10 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
ভূমিকা
প্রাচীন ষোড়শ জনপদের কতক অংশ নিয়ে গঠিত ‘বঙ্গ’ নামক স্থানটির উপরই মূলত প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে স্বাধীন বাংলাদেশ। নৃতাত্বিক তত্ত্বেও প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই এ অঞ্চলে জনব..
TK. 400TK. 340 You Save TK. 60 (15%)
In Stock (only 1 copy left)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
Product Specification & Summary
ভূমিকা
প্রাচীন ষোড়শ জনপদের কতক অংশ নিয়ে গঠিত ‘বঙ্গ’ নামক স্থানটির উপরই মূলত প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে স্বাধীন বাংলাদেশ। নৃতাত্বিক তত্ত্বেও প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই এ অঞ্চলে জনবসতির প্রমাণ পাওয়া যায়। বন-জঙ্গল, নদী-নালা আর খাল-বিল সমৃদ্ধ এই এলাকায় জনবসতি, বিস্তার এবং সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে উন্নত জীবনব্যবস্থা গড়ে তুলতে যে সময় নিয়েছে, পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোর তুলনায় তা বিশাল এবং ব্যাপক।খ্রিস্টপূর্ব ৬০০-এর দিকে বঙ্গনামক ভূখণ্ডে সবেমাত্র রাজত্বের সূচনা হয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। অথচ সেসময়ে মিশর ,মেসোপটেমিয়া, ক্রিট, গ্রীস বা পৃথিবীর অন্যান্য অনেক ভূখণ্ডে রীতিমত রাজ্যগঠন, শাসন ও উন্নত জীবনব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। সেসবের ঢেও বিলম্বে হলেও ক্রমান্বয়ে এদেশে এসে পৌঁছায়। প্রাথমিক পর্যায়ে রাজতন্ত্র, সামতন্ত্র,উপনিবেশ আর স্বৈরতান্ত্রিক একনায়ক শাসন ব্যবস্থায় এখানকার জনগন গোড়া থেকেই কীভাবে নিষ্পেষিত হয়ে আসছে, সেসব করুন কাহিনীর কছিু খণ্ড নিয়েই এই গ্রন্থের অবতরনিকা । সেসকল সামন্তরাজ বা রাজা বাদশাহ তাদের অধিকৃত রাজ্যসীমাকে মনে করত তাদের নিজস্ব সম্পদ। অধিবাসীরা ছিল সম্পদ আহরণ ও সংরক্ষণের সহায়ক। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ এবং মহারাণী ভিক্টোরিয়ার শাসনভার গ্রহনের আগ পর্যন্ত এমনই বিড়ম্বিত জীবন ছিল জনগণের । এরপতেও ৯০ বছর ধরে ভুখা-নাঙ্গা, হতাশা আর নিষ্পেষণ এর মধ্য দিয়ে দিন কাটতে হয়েছে। নির্যাতনের বিরুদ্ধে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার উদাত্ত আহ্ববানে ভুক্তভোগী জনগণ পিপিলিকার ন্যায় সারিবদ্ধ হয়ে নেতার হুকুম পালন করতে থাকে।
রাজনীতির উদ্দেশ্য -কোন গোষ্ঠী ,এলাকা বা রাষ্ট্রের সার্বজনীন কল্যাণ কামনায় পক্ষপাতহীন কলুষমুক্ত অন্তর নিয়ে ভবিষ্যৎ কর্মসূচি বাস্তবায়নের দৃপ্ত শপথের মধ্যদিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এ কথা অনস্বীকার্য যে, বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত এই এলাকার জনগন শিক্ষায় পিছিয়ে ছিল অনেক দূর। যদিও ব্রিটিশ শাসনামল থেকে শিক্ষা প্রসারের চেষ্টা এবং ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল কিন্তু তা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল ধর্মান্ধ কতক গোঁড়া ব্যক্তিদের দ্বারা । ফলে এই ভূঁ-খণ্ডের মুসলিম জনগণ নিজেদের আর্থ-সামাজিক অস্তিত্ব হারিয়ে বিলীন হতে বসেছিল। এ সময়ের স্যার সৈয়দ আহমদ, নবাব সলিমুল্লাহ ও নবাব আব্দুল লতিফের মতো কিছু পথিকৃত মুসলিম জনগণের শিক্ষা বিমুখতাকে দুদর্শশার একমাত্র কারণ হিসেবে চিহিৃত করে শিক্ষা প্রসারে তৎপর হয়ে উঠেন। তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে নাহলেও অভিজাত বা অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তিরা শিক্ষার দিকে মনোনিবেশ করে। পরবর্তীতে তাদের এবং উত্তরসূরীদের প্রাণপণ চেষ্টার ফলশ্রুতিতে মুসলিমদের নিজস্ব আবাসভূমি প্রথমে পাকিস্তান ও পরে অংশ বিশেষ নিয়ে জন্ম হয় বাংলাদেশের ।
৬০০ খ্রিস্ট্রা-পূর্ব থেকে বর্তমানের দীর্ঘ এই কালের গণ্ডির মধ্যে শানকগন জনগনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় বা সঙ্গত অধিকারগুলোর উপর কতখানি যত্নবান হয়েছেন এবং হওয়া উচিৎ ছিল সে সকল বিষয়বস্তু নিয়েই এই গ্রন্থের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচিত হয়েছে। এই বিষয়বস্তুগুলো বিশেষ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং ইতিহাসের ছাত্র-ছাত্রীদের (স্নাতক) পাঠ্য তালিকাভুক্ত এবং যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে আশাকরি। রাজনীতি ও শাসণব্যবস্থা বিষয় দুটোর ব্যাখ্যা বিতর্কমূলক। এ বিষয়ে মতান্তর থাকতেই পারে। তবে অসংখ্য মতামতের ফলে জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি শক্তিশালী না হয়ে বিনষ্ট এবং বিশৃংখলার জন্ম দেয়াই স্বাভাবিক । এতে করে জাতীয় জীবনে একদিকে যেমন নেমে আসে অশান্তি, অন্যদিকে তেমনী ব্যহত হয় রাষ্ট্রীয় সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। ফলভোগ করে নীরিহ জনগন। বাস্তব এ সত্যের প্রতিচ্ছবি গুলো এ গ্রন্থে যথেষ্ট স্থান পেয়েছে।গ্রন্থটি রচনায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের খ্যাতিমান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, অধ্যাপক আনসার উদ্দিন, আইন ও বিচার বিভাগের অধ্যাপক আ.ফ.ম মহসিন আমাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে সাহায্য না করলে হয়ত এতদূর এগুতে পারতাম না। ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম, অধ্যাপক ফারুকউজ্জামান এর তথ্যভিত্তিক উপদেশ অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
পরিশেষে ঢাকা- আলেয়া বুক ডিপোর আন্তরিকতায় গ্রন্থটি আলোর মুখ দেখেছে। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রন্থটি সমাদৃহ হলে আমার শ্রম সার্থক হবে এই কামনায় --
বিনীত
এস এস জয়নুল আবেদিন