User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
মধ্যাহ্ন হুমায়ূন আহমেদের গুরুত্বপূর্ণ লেখা গুলোর মধ্যে অন্যতম।
Was this review helpful to you?
or
মধ্যাহ্ন এক দগদঅগে দুপুরের অনুভূতি তৈরী করবে পাঠকমনে। লেখক এমন মুন্সিয়ানার সাথে গল্পের চরিত্রগুলোর টাইমলাইনে ঐতিহাসিক মানুষদের জুড়ে দিয়েছেন যে পড়তে অসাধারণ লাগে। কখনো হতাশা, কখনো রাগ, কখনো সব ছুড়ে ফেলা বিরক্তি, কখনো একরাশ ভালোলাগা- সব মিলিয়েই মধ্যাহ্ন। হুমায়ূন আহমেদের ওয়ান অফ এ কাইন্ড বইটি। একটা সুন্দর গল্পের হাত ধরে হাটতে চাইলে পাঠক মধ্যাহ্ন হাতে তুলে নিতেই পারেন। আর প্রচ্ছদটা দেখলে মনে হয় না খেয়ে ফেলি?
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাসটির লিখনি একদম সহজ ভাষায়, যেখানে ইতিহাসের সাথে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের অনুভূতির সংমিশ্রণ খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
Was this review helpful to you?
or
সকল পাঠকদের এই বইটি পড়া উচিত। এক কথায় বলতে গেলে অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদ স্যার ছাড়া এমন সহজ সরল ভাবে কেউ এমন ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখতে পারেন না। স্যারের লেখা যেকোনো ইতিহাস মনে হবে আমার সামানেই ঘটনা ঘটে গেলো। স্যার আপনাকে ধন্যবাদ এমন উপন্যাস লেখার জন্য। স্যার বেঁচে থাকলে হয়তো এমন আরো অনেক মাস্টারপিস বই আমরা পড়তে পেতাম। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে ওপারে ভালো রাখুক।
Was this review helpful to you?
or
উপন্যাস হিসাবে বরাবরের মতই অসাধারন।এই নিয়া বেশি কিছু বলার মত নাই। সব ঠিক আছে প্রিন্টিং কোয়ালিটো ভাল কিন্তু এই সুতাটা আর ২ ইঞ্চি বড় দিলে প্রকাশকের খুব বেশি লস হতে যাইত বলে আমার মনে হয় না।এখন যে পজিশনে আছে তাতে এইটা থাকা আর না থাকায় কিছু আসে যায় না। আর বাইন্ডিং এর সময় মিস্টেক এর কারনে লেখার পুরা ফন্ট অই বাকা লাগে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদের সেরা উপন্যাস এটাই।
Was this review helpful to you?
or
One of my 4 most loved books of Humayun Ahmed. It basically explains the pre liberation story in a multidimensional way. Absolutely genius!
Was this review helpful to you?
or
ভাল লাগে নাই, ওভাররেটেড একটা বই।
Was this review helpful to you?
or
#মধ্যাহ্ন_অখণ্ড #পাঠ_অনূভূতি ♦এক নজরেঃ •উপন্যাসের নামঃ মধ্যাহ্ন অখণ্ড •লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ •ধরনঃ ঐতিহাসিক, সামাজিক •প্রকাশনীঃ অন্যপ্রকাশ •প্রচ্ছদঃ মাসুম রহমান •মুদ্রিত মূল্যঃ ৭০০ •পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৪০৮ •প্রকাশকালঃ একুশে বইমেলা ২০০৮ লেখনীতেঃ রিফায়াত হাসান সাকিব ♦ভূমিকাঃ আজকে সকালে হঠাৎ করে চোখটা মেলে ঘুমটা ভেঙে গেল । কেনো ভেঙে গেল তা জানি না, তবে আর ঘুম আসতেও চাইল না । হঠাৎই মনে হলো এই শীতের ভোরে ঘুম না আসা বেলা আমাকে অদ্ভুত কিছু মুহূর্তের সাক্ষী দিবে বলেই বোধহয় আমার আজকে এই সময়ে ঘুম চোখ থেকে চলে গেল । সেটাই হলো আমার জীবনে । বলা চলে আমার পাঠক জীবনে । আমার পাঠক জীবনে, এই প্রথম । এত সকালে ঘুম থেকে উঠেই একটা উপন্যাস পড়তে বসেছি । এই বিষয়টা অদ্ভুত না! যেন মনে হচ্ছে সময়টাই নতুন করে আমাকে অনুভূতি দিতে চেয়েছে । হঠাৎ করেই সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে পড়তে শুরু করেছিলাম সেই উপন্যাসটি । যে উপন্যাসটির নাম, ‘মধ্যাহ্ন’ । যা আমার একনাগাড়ে পড়ার স্বভাবেই একনাগাড়ে পড়া হয়েছে সারাদিন ধরে । যখন উপন্যাসটি পড়া শেষ তখন সময়টা বিকাল ৪টা । ♦নামকরণঃ পৃথিবীতে মধ্যাহ্ন হলো দিনের মধ্যভাগ । এই মধ্যভাগে দিনের অর্ধেক জীবনের আলো যেন এসে পড়ে । সে আলোতে পৃথিবীতে অদ্ভুত নীরবতা এসে পড়ে । কখনোবা বিচ্ছিন্নতা সমাজকে আরো গম্ভীর করে তোলে । জীবনের সাথে সাথে জড়িত করে তোলে যেন । মধ্যাহ্ন পৃথিবীতে মানুষের অনুভূতিকে যেন পাল্টে দিতে সাহায্য করে । এই মধ্যাহ্ন রূপক অর্থে মানুষের জীবনের মধ্যগগনকে বোঝানো হয়েছে । যে মধ্য গগনে মানুষের জীবনে সব কাজেরই ভালো দিক এবং খারাপ দিকের ভালো এবং মন্দ দুইটা দিকই আছে ধরা পড়ে । ♦ফ্ল্যাপে লেখাঃ তুমি জ্যোতির জ্যোতি, আমি অন্ধ আঁধারে তুমি মুগ্ধ মহীয়ান, আমি মগ্ন পাথারে । তুমি অন্তহীন, আমি ক্ষুদ্র দীন, কী অপূর্ব মিলন তোমায় আমায় । –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ♦প্রচ্ছদঃ উপন্যাসের প্রচ্ছদটা আমার বেশ পছন্দনীয় কেনো জানি না । বারবার মনে হয় যেন দেখতেই থাকি । হয়তো উপন্যাসের নামের সাথে অত্যাধিক সাদৃশ্য আছে বলে । মধ্যাহ্ন এর সাথে দুপুরের মিলে যাওয়া রঙের সাথে যে হলুদের সরাসরি যোগসূত্র আছে তার জন্যেই বোধহয় প্রচ্ছদটা দেখতে এত মায়াকাড়া । ♦পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ √উপন্যাসের পটভূমির আবহ শুরু ১৯০৫ সাল থেকে । সেই যে বঙ্গভঙ্গ শুরু হয়েছিল । তা থেকে ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের প্রাক্কালে উপন্যাসের গণ্ডি । এই উপন্যাসে যুদ্ধবিগ্রহ আছে । শান্তি আছে । ভালোবাসার অপূর্ব নিশ্চুপতা আছে । উপন্যাসের কিছু কিছু ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ এর পাশাপাশি সময়ের সাথে সাথে বয়ে চলা তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপট উপন্যাসকে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলে ধরা হয়েছে । ইতিহাসের পাতা থেকে চলে আসা মানুষজন সেই সময়ে যেভাবে চলে এসেছেন তার পাশাপাশি সময়ে দাঁড়িয়ে অসাধারণ সুন্দর ভাবে প্রেক্ষাপটকে সামাজিক দৃষ্টিকোণে তুলে ধরা হয়েছে । এই উপন্যাসে তাই ঐতিহাসিক এবং সামাজিক দুইটি ঘরানা একসাথে থাকায় তা সংযোগ স্থাপন করলেও পটভূমিতে থাকা জীবনধারা বেশ অসাধারণ এবং সুন্দর । তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন ধাপ, মুসলমান-হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝের ঝগড়া বিভেদ উপন্যাসের প্রেক্ষাপটে আরো আবহ এনেছে । সেই আবহে বিশ্বযুদ্ধ, খেলাফত আন্দোলন থেকে ফরায়েজী আন্দোলন উপন্যাসে মুগ্ধতা এনেছে । √এই উপন্যাসের সবচেয়ে যেটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, তা হলো চরিত্র গঠন এবং উপস্থিতি । যেভাবে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব এর পাশাপাশি যেভাবে পরিবেশ এবং সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে একের পর এক চরিত্র সেই সময়ানুযায়ী গঠন করে তাদের উপস্থিতি দেয়া হয়েছে তা বেশ অসাধারণ ছিল । বিশেষ করে হিটলার, মহাত্মা গান্ধী, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে এসেছেন, সেভাবে লাবুস, মাওলানা ইদরিস, ধনু শেখ, জুলেখা, হরিচরণ সাহা এদের চরিত্র গঠন কিংবা উপস্থিতি অসাধারণ সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । এছাড়াও অন্যান্য যে চরিত্রগুলো, প্রতিটি চরিত্রের উপস্থিতি আমার কাছে যথাযথ লেগেছে । ♦প্রকাশনীঃ অন্যপ্রকাশ সবসময়ই আমার প্রিয় প্রকাশনী হয়ে আছে । আরো বিশেষ এবং প্রিয় লাগে তাদের বই বাঁধাই কিংবা প্রচ্ছদ এত সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার জন্য । এত সুন্দর করে এত বড় আকৃতির বইগুলো বাঁধাই করতে দেখলে পাঠক মন আবেগে ভেসে যায় । যে আবেগে ভালোবাসা থাকে, ভালোলাগা থাকে । অসাধারণ ভাবে এই বইটির বাঁধাই হয়েছে । তেমন কোনো টাইপিং মিস্টেক আমার চোখে পড়েনি । ♦লেখক প্রসঙ্গেঃ লেখক হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা উপন্যাস আমার খুব কমই পড়া হয়েছে । তাই হঠাৎ করেই এতবড় একটা উপন্যাস পড়ে ফেলা বেশ ভালো লাগার মতো । পড়তে পড়তে আমার মনে হয়েছে তার বেশ কিছু উপন্যাস আমার অবশ্যই ভবিষ্যতে পড়া উচিত । তার সহজ ভাষায় অসাধারণ শব্দপ্রয়োগ করে মনের কাছে নিয়ে লেখা বাক্যালাপ বেশ মুগ্ধকর করে তোলে পাঠকমন । যা বেশ ভালো লেগেছে । সহজ ভাষায় ঝরঝরে শব্দ ব্যবহার করে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক জীবনধারায় ভারসাম্য বজায় রেখে উপন্যাস তৈরি করা বেশ কঠিন । যা তিনি অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন । ♦রেটিংঃ ৪.৮/৫ ♦উপসংহারঃ হয়তো আবারও কোনো এক শীতের সকালে, কুয়াশা ভেজা মুহূর্তে শিশির এর ফোটা ফোটা পানির ফোঁটা জানালার গ্লাসে লাগতে থাকা দেখতে দেখতে আবারও একটি উপন্যাস পড়বো । শীতের সেই মুহূর্তটি পাঠকদের কাছে অসাধারণ মনে হবে । যেন মনে হবে পাঠকদের যে রাজ্য যেখানে চরিত্ররা খেলাধুলা করে সেখানের রাজ্যটি ফুলের ফুলের গন্ধে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছে । এতদিনের পাঠকমনে রাতের মুগ্ধতা কখনও কখনও আমার সকালেও ভোর করুক । শীতের সকালে অদ্ভুত মুগ্ধতা পাওয়া যে উপন্যাসটি আমার পাঠক মনকে বিস্তৃত করবে সেই উপন্যাসটি আলোড়ন তুলুক ।
Was this review helpful to you?
or
Thanks for the nice books
Was this review helpful to you?
or
বাস্তবতার নিরিখে ফুটিয়ে তোলা ইতিহাস?
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ।
Was this review helpful to you?
or
Excellent
Was this review helpful to you?
or
One of the best Humayun Ahmed book
Was this review helpful to you?
or
Strangely wonderful plot
Was this review helpful to you?
or
khub valo boi
Was this review helpful to you?
or
সত্য বলতে আরো খন্ড থাকলে ভালো লাগত। অসম্ভব সুন্দর উপস্থাপনা, দক্ষতার সাথে প্লট নির্বাচন।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা বই
Was this review helpful to you?
or
oshadharon!
Was this review helpful to you?
or
nice
Was this review helpful to you?
or
মধ্যাহ্ন: দীর্ঘ ৪২ বছরের ইতিহাস আশ্রিত একটি উপন্যাস হুমায়ূন আহমেদের লেখা মধ্যাহ্ন ( অন্যপ্রকাশ ,২০০৭ ও ২০০৮ ) উপন্যাসটি বাংলাদেশের সাহিত্যের একটি অন্যতম প্রধান উপন্যাস | আমার পড়া হুমায়ূন আহমেদের লেখা সবচেয়ে প্রিয় উপন্যাসের তালিকাতে মধ্যাহ্ন উপন্যাসটিকেও স্থান দিয়েছি | আর ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাসটিকে কেন আমি এত ভালো বলছি টা আপনি এই বইটি পড়লেই বুঝতে পারবেন |মধ্যাহ্ন উপন্যাসটি শুরু হয়েছে ১৯০৫ সালে এবং পরিসমাপ্তি ঘটেছে ১৯৪৭ এর ভারতবিভাগের মাধ্যমে | এই উপন্যাস ছাড়া আর কোনো উপন্যাসে এই দীর্ঘ ৪২ বছরের ইতিহাস আমি ধারাবাহিকভাবে পড়িনি | উপন্যাসটি যে সম্পূর্ণ ইতিহাস দিয়ে পরিপূর্ণ তা কিন্তু নয় বরং কল্পকাহিনীকেও উপন্যাসে সম্বনিত করা হয়েছে | হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন যে, “ মধ্যাহ্নে ইতিহাস আছে ঐতিহাসিকতা নেই |” মধ্যাহ্ন একটি বহুকেন্দ্রিক বই, যা দ্বারা লেখক কয়েকটি সমসাময়িক ঘটনার উপর বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন | ঐতিহাসিক পটভূমিটি নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার বান্ধবপুর নামের একটি হিন্দু গ্রামে | পুরো উপন্যাস জুড়েই রয়েছে কিছু কাল্পনিক এবং সত্য চরিত্র | চরিত্র গুলোর মধ্যে আছে - সৎ,ন্যায়পরায়ণ ,ধনী এবং অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হরিচরণ , মসজিদের তিনজন ইমাম- ইদ্রিস, করিম ও নিয়ামত , উপন্যাসে আরো আছে লোভী ও ঠক ধনু শেখ , মনিশঙ্কর ও তার পুত্র শিবশঙ্কর , কাঠমিস্ত্রী সুলেমান, রুপবতী জুলেখা, জুলেখার পুত্র জহির ওরফে লাবুস , লাবুসের বোন মীরা, ইমাম করিমের স্ত্রী শরিফা , ধনু শেখের কন্যা আতর , জমিদার শশাঙ্ক পাল, যমুনা ও তার স্বামী সুরেনসহ আরো অনেকে | এছাড়াও হরিচরণের কন্যা শিউলী, যে অনুপস্থিত থেকেও উপন্যাসে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা | এসব চরিত্রের দৈনন্দিন জীবনের মাধ্যমেই লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন ১৯০৫ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সমাজের নানারকম কুসংস্কার , কুপ্রথা, অজ্ঞতা, ধর্মান্ধতা , সংস্কৃতি , রাজনীতি, সামাজিক সমস্যা, মানুষের মানসিকতা ইত্যাদি| যেমনঃ হরিচরণ মুসলিম একটি শিশুকে আদর করায় এবং ঠাকুরঘরে নিয়ে যাওয়ায় সমাজ চ্যুত হয়েছেন, যা কুসংস্কার এবং ধর্ম বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ করে |দরিদ্র অথচ চতুর ও কুটিল বুদ্ধিসম্পন্ন ধনু শেখ হঠাৎ করে ক্ষমতাবান হয়ে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে এবং বিভিন্ন খারাপ কাজ করে | যেমনঃ বিপ্লবী জীবনলাল কে ছদ্মবেশে বান্ধবপুর গ্রামে লুকাতে এলে সে পুলিশকে তার খোঁজ দিয়ে দেয় এবং পরে ধনু শেখ ব্রিটিশ রাজের কাছ থেকে 'খান সাহেব' টাইটেল পায় | তারপর হরিচরণ মারা যাওয়ার আগে তার সকল সম্পত্তি একজনকে দিয়ে গেলেও ধনু শেখ সে সম্পত্তি দখল করে রাখে ইত্যাদি আরো অনেক কাজ করে যা পড়লে পাঠকরা ধনু শেখ নামক চরিত্রটাকে ঘৃণা করবে আর মনে হবে যে, মানুষ কীভাবে এত খারাপ হতে পারে? তারপর জুলেখার তার স্বামীর সাথে তালাক হওয়ার পর রঙিলা নটিবাড়িতে ( বেশ্যাপল্লীতে) স্থান নেয়, বাপের বাড়ি না যেয়ে | যা মানুষের জটিল ও রহস্যময়ী মানসিকতাকে নির্দেশ করে | সেসময়কার হিন্দু ও মুসলিমের ভিতরে নানারকম কুসংস্কার ছিলো, যেমনঃ তৎকালীন হিন্দুরা মুসলিমদের দেখতে পারতো না আর তাদের মতে জাতভেদে ব্রাহ্মণ এর অবস্থান সবার উপরে আর শূদ্রের স্থান সবার নিচে এবং মুসলিমের স্থান তো শূদ্রের ও নিচে | কোনো মুসলিম যদি কোনো হিন্দু মানুষের মিষ্টির দোকানে যায় আর মিষ্টি যদি স্পর্শ ও না করে তাও সব মিষ্টি ফেলে দিবে এবং নতুন করে মিষ্টি বানানো শুরু করবে | মুসলিমদের বিয়ের সময় কনের বাড়ি থেকে একজন দাসী পাঠানো হতো | কনের স্বামী সে দাসীর ও সঙ্গভোগ করতে পারতো এবং দাসীর গর্ভের সন্তান কোনো সম্পত্তির ভাগ পাবে না, সেই সন্তানকেও দাস / দাসী হয়ে থাকতে হবে | উপন্যাসের বিভিন্ন জায়গায় ইতিহাসের অনেক ব্যাক্তির বিভিন্ন কাজ বা অবদান তুলে ধরা হয়েছে | কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর , শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, হিটলার, মহাত্মা গান্ধী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, শেরেবাংলা এ.কে. ফজলুল হক, নেতাজী সুভাশচন্দ্র বোস, কিরণ গোস্বামী ,আইন্সটাইন, মাদাম কুরি সহ আরো অনেকে | তিনি এসকল মানুষকে এক সুতোয় গেঁথেছেন , যা আমার মনে হয় না যে অন্য কোনো লেখক এখন পর্যন্ত করতে পেরেছেন | মধ্যাহ্ন বইটি প্রথমে দুইটি খণ্ড আকারে বের হয়েছিল এবং পরে এই দুইটি খণ্ড একত্র করে মধ্যাহ্ন অখণ্ড নামে আবার প্রকাশিত হয় | মোট ৪৭৯ পৃষ্ঠা জুড়ে উপন্যাসটিতে ফুটে উঠেছে ঔপনিবেশিক শাসনামলের বাঙ্গালির ইতিহাস- ঐতিহ্য , শিল্প- সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির বর্ণনা আছে বঙ্গভঙ্গ , হিন্দু-মুসলিমের দাঙ্গা, অসহযোগ আন্দোলন , খিলাফত, কংগ্রেস , ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধ আর ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের সময়কালে মানুষের জীবনযাত্রা বানধবপুর গ্রামের কিছু মানুষের জীবনের মাধ্যমে লেখক তুলে ধরেছেন | ধর্মীয় গোড়ামির বিষয়ে অসাধারণ কিছু যুক্তিও লেখক তার চরিত্রগুলোর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন | কেউ আবার ভাববেন না যে এটি ইতিহাসের বই | হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন, “আমি ঐতিহাসিক না, গল্পকার | আমার প্রথম ও শেষ ঝোঁক গল্প বলার দিকে, তবে ইতিহাস থেকে যতটুকু না আনলেই নয় তা এনেছি |” সুতরাং বইটি পড়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করলাম | আর ইতিহাসের যে অংশগুলো বইয়ে লেখক তুলে ধরেছেন তার রেফারেন্স ও দেয়া আছে , চাইলে দেখে নিতে পারবেন | যদি আপনি এমন একটি বই খুঁজছেন যেখানে ভারত বিভাগের পূর্ব পর্যন্ত সমস্ত তথ্য থাকে, তবে এই বইটি আপনার জন্য উপযুক্ত কারণ এতে ১৯০৫-১৯৪৭ এর সমস্ত তথ্য এবং সেই সঙ্গে একটি কাল্পনিক গল্প ও আছে তাই বইটি পড়ার সময় আপনার কোনো বিরক্ত লাগবে না কারণ বইটিতে সকল তথ্য সহজ ভাষায় লেখা আছে সমাজ সাবজেক্টের মতো বিরক্তিকরভাবে লেখা নেই
Was this review helpful to you?
or
good
Was this review helpful to you?
or
awesome
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
পড়তে বেশ ভালোই লাগলো।
Was this review helpful to you?
or
ভালো লেগেছে
Was this review helpful to you?
or
মূলত গল্প শোনার জন্যেই বইটি নিয়েছিলাম।লেখকও দেখলাম বইয়ের শুরুতেই বলছেন ইতিহাসের পটভূমিকায় গল্পই বলছি.. লেখক যে সময়কে ধরতে চেয়েছিলেন তা তিনি খুব সহজ ভাবেই ধরেছেন। সেই সময়কার মানুষের বিশ্বাস,ধর্মপ্রিতি,ধ্যান-ধারণা সবইতো মনে হয় ঠিকঠাক আছে! সাবলীল ভাবেই বয়ে গেছে পুরোটা উপন্যাস। তবে এতো গুলো চরিত্র ঠিক রাখা বোধ হয় বেশ কষ্টসাধ্য ছিল :p যাই হোক,উপন্যাসে লেখক রবীন্দ্রনাথ,নজরুল,তারাসঙ্কর,বিভুতিভূষণকে নিয়েও বেশ কিছু ঘটনা বলেছেন।এগুলো সত্যি কিনা বুঝতে পারছিনা। তবে বেশ মজা পেয়েছি।
Was this review helpful to you?
or
Great
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন স্যার খুব বেশি একটা পড়া হয়নি। মধ্যাহ্ন সম্বন্ধে অনেক ভালো ইঙ্গিত পেয়েছি, তাই পড়তে ইচ্ছুক। ব্যাপার হচ্ছে, ড.মিজানুর রহমান আজহারি সাহেবের "ম্যাসেজ" আর হুমায়ূন আহমেদ স্যারের "মধ্যাহ্ন" উপন্যাস একসাথে রকমারি থেকে নিতে চাচ্ছি। কিন্তু চার্টে দুটো একত্রে এড করতে পারছি না.!
Was this review helpful to you?
or
১৯০৫ সালের দিকের গ্রাম্য জীবনের একটি চিত্র এখানে ফুটে উঠেছে সেই সাথে সেই সময়ের ইতিহাসের কিছু মিশ্রণ যেমন: হিটলারের যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের কাহিনী, আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গন্যমান্য কিছু ব্যাক্তি এবং এছাড়াও আরো অনেকেই।ইতিহাসের সাথে মিলিয়ে গল্পের সংমিশ্রনে বানানো এই বইটি। বইটি শেষ করে মানতেই হল এই বইটি হুমায়ূন আহমেদের লিখা আরেকটি মাস্টারপিস।
Was this review helpful to you?
or
মধ্যাহ্ন মনের ভিতরে গেছে যাওয়ার মতো বই। এইটা নিয়ে কোন রিভিউ পড়ার দরকার নাই, শুধু বইটা পড়েন আর মুগ্ধ হয়ে যান।
Was this review helpful to you?
or
বইটি হুমায়ূনের সেরা বই গুলোর একটি।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদ স্যারের বই মানেই তো অসাধারণ,
Was this review helpful to you?
or
ঐতিহাসিক প্লট বিবেচনায় " মধ্যাহ্ন" এক অসাধারণ উপন্যাস। উপন্যাসের শুরু হয়েছিল "হরিচরণ" নামের এক বিশিষ্ট ভদ্রলোকের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে।হিন্দু ধর্মের মানুষ হয়েও সামাজিকভাবে সমাজচ্যুত।কিন্তু মানুষ হিসেবে তিনি মহান মনের অধিকারী, অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ;যিনি ধর্মের আলোকে মানুষকে বিচার করেন না,মানবধর্মই যার প্রধান চরিত্র, সামান্যতম হিংসা-দ্বেষের স্থান নেই তাঁর অন্তরে। যারা তাকে সসমাজচ্যুত করেছে, তিনি তাদের বিপদের দিনেও তাদের সেবা করেছেন নিঃস্বার্থভাবে।মানুষকে সাহায্য করার মাঝে তিনি হয়তো শান্তি খুঁজে পেতেন। এই উপন্যাসে লেখক একদিকে বান্ধবপুর গ্রামের গল্প বলে গেছেন;অন্যদিকে কারিগরি হাতে সুচারুভাবে বর্ণনা করে গেছেন ১৯০৫সালে ঘটে যাওয়া বঙ্গভঙ্গ,বঙ্গভঙ্গ রদের ঘটনা, অসহযোগ আন্দোলন, স্বরাজ আন্দোলন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা,ছিয়াত্তরের মন্বন্তরসহ নানা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। লেখক গল্পের আলোকে টেনে এনেছেন পুরো ঐতিহাসিক প্লট। কাহিনি সাজিয়েছেন বেশ সুনিপুণ হাতে আর প্রতিটি চরিত্রকে অলংকৃত করেছেন বাস্তবতার নিরীখে। এতো জীবন্ত মনে হয়েছে পুরো উপন্যাসটিকে, কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি, কখনো কখনো বিস্ময়ে অভিভূত হয়েছি। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র "লাবুস" যার প্রকৃত নাম "জহির"৷ এমন চরিত্র সন্ধান হয়তো আমরা খুব কম ই পাই।হরিচরণ নামের বিশিষ্ট ভদ্রলোক যিনি তাঁর জীবনের বিপুল অর্থ-সম্পত্তি জহিরের নামেই উইল করে দিয়ে যান। অথচ দুইজনের ধর্মের কোন মিল ছিলো না। ধর্মের ঊর্ধ্বে গিয়ে যে মানবিক সম্পর্ককে লেখক এতো প্রাণবন্তভাবে উপস্থাপন করেছেন তা যেকোন পাঠককে মুগ্ধ করবে।বাস্তবিকই জহির যে কতটা অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ ছিলেন,সেটা জানার জন্য পাঠককে পড়তে হবে এই উপন্যাসটি। এই উপন্যাসে লেখক ঘটনার পালাক্রমে সামনে এনে হাজির করেছেন একের পর এক ঐতিহাসিক চরিত্র যারা সবাই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে বেঁচে আছেন মানুষের হৃদয়ে।উপন্যাসে খুব গুরুত্বের সাথে উঠে এসেছে শশী মাস্টারের নাম। অসীম সাহসী মাস্টারদা সূর্যসেন, যার কারণে ৪৮ ঘন্টা চট্রগ্রাম ছিল স্বাধীন শহর। ব্রিটিশ শাসনের আওতার বাইরের এক নগরী। মাস্টারদা সূর্যসেনের সাথে চট্রগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের সময় পুলিশের গুলিতে মারা যান শশী মাস্টার, উঠে এসেছে মাস্টারদা সূর্যসেনের আরেক সহযোগী জীবনলাল চট্টোপাধ্যায়, জুলেখা ওরফে চাঁন বিবি যার গান শুনে মুগ্ধ বংগ এলাকার মানুষ, আরো উঠে এসেছে কবি শাহনেওয়াজ, লেখক তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, বিভূতুভূষণ চট্টোপাধ্যায়সহ শিল্পী জয়নুল আবেদিনের নাম।লেখক নিষ্ঠার সাথে সামনে এনে হাজির করেছেন রবীন্দ্র, নজরুলকে। যখন ই লেখকের অসাধারণ বর্ণনাশৈলীর মাধ্যমে একেকেটি চরিত্রের সাথে পরিচয় হচ্ছিলাম, তীব্র ঘোরলাগায় আচ্ছাদিত হচ্ছিল মন-প্রাণ। উপন্যাস শেষ হয়েছে ১৯৪৭ এর দেশভাগের মাধ্যমে। পুরো উপন্যাস জুড়ে গ্রামীণ রাজনীতি, কুসংস্কার,জাত বৈষম্য, ধর্মকে কেন্দ্র করে রাজনীতি, সাম্প্রদায়িকতা--এইসব ব্যপারগুলো লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন অসামান্য দক্ষতায়। হুমায়ূন আহমেদের লিখার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য যেটার সাথে সবাই পরিচিত,সেটা হচ্ছে পাঠককে তিনি চুম্বকের মতো ধরে রাখতে পারেন শেষ অবধি, একইসাথে হাস্যরসাত্নক কথোপকথনের মাধ্যমে পাঠক পায় বাড়তি বিনোদন। "মধ্যাহ্ন" অসাধারণ এক উপন্যাস। এই উপন্যাসটি লেখকের অসমাপ্ত এক উপন্যাস।উপন্যাসটির দুটি খন্ড প্রকাশিত হলেও তৃতীয় খন্ডের কাজ এ লেখক ইচ্ছে করেই হাত দেননি।এ প্রসঙ্গে লেখক নিজেই বলেছেন, তৃতীয় খন্ড মানেই দেশভাগ,হতাশা, কষ্ট,গ্লানি এবং মৃত্যুর গাঁথা। এইসব লিখতে ভালো লাগে না।আমার মনে হয় লেখক এক্ষেত্রে যথেষ্ট বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন।খারাপ খবর পড়তে অনেকের ই ভালো লাগেনা। মনে দাগ কাটার মতো চমৎকার এক উপন্যাস মধ্যাহ্ন।
Was this review helpful to you?
or
Best Novel I have ever read.
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় উপন্যাস গুলোর মধ্যে "মধ্যাহ্ন" অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। উপন্যাসের গল্প ১৯০৫ সালের গ্রামীন প্রেক্ষাপট কে কেন্দ্র করে। এ উপন্যাসের কাঠামোয় হুমায়ূন আহমেদ একটি ঐতিহাসিক পটভূমিকে তুলে ধরেছেন। উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র সফল সৎ ব্যবসায়ী হরিপদ সাহা। যিনি এক মুসলিম ছেলেকে আদর করার দায়ে সমাজচুত্য হন এবং পরবর্তীতে ঋষি সূলভ জীবন বেছে নেন। একি দায়ে দোষী হলে এলাকার ব্রাহ্মণ অম্বিকা ভট্টাচার্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সিরাজুল ইসলাম ঠাকুর হয়ে যান। এছাড়া এই উপন্যাসে ফুটে উঠেছে তৎকালীন সময়ের বেশ্যালয়ের চিত্র। এলাকার কাঠ মিস্ত্রি সুলেমান তার স্ত্রী কে তালাক দিলে ঠিকানা হয় বেশ্যালয়! মধ্যাহ্ন শুরু থেকে শেষ অবধি আবর্তীত হতে থাকে নানাকাহিনীর সমন্বিত অবয়ব! উপন্যাসে বিশেষ পাওনা হিসেবে কখনো কখনো অতি অলৌকিকতা বা আধিভৌতিক ঘটনার জাদুকরি ছোঁয়া পাওয়া যায়।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদ-এর লেখা চমৎকার একটি বই। অনেক পেছনের দিনে ফিরে গিয়ে সময়টাকে সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। জন্ম দিয়েছেন চমৎকার কিছু চরিত্র। ধনু শেখ, হরিচরণ, শশাঙ্ক পাল, লাবুস, জুলেখা, ইমাম ইদরিস, আতর- কাকে বাদ দেবো? বিভূতিভূষণ থেকে শুরু করে হিটলার, তারাশঙ্কর থেকে শুরু করে মেরি কুরী। সময়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটা মানুষকে একটা ক্যানভাসে একেছেন এই ক্ষণজন্মা যাদুকর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, জয়নুল আবেদিনের কাক, এক সাধারণ মেয়ের নটী হয়ে যাওয়া থেকে শিল্পী জীবন-একটা ফ্রেমে এত কিছু একেছেন যে মুগ্ধ হয়ে যাই। ‘দেয়াল’ পড়ার পরে ‘মধ্যাহ্ন’ পড়ে আবার মুগ্ধ হলাম। এই বই পড়ে আমি হাওর দেখলাম,আব্বাসউদ্দিনের গান শুনলাম। জানলাম অনেক অনেক অজানা তথ্য। ‘ফুটনোটে’ অনেক তথ্য জুড়ে দিয়েছেন। ‘শঙ্খনীল কারাগার’-এর পর এই বইটিতে খুঁজে পেয়েছি কিছু অসাধারণ বর্ণনা। আবেশে অবশ হতে পাঠক বাধ্য। আমার মুগ্ধতা কাটেনি এখনো, কাটলেই আবার পড়ব। এরকম বই বারবার পড়লেও পুরানো হয় না
Was this review helpful to you?
or
মধ্যাহ্ন উপন্যাসের কাহিনির সূচনা হয়েছে বঙ্গভঙ্গ পরবর্তী উত্তাল সময়কে ঘিরে।তখন একদিকে বইছিল আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের হিল্লোল আর অপরদিকে তীব্র আন্দোলন ও প্রতিবাদ।পশ্চিম্বঙ্গের হিন্দু সমাজ কিছুতেই বঙ্গভঙ্গ মেনে নিতে পারেনি।তখনকার হিন্দু সমাজের জাতিভেদ প্রথার কথা উপন্যাসের পরতে পরতে উঠে এসেছে।আর মুসলমানদের মনে করা হতো শূদ্রদের চেয়েও অধম।তাই হিন্দুদের মাঝে ধর্মীয় ভাবে সরবোচ্চ শাস্তি দেওয়া হতো নির্ধর্ম করে দেওয়া।ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে ইসলাম গ্রহণ করতো।তবে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণের ইতিহাসও কম নয়।যাইহোক তখনকার সম্ভ্রান্ত হিন্দুদের মাঝে রঙিলা বাড়ি যাওয়ার কাহিনি ও ঘেটু পুত্র রাখার প্রথার কথাও উঠে এসেছে।এক্ষেত্রে হিন্দু মুসলিম প্রায় সমান।পুরোহিতদের ধর্মীয় অনাচার ফুটে উঠেছে।একই অপরাধে (?) কাউকে কঠিন শাস্তি আবার কাউকে সামান্য শাস্তি দেওয়া হতো।উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র হরিচরণ একজন ডুবন্ত মুসলিম শিশুকে উদ্ধার করে কিন্তু পরে তাকে ছোঁয়াছুঁয়ি ও অন্যান্য কারণে সমাজচ্যুত ও ধর্মচ্যুত করা হয়।কিন্তু হরিচরণ এর জন্য তা যেনো শাপে বর হয়ে আসে।অদম্য এই দানবীর ও ধার্মিক বুড়ো চলতে থাকেন পথে.... উপন্যাসটা হুমায়ূন আহমেদের অসাধারণ লেখনীর উজ্জ্বলতা যেনো আরো বাড়ি দিয়েছে।সুখপাঠ্য একটা বই।তবে বরাবরের মতোই একটু দাম বেশি .....
Was this review helpful to you?
or
বই পড়ার অভ্যাস খুব বেশি নেই। ভার্চুয়াল লাইফ থেকে একটু দূরে থাকতেই বই পড়ার ইচ্ছা জাগে। আর এই সুজুগেই পড়া হলো হুমায়ুন আহমেদের একটি সফল উপন্যাস "মধ্যাহ্ন"। ১৯ শতকের গ্রাম বাংলার মানুষের জীবন যাপন, মুসলমান হিন্দু বিদ্দেশ,বিশ্ব যুদ্ধের ঘটনা, কবি সাহিত্যিক দের কথা কি নেই এই বইয়ে। প্রত্যেকটি চরিত্রই চোখের সামনে দেখছি। এখন শুধু মনে হচ্ছে উপন্যাসটি কেনো আরো বড় হলো না? ধন্যবাদ হুমায়ুন স্যারকে এরকম একটি উপন্যাস আমাদের দেওয়ায়।
Was this review helpful to you?
or
সেরা
Was this review helpful to you?
or
এর থেকেও সুন্দর বই কী সম্ভব ! আমার জানা নেই
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ূন আহমেদ এমন একজন লেখক যিনি সবকিছু নিয়ে মজা করে লিখতে পারে।সেটা হোক ইতিহাস বা রাজনীতি। তাই হুমায়ূন আহমেদের বই পড়া শুরু করলে মূহুর্তে ই শেষ হয়ে যায়। বইটি পড়ে ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি সৃষ্টি। বইটি ধীরে ধীরে গল্পের ভেতরে নিয়ে যায়। অতিপ্রাকৃত ও আধুনিকতাকে পাশাপাশি নিয়ে এগিয়ে গেছে গল্প।
Was this review helpful to you?
or
মধ্যাহ্ন অসাধারন।
Was this review helpful to you?
or
সত্যিই বইটি মুগ্ধ করার মতো।জ্ঞ্যানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য বইটি যথেষ্ট উপযোগী।শুধু এই বিষয়ের ছাত্র না, সবাই এই বইটি সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে।শিখতেও পারবে অনেক কিছু।বইটি পড়ার পর ভালো লাগা কাজ করবেই।অনেক চিন্তার খোরাক যোগাবে বইটি।আমি সবাইকে রেফার করবো বইটি পড়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
মধ্যাহ্ন ❤️❤️
Was this review helpful to you?
or
বেশ আগ্রহ নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের "মধ্যাহ্ন" উপন্যাসটা পড়তে বসেছিলাম।মনটাও বেশ ফুরফুরে ছিলো। অনেকদিন আগে এমন ভালো মন নিয়ে পড়েছিলাম লেখকের আরেক প্রিয় উপন্যাস "বাদশাহ নামদার"।ওই উপন্যাসের সাথে এই উপন্যাসের একটি মিল হলো, এই দুই উপন্যাস পড়ার পর আমি অদ্ভুত এক ঘোরের মধ্যে ছিলাম।ঐতিহাসিক প্লট বিবেচনায় " মধ্যাহ্ন" এক অসাধারণ উপন্যাস।আসলেই মনে দাগ কাটার মতো চমৎকার এক উপন্যাস মধ্যাহ্ন।
Was this review helpful to you?
or
মধ্যাহ্ন , এক সন্ধিক্ষণ এর গল্প , এ যেনো গল্প আর ইতিহাসের এক অপরূপ মিলন. এতে একই সাথে কাল্পনিক এবং ঐতিহাসিক চরিত্ররা সমান্তরালে অবস্থান করে. মধ্যাহ্ন যেকোনো পাঠকে এক ঘোরের মধ্যে নিয়ে যায় যেনো পাঠক হয়ে ওঠে ইতিহাসের এক চরিত্র নিজেকে আবিষ্কার করে ইতিহাসের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে . কখনো কাজী নজরুলের সাথে রংগিলা বাড়িতে কখনো বা দেশ ভাগের অন্য এক মঞ্চে . এই বই পাঠক হৃদ্বয়ে এক অন্য অনুভূতি সৃষ্টি করে এবং জায়গা করে নেয় পাঠক হৃদ্বয়ে .
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০ এর তালিকা করলে হয়তো খুব সহজেই প্রথম দিকেই নিজের স্থানটা পাকাপোক্ত করে নিতে পারবে এই উপন্যাসটা। ততকালীন বঙ্গীয় সমাজে হিন্দু মসলমানের টানা পোড়ন কে এক অদ্ভূত জাদুকরী দক্ষতায় লিখে গিয়েছেন লেখক। অসাধারণ!
Was this review helpful to you?
or
one of the best novels I have ever read.
Was this review helpful to you?
or
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ মধ্যাহ্ন লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ পৃষ্ঠাঃ ৪০৮ মলাট মূল্যঃ ৬০০/- প্রকাশনাঃ অন্যপ্রকাশ গল্পের শুরুতে আছেন হরিচরণ বাবু । তিনি শান বাধানো ঘাটে বসে স্মৃতি চারনে ব্যস্ত । তার তিন বছর এর মৃত কন্যাকে মনে করেন । কিন্তু তার এক অদ্ভুত ঘ্রাণ এসে বিভোর করে তোলে । কোন এক নীল রঙা দেব শিশু কে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার গা থেকে নীল রক্ত ঝরছে । এক দিন দেখেন এক রাজপুত্রের মত এক ছেলে বসে আছে । তার শশী মাস্টার আবার কে? এই ছেলে কোথা থেকেই বা এলো? ১৯০৫ সালের পটভূমিকাতে লেখা এই বইটায় অনেকগুলা চরিত্র। বেশ অনেকগুলো চরিত্র, চক্রাকারে একে অন্য কে কেন্দ্র করে ঘুরছে, যেভাবে আমরা ঘুরি রোজ। মজার ব্যাপার হল এটা তে ইতিহাসের অনেক ঘটনা থাকলেও এটি ইতিহাস নয়। অনেকের কাছে হরিচরণ,লাবুস চরিত্রগুলো কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোর দু’জন, কিন্তু সক্ষম থাকা সত্ত্বেও এরা নিরুত্তাপ, বিশেষত লাবুস। ভালো লাগছে।আবার ধনু শেখ, শশাংক পাল, মাওলানা ইদরিস, জুলেখা, অম্বিকা, শরীফা আর নানা চরিত্রের ভীড় এই বইয়ের দিক কে অসাধারণ করে তুলেছে । এখানে ধনু শেখ হচ্ছে এক ধুর্ত মানুষ । যে নাম মাত্র মুসলমান । যিনি চালাকি করে এক হিন্দু কে গো-মাংস খাওয়ান । হিন্দু ধর্মে ইহা ঘোর মহাপাপ । তার আবার এক লঞ্চ আছে যার নাম হিন্দু দের মত । কিন্তু কেউ জানে না কেন এই নাম । সময়ের এক ফোড় অসময়ের দশ ফোড় এর সমান । এবার বলি সেটা হলো, আমার দেখা হুমায়ূন আহমেদ এর অন্যতম সেরা বই । যিনি এক সাথে রবি থেকে বিভূতিভূষণ, ম্যাক্সিম গোর্কি আর ইতিহাস এর অন্য চরিত্রের সম্পর্ক ঘঠিয়েছেন । এক কথায় দুঃসাধ্য এক কাজ করেছেন । যদিও বইটি শেষ হয়েও হয়নি শেষ এর মত । অসাধারণ অমর এক সৃষ্টি ।
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নাম: মধ্যাহ্ন (অখণ্ড) লেখক: হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনা: অন্যপ্রকাশ মূল্য:৫১০৳ (৬০০ টাকা বইয়ের গায়ে লেখা) পৃষ্ঠাঃ ৪০৮ প্রচ্ছদঃ মাসুম রহমান ক্যাটাগরীঃ ইতিহাস আশ্রিত বাংলার উপন্যাস প্রকাশকাল ঃ২০০৮ , বইমেলা এক সাথে আমেরিকা, কানাডা, ইউ কে তে প্রকাশিত হয়। কাহিনীঃ তুমি জ্যোতির জ্যোতি, আমি অন্ধ আঁধারে তুমি মুক্ত মহীয়ান, আমি মগ্ন পাথারে। তুমি অন্তহীন, আমি ক্ষুদ্র দীন, কী অপূর্ব মিলন তোমায় আমায়। ---- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মধ্যাহ্ন মানে দুপুর বেলা, ঠিক যখন মাথার উপর সুয্যিমামা বিরাজমান , তখন থেকে মধ্যাহ্ন শুরু। ১৯০৫ সালের পটভূমিকাতে লেখা এই বইটায় অনেকগুলা চরিত্র। বেশ অনেকগুলো চরিত্র, চক্রাকারে একে অন্য কে কেন্দ্র করে ঘুরছে, যেভাবে আমরা ঘুরি রোজ। মজার ব্যাপার হল এটা তে ইতিহাসের অনেক ঘটনা থাকলেও এটি ইতিহাস নয়। অনেকের কাছে হরিচরণ,লাবুস চরিত্রগুলো কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোর দু’জন, কিন্তু সক্ষম থাকা সত্ত্বেও এরা নিরুত্তাপ, বিশেষত লাবুস। ভালো লাগছে।আবার ধনু শেখ, শশাংক পাল, মাওলানা ইদরিস, জুলেখা, অম্বিকা, শরীফা আর নানা চরিত্রের ভীড় এই বইয়ে... গল্পের শুরুতে আমরা দেখি হরিচরণ বাঁধানো পুকুর ঘাটে অজানা একঘ্রাণে বিভোর, স্বপ্ন দেখেন কোনো এক নীলরঙা শ্রীকৃষ্ণ স্বরূপ শিশু কে কোলে নিয়ে বসে আছেন, যার শরীর বেয়ে ঝরছে নীল রক্ত!!!!!!!! আবার বাস্তবে ফিরে শিউলি গাছের দিকে চেয়ে নিজের তিন বছরের মৃতা কন্যা কে মনে করেন.....................। একদিন দেখেন রাজপুত্রের মত এক ছেলে তাঁর বাড়ির বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কে এই ছেলে??? ছদ্মবেশী শশী মাস্টারটি বা কে?? ধনু শেখ নাম মাত্র মুসলিম, এক ধূর্ত চরিত্র, চালাকির সাথে 'অম্বিকা ভট্টাচার্য' নামের এক হিন্দু ঠাকুর কে গো-মাংস খেতে বাধ্য করতে হয়েছিলো। হিন্দু ধর্ম মতে এটি মহাপাপ............।। সে কেন করল এই কাজ? আবার এই ধনু শেখ তাঁর লঞ্চের নাম রাখেন হিন্দুর নামে, কেন???? সময়ের ফেরে কে কোথায় যাবে? কোথায় যায়? পাঠ প্রতিক্রিয়া ঃ মন্ত্রমুগ্ধ আমি, লেখা পড়ে মনে হচ্ছিল আমি নিজের চোখে সব দেখছি, প্রায় ১০০ বছর আগের কাহিনী কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রূপ দেয়া খুব সহজ কাজ না .........। ২য় খন্ড শেষে বাকি লাখ লাখ পাঠকের মত আমারও মনে হয়েছে ৩য় খন্ড কই? লেখক উপন্যাসে আইনস্টাইন, ম্যাক্সিম গোর্কি,লেনিন,সেই বঙ্গভঙ্গ, ঢাকাতে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি নিয়ে আন্দোলন কোন কিছুই বাদ দেন নি, সহজবাভেই বলা যায় এটা মোটেও সহজ কাজ নয় , এমনকি শেরে বাংলা, মাদামকুরি, কবি গুরুও বিরাজমান, এত ইতিহাস সমান্তরালে জোড়া সহজভাবেই সহজ নয়, এই কাজের জন্য প্রচুর পড়াশোনা আর মাথা ঠান্ডা রাখা প্রয়োজন, লেখক সুস্থ থাকলে আজ হয়ত ৩য়-৪র্থ খন্ড পেতাম, বইটি পিডিএফ পড়েছি, হার্ডকপি সংগ্রহের ইচ্ছা আছে............ এবং এটি ইতিহাস আশ্রিত হলেও সত্যের ভিত্তিতে দাঁড়ানো,। উপন্যাসে উল্লেখিত আম্বিকা ঠাকুর হুমায়ূন আহমেদের মামার বাড়ির দিকের পূর্বপুরুষ ..। রেটিং ঃ ৫/৫ রকমারি লিঙ্ক ঃ https://www.rokomari.com/book/1141/%E0%A6%AE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%8D%E0%A6%A8-%E0%A6%85%E0%A6%96%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1
Was this review helpful to you?
or
এক কথায় অসাধারন কিছু যদি থেকে থাকে তাহলে বলবো এই বইয়ের লিখা!!! ইতিহাসের অনেক ঘটনার সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে লেখক এতো সুন্দর একটা বই লিখেছেন যা বলার মতোনা। যারা পড়তে চান, দ্বিতীয় বার চিন্তা করা ছাড়া পড়ে ফেলুন। বইয়ের শেষে চমক আছে .........
Was this review helpful to you?
or
যেহেতু বইটা একটা ‘ঐতিহাসিক উপন্যাস’ আমার শুরু করা উচিত ছিল গল্প সংক্ষেপ দিয়ে কিন্তু বইটা এমন এক বিস্তৃত পটভূমিতে লেখা যে এই বইটার কোনো গল্প সংক্ষেপ লেখা সম্ভব না। সহজভাবে বললে বইটা বিংশ শতকের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত অর্থাৎ ১৯০৫ এর বঙ্গভঙ্গ থেকে ১৯৪৭ এর দেশভাগের ঘটনার আলোকে লিখিত। আর এই লেখাটি ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা অঞ্চলের বান্ধবপুর নামক এক গ্রামের মধ্যেই মূলত সীমাবদ্ধ। কিন্তু যেহেতু বইটা ইতিহাসকে আশ্রয় করেছে এবং উত্তাল সময়ে কোনো অঞ্চলই উত্তাপের বাইরে থাকতে পারে না তাই বইটিতে বান্ধবপুরের পাশাপাশি উঠে এসেছে তৎকালীন ভারতীয় এবং বিশ্ব রাজনীতির উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী। প্রথমেই বলে রাখা ভালো, বলতে গেলে আমি হতাশই হয়েছি। লেখকের মধ্যাহ্ন, মাতাল হাওয়া আর জোছনা ও জননীর গল্পকে যেভাবে এতদিন ইতিহাসের বয়ান বলে জেনে এসেছি তার এক শতাংশও আমি পাইনি বইটা থেকে। তাই আমি মনে করি বইটাকে ঐতিহাসিক উপন্যাস তো বলা যায়ই না ইতিহাসআশ্রিত উপন্যাস বললেও একটু বাড়াবাড়িই হয়ে যায়। আমার মতে বইটাকে বলা যেতে পারে, বিংশ শতাব্দীর প্রথম অর্ধাংশের সাধারণ মানুষের জীবনের চিত্ররূপ অর্থাৎ বলতে চাচ্ছি বইটাতে লেখক একটা সময়কে ধরতে চেয়েছেন যেখানে ঐ সময়ের ইতিহাস যতটা না প্রাধান্য পেয়েছে তার চেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে একটা নির্দিষ্ট অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা। খুব সম্ভবত লেখক বা বইটার কোনো এক সমালোচকের মন্তব্য এখানে বেশ প্রাসঙ্গিক, ‘ মধ্যাহ্নে ইতিহাস আছে, ঐতিহাসিকতা নেই।‘ আর ইতিহাসও কতটা আছে সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ! বইটি কি, কেন, কিভাবে এই আলোচনা দূরে রেখে যদি বইয়ের কাহিনীর দিকে দৃষ্টি দিই তাহলে এটা যে বেশ ভালো একটা সামাজিক বয়ান তা বলতেই হয়। বান্ধবপুর গ্রাম, এর মানুষ, জীবনযাত্রা, প্রথা, বিশ্বাসের পাশাপাশি এর অধিবাসীদের প্রেম, বিরহ, বিচ্ছেদের এক অপূর্ব গাঁথা বইটি। চার শতাধিক পৃষ্ঠার বইটাতে তাই আমরা পাই অসংখ্য চরিত্র ; কেউ অদ্ভূত, কেউ নিষ্ঠুর, কেউ রহস্যময়, কেউ হিংস্র, কেউ নিতান্তই সহজ সরল। জাত-পাত আর গ্রাম্য রাজনীতির শিকার হয়ে মানুষের কি অধঃপতনই না আমরা দেখতে পাই বইয়ের একটা বড় অংশ জুড়ে, আবার অন্যদিকে দেখি ক্ষমতার দাপটের অপূর্ব বয়ান। ধনু শেখের নিষ্ঠুরতা, হরিচরণের ভালোবাসা, লাবুস বা জহিরের রহস্যময়তা, জুলেখা বা শরিফার অসহায়ত্ব, ইদরিসের সরলতা, এককড়ির কৌশল, শশীর বিপ্লব, আতরের প্রেম সবই পাওয়া যায় বইটিতে। আবার এর পাশাপাশি উঠে আসে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস, গান্ধি, জিন্নাহ বা হিটলারের কথা, তাইতো বইটাকে নিছক এক সমাজের গল্প বলতে ভাবতে হয় দু'বার। আর এর পাশাপাশি লেখকের স্বভাবসুলভ ছোট ছোট সরল বাক্যের দুর্দান্ত গতি তো আছেই। তাই যদি গল্পের আড়ালে ইতিহাসের দু-একটা কথা শোনার ইচ্ছা হয়, তাহলে বসতে পারেন হুমায়ূনের এই বইটার সাথে। খবরদার, ভুলেও বইয়ে ইতিহাস খুঁজতে যাবেন না, আর যদি গিয়ে ব্যর্থ হন সে দায় একান্তই আপনার নিজের!
Was this review helpful to you?
or
amake jodi bola hoy humayun ahmed er r likha sera boi konti? Ami nirdhiday kono rokom vabna chinta charay bolbo moddhanher kotha. Puro complete ekta boi. Ki nei ete. Ami class seven e thakakalin boita prothom barer moto porchilam. Tokhn obosso puropuri bujhi nay kahini ki. Kintu ekhn bujhte pari er mormartho.Jai hok shobaike ekbar holeu boiti porar onurodh roilo
Was this review helpful to you?
or
one of the few books that makes you feel empty inside..
Was this review helpful to you?
or
‘আমাকে খুঁজবে প্রভাতের প্রথম সূর্যকিরণে।যদি না পাও,খুঁজবে সন্ধায়,যখন সূর্য ডুবি ডুবি করেও ডুবছে না।সাবধান!মধ্যাহ্নে আমাকে কখনো অনুসন্ধান করবে না।’ এইরকম লিখনি কি আর আসবে ? এর কি পাবো সাবলীল ভাষায় এক ছন্দের সাহিত্য, হরিচরণ বাবু আরো কত জন ... পড়তে পড়তে মনে হতো আমি যেন দেখতে পাচ্ছি সেই সময় কে, দেখতে পারছি প্ৰত্যেকটি চরিত্র কে, ১০/১০
Was this review helpful to you?
or
বাইন্ডিং এমন কেনো? পেইজ গুলো তো সব লেগে লেগে আছেই আর মলাট টাও কেমন খোলা! মনে হয় ধরার সাথে সাথেই ছিড়ে যাবে! বইর জন্য ৫স্টার দিলাম.. বাইন্ডিং টা আসলেই ডিসএপোয়েন্টিং!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটা উপন্যাস। খুব ভালো লেগছে পড়ে।
Was this review helpful to you?
or
'মধ্যাহ্ন' আমার দেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম একটি বই সন্দেহ নেই। বেশ কিছুদিন পর সম্ভবত হুমায়ূন আহমেদ তাঁর অসাধারণ লেখনির পরিচয় দিলেন... দুই খন্ডের বই। ব্যাস্ততার কারণে পুরোটা এখনো শেষ করা হয়নি। ১৯০৫ সালের পটভূমিতে লেখা উপন্যাস। হুমায়ূন আহমেদ তাঁর চমৎকার লেখনীতে বিভিন্ন উল্লেখ যোগ্য ঘটনা তুলে ধরছেন... কিশোর নজরুলের হোটেলে রুটি বানাতে বানাতে গান লেখা থেকে শুরু করে বঙ্গভঙ্গে হিন্দুদের ভূমিকা পর্যন্ত অনেক ঘটনা তুলে ধরেছেন। ভাল লাগলো যে আমাদের এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে হিন্দুদের বিরোধীতার ঘটনাকে অনেক গোঁয়ার গবিন্দের মত চোখ কান বন্ধ করে অস্বীকার করেননি। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিরোধীদের আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথা কোন এক বিচিত্র কারণে এড়িয়ে গিয়েছেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে যে রাখি বন্ধনের প্রচলন করা হয়েছিলো সেটার বিষয়েও দেয়া তথ্যটা নিয়ে একটু সন্দেহ আছে.. (রাখি বিষয়ক তথ্যটার বিষয়ে অবশ্য আমি নিজেও নিশ্চিত নই.. তাই এটা নিয়ে আপাতত আর কিছু বলা গেল না)। ভাল লেগেছে তৎকালীন মুসলিম সমাজের উপরে হিন্দু সমাজের নির্মম অত্যাচারের কিছু কিছু চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন দেখে। হিন্দুরা মুসলমানদের খুব নিকৃষ্ট মনে করতো তখনকার সময়ে। মুসলমানরা তাদের দৃষ্টিতে ছিলো 'অস্পৃশ্য'। আমার মা'য়ের মুখে এধরনের বেশ কিছু গল্প শুনেছিলাম। যেমন কোন ঘাট হতে হিন্দুরা কলসি ভরে পানি নিয়ে যাচ্ছে.. কোন মুসলমান যদি ভুলেও ঐ পানির কোথাও স্পর্শ করতো তাহলে তারা সব পানি ফেলে দিয়ে নতুন করে পানি ভরে নিতো। বই থেকে একটা লাইন কোট করি- "তিনি এক মুসলমান কাঠমিস্ত্রির ছেলে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন- এ দৃশ্য হাস্যকর। যবনপুত্র অস্পৃশ্য হওয়ার কথা। ব্রাক্ষণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র। শূদ্রের নিচে যবনের অবস্থান। " উপন্যাসের এক চরিত্র 'হরিচরণ'। এটা ছিল মুসলিম কাঠমিস্ত্রির ছেলে 'জহির'কে কোলে নেয়ার বিষয়ক ভাবনাটা। মুসলিম কাঠমিস্ত্রির ছেলের জীবন বাঁচানো এবং নিজের ঘরে প্রবেশ করানোর অপরাধে হরিচরণকে সমাজচ্যুত করা হয়েছিলো। বিধান মতে যবনপুত্রকে কোলে নেয়া এবং তাকে ঘরে নেয়া নিষিদ্ধ। ধর্ম থেকে পতিত হওয়ার মতত অপরাধ। ধর্ম থেকে যে পতিত তার স্থান রসাতলে। পাতালের সাত স্তরের ষষ্ঠ তল হচ্ছে রসাতল। এই তলে যে পতিত, তার গতি নাই। এগুলো যদি তাদের বিধানে লেখা থেকে থাকে তাহলে বিষয়টা নিয়ে আমার ভাবাবার অবকাশ রয়েছে। আমার বেশ কিছু হিন্দু বন্ধু রয়েছে। তাদের বাড়ি গিয়ে আমি খেয়েছি তারাও আমার বাড়ি এসে খেয়ে গিয়েছে। বিধান মতে তাদের জাত যাওয়ার কথা। তাদের পুরো পরিবারকেই সমাজচ্যুত করার কথা... তেমনটি হতে শুনিনি। এর কারণ কি হতে পারে যে তারা বিধান মানে না বা মানার উপায় নেই!? ভারতের হিন্দৃ অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে কি হিন্দুরা এগুলো এখনো মানে? তাহলে সেখানের মুসলমানদেরও কি সেই ১৯০৫ সালের মত পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে? তৎকালীন মুসলিম সমাজের কিছু অন্ধত্বও বেশ চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে এখানে একটা বিষয়ে খুব সরলীকরণ করে ফেলেছেন। কিছু সুবিধাবাদী মুসলিম চরিত্র যারা না বুঝে দাসীদের সাথে অবৈধ সম্পর্ককে সঠিক মনে করে উলটা-পালটা কাজ কর্ম করে বেড়াতো তাদের রেফারেন্স দিয়ে পুরো বিষয়টা মুসলিম সমাজের উপরে চাপিয়ে দিয়েছেন। এধরনের সরলীকরণ দু:খজনক! তবে কিছু অন্ধত্ব (যা এখন অনেকটা কেটে গিয়েছে বলেই ধারণা করি) খুব ভয়াভয় ছিলো। ওগুলো ছিলো মূলত ধর্ম সম্পর্কে কম জানার ফল। মুসলিম সমাজের নামে এপর্যন্ত যত অপবাদ এসেছে তার বেশীর ভাগই এইসবআধা ধার্মিকদের কারণে হয়েছে। আমাদের মুসলমানদেরই উচিত এসব আধাধার্মিকদের সঠিক ধর্ম শিক্ষা দিয়ে এদের অন্ধত্ব দূর করা। তবে একটা বিষয় সত্যি খারাপ লেগেছে। যেমন লেখক তার উপন্যাসে ইসলাম বিষয়ে বেশ কিছু ভুল বিষয় উপস্থাপণ করেছেন। তার ভেতরে একটি এরকম যে, তৎকালীন সময়ে মসজিদের ইমাম'রা ঢোল বাদ্য নিয়ে নিত্য করলে মানুষ কিছু মনে করতো না। কারণ হিসেবে বলেছেন তখনকার মুসলমানরা উগ্র ছিলো না.. তাই এগুলো সমস্যা সৃষ্টি করেনি। তার মানে আমাদের এখন উগ্রতা ছেড়ে মসজিদের ঈমামদের ঢোল-বাদ্য নিয়ে রাস্তায় নাচতে পাঠানো উচিত!!?!! উপন্যাসে 'ধনু শেখ' নামে নাম মাত্র মুসলিম এক ধূর্ত চরিত্র রয়েছে যার একটা ধূর্তামির শিকার হয়ে 'অম্বিকা ভট্টাচার্য' নামের এক হিন্দু ঠাকুর কে গো-মাংস ভক্ষন করতে হয়েছিলো। সাধারন বিধান মতে এটা মহাপাত। তবুও বিধানের ফাঁক ফোকর গলে ঠাকুরকে রক্ষার চেষ্টা করা হলো, কিন্তু কাজ হলো না। সমাজচ্যুত হয়ে ঠাকুর পরিবার অবশেষে মুসলিম হওয়ার সিন্ধান্ত নিলেন। অনিচ্ছাস্বত্বেও হিন্দু ধর্মের একজন সম্মানীত ঠাকুরকে এভাবে মুসলিম বানানো আমার কাছে খারাপ লেগেছে। তবে সেই ঠাকুর পরিবারের নিশ্চয় আরো বেশী খারাপ লেগেছে। যদিও অম্বিকা ভট্টাচার্যের প্রতি এই আচরণ করার পেছনে ধনু শেখের কিছু মটিভ রয়েছে। উপন্যাসের চরিত্র হরিচরণ ছিলো ধনু শেখের প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। এই হরিচরণকে সমাজচ্যুত করার বিষয়টি নিয়ে হরিচরণ একদা জাত বিষয়ক কিছু প্রশ্ন তুলেছিলো যা হিন্দু সমাজের অপছন্দের কারণ হওয়া ধনু শেখের চাকুরী চলে যায় এবং গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে পথে নামতে হয়। হরিচরণকে সমাজচ্যুত করার পেছনে অম্বিকা ভট্টাচার্যের বিশেষ ভূমিকা থাকার কারণেই ধনু শেখ এই হঠকারিতার আশ্রয় নিয়েছিলো। একধরনের প্রতিশোধ বলা যায়। এ উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্রের মত অম্বিকা ভট্টাচার্যও শুধু উপন্যাসের একটি চরিত্র নয়। 'অম্বিকা ভট্টাচার্য' একজন বাস্তবের মানুষ। তাঁর পরিবারের সদস্যরা এখনো আমাদের দেশে বাস করছে। 'ধনু শেখের' হঠকারিতায় মুসলিমদের উপর এই পরিবারের আজন্ম আক্রোশ থাকার কথা। আমার মনে হয় তেমনটিই রয়েছে... অম্বিকা ভট্টাচার্যের এক বংশধর আমাদের দেশে বেশ পরিচিত একটি ফ্যামিলি। সেই ফ্যামিলির এক সদস্য যদি চরম মুসলিম বিদ্বেষী হয়, তাহলে সম্ভবত এরজন্য তাঁকে খুব বেশী দোষ দেয়া যায় না...
Was this review helpful to you?
or
হুমায়ুন আহমেদের এক অনবদ্য সৃষ্টি মধ্যাহ্ন। আমি ইতিহাসের সেই সময়টায় চলে গিয়েছিল লেখকের সাথে। পড়া শেষ হওয়ার পর মনে হলো,''ইশ স্যার এত তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেললেন। আর একটু লিখলে কি হতো"।
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ একটি বই। আসলে, অনেকে বলবে যে বইটি নাকি খানিকটা শিশুতোষ। আসলে এখনকার সময়ের বিচারে এমন বই এ ই বেস্ট। কেননা হুমায়ুন আহমেদ এর লেখার গাথুনি ইতিহাসের মত কঠিন বিষয়ও একদম সহজ করে দিয়েছে। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে ,কথাসাহিত্যে তিনি ও বাদশাহ হুমায়ুন!!
Was this review helpful to you?
or
কোন এক আশ্চর্য কারণে আমি নিজেকে একটা ঘোরের মাঝে রাখতে পছন্দ করি। ঘোরের বিষয়বস্তু অনেকটা এমন - হুমায়ূন আহমেদের সব বই তো আমার পড়া হয়ে গেছে, আর পড়ার বাকি নেই কোনটাই! সে ইল্যুশন মাঝে মধ্যে ভাঙ্গে, আমি হঠাৎ হঠাৎ ভদ্রলোকের এমন দুই একটা বই পেয়ে যাই যা আমার পড়া ছিল না, বাকি সময়টা কাটে আমার আরেকরকম ঘোরের মাঝ দিয়ে, হুমায়ূন ঘোর!! খুব বেশি বই এই জীবনে পড়েছি দাবী করি না তবে যে কজন লেখককেই পড়ে থাকি না কেন, তাদের কেউই এই কাজল ডাকনামের লোকটার মতন লিখতে পারে নাই, এমনকি আমার মতে, কাছাকাছিও আসতে পারে নাই। (এমন বাজারি লেখককে এরূপ উচ্চস্থানে বসিয়ে ফেলছি দেখে কেউ তেড়ে আসতে পারেন, অন্তত অতীতে এসেছেন, তারা দয়া করে শান্ত হোন। অন্য কাউকে হুমায়ূনের উপরে স্থান দিতে পারি নাই এইটা আমার ব্যর্থতা, সেই অন্য লেখকের না!) বহু চেস্টা করেছি, ৪০০ পৃষ্ঠার এই বইটি ধীরে সুস্থে পড়তে। সেজন্য শুধুমাত্র অফিস যাওয়ার পথে গাড়িতে বসে ছাড়া অন্য কোন সময় পড়িনি। তবে হুমায়ূন আহমেদ ধীরে পড়া যায় না, যিনি বুলেট ট্রেন আবিষ্কার করেছিলেন খুব সম্ভব হুমায়ুনের কোন এক বই পড়েই তিনি গতি সম্পর্কে আইডিয়া করেছিলেন! এত আস্তে পড়েও খুব একটা লাভ হয়নি, ৪ দিনের মাথায় বই শেষ। কেমন ফাঁকা লাগছে ভেতরটা এখন, হরিচরণ বাবু, শশী মাস্টার, লাবুস, জুলেখা, ইমাম ইদ্রিস (একজন মনেপ্রাণে মুসলিম ইমাম সাহেবকে দিয়ে এমন ছবি আঁকানো বুঝি শুধু এই লেখকের পক্ষেই সম্ভব!), ধনু শেখ, শশাংক পাল, জুলেখা, অম্বিকা, শরীফা এদেরকে মনে হয় চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাচ্ছি! উনিশশ সালের শুরুর দিককার পটভূমিতে লেখা এই বইয়ে লেখক একই সাথে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, তারাশংকর, বিভূতিভূষণ, জয়নুল আবেদিন থেকে শুরু করে আইনস্টাইন, মাদাম কুরি, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র এমনকি হিটলার মুসোলিনিদেরকেও এক সুতোয় গেঁথেছেন। এ যে কোন পর্যায়ের অসাধ্য সাধন তা লিখে প্রকাশ করার মতন শব্দ এখনো আবিষ্কৃত হয় নি বলেই আমার বিশ্বাস! চারশ পৃষ্ঠার এই বই, সংজ্ঞানুসারে উপন্যাস। কিন্তু অন্য কোন এক ক্যাটাগরির সাথে এই বইটা খুব চমৎকার মিলে যায় - "অন্তরে অতৃপ্তি রবে, সাঙ্গ করিয়া মনে হবে, শেষ হইয়াও হইল না শেষ!" "জগত রহস্যময়" - শব্দদুটো লেখকের অসম্ভব প্রিয় ছিল। কোন এক রহস্যময় জগতেই এখন উনার বাস। কে জানে, হয়ত সেই জগতকে তিনি হুমায়ূন সাহিত্য দিয়ে মোহবিষ্ট করে ফেলেছেন ইতোমধ্যেই। তা করতেই পারেন, জগত যে রহস্যময়!!
Was this review helpful to you?
or
আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে, হুমায়ূন আহমেদের একটা বইয়ের নাম বলুন যেটা সবার পড়া উচিৎ তাহলে আমি বলি জোছনা ও জননীর গল্প। যদি কেউ জিজ্ঞেস করে আরেকটা বইয়ের নাম বলুন যেটা অবশ্যপাঠ্য, আমি বলি মধ্যাহ্ন। যেকয়টা বই তাকে পাঠকসমাজে যুগ যুগ বাঁচিয়ে রাখবে তার মধ্যে মধ্যাহ্ন অন্যতম। কেন অন্যতম? সেটা নিয়েই আজকের আলোচনা। আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন, আপনি তো অনেক বই পড়েন এবং রিভিউও লিখেন, এই বইটার রিভিউ লিখেননি কেন? তবে কি বইটা আপনি পড়েননি? পড়েছি। একবার নয়, বেশ কয়েকবার পড়েছি। কিন্তু রিভিউ লেখার মত দুঃসাহস হয়ে উঠেনি। আজকে সাহস করে শুরু করলাম। সাহস ধার দিয়ে সাহায্য করেছেন মুফি। মধ্যাহ্নর গল্পটা ১৯০৫ সালের। তৎকালীন সময়টাকে হুমায়ূন আহমেদ বেঁধে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। আমি বলব তিঁনি সার্থক। তৎকালীন গ্রাম্য জীবনের বাস্তব প্রতিফলন হল এই বই। সে সময়ের একটা হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামের গল্প থেকে শুরু হয়েছে বই। বইতে দেখানো হয়েছে তৎকালীন হিন্দুরা মুসলমানদের দেখতে পারতো না। এমনকি মুসলমানদের স্পর্শ করা কোনো জিনিষও তারা ধরতো না। তাদের ভাষায় যবনের (মুসলমান) স্থান সবার নিচে। তাদের জাতভেদে ব্রাহ্মণের স্থান সবার উপরে এবং শুদ্রের স্থান সবার নিচে। এবং শুদ্রেররও নিচে মুসলমান। হরিচরণ একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু শুধুমাত্র একজন মুসলিমের ছেলেকে বাঁচানোর জন্য, কোলে তোলার জন্য এবং ঘরে নেয়ার জন্য তাকে সমাজচ্যুত করা হয়। একঘরে করে দেয়া হয়। যিনি তাকে সমাজচ্যুত করেন সেই শশাংক পালের পরবর্তী পরিণতি হয়তো আমরা অনেকেই জানি। ইতিহাসের বইয়ে অনেকেই পড়েছি। সে সময়ে মুসলমানদের কিছু গোরামি বা কুসংস্কার এর কথাও সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। বিয়ের সময় কনের বাড়ি থেকে একজন দাসীও পাঠানো হত। সে দাসীর সাথে সহবাসও করা যেত তবে দাসীর গর্ভের সন্তান সম্পত্তির ভাগ পেত না। মানে সোজা কথায় বললে সেই সময়ে অনেকেই দুজন নারীর সঙ্গভোগ করত। একজন স্ত্রী, একজন রক্ষিতা। এই বইয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল ধনু শেখ। নামমাত্র মুসলিম বলা যায় তাকে। প্রচন্ড ধূর্ত। হরিচরণকে বেশ পছন্দ করেন। হরিচরণকে যখন একঘরে করা হয় তখন সে জাত নিয়ে কিছু কথা শোনায়। এ কারণে তার চাকরীও চলে যায়। গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে পথে বসতে হয়। তবে একসময় তারও দিন ফিরে। তবে, টাকা পয়সা হলে মানুষের আচরণ কত দ্রুত বদলে যায় তার দৃষ্টান্ত ধনু শেখ। ধনু শেখ এমন একটা চরিত্র যাকে আপনি ঘৃণাও করতে পারবেন না আবার ভালোও বাসতে পারবেন না। এই বইয়ের কাহিনীর যে ব্যাপ্তি তা আসলে অল্প কথায় ব্যক্ত করা যাবেনা। তাই সে চেষ্টা ক্ষান্ত দিলাম। বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় ইতিহাসের অনেক ব্যক্তিত্ব চলে এসেছে। কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে রবী ঠাকুর, শরৎচন্দ্র, জয়নুল আবেদিন সহ আরো অনেক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বকে তিঁনি এই সময়ে বাঁধতে চেয়েছেন। বঙ্গভঙ্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন নিয়ে হিন্দুদের বিরোধিতা থেকে শুরু করে তৎকালীন খন্ড ইতিহাসও উঠে এসেছে এই বইয়ে। কিন্তু লেখক নিজেই বলেছেন "আমি ঐতিহাসিক না, গল্পকার। আমার প্রথম ও শেষ ঝোঁক গল্প বলার দিকে, তবে ইতিহাস থেকে যতটুকু না আনলেই নয় তা এনেছি।" সুতরাং বইটি পড়ার সময় নিখাদ একটি গল্প হিসেবেই পড়বেন। ইতিহাসের যে অংশ বইয়ে এসেছে তার রেফারেন্সও দেয়া আছে, চাইলে দেখে নিতে পারেন। এবার আসি আমার কথায়। আমার কাছে বইটি কেমন লেগেছে তা আসলে এক দু কথায় বলা যাবেনা। এই বইয়ের রিভিউ লিখতে চাইলে একটা ছোটখাট উপন্যাসের সমান লিখা যাবে। সেইদিকে আমি যাচ্ছিনা। শুধু বলতে চাই, আমার জীবনে আমি যত বই পড়েছি তার মধ্যে মধ্যাহ্ন সবসময় উপরের দিকে থাকবে। যারা সুনীলের প্রথম আলো, সেই সময় পড়েছেন তারা অতি অবশ্যই মধ্যাহ্ন বইটি পড়ে দেখবেন, ভালো লাগবে কথা দিচ্ছি। যারা ব্যক্তি হুমায়ূনকে পছন্দ করেননা বলে তার কোনো বই পড়েননি তাদের কাছে অনুরোধ থাকবে এই বইটি পড়ার। আমি যখন পড়েছি তখন আলাদা করে দুই খন্ড পড়েছিলাম। এখন অখন্ড পাওয়া যায়। দ্বিতীয় খন্ড শেষ করার পর ভাবছিলাম এর তৃতীয় খন্ড কবে বের হবে। বিভিন্ন বইয়ের দোকানে খোঁজ নিয়েছি তৃতীয় খন্ড আছে কিনা। আমি জানি, আমার মত আপনারাও অনেকে হয়তো একই কাজ করেছেন। অখন্ডের ভূমিকায় লেখক বলেছেন, "মধ্যাহ্ন অখন্ড প্রকাশিত হল। প্রথম এবং দ্বিতীয় খন্ড যুক্ত হয়ে ‘অখন্ড’ প্রকাশনা। পাঠকরা অনেকেই জানতে চাচ্ছেন তৃতীয় খন্ড বলে কিছু আছে কি-না? আপাতত আমার জবাব ‘না’। তৃতীয় খন্ড মানেই দেশভাগ, হতাশা, কষ্ট, গ্লানি এবং মৃত্যুর গাথা। এইসব লিখতে ভালো লাগে না। তারপরেও কিছুই বলা যায় না। তৃতীয় খন্ড লিখে ফেলতেও পারি। তখন আবারো আরেকটি অখন্ড প্রকাশিত হবে। সেখানে লেখা থাকবে ‘মধ্যাহ্ন অখন্ড (আল্লার কসম)’ পাঠকরা যে আগ্রহ এবং মমতায় ‘মধ্যাহ্ন’ গ্রহণ করেছেন তাতে আমি অভিভূত। আমার লেখক জীবন ধন্য।" আমিও খুব করে চেয়েছিলাম উনি তৃতীয় খন্ড লিখুন। কিন্তু মানুষের সব চাওয়া পূর্ণ হয়না। অনেক অপূর্ণতার মধ্যে এইটাও আমি সারাজীবন বয়ে বেড়াব। অনেক বক বক করলাম, ভাল থাকবেন সবাই। সবাইকে মধ্যাহ্নের শুভেচ্ছা। শুভ মধ্যাহ্ন।