1 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
কাঁকরকান্দি আর সোহাগপুর বাংলাদেশের দুটি গ্রাম। বর্তমান শেরপুর জেলায় অবস্থিত। দিগন্ত ছুঁয়ে যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সতেজ সোহাগী সবুজ। শুয়ে আছে অনন্ত বহতা নদী খলং আর ভোগাই। মাঠের পরে মাঠ। ..
TK. 300TK. 258 You Save TK. 42 (14%)
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Related Products
Product Specification & Summary
কাঁকরকান্দি আর সোহাগপুর বাংলাদেশের দুটি গ্রাম। বর্তমান শেরপুর জেলায় অবস্থিত। দিগন্ত ছুঁয়ে যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সতেজ সোহাগী সবুজ। শুয়ে আছে অনন্ত বহতা নদী খলং আর ভোগাই। মাঠের পরে মাঠ। নিবিড় সমতল ঘন ফসলের সমারোহে ভরে আছে। তারপর পাহাড়। একেবারেই সীমান্তের কোল ঘেঁষে ওরা বসে আছে সে গ্রাম দুটিতে। একদিন রক্তের নদী বইয়ে দিয়েছিল দখলদার বাহিনী। জীবন দিয়েছিল একদিন একই সঙ্গে ১৮৭ জন নিরীহ গ্রামবাসী। দু’জন রাজাকার ছাড়া আর কোন পুরুষ মানুষই বেঁচে ছিল না। ওরা হাজী আবদুর রহমান আর কাদের ডাক্তার।
ইতিহাসের নির্মম এ সত্যি ঘটনার ছায়া অবলম্বনে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত এ কাহিনী ‘এমন কোন প্রেম নেই’। রফিক রহমান ভূঁইয়া তার শব্দ কল্পনার রঙে সাজিয়েছেন এ উপন্যাসের এক একটি দৃশ্য।
মুক্তিযুদ্ধের যে ভয়াবহ নির্মমতা, বরর্বরতা ও পৈচাশিকতা তা এ উপন্যাসে দলিল হয়ে আছে। বাঙালি নারীদের প্রতি পাক সেনাদের নির্যাতনের একটি দৃশ্য পাই এ উপন্যাসে- ‘ওই ছেলেরা তরা মুক্তিযোদ্ধা? তয় মার, মার গুলি। মাইরা এই শালা হানাদার কুত্তাদের, জালিম রাজাকার, আল-বদরদের বুক ফুটা কইরা দে। অদের বুকে শুয়োরের রক্ত। অরা পশু, মানুষ না। অদের মারলে কোন গুনা নাই। অরা অন্যায়ভাবে আমাগো মারতে এসেছে। ওরা গণহত্যা চালাচ্ছে। আমাগো তিরিশ লাখ মানুষ এরিমধ্যে মাইরা ফেলাইছে। অরা আমাগো মা-বোনদের ইজ্জত লুইটা নিতে এসছে। এর মধ্যেই মাইরা ফেলাইছে।
এর মধ্যেই শত শত মা-বোনের পেটে অরা কত যে শুয়োরের বাচ্চা ঢুকায়ে দিছে তার হিসাব নাই। পুবের বাড়ির এছাক আলির ফুটফুটে সোন্দর মাইয়াটারে গতকাল সন্ধ্যেবেলাই ধইরা বে-দ্বীনেরা ক্যাম্পে লইয়া গেছে। আহারে, রাইতের ভিতরেই হয়তো অর মোলায়েম নরোম তলপেটে মাংসের পিস্তল ঢুকাইয়া পেটটারে তছনছ করাই ফেলাইছে।’
শত মৃত্যু আর ত্যাগের মধ্যেও প্রেমের যে আবেদন তা যেনো ম্লান হয় না। প্রেম যেনো মৃত্যুরও অধিক। মৃত্যুর পরেও যেনো প্রেম অবিনশ্বর। প্রেমিকা যখন হয়ে ওঠে দেশ, মাটি, স্বাধীনতার আনন্দ তখন তার কোন সীমানা থাকে না। হৃদয়ে ধ্বনিত হয় এক অপার প্রেমের ধ্বনি। জাদুময়তা, কল্পনা, শব্দ, সুর যেন সব কিছুকেই ছাপিয়ে যায়।
‘কুদ্দুস আলি তার ভালোবাসার হাতটা ধরতে চেষ্টা করে। বুকে তার মাথাটা আস্তে করে থুয়ে দেয়। জরিদের ওই বুক বাংলার যে কোন পুরুষ মানুষের জন্যই পরম নির্ভরতার আশ্রয়। কাঁকরকান্দি, সোহাগপুরের জমিনের মাটির মতোই বড়ো নরম ওই বুক, মাখন মাখন। জরির বুকের মাঝখানে আপেলের মতোই গোল দু’টি কোমল মাংসপিণ্ড বসে আছে। ওগুলোর নাম কি?
শাকের আলী বলে ওগুলোর নাম দুধ। সে যাই হোক, ও দু’টি কোমল মাংসপিণ্ড পুরুষ মানুষের চির কামনার স্রোতধারা। ওখানে কত অজানা পৃথিবীর উষ্ণ কোলাহল শত জনমের জন্য ঘুমিয়ে আছে!’
একটি পতাকা একটি রাষ্ট্র একটি স্বাধীন ভূমির জন্য যে আত্মত্যাগ তার কোন তুলনা নেই। এই মহান কাজকে একটি উপন্যাসে তুলে ধরা অসম্ভব। তবুও রফিক রহমান ভূঁইয়ার এই শ্রমসাধ্য একনিষ্ঠ প্রচেষ্টাকে অভিবাদন।