6 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
অদÑভূতÑবিয়ে
পাংখাদার বিয়েতে বরযাত্রী যাবো বলে রেডি হচ্ছিলাম। তখনই
মামদোটা এসে হাজির। ওকে দেখে রেগে বললাম,
-‘কী রে লুঙ্গি পরে আসছিস কেন? তোকে না বললাম পাঞ্জাবি
পরে আসতে! পাং..
TK. 160TK. 120 You Save TK. 40 (25%)
Get eBook Version
US $2.02
In Stock (only 2 copies left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
অদÑভূতÑবিয়ে
পাংখাদার বিয়েতে বরযাত্রী যাবো বলে রেডি হচ্ছিলাম। তখনই
মামদোটা এসে হাজির। ওকে দেখে রেগে বললাম,
-‘কী রে লুঙ্গি পরে আসছিস কেন? তোকে না বললাম পাঞ্জাবি
পরে আসতে! পাংখাদার বিয়েতে যাবো।’
মামদো বলল,
-‘যার বিয়ে সে যদি লুঙ্গি পরে তাহলে আমি পরলে দোষ
কোথায়?’
ওর কথা শুনে অবাক হয়ে বললাম,
-‘কী বলছিস! পাংখাদা লুঙ্গি পরে বিয়ে করতে যাবে!’
-‘হ্যাঁ, সবাই রেডি। আপনি তাড়াতাড়ি আসেন।’
আমি দৌড়ে পাংখাদার বাড়ি গিয়ে দেখি সে লুঙ্গি আর ফতুয়া
পরে আছে। আমি অবাক হয়ে বললাম,
-পাংখাদা আপনি এসব পরে বিয়ে করতে যাবেন!
-হ্যাঁ রে, সব বিয়েতে জামাইরা তো শেরওয়ানি পরে যায়,
আমি লুঙ্গি পরে যাবো। আমার বিয়ে আমি করবো, সমাজের
নিয়ম কেন মানবো!
-তো আপনি কনের বাড়ি যাবেন কীসে করে? কোনো
সাজানো গাড়ি তো দেখছি না?
পাংখাদা তখন উঠানের দিকে ইশারা করলো। সেদিকে
তাকিয়ে দেখি সুপারি গাছের একটা পাতার খোল কয়েকটা ফুল
দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আমি কোনোরকমে বললাম,
-পাংখাদা আপনি এই সুপারির খোলে বসে বিয়েতে যাবেন?
-হ্যাঁ। সবাই তো গাড়ি নিয়েই যায়, আমি এই সুপারির
খোলে বসে যাবো। চারজন লোক ঠিক করেছি। ওরা টেনে নিয়ে
যাবে আমাকে। আমার বিয়ে আমি করবো, সমাজের নিয়ম কেন
মানবো!
আমি আর কিছু বললাম না। পাংখাদা সুপারির খোলে উঠে
বসলো। চারজন লোক সেটা টানতে লাগলো। আমরা সবাই তার
পিছনে হেঁটে কনের বাড়িতে গেলাম।
বিয়ের গেইটের সামনে গিয়ে পাংখাদা খোল থেকে নামলো।
অনেক ছেলেমেয়েরা গেইটে দাঁ ড়িয়ে আছে। টাকা না দিলে
বরযাত্রীকে ঢুকতে দিবে না। আমি বললাম, পাংখাদা, টাকা দিয়ে
দেন।
পাংখাদা উত্তরে বলল, চারপাশটা ভালো করে দেখ।
আমি তাকিয়ে দেখি আমরা যে রাস্তার উপর দাঁ ড়িয়ে আছি
তার দুইপাশেই পুকুর। এই রাস্তা ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা দিয়ে
ভেতরে ঢোকা যাবে না।
আমি ঘুরে পাংখাদাকে কিছু বলতে গিয়ে দেখি সে নেই।
ডানপাশের পুকুরে তাকিয়ে দেখি পাংখাদা লুঙ্গি গোজ দিয়ে পু কুরে
নেমে সাঁ তরাচ্ছে। আমি চেঁচিয়ে বললাম,
-আরে, পাংখাদা কী করছেন!
অদ ভূত ৯ ১০ অদ ভূত
পাংখাদাও চেঁচিয়ে উত্তর দিল,
-সবাই তো হেঁটে বিয়ে বাড়িতে যায়, আমি সাঁ তরে যাবো।
আমার বিয়ে আমি করবো, সমাজের নিয়ম কেন মানবো!
মামদো বলল,
-ভাই, তাকে তার মতো বিয়ে করতে দেন। আসেন আমরা
ভেতরে ঢুকি।
আমি ধমক দিয়ে বললাম,
-তুই তো ভূত। মানুষের সমাজের নিয়মকানুন তো জানিস
না। কনে এই বিষয়গুলো জানতে পারলে কী মনে করবে!
দৌড়ে পুকুর পাড় গেলাম। পাংখাদা উঠে এসেছে পুকুর পার
হয়ে। হাতে বড়ো একটা পাঙ্গাস মাছ। আমাকে দেখে হেসে
বলল,
-দেখ পু কুর থেকে কত বড়ো মাছ ধরেছি।’
আমি অবাক হয়ে বললাম,
-পাংখাদা বিয়ের দিন পাঙ্গাস মাছ দিয়ে কী করবেন!!
-জামাইরা তো বিয়ের দিন, আস্ত খাসি বা গরুর রান খায়।
আমি খাবো এই আস্ত পাঙ্গাস মাছের ফ্রাই। আমার বিয়ে আমি
করবো, সমাজের নিয়ম কেন মানবো!
-পাংখাদা কী যে বলছেন! কিছুই তো ...
আমার কথা না শুনেই পাংখাদা চলে গেল।
ভিড়ের মাঝে মামদোকে খুঁজতে লাগলাম। হঠাৎ উপরে
তাকিয়ে দেখি মামদো ঘরের চালে বসে কাঁচা পাঙ্গাস মাছ খাচ্ছে।
আমি চেঁচিয়ে বললাম,
-তোকে না একদিন বলছি কাঁ চা মাছ খাবি না।
মামদো হেসে বলল,
-আমার দাওয়াত আমি খাবো, সমাজের নিয়ম কেন মানবো!
আমি কী বলল বুঝতেই পারলাম না। চারদিকে কী যে হচ্ছে
মাথায় ঢুকছে না।
অতঃপর বিয়ে বাড়ির প্যান্ডেলে গিয়ে দেখি পাংখাদা লুঙ্গি
আর ফতুয়া পরে আস্ত পাঙ্গাস মাছের ফ্রাই খাচ্ছে। এসব দেখে
কনে বিয়েতে রাজি হবে কিনা সেটাই ভাবছি। তবে ভিড়ের জন্য
পাংখাদার কাছে যেতে পারলাম না।
যাই হোক, কিছুক্ষণ পর কনে আসলো। কনেকে দেখে আমার
চোখ যেন কপালে উঠে গেল।
সে শাড়ির উপর লুঙ্গি পরেছে।
আমি কোনোমতে তার কাছে গিয়ে বললাম, আপনিও!!
কনে বলল, “আমার বিয়ে আমি করবো, সমাজের নিয়ম কেন
মানবো!”
তখন মামদো এসে আমার কাঁ ধে হাত রেখে বলল, ভাই!!
আমি ওর দিকে তাকিয়েই বুঝলাম ও কী বলতে চায়।
অতঃপর দুইজন একসাথে চেঁচিয়ে বললাম, অদ ভূত!!