10 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
উপমহাদেশে বহুজাতিক সহাবস্থানের কারণে মানুষের মাঝে নানান ধর্ম ও মতাদর্শের একটি সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেকেরই স্বতন্ত্র আদর্শ থাকলেও পরিবেশের প্রভাবটা সবাই এড়িয়ে যেতে পারে না।..
TK. 100TK. 85 You Save TK. 15 (15%)
Get eBook Version
US $1.99
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Related Products
Product Specification & Summary
উপমহাদেশে বহুজাতিক সহাবস্থানের কারণে মানুষের মাঝে নানান ধর্ম ও মতাদর্শের একটি সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেকেরই স্বতন্ত্র আদর্শ থাকলেও পরিবেশের প্রভাবটা সবাই এড়িয়ে যেতে পারে না। ঠিক সেই কারণে মুসলমানরাও ইসলামী আদর্শ ও সংস্কৃতির জায়গায় নিজেদেরকে স্বতন্ত্র রাখতে পারি নি। তারা ঝুঁকে পড়েছে বিভিন্ন শিরকি ও বিদআতী কর্মকাণ্ডে। হিন্দুদের মতো তারাও মাজারকে উৎসব ও উপাসনার স্থান বানিয়ে নিয়েছে। এভাবে দিনদিন মুসলমানরা ইসলামের স্বচ্ছ ও সঠিক ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
এই পথহারা মুসলমানদেরকে সঠিক দিশায় ফিরিয়ে আনার জন্য দরকার ছিলো নমনীয় ধারার একটি জামাআহ। আল্লাহর রহমতে সেই ধারার একজন শাইখ এগিয়ে আসলেন, যিনি একইসাথে মুজাদ্দিদে আলফে সানীর দাওয়াহ এবং দেহলবি হযরতের ফিকিরকে ধারণ করেন। তিনি হলেন সৈয়দ আহমদ শহীদ রহ.। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই শাইখের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে শিরক-বিদআত থেকে মুক্ত হয়ে নিজেকে মুজাহিদ হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
সৈয়দ আহমদ শহীদ রহ. সুফিবাদের যে ধারাটি গ্রহণ করেছিলেন, সেটি অব্যাহত থাকে আরো কিছুদিন। অন্যদিকে সুফিবাদের আরো কিছু ধারা উপমহাদেশে সচল হয়। তারাও সময়ের প্রয়োজনে মানুষকে শিরক বিদআত থেকে মুক্ত রাখার জন্য সুফিধারাকে গ্রহণ করেন। এর মাধ্যমে অভাবনীয় সাফল্যও দেখা যায়। একদিকে সৈয়দ আহমদ শহীদের ধারাটি রাজনৈতিক বড় এক বিপ্লব সৃষ্টি করে। অন্যদিকে মাজার ও উৎসব কেন্দ্রিক শিরক বিদআত থেকে ধীরে ধীরে সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয়। মোটকথা সুফিধারার মাধ্যমে রাজনৈতিক বিপ্লব এবং অন্তর্বিপ্লব দুটোই সাধিত হয়েছে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে কালের বিবর্তনে এই ধারাটিও স্বচ্ছতা ও সততার প্রশ্নে বিদ্ধ হয়ে পড়লো! খানকায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়লো এতো ব্যাপক একটি দাওয়াতি ধারা। পীর আর মুরিদের এক অদ্ভূত উন্মাদনা শুরু হলো। নবিজি সা. এর দাওয়াতি চিন্তার পরিবর্তে নিজেদের গড়া নতুন এক দাওয়াতি সংস্কৃতি কায়েম করা হলো। শরিয়তের পরিবর্তে পীরের আমলকেই প্রাধান্য দেয়া শুরু হয়ে গেলো। মোটকথা, একটি 'সফট ইসলাম' প্রতিষ্ঠা করার জন্য উঠেপড়ে লাগলো এই ধারাটি। তাদের নেই কোন দাওয়াতি ভাবনা, নেই কোন রাজনৈতিক চিন্তা, নেই কোন বৈপ্লবিক পরিকল্পনা। সংস্কারের চিন্তা তো নেইই। উপরন্তু তারা নিজেরাই এখন সংস্কারের শিকার হয়ে পড়েছে।
আল্লাহ তা'য়ালা এই ধারাটিকে আবারো স্বচ্ছতায় ফিরিয়ে আনার জন্য মুজাদ্দিদে মিল্লাত মুফতিয়ে আজম ফয়জুল্লাহ রহ. এর অন্তরে ও চিন্তায় সংস্কারের প্রেরণা জাগ্রত করেছেন। তিনি সুফিবাদের কুসংস্কারকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন। তাদের খেলাফে শরিয়ত প্রত্যেকটি কাজের সমালোচনা করলেন। শুধু সমালোচনা করেই চুপ থাকেন নি। পাশাপাশি সঠিক পথও বাতলে দিয়েছেন।
সমাজের অশুদ্ধি দূর করার জন্য ক্রমান্বয়ে যে সুফিবাদের আবির্ভাব হয়েছিল সময় গড়ানোর সাথে সাথে সেই সুফিবাদেও অশুদ্ধির জং ধরেছিল। এবার দরকার হয়ে পড়ছিল স্বয়ং সুফিবাদের শুদ্ধি অভিযানের। মুফতিয়ে আ'জম সাহেব রহ. সূচনা করেছিলেন এই অভিযানের। তিনি বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এই অভিযান পরিচালনায়। কথা বলেছেন অকপটে, কিল-কাল, মুলামাত কিংবা সমালোচনার তোয়াক্কা না করেই।
মুফতিয়ে আজমের সুফিবাদের সেই সংস্কারমূলক বক্তব্যকে আমরা কাগজের মলাটে পাঠকে সামনে 'সুফিবাদের শুদ্ধি' নামে প্রকাশ করার প্রয়াস করেছে চিন্তাপত্র। আলহামদুলিল্লাহ!