User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
"সোনামুখী সুঁইয়ে রূপোলী সুতো" পড়লে নাগরিক জীবনটাই আমাদের সামনে আসে। কখনো কল্পনার ভেলায় চড়ে প্রিয় কবির সঙ্গে পথচলার, কথা বলার, অনুভূতির বিনিময়। কখনো একজন পতিত নারীর আখ্যানে আমাদের নাগরিক অন্ধকারের দিকে তীর্যক দৃষ্টির তারল্য সংকটের প্রতি টর্চ জ্বালিয়ে- অচেনা একটি জগৎ সম্পর্কের মানবিক ধারণা প্রদানের ইচ্ছেটাকে মূখ্য হতে দেখি। কখনো প্রেম আর ভালোবাসার রোমান্স। বেকারত্বের কথাটিও বাদ যায় না। আবার রাজনীতির কলুষতা নিয়ে ব্যঙ্গ করতে ভুলেন নি, আবদুর রাজ্জাক শিপন। উত্তমপুরুষ দিয়ে কথকের বলার ধরনটি পুরো উপন্যাস জুড়েই লক্ষ্য করা যায়। আমরা লক্ষ্য করলে দেখবো, আমাদের পঠিত উপন্যাসে নায়ক অপূর্ব। শুরুটা করলেন- আসানসোলের রুটির দোকানের কবিকে নিয়ে যাত্রা শুরু হয় তার। রাস্তায় চলতে গিয়ে আমাদের নায়ক দেখতে পান, সদ্য গোঁফ গজানো চারজন যুবক একজন তৃতীয় মানুষকে পেটাচ্ছে। তখন আমাদের নায়ক অপূর্ব নিজের ভেতরে প্রতিবাদ করতে না পারার-অনুশোচনায় ভোগেন। আমাদের নায়কের ভেতরের অনুশোচনা আমাদের নাগরিক জীবনের ব্যর্থতার কথাই মনে করিয়ে দিয়ে আমাদেরকেই অনুশোচনায় ফেলে দেয়। এবং পুঁজিবাদী বাণিজ্য সম্বন্ধে গল্পকথকের ক্ষোভের কথা জানতে পারি- ! আমাদের নায়ক থেমে নেই। প্রিয় কবির সাথে আলোচনায় মেতে ওঠেন তিনি। গভীর জীবনতাত্ত্বিক আলোচনা। আমরা বুঝতে পারি- আমাদের নায়ক বর্ণবাদ সংক্রান্ত ব্যাপারে বেশ বিরক্ত। তিনি কবির সাথে কথা বলতে বলতে রাজনীতির অন্ধকার সম্বন্ধে আলোচনায় উদ্যত হোন। এবং তীব্র শব্দশৈলিতে ব্যঙ্গ করেন। এরপরই আমাদের সামনে আসে নায়কের পরিচিত চাঁদনী নামের এক অন্ধতম নারীর কথা। যে কথাগুলো আমাদের হৃদয়কে দুমড়ে মুচড়ে- অন্য এক পৃথিবীর মুখোমুখী দাঁড় করায়। আমরা অনেকটাই বিব্রত হই। এক্ষেত্রে আমরা আরও ক'টি চরিত্রের সবল অস্তিত্ব টের পাই। চাঁদনীর অভাবী বাবা, স্বর্ণকার কাকা, রানু, স্বর্ণকারের ছেলে নিতাইয়ের নষ্টামি। এরপর আমরা আবারও দেখি অপূর্ব কথক হয়ে উঠেন। তিনি তার প্রেমের গল্প বলেন। আমরা শুনি। গভীর মগ্নতায় শুনি। আমরা তার কথায় জানতে পারি- তার প্রেমিকা রিপা এখনো চিঠি লিখে- এবং তিনি চিঠি পড়ে বেশ আহ্লাদ অনুভব করেন। আরেকটি বিষয় সম্পর্কে বলা দরকার বলে মনে করি। আবদুর রাজ্জাক শিপন কবিতায় আবৃত। আলোচিত উপন্যাসিকায় নজরুল, জীবনানন্দ, পুর্ণেন্দু পত্রীকে দেখা যায় বেশ সরব। নাকফুলের আলোচনা দিয়ে লেখক তাঁর লেখা শেষ করেন।
Was this review helpful to you?
or
সোনামুখী সুঁইয়ে রূপোলী সুতো আবদুর রাজ্জাক শিপন শুদ্ধস্বর ১০০ টাকা একজন কথক বলে যাচ্ছেন। আখ্যান বর্ণনার একটি নির্দিষ্ট ভঙিতে তিনি বলছেন। হাত নাড়াচ্ছেন, মাথা নাড়াচ্ছেন। ক'জন শ্রোতা মনোযোগী হয়ে শুনছেন তার গল্প। তিনি মূলত নাগরিক জীবনের কিছু গল্পকে খুব নিঁখুতভাবে বলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। এই গল্পকার সম্বন্ধে কিছু জেনে নিই, নির্ঝর নৈঃশব্দ্যের কাছ থেকে- "আবদুর রাজ্জাক শিপন এর বলার ধরন অনেকটা মন্দিরের আঙ্গিনায় বসা কথকঠাকুরের মতো, মানে গল্পবলার ধরন।"। এই কথাটি গল্পকারের বলার ধরন সম্পর্কে আমাদের জানিয়ে দেয়। পাঠের পরে আমার তাই মনে হয়। বলা যেতে পারে- আমি মনোযোগী শ্রোতা হয়ে গল্পটি শোনবার পরের উপক্রিয়াটা ব্যক্ত করবার ইচ্ছাটাকে দমাতে পারলাম না বলেই-দু'কলম...। বলে নেয়া ভালো, সমালোচনা করবার সাহস বা যোগ্যতা আমার সঞ্চয়ে নেই। উপন্যাসের নির্দিষ্ট ধরনকে লক্ষ্য করে আমরা যখন "সোনামুখী সুঁইয়ে রূপোলী সুতো" পাঠ মেষ করবো তখন নাগরিক জীবনটাই আমাদের সামনে আসে। কখনো কল্পনার ভেলায় চড়ে প্রিয় কবির সঙ্গে পথচলার, কথা বলার, অনুভূতির বিনিময়। কখনো একজন পতিত নারীর আখ্যানে আমাদের নাগরিক অন্ধকারের দিকে তীর্যক দৃষ্টির তারল্য সংকটের প্রতি টর্চ জ্বালিয়ে- অচেনা একটি জগৎ সম্পর্কের মানবিক ধারণা প্রদানে ইচ্ছে। কখনো প্রেম আর ভালোবাসার রোমান্স। বেকারত্বের কথাটিও বাদ যায় না। আবার রাজনীতির কলুষতা নিয়ে ব্যঙ্গ করতে ভুলেন নি, আবদুর রাজ্জাক শিপন। সোনামুখী সুঁই- কথাটা যখন আমাদের সামনে গল্পকথক উপস্থাপন করলেন, তখন আমাদের মিহিন সেলাইয়ের কথাটি মনে যায়। উত্তমপুরুষ দিয়ে কথকের বলার ধরনটি পুরো উপন্যাস জুড়েই লক্ষ্য করা যায়। আমরা লক্ষ্য করলে দেখবো, আমাদের পঠিত উপন্যাসে নায়ক অপূর্ব। তিনি এখন আমাদের সামনে উত্তম পুরুষে থেকেই গল্প বলবেন। তিনি একজন বেকার যুবক। যে বেকারত্বের কারণে- প্রেমিকার বাবা প্রেমিকার মোবাইল ছিনিয়ে নেন- কারণ তিনি চাননা একজন বেকার যুবকের সাথে তার মেয়ে সম্পর্ক চালিয়ে যাক। তবে আমাদের অপূর্ব বেকারত্ব ঘুচাতে সচেষ্ট! তবে কি, আমাদের নায়ক- গৎবাঁধা নিয়মের ভেতরের নায়কোচিত ভাবখানা প্রকাশ করতে চান না। শুরুটা করলেন- আসানসোলের রুটির দোকানের কবিকে নিয়ে যাত্রা শুরু হয় তার। রাস্তায় চলতে গিয়ে আমাদের নায়ক দেখতে পান, সদ্য গোঁফ গজানো চারজন যুবক একজন তৃতীয় মানুষকে পেটাচ্ছে। তখন আমাদের নায়ক অপূর্ব নিজের ভেতরে প্রতিবাদ করতে না পারার-অনুশোচনায় ভোগেন। তিনি বলেন, "নায়কোচিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে না পারার বেদনা বুকে ধরে দর্শকদের ভূমিকাতেই সীমাবদ্ধ থাকি এবং সদ্য গোঁফ গজানো পাতি মাস্তানদের আমাদের নাকের ডগা দিয়ে নিষ্ক্রান্ত হতে দেখে যাই"। আমাদের নায়কের ভেতরের অনুশোচনা আমাদের নাগরিক জীবনের ব্যর্থতার কথাই মনে করিয়ে দিয়ে আমাদেরকেই অনুশোচনায় ফেলে দেয়। এর পর আমরা আমাদের আলোচিত নায়ককে দেখি রিপা নামের মানবীর সাথে সিগারেট সংক্রান্ত আলোচনার খুনসুটি। এবং নায়িকা নায়ককে সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি- গল্পকথকের ক্ষোভের কথা জানতে পারি- পুঁজিবাদী বাণিজ্যের সম্বন্ধে! আমাদের নায়ক থেমে নেই। প্রিয় কবির সাথে আলোচনায় মেতে ওঠেন তিনি। গভীর জীবনতাত্ত্বিক আলোচনা। নায়ক কবিকে জিজ্ঞেস করেন, "মাছির জাত কী ? -মাছির জাতপাত নেই। জাতপাত শুধু মানুষের।" আমরা বুঝতে পারি- আমাদের নায়ক বর্ণবাদ সংক্রান্ত ব্যাপারে বেশ বিরক্ত। তিনি কবির সাথে কথা বলতে বলতে রাজনীতির অন্ধকার সম্বন্ধে আলোচনায় উদ্যত হোন। এবং তীব্র শব্দশৈলিতে ব্যঙ্গ করেন। তিনি সখিনা আর খালেদা বানুর আড়ালে আমাদের রাজনীতির ভেদাভেদকে অঙ্কন করেন এবং ব্যতীত হোন। এরপরই আমাদের সামনে আসে নায়কের পরিচিত চাঁদনী নামের এক অন্ধতম নারীর কথা। যে কথাগুলো আমাদের হৃদয়কে দুমড়ে মুচড়ে- অন্য এক পৃথিবীর মুখোমুখী দাঁড় করায়। আমরা অনেকটাই বিব্রত হই। এক্ষেত্রে আমরা আরও ক'টি চরিত্রের সবল অস্তিত্ব টের পাই। চাঁদনীর অভাবী বাবা, স্বর্ণকার কাকা, রানু, স্বর্ণকারের ছেলে নিতাইয়ের নষ্টামি। সবমিলে একটা মেয়ের জীবন কিভাবে দুর্বিসহ হয়ে ওঠে তার একটি সফল বর্ণনা-পাই। তবে এক্ষেত্রে আমাদের নায়ক অপূর্বকে শ্রোতাদের লাইনেই বসতে দেখি। কথক চাঁদনী। চাঁদনী স্বীকার হয় বখাটেদের শারীরিক নির্যাতনের। একদিকে পারিবারের অভাব, অন্যদিকে সতীত্ব হারানো মেয়ের নাগরিক লজ্জা। অবশেষে অন্ধকার পথটিই বেছে নেয়ার গল্পটি বলতে বলতে- সে বলে "আমি ঘরে ফিরি না, ঘরে ফিরবার পথ পাই না, ঝাউতলার এই খুপরিটাই বেছে নেই। এই ঘরে আমি পুরুষ তুলি না। পুরুষরা আমাকে তুলে নিয়ে যায় কখনও। সে টাকায় আমার মা আর রানু বেঁচেবর্তে যায়। আমিও বেঁচে যাই, মরে যেতে পারা সহজ না, তাই!" পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের নায়ককে দেখা যায় চাঁদনীকে নিয়ে তার প্রিয় কবির সাথে আলোচনায় মেতে উঠতে। কবির প্রশ্নের জবাবে আমাদের নায়ক অপূর্ব এমন একটি কথা বলেন, যা শোনে আমাদের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবার উপক্রম হয়। নায়ক হাহাকার মাখিয়ে বলেন, "চাঁদনি একজন পতিতা। পতিতা জনমের আগে সে আমার বোন ছিল'। এরপর আমরা আবারও দেখি অপূর্ব কথক হয়ে উঠেন। তিনি তার প্রেমের গল্প বলেন। আমরা শুনি। গভীর মগ্নতায় শুনি। আমরা তার কথায় জানতে পারি- তার প্রেমিকা রিপা এখনো চিঠি লিখে- এবং তিনি চিঠি পড়ে বেশ আহ্লাদ অনুভব করেন। এরকম একটা চিঠি আমরা পড়ি- আলোচিত উপন্যাসে। এক্ষেত্রে আমাদের নায়িকা রিপা লেখা চিঠির একটা জায়গা- উদ্ধৃতিযোগ্য; "অপূর্ব সোনা! স্বপ্ন কাজল না! স্বপ্ন চোখে আঁকা গেলেও, স্বপ্ন চোখে মেখে রাখা যায় না! আমি জানি, ঢের ভালো জানি! সোনামুখী সুঁইয়ে রূপোলী সুতো গেঁথে রাখা হয় না, গেঁথে রাখা যায় না সবসময়!" আমাদের সামনে মোটামুটিভাবে প্রকাশিত হয় আলোচিত উপন্যাসিকার নামকরণ সংক্রান্ত মীমাংসা। তারপর, আমরা দেখি- নাকফুল সংক্রান্ত একটি হার্দিক অনুরোধ আসে নায়িকার পক্ষ থেকে। নাকফুল সম্পর্কে রিপা বলে, "একটা জিনিস চাইলে, দেবে ? -নারী কী চাও আমার কাছে ? আমিতো দিয়েছি সবি, মন আর প্রাণ! -কাব্য না, আমাকে একটা নাকফুল দিয়ো! -ওতে কী হয়! -কী হয় মেয়েরা জানে! তোমার অজানাই থাক।" আরেকটি বিষয় সম্পর্কে বলা দরকার বলে মনে করি। আবদুর রাজ্জাক শিপন কবিতায় আবৃত। আলোচিত উপন্যাসিকায় নজরুল, জীবনানন্দ, পুর্ণেন্দু পত্রীকে দেখা যায় বেশ সরব। আবদুর রাজ্জাক শিপন , নাকফুলের আলোচনা দিয়ে তাঁর লেখা শেষ করেন। বোদ্ধারা অনেক কিছুই বলবার পথ খোঁজে পাবেন হয়তোবা। আমরা বলতে পারি- আলোচিত লেখাটি উপন্যাসের গোত্রে পড়ে কি পড়ে না- এ নিয়ে আমাদেরও বেশ দ্বিধা। এজন্য উপন্যাসিকা বলার দুঃসাহস করেছি। আখ্যানগত বর্ণনাধারা, বাস্তবতা এবং স্বর বিবেচনায় তাই মনে হয়। সবশেষে বলি, দুটি উপন্যাসের মাধ্যমে একজন লেখককে কখনোই পূর্ণতা অপূর্ণতার আলোচনায় নিয়ে আসা যায় না। এজন্য সময়ের সাথে সাথে দলিলপত্রেরও একটা ব্যাপার আছে। আবার বলি, আমি সমালোচনার জন্য লিখিনি বা লিখবার সাহসও নেই। একজন পাঠকের পাঠ পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার একটি সারসংক্ষেপ বলা যায়। আরেকবার বলি, বইটি কিনে লস হয়নি। আবদুর রাজ্জাক শিপন হয়ে উঠুন সময়ের অন্যতম কথাশিল্পী এই কামনা করতেই পারি।
Was this review helpful to you?
or
প্রথমেই থমকে দাঁড়াই! লেখকের সাথে আসানসোলের ঝাঁকরা চুলের বাবরি দোলানো কবির উপস্থিতিতে মনটা আনন্দে ভরে উঠে। কান পেতে রই রেললাইনে তাদের অপূর্ব সুর ঝংকার শোনার জন্য। শুনতে থাকি একের পর এক সিম্ফনি। তারা সুর তুলে এগিয়ে যায় খন্ড খন্ড কিন্তু গুরুত্বপূর্ন কিছু বিষয়ের ভিতর দিয়ে। চটের বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে থাকা মানবশিশুর সিম্ফনি শুনে কিছুক্ষনের জন্য হলেও থেমে যাই, নিজের ভাবনাকে নিয়ন্ত্রনকারী নিউরনগুলোর ছুটোছুটি দ্রুত বেড়ে যায়। এই নিউরনগুলিই আবার নিশ্চল হয়ে পড়ে চাঁদনীর করুণ রসে,মনে হয় এরকম কতো চাঁদনী সিম্ফনি শুনেছি, এরকম কতো চাঁদনী আছে আমাদের আশেপাশে, অথচ কখনো ভাবিনি তাদের কথা। চিন্তা করিনি বোন হিসেবে, ভেবেছি শুধুই অচ্ছুৎ! সালাম শিপন, তোমায় সালাম। “মাছির জাতপাত নেই। জাতপাত শুধু মানুষের”- মানবনীতির পাশেই আছে রাজনীতি, আছে শক্ত প্যারোডি। সিম্ফনিগুলো শুনতে শুনতে আঁতকে উঠছিলাম, ভাবছিলাম এটি কবির সেই বিখ্যাত সুরের মতোই আরেকটা ‘বিদ্রোহী’ সুর কি না! ইদানীং আমাদের সমাজে ‘বিদ্রোহী’ আর ভালো লাগে না, ঘুম পাড়িয়ে দেয়। আমাকেও পাড়িয়ে দিতো, যদি না রিপা নীল খামে চিঠি পাঠাতো! রিপা তার স্বপ্নের সাথে আমাকেও নিয়ে গেল নাকফুল পর্যন্ত। এই নাকফুল সিম্ফনি আমায় এতো বুঁদ করে রাখলো যে, এই মধ্যরাতে মনে হলো আমিও আমার রিপার জন্য নাক (সোনামুখী সুঁই) ফুল (রূপোলী সুতো) চাই। আমায় এখন বঙ্কিম টানে না, কারণ আমার আছে প্রমথ চৌধুরি। আমায় ‘কুসুমাদপি সূর্যটা টুপ করে পশ্চিমে ডুব দেয় কি দেয় না, সেই দৃশ্য অবলোকনে আমরা ব্যর্থ হলেও ঘনীভূত অন্ধকার আঁচ করা যায়’- ভাষা সহজ হতে দেয় না, যতটা সহজ হই ‘মা আহাজারি করছিলেন, রানু চিৎকার করে কাঁদছিল’- বাক্যচয়নে। কিন্তু বিভ্রান্ত হয়ে যাই যখনই বঙ্কিম আর প্রমথ আমার সামনে একসাথে চলে আসে। এদেরকে কখনোই আমি একসাথে দেখতে চাই না, তাতে মোজার্টের নাইনথ সিম্ফনি শোনার আবেদনটাই হুমকীর মুখে পড়ে। “স্বপ্ন কাজল না, স্বপ্ন চোখে এঁকে রাখা যায় না- এ কথা পুরোপুরি সত্য না! কাজলের মতো করে স্বপ্নও চোখে লাগিয়ে রাখা যায়। মানস আয়নায় স্বপ্ন জিইয়ে রেখে, স্বপ্ন ছুঁতে হাত বাড়াতে বাড়াতে হাতটা যখন লম্বা হয়, এক সময় স্বপ্ন ছুঁতেও পারা যায়’—এই সুর ঝংকারে আমার সামনে থেকে যেনো এক নিমিষে আসানসোলের কবি অদৃশ্য হয়ে যায়, সেখানে শুধু উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হতে থাকে বিরলপ্রজ সাদা মনের মানুষদের দাঁড়িয়ে সম্মান জানানো আব্দুর রাজ্জাক শিপন। আবারো সালাম শিপন, তোমায় সালাম। এবার কিছু সোজা কথা। বইটির প্রচ্ছদটি আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে, ভালো লেগেছে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর লেখা সেই বিখ্যাত কবিতা ‘কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে পড়েছে লতাটা’-দেওয়ায়। মুগ্ধ হয়েছি নজরুল, জীবনানন্দ এবং পূর্নেন্দু পত্রীর কবিতাগুলোর সুন্দর গাঁথুনিতে। মনে দোলা লেগে গেছে অদ্ভুত সুন্দর ‘নাকফুল’ থিমটির জন্য। মনে হচ্ছে নাকফুলের মানে শুধু মেয়েরাই জানে না, আমরা ছেলেরাও জানি!