89 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
তুর্কি অধ্যাপক দারোন অ্যাসেমোগলু এবং অর্থনীতিবিদ জেমস রবিনসন হওয়াই নেশান্স ফেইল গ্রন্থে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, ওপরের কোনো তত্ত্বই এককভাবে উন্নয়ন বা অবনমনের ..
TK. 750TK. 622 You Save TK. 128 (17%)
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
তুর্কি অধ্যাপক দারোন অ্যাসেমোগলু এবং অর্থনীতিবিদ জেমস রবিনসন হওয়াই নেশান্স ফেইল গ্রন্থে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, ওপরের কোনো তত্ত্বই এককভাবে উন্নয়ন বা অবনমনের কারণ হতে পারে না। অ্যাসেমোগলুর মতে, প্রধান যে কারণকে প্রতিটা ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রতিটা রাষ্ট্রের উন্নয়ন বা অবনমনের কারণ হিসেবে দেখানো যেতে পারে, তা হচ্ছে অন্তরভুক্তিমূলক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সক্ষমতায় বা এর অভাবে। অ্যাসেমোগলুর পুরো বইকে, তিনটি শব্দে সামারি করা যায় তা হচ্ছে, ইন্সটিটিউশান, ইনস্টিটিউশন, ইনস্টিটিউশন।
তাঁর মতে, যখনই কোন রাষ্ট্রের প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তরভুক্তিমূলক হয় এবং তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিকসংশ্লিষ্টতা থাকে ঠিক তখনই কোনো সমাজ বা রাষ্ট্র দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের ধারায় পা দিতে পারে। কারণ, একমাত্র মেধাভিত্তিক অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোই রাজনীতিবিদ বা আমলাদের হাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুণ্ঠন ঠেকাতে পারে।
তাঁর মতে, একমাত্র অন্তরভুক্তি প্রতিষ্ঠানই নাগরিকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, বিচারব্যবস্থাসহ সবকিছুতেই অধিকার এবং সুসম সুযোগ নিশ্চিত করতে পারে। যার ফলে অসম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুধু কিছু এলিটের হাতে সম্পদ পুঞ্জিভূত হতে পারে না বা নাগরিক অধিকার নির্দিষ্ট কিছু এলিটের ইচ্ছায় কুক্ষিগত হয় না। এতে দীর্ঘ মেয়াদে হলেও অর্থনীতিতে একটা সমতা তৈরি হয় কিংবা মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটে।br
তিনি দেখিয়েছেন, আফ্রিকার অনেক দেশে এখন আর সাদাদের রাজত্ব না থাকলেও অল্প কিছু ক্ষমতাশীল ব্যক্তি রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে সম্পদ লুটে নিচ্ছে-যাদের কারও গায়ের রংই সাদা নয়।
তিনি দেখিয়েছেন, এই ধরনের লুটেরা প্রতিষ্ঠানময় দেশগুলো দুষ্টচক্রে আবর্তিত হয়। কিছু এলিট তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে লুট করে সম্পদশালী হয়ে ওঠে। পরবর্তী সময়ে এই লুণ্ঠিত সম্পদ ব্যবহার করে কিছু সুনির্দিষ্ট গ্রুপকে প্রমোশন, কন্ট্রাক্ট, ক্ষমতা, দুর্নীতি ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা দিতে থাকে অথবা অস্ত্রের জোরে যেকোনো মূল্যে তাদের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখে। ফলে মুক্ত সমাজ, সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র এবং উদ্যোক্তা অর্থনীতি তৈরির সব সক্ষমতা এরা বিনষ্ট করে।
ইতিহাস থেকে দেখা যায়, যেসব দেশে এই ধরনের চোষণমুখী বা লুটেরা প্রতিষ্ঠান প্রাধান্য বিস্তার করে সেখানে কোনো সাময়িক বিপ্লব বা পরিবর্তন এলেও, এই চোষণমুখি প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের ইচ্ছাকে চাপিয়ে রেখে পুনরায় লুণ্ঠনের সংস্কৃতি চালু করে। ফলে, এই ধরনের চোষণমুখী প্রতিষ্ঠানের দেশে জনগণের সম্পদের লুণ্ঠন দুষ্টচক্রের মতো বারবার ফিরে আসে।
অ্যাসেমোগলুর মতে, এ ধরনের দেশ নিজস্ব সম্পদ যেমন খনিজ, অথবা শ্রমসম্পদ অথবা কৃষিকে ব্যবহার করে আপাত কিছু উন্নয়ন সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন ধরে রাখতে যে সৃষ্টিশীলতা এবং প্রাযুক্তিক পরিবর্তন দরকার, তা কোনোমতেই এ ধরনের দেশে অর্জিত হয় না। ফলে আপাত উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধি অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই থমকে দাঁড়ায়।
জিয়া হাসান
অর্থনীতি বিশ্লেষক এবং ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ বইয়ের লেখক