26 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
দু’চার কথা
মামুলী ভূমিকা এ নয়। কাহিনী পড়বার আগে আমার কয়েকটি কথা সুধী পাঠকদের জানিয়ে রাখতে চাই। দেশ পত্রিকায় প্রকাশের সময় থেকে এখন পর্যন্ত বহু কৌতূহলী পাঠকের চিঠি ..
TK. 300TK. 210 You Save TK. 90 (30%)
In Stock (only 2 copies left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
দু’চার কথা
মামুলী ভূমিকা এ নয়। কাহিনী পড়বার আগে আমার কয়েকটি কথা সুধী পাঠকদের জানিয়ে রাখতে চাই। দেশ পত্রিকায় প্রকাশের সময় থেকে এখন পর্যন্ত বহু কৌতূহলী পাঠকের চিঠি আমি পেয়েছি ও পাচ্ছি। সবার ঐ একই জিজ্ঞাসা–এত দীর্ঘদিন বাদে এ কাহিনী আমি কেন লিখতে গেলাম। আমি বলতে চাই–এর আগে ইচ্ছা বা অবসর থাকলেও পুলিস সম্বন্ধে ভেতরের ও বাইরের এত কথা আমি অকপটে ও এত সহজে লিখতে পারতাম না। কোনো পরাধীন দেশের লেখকের পক্ষে তা সম্ভবও নয়। আর একটা কথা এখানে বলা দরকার–পুলিসকে সাধারণের চোখে হেয় বা অপদার্থ প্রতিপন্ন করবার উদ্দেশ্য নিয়েও এ কাহিনী আমি লিখিনি। কর্মক্ষেত্রে সর্ব স্তরেই ভালো-মন্দ লোক আছে-ই–সেই ভালো-মন্দের মাঝে আমি যে কতবড় অযোগ্য অপদার্থ–এক কথায় মিস ফিট–এইটেই হলো আমার কাহিনীর মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।
দ্বিতীয় জিজ্ঞাসা–এটা নিছক গল্প না সত্যি? সবার অবগতির জন্য তাই জানাই ‘যখন পুলিস ছিলাম’ আমার জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতালব্ধ কাহিনী। হয় তো অজান্তে কল্পনার রঙ একটু আধটু লেগেছে–তাতে কাহিনীর আকর্ষণ বেড়েছে না কমেছে সে বিচারের ভার সুধী পাঠকের ওপর।
রাতারাতি সাহিত্যিক খ্যাতি লাভের দুরাশা নিয়েও এ কাহিনী আমি লিখিনি। এটি লেখবার একটি ছোট্ট ইতিহাস আছে। বন্ধুবর সাহিত্যিক শ্রীপ্রেমেন্দ্র মিত্রের বাড়িতে ছুটির দিনে প্রায়ই আড্ডা জমতো এবং এখনও জমে। বহু নামকরা সাহিত্যিক ও রসিক জদ-সমাগমে সরগরম সেই আড্ডায় বেমানান হলেও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাকে উপস্থিত থাকতে হতো– এবং রস পরিবেষণের খানিকটা অংশও নিতে হতো। সেই আসরে আমার পুলিসি অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে কয়েকটা গল্প বলতাম। সবাই উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠতেন প্রশংসায় ও আমাকে লেখবার জন্য বারবার অনুরোধ করতেন। সাহস বা অবসরের অভাবে ইচ্ছা থাকলেও এতদিন হয়ে ওঠেনি। আজ সাহস না থাকলেও প্রচুর অবসর–তাই ভয়ে ভয়ে তিন চারটে পরিচ্ছেদ লিখে ফেললাম এবং একদিন দেশ পত্রিকার প্রাণ পরম স্নেহাস্পদ শ্ৰীসাগরময় ঘোষকে চুপি চুপি বাড়িতে ডেকে এনে শুনিয়ে দিলাম। পড়া শেষ করে কোনো কথা না বলে লেখাটি পকেটে পুরে তিনি বললেন–আপনি বাকিটা লিখতে শুরু করুন–আমি ‘দেশ’ পত্রিকায় ছাপবো।
এত বড় একটা জটিল সমস্যা এত সহজেই সমাধান হয়ে গেল–প্রথমটা বিশ্বাস করতেই পারিনি–তারপর কৃতজ্ঞতায় মন ভরে গেল। ভগবান সাগরকে দীর্ঘজীবী করুন।
আজ আমার জীবনের একটা স্মরণীয় দিন, তাই আমার হিতৈষী বন্ধুবান্ধব, শিল্পী, সাহিত্যিক সবাইকে জানাই আমার অন্তরের কৃতজ্ঞতা। আর একজনের কথা এখানে উল্লেখ না করলে আমার বক্তব্য অসমাপ্ত থেকে যাবে। সে হচ্ছে আমার অকৃত্রিম হিতৈষী উদীয়মান সাংবাদিক শ্রীমান সরোজ চক্রবর্তী। তার উৎসাহ ও পরিশ্রম বাদ দিলে এত শী আমার বই প্রকাশ করা সম্ভব হতো না। মুখের শুকনো ধন্যবাদ দিয়ে ঋণ শোধ করবার চেষ্টা না করে ওর কাছে তাই আমি ইচ্ছে করেই ঋণী হয়ে রইলাম।
ধীরাজ ভট্টাচার্য
তাং ১লা আষাঢ়,
–ললিত স্মৃতি–
৭২ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রীট,
কলিকাতা-২৫