স্মৃতিচারণ নিয়ে জাবর কাটা অনেকটা নেশার মতো। আর সেটা যদি হয় নিজের জীবনের সেরা সময়ের স্মৃতি তাহলে তো কথাই নেই। সেই অর্থে নিজেকে স্মৃতি কাতর একজন লেখক হিসাবে পরিচয় দেয়া যেতে পারে। এই ..
TK. 250TK. 215 You Save TK. 35 (14%)
Get eBook Version
US $2.51
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
স্মৃতিচারণ নিয়ে জাবর কাটা অনেকটা নেশার মতো। আর সেটা যদি হয় নিজের জীবনের সেরা সময়ের স্মৃতি তাহলে তো কথাই নেই। সেই অর্থে নিজেকে স্মৃতি কাতর একজন লেখক হিসাবে পরিচয় দেয়া যেতে পারে। এই গ্রন্থের সমুদয় ঘটনাপ্রবাহ তিনটি মৌলিক বিষয়কে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে।
প্রথমত, যৌবনের উচ্ছ্বসিত সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলোর যোগসূত্রের মাধ্যমে একজন তরুণের রঙিন দিনগুলো কিভাবে মন ও মননের আবেগগুলোর অনুত্তর প্রকাশ ঘটায় তা স্বাবলীলভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
দ্বিতীয়ত, পৃথিবীর বৃহৎ মিঠা পানির একক ‘ওয়াটার বডি’ হাওরাঞ্চল। বিশেষ করে ঋতুভেদে হাওরের সৌন্দর্য তুলনা করা হয় বর্ষায় অস্ট্রেলিয়া শুকনায় নিউজিল্যান্ড। এর রূপ-সৌষ্ঠব-মাধুর্য স্বচক্ষে না দেখলে উপলব্ধিতেও আসবে না প্রকৃতির ঐশ্বর্য। হাওরের হৃদয়কাড়া সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছেন বিখ্যাত চীনা পর্যটক হিউয়েন সাং থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান সব পর্যটকরা। সর্বশেষ আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা হাওরকে আখ্যায়িত করেছেন ‘উড়াল পঙ্খির দেশ’ হিসেবে। ওই সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পাখি শিকারে এসেছিলেন বাংলার ছোট লাট লর্ড কারমাইকেল ১৯১২ সালে নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরীর হাওরে। এই অঞ্চলের মানুষদের সহজ সরল বিবেকবোধ, তাদের আতিথেয়তা এবং স্বল্প আয়ের দুর্দশাগ্রস্থ মানুষগুলোর অন্যের প্রতি দরদী হওয়ার অনেক উদাহরন উঠে এসেছে এই বইয়ে। ভবিষ্যতে বইটিকে হাওরের সামাজিক মূল্যবোধগুলোর এক ভান্ডার হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে।
তৃতীয়ত, আর্ন্তজাতিক বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা “কনসার্ন” এর হাওর অঞ্চলের কার্যক্রম এর সুনির্দিষ্ট কিছু বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। পৃথিবীর বহু দেশের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে “কনসার্ন” অনেক প্রতিকূলতার মাঝে হাওর অঞ্চলে কাজ শুরু করে। একজন মানবতাবাদী উন্নয়ন কর্মী হিসাবে মানুষের সাথে কাজ করার বিচিত্র রকমের অভিজ্ঞতাগুলো অকৃত্রিমভাবে গ্রন্থটিতে হুবহু উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি।
এই গ্রন্থে আমার স্মৃতিচারণ ভ্রমণের শুরু বাংলাদেশের উত্তরের সীমান্ত জেলা ঠাকুরগাঁও হতে। স্মৃতিচারণের মাধ্যমে লেখক হয়ে উঠার পেছনে অর্ন্তনিহিত একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। রকমারি স্মৃতিগুলোকে মলাটবদ্ধ করে রাখার প্রাণান্ত ইচ্ছা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে এরকম একটি বই পাঠকের হাতে তুলে দেয়ার জন্য। ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে গিয়ে গল্পগুলোতে কিছু রসবোধক ঘটনাক্রম বর্ণিত হয়েছে যা পাঠকের বাড়তি আগ্রহের উদ্রেক ঘটাবে।
স্মৃতিচারণ বিষয়ক বই মানেই প্রচুর তথ্য ও ঘটনার সমাহার। চেষ্টা করেছি বইটিকে তথ্য-ভারাক্রান্ত না করতে। আবার প্রয়োজনে কখনো কখনো ঘটনার আড়ালের ঘটনা লিখতেও কার্পণ্য করিনি।
স্মৃতি আর কাহিনীর উপস্থাপনা এবং ভাষাগত দিক দিয়ে বইটিকে যথাসম্ভব নির্ভুল করার চেষ্টায় আমি ত্রুটি করিনি। কিন্তু তারপরও এতে ভুল থাকা অসম্ভব নয়। আশা করি পাঠকরা তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সব মিলিয়ে বইটি কেমন হয়েছে, তা বিচারের ভারও রইল সুপ্রিয় পাঠককূলের উপর।