্রিত করেছে। উপমার সযতন বিন্যাসে নজরুলের কবিতার চরণগুলো হয়ে উঠে অপার্থিব। পদ্য বা কবিতার আলাদা নামকরণের ব্যাখাও দিয়েছেন পণ্ডিতজনেরা। পদ্য হলো গদ্যের বিপরীত। যে রচনায় নিয়মিত ছন্দ আছে, প্রতি লাইনে মাত্রার পুনরাবৃত্তি থাকে সে ধরনের লেখা পদ্য। পদ্য হলো অগভীর, হালকা যা চিরন্তন নয়। অন্যদিকে কবিতা হলো গভীর, রহস্যময় ও চিরন্তন। ভাষা, ছন্দ, অলংকার সবকিছু মিলেই কবিতা হয়ে ওঠে। সৌন্দর্যই হৃদয়কে আন্দোলিত করে, বিমোহিত করে। প্রকৃতিতে ছড়ানো ছিটানো নানা সৌন্দর্য মুগ্ধ করে, তদ্রুপ অলঙ্কার সাহিত্যে বিশেষ করে কবিতায় সৌন্দর্যকে তুলে ধরে। কবিতার অলঙ্কারের ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয়; যার মাধ্যমে একটি কবিতা অলঙ্কারের আচ্ছাদনে আচ্ছাদিত হয়ে তার শিল্পিত রূপ এবং নান্দনিকতাকে ফুটিয়ে তুলে সার্বজনীন হয়ে উঠে। রবীন্দ্রনাথের কবিতা কিংবা গানের ভেতর দিয়ে তাঁর সৃষ্টির ভুবন দেখবার চেষ্টাই তাঁকে চেনবার বা জানবার পথ। রস বোধের মধ্যে দিয়ে, অন্তরঙ্গে প্রবেশ করা আর রূপের রেখার মধ্য দিয়ে তাঁর বহির্জগৎকে
অবলোকন করা সম্ভব। শিল্প সাহিত্যের নন্দন তাত্ত্বিক বিচার-বিবেচনার ধারাটি প্রাচীন। বিশেষত নিসর্গ কখনো হয়ে ওঠে সৃষ্টির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রেরণা। মানবসভ্যতার বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় শিল্প ও সাহিত্য সৃষ্টিতে উভয় ক্ষেত্রেই কথাগুলো সত্য। যেমন সাহিত্যে তেমনি স্থাপত্যে-ভাস্কর্যে বা চিত্রকলায়। তবে এক্ষেত্রে সাহিত্যসৃষ্টিই প্রধান বিবেচ্য বিষয়। একটি কবিতাকে শক্তিশালীভাবে উপস্থাপন করার মধ্যেই প্রকৃত সার্থকতা নিহিত। নতুন নতুন শব্দ তৈরি করা সৃজনশীল কাজ। প্রতিটি ভাষা অন্য ভাষা থেকে আলাদা। ব্যবহারিকভাবে ‘শব্দ’ই প্রতিটি ভাষার
অপরিহার্য উপাদান। শব্দ যথার্থভাবে উপযুক্তভাবে
শাব্দিক হয়ে ওঠা, বহনমাধুর্যতা ধারণ করা,
অপরাপর শব্দ পরম্পরার সাথে সংযুক্তিকরণের ক্ষমতা নিয়ে বিকশিত হওয়া। শিল্প সর্বসাধারণের জন্য নয়। তদ্রুপ কবিতাও সর্ব সাধারণের জন্য নয়। একজন কবি প্রকৃতপক্ষে একজন শিল্পী। তিনি তাঁর চিন্তা, চেতনা, অভিজ্ঞতা, আবেগ, শিল্পিত ভাষায়, শিল্পিত
পরিবেশের মধ্য দিয়ে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করেন। তাই তা গ্রহণের সামর্থ সব পাঠকের থাকার কথা নয়। তবে পৃথিবীর যে কোনো ভাষার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সহজবোধ্যতা বা প্রাঞ্জল্য। কবিতা প্রতিবেদন রচনা নয়; বরং পরোক্ষ ভঙ্গি কবিতার গভীর বিষয়ের আঙিনায় প্রবেশ করে আচ্ছাদন তৈরি করে। ফলে কবির চিন্তাপ্রসূত বিষয় এর স্বরূপ পাঠকের কাছে অবিকৃত অবস্থায় নাও পৌঁছতে পারে। কবির চিন্তাঘনিষ্ঠ মূল বিষয়ের পরিপার্শ্ব দিয়ে পাঠক হাঁটাচলাও করতে পারেন। পাঠক কোনো কবিতা পড়ে ভালো লাগার অনুভূতিতে উদ্বেলিত হতে পারেন। অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা, মনীষা, অধ্যয়ন ও কল্পনার মিথস্ক্রিয়ায় সৃজিত হয় শ্রেষ্ঠ সাহিত্য। পাঠ ও যাপিত-জীবনের অভিজ্ঞতা যাঁকে প্রাজ্ঞ করে তুলেছে, কল্পনা যাঁকে করেছে কবি, তাঁর কবিতায় বুদ্ধির দীপ্তি এবং মনীষার ছাপ থাকবেই। কবি বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও কল্পনার সমন্বয়ক। কবি ইতিহাস-ভূগোল-রাজনীতি-অর্থনীতি-ধর্ম ও সমাজ সচেতন। আধুনিক যুগের জটিলতাকে পাশ কাটিয়ে সময়ের জটিল আবর্তন শনাক্ত করাও কঠিন। অন্তরের চিন্তা-চেতনা যখন ভাবানুভূতির বর্ণবৈচিত্রে যথোপযুক্ত শব্দবিন্যাসে সুবিন্যস্ত চিত্রে ও ছন্দিত রূপে উপস্থাপিত হয় তখনই হয়ে ওঠে কবিতা। কালের বিবর্তনে, অতিক্রান্ত সময়ের সন্ধিক্ষণে উৎকৃষ্ট কবিতা নির্মাণের জন্য বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে প্রায় সব ভাষার বিশিষ্ট কবিরা তৈরি করেছেন সুনির্দিষ্ট ও সুবিন্যস্ত নিয়ম। বাংলা কবিতাকেও অন্যান্য ভাষায় রচিত কবিতার মতো বাঁধা হয়েছে ছন্দের শৃঙ্খলে। আর এক পর্যায়ে ভেঙেও দেয়া হয়েছে সেই শৃঙ্খল, কিন্তু ভাঙার সেই প্রক্রিয়াও তৈরী করেছে নতুন ধ্বনি মাধুর্য।