লাতিন আমেরিকান লেখক হইলেও পাজ নিজেরে সরাসরি রাজনীতির থেকে দূরে রাখতেন। নিজেরে পাবলো নেরুদাদের মতো স্টেটসম্যান টাইপের কবি মনে করতেন না। নিজেরে কইতেন প্রান্তে দাড়ায়ে থাকা একজন সোশ্যা..
TK. 100
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
লাতিন আমেরিকান লেখক হইলেও পাজ নিজেরে সরাসরি রাজনীতির থেকে দূরে রাখতেন। নিজেরে পাবলো নেরুদাদের মতো স্টেটসম্যান টাইপের কবি মনে করতেন না। নিজেরে কইতেন প্রান্তে দাড়ায়ে থাকা একজন সোশ্যাল আর পলিটিক্যাল ক্রিটিক। এইটা খুব মজার যে, পলিটিক্সে একজন লেখক কেমনে জড়াবে সেটা নিয়া বলতে গিয়া পাজ এলিয়টের কথা তুলছিলেন। যদিও এলিয়টের বিশ্বাসের লগে তার তেমন মিল নাই। তবে পাজ তার নিজেরে সেই অর্থে রাজনীতির থেকে দূরে রাখতে পারেন নাই। ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে লড়তে হইছিল তারে। মেক্সিকান ছাত্র আন্দোলনে সরকারের জালিমের মতো আচরণ করলে, প্রতিবাদে দূতাবাসের চাকরি ছাইড়া দিছিলেন। আমাদের এখানে রাজনীতি,সাহিত্য,মোরাল পজিশন, লেখকের অবস্থান- এই জিনিসগুলা খুব ক্লিয়ারভাবে আলোচিত হয় না। অনেকসময় এই ক্যাটাগরিগুলারে খুব রিজিডভাবে আলাদা কইরা ধইরা নেয়। পাজের অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে দেখলে, এটারে নতুনভাবে বিবেচনা করা যায়।
অভিজ্ঞতার কথা যখন কইতেছি , তখন এইটাও কইতে হয় যে- পাজের সাহিত্য বুঝতে হইলে তার অভিজ্ঞতার জায়গাটা বুঝা জরুরি।অভিজ্ঞতা ইটসেল্ফ একটা টুল। একজন লেখক কি লেখবে না লেখবে,কেমনে লেখবে- এইসব নির্ধারনে অভিজ্ঞতা একটা গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করে। এমন এক সময়ে জন্মাইছিল পাজ, যখন তারে দুইটা বিশ্বযুদ্ধ আর স্পেনের গৃহযুদ্ধ দেখতে হইছে। তবে অন্যান্য অনেক ইউরোপীয় লেখকগো উপ্রে যুদ্ধের যে প্রভাব আছিল, সেটা পাজের ক্ষেত্রে ওইরকম ছিল না। তিনি কইছিলেন, ‘মানুষ একইলগে হিস্টরির বাইরে আর ভিতরেও।’ মানুষ হিস্টরির যেকোন পিরিয়ডেও বাইচ্যা থাকা, কাজ করা, প্রেম করা’র মতো নর্মাল কাজগুলা কইরা যায়। পাজের কথা থেকে এইখানে বুঝা যায় , হিস্টরি না, মানুষের লাইফই পাজের সাহিত্যে জরুরি বিষয়।
পাজ দশ বছরেরও বেশি সময় দেশের বাইরে কাটায়ছিলেন। আম্রিকার ভ্রমণ তার কবিতার সামনে নয়া দুয়ার খুইল্যা দিছিল। আর ইন্ডিয়ার অভিজ্ঞতার জোর কত বেশি আছিল, ওইটা ওর পরের দিকের বইগুলা পড়লেই বুঝা যাইবো। কোন রাইটারের লেখা পড়া মানে ব্যক্তিমানুষ হিসেবে লেখকের অভিজ্ঞতার লগে একধরণের ডিল করাও। পাজের অভিজ্ঞতার একটা বড় জায়গা জুইড়া লাতিন দেশগুলা, ইউরোপ, আম্রিকা আর এশিয়ার অভিজ্ঞতা জায়গা কইরা নিছে। ওর সাহিত্যের সবজায়গায়ই এটার প্রমাণ আছে।
কবিতার ক্ষেত্রে খুব কৌশলীই আছিলেন পাজ। ফর্ম নিয়া কাজ করছেন, কাজ করছেন বড় কবিতা নিয়া। কবিতা নিয়াও বিস্তর লেখালেখি করছেন। তার কাজগুলার উপ্রে সুররিয়ালিজমের প্রভাব ছিল। প্রথম যখন কোন একটা এক্সিবিশনে সুররিয়ালিস্ট পেইন্টিং দেখছিলেন, ওইটারে রিয়েলিজম হিসেবেই নিছিলেন। পাজের মনে হইছে আসলে রিয়েলিটির ব্যাপারটাও তো অনেকটা এমন। লাতিন আমেরিকার অনেক লেখকগো ক্ষেত্রেই দেখছি রিয়েলিটিরে এমনে দেখতে পাওয়ার ব্যাপারটা।
কবিতা ছাড়াও অন্যান্য অনেক বই লেখছেন। মেক্সিকোর ইতিহাস আর এর ট্র্যাডিশনের পুরনো শিকড়গুলা নিয়া পাজ সবসময় আগ্রহী ছিলেন। তবে নিজেরে শেষ পর্যন্ত একজন কবি হিসেবেই পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন। মনে করতেন, তার লেখা দুই তিনটা কবিতার জন্যই মানুষ তারে মনে রাখবেন। এও বলছেন, কবিতা ছাড়া কোন সোসাইটি টিইক্যা থাকতে পারে না। কারণ, কবিতা হইলো মানুষের লগে মানুষের সম্পর্কের ব্রিজ, একের লগে অপরের কম্যুনিকেশনের মাধ্যম।
তাসনিম রিফাত