145 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
শব্দ হিসেবে উদ্যোক্তা, ব্যবসা, এন্ট্রাপ্রেনার, উদ্যোক্তাগিরি বা এন্ট্রাপ্রেনারশিপ এগুলো খুব ট্রেন্ডি বা চালু। ডিজিটাল যুগ যে এখন ডিজিটাল ডিজরাপশন হয়ে উঠছে তারও অন্যতম কারণ এই শব্দগ..
TK. 670TK. 503 You Save TK. 167 (25%)
In Stock (only 8 copies left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
শব্দ হিসেবে উদ্যোক্তা, ব্যবসা, এন্ট্রাপ্রেনার, উদ্যোক্তাগিরি বা এন্ট্রাপ্রেনারশিপ এগুলো খুব ট্রেন্ডি বা চালু। ডিজিটাল যুগ যে এখন ডিজিটাল ডিজরাপশন হয়ে উঠছে তারও অন্যতম কারণ এই শব্দগুলো। টেক্সট, ভিডিও, পডকাস্ট, ইন্টারভিউ, টক শো, ইনফোগ্রাফিকস, মোটিভেশনাল গুরুদের সেমিনার, সোশ্যাল মিডিয়া, মেইনস্ট্রিম মিডিয়া সর্বত্র বেশ প্রচলন এসব শব্দের। চাহিদাও আছে বেশ। এক অদ্ভুত মোহময়তা, এ যেন আলাদিনের এক জাদুর প্রদীপ। শুধু ঘষা দেওয়ার বাকি। একবার দৈত্য আসলেই হলো। এরপর কেবল সুখ আর সুখ। উদ্যোক্তা হয়ে ব্যবসা করে জীবনের বাকিটা কাটিয়ে দেওয়া যাবে আরামেই।
সাদা চোখে দুনিয়ার বেশিরভাগ শীর্ষ ব্যবসায়ীদের দেখে, তাঁদের লাইফস্টাইল, তাঁদের প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখে যে কারও ইচ্ছে হতেই পারে ব্যবসা করার। তবে বাইরে থেকে দেখা আর সত্যিই ব্যবসা করে বড় হওয়া এই দুইয়ের মাঝে যে দুস্তর ব্যবধান সেটা কোনো মিডিয়াতে সচারাচর দেখা যায় না।
যারা এই বিষয়ক এক্টিভিজম করেন তাঁদেরও বড় একটা অংশ কেবল এক্টিভিজমই করেন, নিজে ব্যাবসা করে এসে সবাইকে মোটিভেশন দিচ্ছেন এমন মানুষের চেয়ে আদতে অ-ব্যবসায়ী এক্টিভিস্টের সংখ্যা ঢের বেশি। অন্তত এদেশে।
এই প্রক্রিয়ার বেশ কিছু সমস্যা আছে।
প্রথমত : নিজে ব্যবসা না করার ফলে গোটা প্রক্রিয়া সম্পর্কে ইনাদের জ্ঞান থাকে ভাসাভাসা।
দ্বিতীয়ত : ইনারা কেবল সফলতা ফোকাস করেন। সফলতার পেছনে যেই পরিশ্রম এবং ঝুঁকি সেটাতে নজর কম। ফলে শ্রোতা/দর্শক/পাঠক বিভ্রান্ত হন।
তৃতীয়ত : এরা অনেকক্ষেত্রে ধার করে কথা বলেন। মানে অন্য কোনো বিদেশি এক্সপার্ট এর কথা শুনে বলেন। কিন্তু ভিনদেশি কোনো এক্সপার্টের ফর্মুলা আমাদের স্থানীয় সংস্কৃতি, রুচি, পরিস্থিতি, ক্রয়ভ্যাসের দেশে কতটা কার্যকর হবে সেই সম্পর্কে নিরীক্ষা করে কথা বলার চর্চা বিরল। ফলে আশঙ্কা প্রবল যে পরামর্শটা বুমেরাং হবে।
চর্তুথত : আমাদের দেশে কিছু সফলতার উদাহরণ দেখিয়েই পার পাওয়া যায়। তেমন কোনো ফলোআপ না থাকায় বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশে অসংখ্য নতুন নতুন তরুণদের সামনে প্রতিনিয়ত কথা বলে নিজের চমৎকারিত্ব জাহিরের অবারিত সুযোগে ব্যর্থতার কেস স্টাডি নিয়ে কে বা মাথা ঘামায়। ফলে ভুল থেকে বাকিদের শিক্ষা নেওয়া হয়ে উঠে না।
খুঁজলে এই প্রচলিত ট্রেন্ডের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতিবাচক পয়েন্ট পাঠকও পাবেন নিশ্চয়ই।
এবার এই বই নিয়ে বলি। লেখক মুবির চৌধুরী নিজে দেশ সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠা নটরডেম কলেজ ও আইবিএ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন দেশের শীর্ষ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনে। এরপরও নিজের স্বপ্নের পিছনে ছুটতে শ্রমে ঘামে গড়া কর্পোরেট ক্যারিয়ার বিসর্জন দিতে দ্বিধা করেননি।
উনার সাথে কথা বলে এবং অল্পবিস্তর কাজের অভিজ্ঞতায় আমার মনে হয়েছে উনি খুব মেথডিকাল। আশা করি পাঠকরা সেটা বই পড়তে গেলে বুঝবেন। ব্যাবসার আগে তিনি তা নিয়ে যথেষ্ট পড়াশুনা করেছেন। উনার কাজের অভিজ্ঞতাও এতে একটা ভূমিকা রেখেছে। ভিনদেশি এক্সপার্টদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এদেশীয় সংস্কৃতিতে কিভাবে প্রয়োগ করা যাবে সেই সাধারণজ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তাও তার আছে যথেষ্ট। এর কিছুই তাঁকে ব্যবসার শুরুরদিকে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা অর্জন থেকে রক্ষা করতে পারেনি। অবশ্য তিনি সেটা নিজ দক্ষতার কাটিয়েও উঠেছেন এবং তারপর সফলতার সাথে নিজের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
'চাকরি ছেড়ে ব্যবসা' বইতে তিনি যে তথ্য ও জ্ঞান আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন সেটা একজন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীকে অন্তত শুরুর দিকে দুই বছর এগিয়ে রাখবে তাতে আমি নিঃসন্দেহ। প্রচলিত ট্রেন্ডের বাইরে এসে নিজে ব্যবসা করে, সফল হয়ে সেই অভিজ্ঞতা, মেধা দিয়ে সবাইকে সহযোগিতা করার চেষ্টা খুব সহজলভ্য নয়।
আমি নিশ্চিত এই বিষয়ে বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় এই মানের একটি বই আগ্রহী পাঠকের প্রয়োজন পূরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হতে যাচ্ছে।