1 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
‘অধিকার-সংগ্রামের বহ্নিশিখা শেখ হাসিনা’-গ্রন্থটির প্রথম প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সাল। এরপর প্রায় সাড়ে-তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। এই সময়ে বিশ্ব বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে..
TK. 250TK. 188 You Save TK. 62 (25%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
‘অধিকার-সংগ্রামের বহ্নিশিখা শেখ হাসিনা’-গ্রন্থটির প্রথম প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সাল। এরপর প্রায় সাড়ে-তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। এই সময়ে বিশ্ব বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। দুটি পরিবর্তন বিশেষভাবে উল্লেখ্য; যার প্রভাব থেকে বিশ্ব এখনও মুক্ত নয়। এর একটি কোভিড-মহামারি ও অন্যটি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। কোভিড-মহামারির আক্রমণে বিশ্বে এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ। এই সময়ে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায়; কিন্তু দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এই মহাবিপর্যয়কে মহাবিপর্যয়ে পরিণত হতে দেননি। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ছয়-শতাংশের উপরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে উন্নত রাষ্ট্র আমেরিকার জনসংখ্যা প্রায় চৌত্রিশ কোটি। কোভিড-মহামারিতে এই রাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা দশ-লক্ষাধিক; কিন্তু বাংলাদেশের জনসংখ্যা (প্রায় সতেরো কোটি) ঐ দেশের তুলনায় অর্ধেক হওয়া সত্ত্বেও মৃত্যুর সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ত্রিশ হাজারের নিচে। কোভিড-জয়ে বাংলাদেশের এই সাফল্য বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে।
২০২২ সালের শুরুতেই শুরু হয়েছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ; যা এখনও চলছে। এই যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে বিশাল মূল্যস্ফীতি ঘটেছে; হয়তো ২০২৩ সালেই ১৯৩০ এবং ২০০৮-এর মতো আরেকটি বিশাল মহামন্দা বিশ্বকে আক্রান্ত করতে পারে। এই যুদ্ধের কারণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো, বিশেষত ইউরোপ, অসহনীয় মূল্যস্ফীতির ভারে পর্যুদস্ত, প্রায়-সব পণ্যের মূল্যই গগণচুম্বী। এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশে যেমন শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, তুরস্ক, মিশর, মরক্কো ও আলজেরিয়ায় জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও অন্যান্য পণ্যের দাম সাধারণ মানুষকে দিশেহারা করে ফেলেছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায়-সব পণ্যের প্রাপ্যতা ও মূল্য সাধারণের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। লোডশেডিং হলেও তা শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের মতো অসহনীয় নয়। সবকিছুই এখনও পর্যন্ত প্রায়-স্বাভাবিক রয়েছে; যার মধ্যে মুখ্য হলো খাদ্যনিরাপত্তা, প্রয়োজনীয় ঔষধ-প্রাপ্তি।
গত এক দশকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার শাসনকালে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। ‘বিশ্ব রাষ্ট্রপুঞ্জে’ অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকায় এই অর্জনের চিত্র বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। অতিসম্প্রতি বিশ্বের অন্যতম-প্রসিদ্ধ দৈনিক ‘ওয়াশিংটন পোস্টে’ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের যেভাবে ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে তা কেবল তাঁকেই নয়, বাংলাদেশকেও অনন্য গৌরবে মহিমান্বিত করেছে। এই এক দশকেই শেখ হাসিনা কী-না করেছেন! যা একসময় অসম্ভব ভাবা হয়েছিল, আমাজনের পরে বিশ্বের সবচেয়ে-খরস্রোতা প্রমত্তা পদ্মার উপর নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে পদ্মা সেতু। একসময় বাংলাদেশের বহু প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ ‘বিশ্বব্যাংকে’র সাহায্য ছাড়া এই সেতু তৈরি-করা অসম্ভব বলেছিলেন।
বাংলাদেশের প্রায় একশ-শতাংশ গৃহে তিনি বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দিয়েছেন। নগরের প্রায়-সব নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দিয়ে গ্রামকেই প্রায় নগরে রূপান্তরিত করেছেন। টেলিভিশন ও ইন্টারনেট সেবাও গ্রামে পৌঁছে গেছে। বর্তমানে প্রায় তের কোটি লোক মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। বঙ্গবন্ধু টানেল অর্থাৎ কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেলের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে, যা চট্টগ্রাম নগরকে দুই নগরে রূপান্তরিত করার প্রথম সোপান বা প্রারম্ভ বলা চলে। এছাড়া মহেশখালির মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর, এলএনজি টার্মিনাল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রভৃতি উন্নয়ন কার্যের অগ্রগতি বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। ঢাকা মেট্রোরেল, ঢাকা-কক্সবাজার (ঘুমধুম পর্যন্ত)-রেললাইন নির্মাণের কাজও বহুদূর এগিয়ে গেছে।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা-সরকার দেশে যে-একশটি ‘বিশেষ অর্থনৈতিক জোন’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে তার মধ্যে বিপুলভাবে সমৃদ্ধ মিরসরাই বিশেষ অর্থনৈতিক জোন দৃশ্যমান। অনেক উন্নত দেশই এই অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে।
বস্তুত, এই ভূমিকায় এই বিশাল উন্নয়নযজ্ঞের বর্ণনা নিষ্প্রয়োজন। গ্রন্থের মধ্যেই এসব সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। এককথায় বলা চলে, দেশরত্ন শেখ হাসিনা প্রায় তিনশ বছর আগে যে-বাংলাদেশ একদিন ‘সোনার বাংলা’ নামে পরিচিত ছিল, সেই বাংলাদেশকে আজ ‘সোনার বাংলায়’ পরিণত করতে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন; তাঁর পিতা বাংলাভাষী বাঙালিকে তার প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র এনে দিয়েছিলেন, তিনি সেই বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে আসীন করতে পেরেছেন। এই রাষ্ট্রটিকে উন্নত ও মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করার ভার উত্তর-প্রজন্মের হাতেই ন্যস্ত।
অনুপম সেন
১২ই অক্টোবর ২০২২খ্রি.