3 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
লন্ডনে বাস করবার সময় তিনি চার্চ সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন নিয়ে ককেখানি পুস্তিকা এবং ১৭০৯ সালে তিনি আয়ারল্যান্ডে ফিরে আসেন কিন্তু পরের বছরেই হেমন্তে তাঁকে আবার লন্ডনে ফেরত পাঠান হয়। এই ..
TK. 240TK. 180 You Save TK. 60 (25%)
Get eBook Version
US $2.45
Product Specification & Summary
লন্ডনে বাস করবার সময় তিনি চার্চ সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন নিয়ে ককেখানি পুস্তিকা এবং ১৭০৯ সালে তিনি আয়ারল্যান্ডে ফিরে আসেন কিন্তু পরের বছরেই হেমন্তে তাঁকে আবার লন্ডনে ফেরত পাঠান হয়। এই দ্বিতীয়বার লন্ডনে থাকবার সময় তিনি প্রবল রাজনীতির আবর্তে জড়িয়ে পড়েন এবং রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ গ্রহণ করেন।
প্রথমে তিনি ছিলেন ‘হুইগ’ দলে পরে ‘টোরি’ দলে চলে গিয়ে ‘একজামিনার’ পত্রিকায় (ভাইকাউন্ট বলিংব্রুক প্রতিষ্ঠিত সাময়িক পত্রিকা) প্রবন্ধ এবং কয়েকটি পুস্তিকা যথা ‘দি কন্ডাক্ট অফ দি অ্যালিজ’ (১৭১১) এবং ‘দি পাবলিক স্পিরিট অফ দি হুইগম’ মারফত টোরিদলকে আক্রমণ করতে থাকেন। প্রথমোক্ত পুস্তিকাটি রাজনৈতিক প্রচার কৌশলের মধ্যে সর্বকালের তীক্ষèতম পুস্তিকা হিসেবে স্বীকৃত। জনমতের উপর পুস্তিকাটি প্রবল প্রভাব বিস্তার করে ফলে স্পেনের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত যুদ্ধ থেকে ইংল্যান্ড সরে আসে এবং ১৭১৩ সালে ইন্ট্রেক্ট শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
খ্রিস্টান ধর্ম সম্বন্ধে অগাধ পা-িত্য এবং সরকারের অনুকূলে প্রচুর কাজ করা সত্ত্বেও সুইফট কিন্তু ইংল্যান্ডের ডীন পদবী এমন কি বিশপের মর্যাদা লাভ করতে পারেন নি। যদিও তা পাওয়া তাঁর পক্ষে উচিত ছিল। যা হোক ১৭১৩ সালে তাঁকে কিছু স্বীকৃতি দেওয়া হয়, লর্ড অক্সফোর্ডের চেষ্টায় তাঁকে ডাবলিনের সেন্ট প্যাট্রিকস চার্চের ডীন-এর মর্যাদা দেওয়া হয়। পরের বছর কুইন অ্যান-এর মৃত্যু হয় এবং হুইগ দল মন্ত্রীত্ব গঠন করে। এর অর্থ লন্ডনে সুইফটের রাজনৈতিক প্রভাবের অবসান এবং সেই সঙ্গে তাঁর সকল আশা আকাক্সক্ষা মৃত্যু। ইংল্যান্ড ছিল তাঁর আধ্যাত্ম ও চিন্তা শক্তি বিকাশের বাসভুমি আর আয়ারল্যান্ডে ফিরে আসা মানে নির্বাসনে যাওয়া।
ইংল্যান্ডে থাকাকালিন সুইফট এসথার জনসনকে পরপর অনেক চিঠি লিখেছিলেন অধিকাংশই দিনলিপি হিসেবে। এই চিলি লেখার কাল ছিল ১৭১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৭১৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। এই চিঠিগুলো বই আকারে ‘জর্নাল টু স্টেলা’ নামে প্রকাশিত হয়ে রসিক সমাজের প্রশংসা অর্জন করেছিল। ইংল্যান্ডে থাকবার সময় সুইফট আর একটি যুবতীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। তারও প্রথম নাম এসথার, এসথার ভ্যানো¤্রাই (ভ্যানেসা)। এই যুবতীটিকেও সুইফট অনেক চিঠি লিখেছিল এবং ‘ক্যাডিনাম অ্যান্ড ভ্যানেসা’ নামে একটি কবিতাও লিখেছিলেন। ‘ভ্যানেসা’ প্রবলভাবে সুইফটের প্রেমে পড়েছিল এবং তাঁর সঙ্গে আয়ারল্যান্ডেও গিয়েছিল। ‘স্টেলা’ এবং ‘ভ্যানেসা’ ডাবলিনে বা কাছেই বাস করত কিন্তু পরস্পরের অস্তিত্ব জানত না। এই দুই মহিলার সঙ্গে সুইফটের সম্পর্ক সাধারণ বন্ধুত্ব অপেক্ষা প্রগাঢ় ছিল তবু সুইফট নাকি একে প্রেম বলতেন না। সুইফট সম্ভবত ‘স্টেলা’কে গোপনে বিবাহ করেছিলেন কিন্তু তার সঙ্গে কখনো একত্রে বাস করেন নি। ১৭২৩ সালে ‘ভ্যানেসা’ মারা যায় আর ‘স্টেলা’ পাঁচ বছর পরে।
সেন্ট প্যাট্রিকের ডীন হিসেবে এবং কয়েকজন বন্ধু পরিবত হয়ে সুইফট তাঁর অবসর জীবন যাপন করতেন। আয়ারলান্ডের বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে সুইফট তাঁর প্রচুর ক্ষমতা ব্যয় করেছিলেন যার ফলে অসাধারণ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তাঁর লিখিত “ড্রেপিয়ারস লেটার” আয়ারল্যান্ডে ‘উডস হাফ পেন্স’-এর প্রচলন বন্ধ করেছিল যার জন্যে তিনি জাতীয় বীরের সম্মান অর্জন করেছিলেন। এরপর থেকে আইরিশদের কাছে তিনি শুধুই ‘দি ডীন’ নামে পরিচিত হতেন।
‘গালিভারস্ ট্রাভেলস্’ প্রকাশের জন্যে তিনি ১৭২৬ সালে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন যা তিনি পাঁচ বছর আগে লিখিতে আরম্ভ করেছিলেন। এই একমাত্র বই যা লিখে তিনি প্রকাশকের কাছ থেকে অর্থ পেয়েছিলেন (২০০ পাইন্ড)। বই প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সাফল্য। ১৭২৭ সালে তিনি আবার ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন। পোপের কাছে থাকতেন, আগেও তাই থাকতেন। পরের বছরে স্টেলা মারা যায়।
এরপর কয়েক বছর সুইফটের জীবন অপরিবর্তিতভাবে চলতে থাকে। অনেক কবিতা লিখতেন এবং চার্চ ও আইরিশ সমস্যা নিয়ে প্রচারপত্রও লিখতেন। ইংল্যান্ডে বন্ধুদের নিয়মিত চিঠি লিখতেন এবং তাদের গ্রামের বাড়িতে যাওয়া আসাও করতেন। ক্রমশ দৈহিক পীড়ায় তিনি জর্জরিত হয়ে পড়েন ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, অসামাজিক হয়ে পড়েন, অদ্ভুত সব চিন্তা করতেন এবং মাঝে মাঝে দপ করে রেগে উঠতেন। তাঁর ভয় ছিল তিনি বুঝি উন্মাদ হয়ে যাবেন এবং তাই হয়েছিলেন, তবে তখন তাঁর শরীর একেবারেই ভেঙে পড়েছিল।