76 verified Rokomari customers added this product in their favourite lists
উপন্যাসিক বঙ্কিম
বঙ্কিম-প্রতিভা আলোচনা করতে গিয়ে মোহিতলাল মজুমদার বলেছেন—‘রবীন্দ্রনাথ বা বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতিভার প্রমাণ যুগ-মনোবৃত্তির, যুক্তিতর্কের অতীত; বঙ্কিমচন্..
TK. 120TK. 103 You Save TK. 17 (14%)
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।
Product Specification & Summary
উপন্যাসিক বঙ্কিম
বঙ্কিম-প্রতিভা আলোচনা করতে গিয়ে মোহিতলাল মজুমদার বলেছেন—‘রবীন্দ্রনাথ বা বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতিভার প্রমাণ যুগ-মনোবৃত্তির, যুক্তিতর্কের অতীত; বঙ্কিমচন্দ্রকে গালি দিয়া কিছু করিতে পারা দূরের কথা—বঙ্কিম প্রতিভার মহত্ত্ব যেটুকু ধারণা এ পর্যন্ত আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে, তাহাও অতিশয় সংকীর্ণ ও অসম্পূর্ণ। সে প্রতিভা যে কত বড়, তাঁহার উপন্যাস কাব্যে যে অসামান্য শক্তি সৃষ্টির পরিচয় আছে, তাহার বিচার বিশ্লেষণ এখনও আরম্ভ হয় নাই। যদি উপযুক্ত সমালোচনা আরম্ভ হয়, তবে দেখা যাইবে যে, সে প্রতিভার—সে সৃষ্টির একটি দিক আছে এবং তাহা এতই গভীর যে, যুগ হইতে যুগে সে সম্বন্ধে নতুন কথার শেষ হইবে না।'
বঙ্কিমচন্দ্র আজও বাংলা সাহিত্যে শুধু শ্রেষ্ঠ নন, শ্রেষ্ঠতম ঔপন্যাসিক। তাঁর উপন্যাসে যে মহৎ জীবনপিপাসা ও মুক্তিপিপাসা স্পন্দিত—তা কখনো অবক্ষয়ের আবর্তে লীন হয়ে যাবে না। পৌরুষ, ব্যক্তিত্ব, আত্মপ্রত্যয়, শৌর্যবীর্য ও মহিমার স্পর্ধায় এবং নিয়তি ও রিপুর প্রাবাল্য, রূপবহ্নি ও প্রবৃত্তির তীব্র তাড়না, অসূয়াবিষ ও জীবনভোগ, স্বাতন্ত্র্যবোধ ও আত্মমর্যাদাবোধে এবং মানসিক দ্বন্দ্ব ও জীবন যন্ত্রণায় বঙ্কিমের নায়ক-নায়িকা শুধু এ যুগে কেনো অনাগত যুগেও কালের কড়া প্রহরা এড়িয়ে বেঁচে থাকবে। তাঁর চরিত্রগুলোর জীবনপিপাসা ও আত্মজিজ্ঞাসা এবং জীবন-যন্ত্রণা কোনো বিশেষ ব্যক্তির নয়, যুগের যন্ত্রণাকেই উচ্চকিত করে তুলেছে। রোহিণী যখন বলে—
১. হে জগদীশ্বর, হে দীননাথ, হে দুঃখিজনের একমাত্র সহায়! আমি নিতান্ত দুঃখিনী, নিতান্ত দুঃখে পড়িয়াছি—আমায় রক্ষা কর—আমার হৃদয়ে এই অসহ্য প্রেমবহ্নি নিবাইয়া দাও—আর আমায় পোড়াইও না। আমি যাহাকে দেখিতে যাইতেছি—তাহাকে যতবার দেখিব, ততবার—আমার অসহ্য যন্ত্রণা-অনন্ত সুখ। আমি বিধবা-আমার ধর্ম গেল—সুখ গেল—প্রাণ গেল—রহিল কি প্রভু!—হে দেবতা! হে দুর্গা! হে কালি—হে জগন্নাথ—আমায় সুমতি দাও—আমার প্রাণ স্থির কর—আমি এই যন্ত্রণা আর সহিতে পারি না ।
২. আমি পাপপুণ্য জানি না —আমাকে কেহ শিখায় নাই। আমি পাপপুণ্য মানি না— কোন পাপে আমার এই দণ্ড? পাপ না করিয়াও যদি এই দুঃখ তবে পাপ করিলেই বা ইহার বেশী কি হইবে?
৩. রাত্রিদিন দারুণ তৃষায় হৃদয় পুড়িতেছে—সম্মুখ শীতল জল, কিন্তু ইহজন্মের সে জল স্পর্শ করিতে পারিব না। আশাও নাই।
৪. কি অপরাধে এ বালবৈধব্য আমার অদৃষ্টে ঘটিল? আমি অন্যের অপেক্ষা এমন কি গুরুত্বর অপরাধ করিয়াছি যে, আমি এ পৃথিবীর কোন সুখ ভোগ করিতে পাইলাম না। কোন্ দোষে আমাকে এরূপ যৌবন থাকিতে কেবল শুষ্ক কাঠের মত এ জীবন কাটাইতে হইল । যাহারা এই পৃথিবীতে সকল সুখে সুখী — মনে করে, ঐ গোবিন্দলাল বাবুর স্ত্রী—তাহারা আমার অপেক্ষা কোন গুণে গুণবতী - কোন পুণ্যফলে তাহাদের কপালে এ সুখ—আমার কপালে শূন্য......আমার সকল পথ বন্ধ কেন?