স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন একটি জাতির জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা। বাংলাদেশের ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের চরম গøানির ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাস। ২৪ বছরের পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন-শোষ..
TK. 1200TK. 900 You Save TK. 300 (25%)
Product Specification & Summary
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন একটি জাতির জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা। বাংলাদেশের ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের চরম গøানির ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাস। ২৪ বছরের পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন-শোষণ ও নির্যাতনের ইতিহাস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য দূরদৃষ্টি ও দৃঢ় নেতৃত্বে দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পেয়েছি আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। আমাদের শ্রেষ্ঠ অলংকার ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে আপামর বাঙালির বঙ্গবন্ধুর সুমহান নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থা, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ও জীবন বাজি রেখে অংশগ্রহণ, ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মাহুতি, দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম এবং অপরিসীম আত্মত্যাগ।
কিশোর বয়সের বাস্তব অভিজ্ঞতায় সিক্ত ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভ‚মিতে রচিত দুটি অনবদ্য কিশোর উপন্যাস ‘বিবশ বিহঙ্গ’ ও ‘শ্যামলের শৈশব’ সব বয়সী পাঠকের মনেই দাগ কেটেছে।
‘শ্যামলের শৈশব’ উপন্যাস বিন্যস্ত হয়েছে অকুতোভয় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শ্যামলের কণ্টকাকীর্ণ শৈশবকে কেন্দ্র করে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মোহনী নেতৃত্বে মোহাবিষ্ট এবং ভীষণভাবে উদ্দীপ্ত আব্দুল গফুর সাত মাসের একমাত্র শিশুসন্তান শ্যামলকে ফেলে, স্ত্রী, বাবা-মা, ভাই-বোন সবাইকে ফেলে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। অসীম সাহসিকতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে শত্রæপক্ষের কাছে সে হয়ে ওঠে ভয় ও আতঙ্কের কারণ আর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে সাহসের উৎস।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের চাকা পেছন দিকে ফিরতে থাকে। জাতির পিতার একনিষ্ঠ ভক্ত-অনুসারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুর এই নৃশংস হত্যাকাÐ মেনে নিতে পারেনি। ক্ষোভে-দুঃখে-দ্রোহে, তীব্র হতাশায় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। পিতৃহারা হয় শ্যামল। তার জীবনে নেমে আসে অমাবস্যার অন্ধকার।
স্বাধীনতার পরাজিত শত্রæ, পাকিস্তানি হায়েনাদের দোসর আলবদর-রাজাকাররা আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে। তাদের রোষানলে পিতৃহীন শ্যামলের পরিবার বাস্তুভিটাচ্যুত হওয়ার উপক্রম হয়।
স্বাধীনতাপ্রিয় রসুলপুরের বীর জনতা শ্যামলদের অসহায় পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ায়। একাত্তরের চেতনায় প্রতিরোধ গড়ে তোলে রাজাকার-আলবদরদের বিরুদ্ধে। পরাজিত হয় রাজাকার ও তার দোসররা। শ্যামলের শৈশবের ভাগ্যাকাশে উদিত হয় নতুন সূর্য।
রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় সিক্ত দুই কিশোরের প্রগাঢ় দেশপ্রেম ‘বিবশ বিহঙ্গ’ উপন্যাসের মূল উপজীব্য। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে ছড়িয়ে পড়া আমাদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অহংকার মুক্তিযুদ্ধের সেই গৌরবগাথা দিনগুলোর ঘটনাবলি উপমার আকরে চিত্রিত হয়েছে এ উপন্যাসে। এসব ঘটনা অভিজ্ঞজনদের কাছে অতিপরিচিত।
দুই কিশোরের একজন রমিজ। মুক্তিযুদ্ধে তার অসাধারণ বীরোচিত ভ‚মিকার জন্য মুক্তিযুদ্ধকালেই সে হয়ে উঠেছিল জীবন্ত কিংবদন্তি। মুক্তিযুদ্ধের সেই স্বপ্ন নিয়েই সে এখনো নিরন্তর যুদ্ধ করে চলেছে নিরস্ত্র অবস্থায়। তার এই যুদ্ধের সহযোদ্ধা হিসেবে সে অগণন আলোকিত মানুষ চায়। অপর কিশোর করিম স্বাধীনতাযুদ্ধে রমিজের বন্ধু হয়ে উঠেছিল। হয়ে উঠেছিল সহযোদ্ধা।
অকৃতদার রমিজ নিরলস স্বপ্ন বুনে যায় তার সবটুকু বিশ্বাস ও প্রাণশক্তি দিয়ে। করিম ছকে বাঁধা জীবনের নিগঢ়ে হাঁপিয়ে ওঠে, খুঁজে নেয় একটা অখÐ সময় একাকী নিরিবিলি কাটানোর জন্য। অখÐ সময় খÐিত হয়। মনের পর্দায় তাকে তাড়া করে ফেরে রমিজ, রমিজের স্বপ্ন। এভাবেই বিবশ বিহঙ্গ হয়ে ওঠে দুই বন্ধু।