‘রম্য’ শব্দটির অর্থ রমণীয় অর্থাৎ মনোরম। যে রচনা সর্বাত্মক বিচারে রমণীয় বা মনোরম, তাকেব্যাপক অর্থে রাম্যরচনা নামে অভিহিত করা হয়। ব্যক্তিগত প্রবন্ধের মতোই ‘রম্য’ রচনায় থাকে একটি রমণী..
TK. 80TK. 69 You Save TK. 11 (14%)
Get eBook Version
US $1.99
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
‘রম্য’ শব্দটির অর্থ রমণীয় অর্থাৎ মনোরম। যে রচনা সর্বাত্মক বিচারে রমণীয় বা মনোরম, তাকেব্যাপক অর্থে রাম্যরচনা নামে অভিহিত করা হয়। ব্যক্তিগত প্রবন্ধের মতোই ‘রম্য’ রচনায় থাকে একটি রমণীয়তা, খেয়ালি কল্পনার অবাধবিস্তার এবং তথ্য ভাবের পরিবর্তে ‘রচনারস সম্ভোগের’ আস্বাদ্য মানতা। তবে রম্য রচনাকে ব্যক্তিগত হতেই হবে এর কোনো মানে নেই, তা বাস্তুগত কোনো অবলম্বনকে উপলক্ষ্য করেও রচিত হিতে পারে। ‘রম্য রচনা’ পাণ্ডিত্যপূর্ণ বিচার বিশ্লেষণ থেকে পূর্ববতী এক লঘু চালের সৃষ্টিমূলক গদ্যরচনা। এতে কোথাও থাকে খানিক গল্পের আভাস, আবার কোথাও একটু কাব্যের মাধুর্য, অন্য কোথাও আবার হয়তো হাস্যপরিহাসের অবকাশ। নানা খণ্ডের বাহারি সমবায়ে এ এমন এক সৃষ্টি যার কোনো ধরাবাধা লক্ষ্য থাকে না । বৈঠকি চালে তা দিব্যি জমে উঠে। এক কথ্য কোনো একটি প্রবন্ধকে যখন লেখক নিজের মনমতো রসকষ দিয়ে হাসি কৌতুকের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন, তাকেই রম্য রচনা বলে। এই ধরনের রচনায় সবকিছুর অন্তরালে থাকে লেখকের প্রসন্ন দৃষ্টি। রবীন্দ্রনাথ যথার্থই বলেছেন ‘এ ধরনের রচনার মূল তার বিষয় গৌরবে নয় রচনার রস সম্ভোগে। বাংলা সাহিত্যের রম্য রচনার অন্যবদ্য শিল্পীসৈয়দ মুজতবা আলীর ভাষা ও ভঙ্গির রম্যতায় অতি সাধারণ বিষয়ও তাঁর কলমে অসাধারণ হয়ে উঠে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রমথ চৌধুরী, সৈয়দ মুজতবা আলী, ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়, সুকুমার রায়, রাজশেখর বসু, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায়, নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়, আনিসুল হক সাহেব সহ আরও অনেকেই রম্য লেখক হিসেবে যথেষ্ঠ খ্যাতিমান।
তারই ধারাবাহিকতায় স.ম. শাসসুল আলম লিখছেন রম্য রচনা। তার এই রম্য রচনার বইটি মূলত শিশুদের জন্য রচিত।‘হাত নিয়ে কথা বলতে গেলেও তোমাদের সাথে হাতাহাতি শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই হাত কচলিয়ে প্রথমেই বলে রাখি, কখন কোন হাত যে কোন অর্থে ব্যবহৃত হয় তা বুঝা কষ্ট। যদি তোমাকে বলি যে, এক হাত দেখে নেব, তাহলে তুমি আর আমাকে ছাড়বে না। সাথে সাথেই হিন্দি ছবির মতো হাত চালিয়ে অ্যাকশন শুরু করে দিবে। তার মানে ওটাও হাতেরই কারসাজি ঘুষি অথবা কনুই মারা। তখন তোমার কাছে হাতজোড় করা ছাড়া উপায় থাকবে না।’ (হাত নিয়ে হাতাহাতি/পৃষ্ঠা-১০)
এই বইটি সূচিবদ্ধ সবগুলো লেখাই মানুষের কোনো না কোনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে লেখা হয়েছে। রম্য লেখার পাশাপাশি রয়েছে এ বিষয় নিয়ে ছড়াও। ‘নাক নিয়ে নাককাটা’ ছড়ায় লিখেছেন....
‘নাক নিয়ে কথা যদি কই নাকি সুরে
নাকটা গলবে ঠিক কাছে কিবা দূরে
মাঝে মাঝে নাক ডাকে
খত দিতে হয় নাকে
শাসনটা যদি কেউ করে নাক বাঁকিয়ে
যাবে তারই নাক কাটা
নাক ফেলে দেবে হাঁটা
লোকজন থাকবেই তার দিকে তাকিয়ে’
বইটির সবশেষ রচনা লেখা হয়েছে পদ বা পা নিয়ে। পা নিয়ে মজার চিন্তার উদ্রেক ঘটিয়েছে লেখক। তিনি লিখেছেনÑ ‘পদ নিয়ে দু চারটি কথা বলার পদক্ষেপ নিতেই নানা পদের কথা শুরু হয়ে গেল। এই পদযুগল তোমাদের সামনে এসেই থমকে দাঁড়াল। কখন কোন পদ যে কোন অর্থে ব্যবহৃত হয় তা বলার জন্যই এত কলাকৌশল। কেউ যদি আমার মতো এই ক্ষুদ্র পদকর্তার পদচিহ্ন আঁকতে দেখে পদাঘাত করো তাতেও আমার আপত্তি নেই। গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ করতে গেলে পদে পদে বাধা আসবেই, তা উপেক্ষা করে পদবিক্ষেপ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।’ (পদ নিয়ে পদে থাকা/পৃষ্ঠা- ৩৮)
পরিচিত এইসব বিষয়কে যখন নতুন করে নতুন ভাবে লেখক হাজির করেন আমাদের সামনে তখন বিষ্ময় জাগে। হাসি কৌতুকের মধ্য দিয়ে এক নির্মম সত্য যেনো আমাদের তাড়িত করে।