User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
অসাধারন
Was this review helpful to you?
or
Nice
Was this review helpful to you?
or
অসাধারণ বই এবং খুবি ভাল লেখনী, ইতিহাস জানতে বইটা পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
বুক রিভিউ বইয়ের নামঃ যারা ভোর এনেছিল লেখকের নামঃ আনিসুল হক বইয়ের ধরনঃ ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস প্রচ্ছদ ও অলংকরণঃ সব্যসাচী হাজরা প্রকাশনীর নামঃ প্রথমা পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৩০৪ ISBN: 978-984-33-3880-8 মুদ্রিত মুল্যঃ ৫০০ টাকা। এক ছিল ব্যাঙ্গমা আরেক ছিল ব্যাঙ্গমি। তার বাস করত ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের একটি আম গাছে। এই ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমি মুখের আলাপচারিতা মধ্য দিয়ে লেখক বর্ণনা করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাল্যকাল, নেতা হয়ে উঠার গল্প ও তাজউদ্দিন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিম, কামরুদ্দিন আহমদ সহ অসংখ্য নেতাদের সংগ্রামী ঘটনাবালি। সেই সব সত্য ঘটনার সাথে লেখকের সামান্য কল্পনার সংমিশ্রনে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের গৌরবগাঁথা ইতিহাস। লেখক ভূমিকাতে অবশ্য বলে দিয়েছেন এটি কোন ইতিহাস গ্রন্থ নয়, তবে ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ণনার সময় সত্যতা রক্ষার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। বৃটিশ ভারত, দেশ ভাগ ও দেশ ভাগ পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানের শেখ মুজিব ও তাজউদ্দিন তাদের সহকর্মীদের নিয়ে একের পর এক অন্যায়ের পতিবাদ করতে করতে হয়ে উঠেন জনমানুষের নেতা হিসেবে। সাধারন মানুষের অধিকার আদায় কিভাবে করেছেন, দল গঠন ও দলের কর্মী কিভাবে সংগঠিত করেছেন, দল পরিচালনা, জাতীয় সিদ্ধান্ত সমূহ কিভাবে নিয়েছেন সেই সব তুলে ধরা হয়েছে ট্রিলজি উপনাসের প্রথম খন্ড যারা ভোর এনছিল উপন্যাসে। গম্বীর ঘটনাক্রমে পাঠক যখন বিরক্ত হবেন ঠিক তখন লেখক ব্যাঙ্গমা ও ব্যাঙ্গমি শরণাপন্ন হয়েছেন। তখন তাদের কন্ঠে ফুটিয়ে তুলেছেন পুরোনো পুথির ছন্দ। সামনের ঘটনাক্রম গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় পাঠককে একপ্রকার সজাগ রাখার চেষ্টা হয়তো করেছেন লেখক। এবং সেই ছন্দে সামনে ঘটনাপর্বের একটি আভাসও দিয়েছেন তাতে। যা আমার কাছে বইটি ভাল লাগার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বইয়ে ১৯৫২ সালের ঘটনা পর্ব পর্যন্ত তুলে ধরেছেন। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সময়কার ঘটনাপর্ব গুলো আরো একটু সবিস্তারে তুলে ধরলে ভাল বইটির আরো গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধি পেত।
Was this review helpful to you?
or
'যারা ভোর এনেছিল'- আনিসুল হকের লেখা ইতিহাস আশ্রয়ী জনপ্রিয় একটি উপন্যাস। এটি একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস হলেও এটা সরাসরি কোন ইতিহাসের বই নয়। এই বইয়ের মূল চরিত্র শেখ মুজিবর রহমান। এখানে শেখ মুজিবর রহমানের জন্ম থেকে শুরু করে বেড়ে উঠা খুব কাছে থেকে দেখানো হয়েছে। তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ সৃষ্টিতে তাঁর গৃহশিক্ষক আবদুল হামিদের অবদানের কথা বার বার এসেছে। তারপর শেখ সাহেব যখন কলকাতায় এসে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লেন তখন থেকেই মূলত উপন্যাসটির ইতিহাসের সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে। দ্বি-জাতি তত্ত্ব নিয়ে বিতর্ক, রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবি আদায়ের আন্দোলন এবং সেই আন্দোলনে শেখ মুজিবর রহমানের পাশাপাশি তাজউদ্দীনের অংশগ্রহণ এই সব ঘটনাই ‘যারা ভোর এনেছিল’ উপন্যাসে ফুটে উঠেছে। শেষে বলা যায় উপন্যাসটি সে সব মানুষের গল্প যাদের হাত ধরেই এদেশে নতুন ভোর এসেছিল।
Was this review helpful to you?
or
আসসালামু আলাইকুম। মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি। বইটি আসলে অসাধারণ, বইটিকে শুধু ভাষা আন্দোলনের কথাই বলা হয়নি, এরোই সাথে তুলে ধরা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাহাজ উদ্দিন আহমেদের মধ্যকার সম্পর্ক। দুই নেতা ভবিষ্যতে বাঙালিদের জন্য কি করবেন তা এই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের চিন্তা, চেতনা, দেশের প্রতি ভালোবাসা এ বিষয়গুলো বইটিতে স্থান পেয়েছে। আমি আনিসুল হকের নিকট ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি এমন একটি সুন্দর বহি রচনা করার জন্য। আল্লাহ তাকে দীর্ঘায়ু দান করুন এবং মেধা দান করুন যেন তিনি আমাদেরকে এমন বই বারবার উপহার দিতে পারেন। মোঃ সাদমান ফেরদৌস বিরামপুর উপজেলা দিনাজপুর জেলা রংপুর বিভাগ বাংলাদেশ
Was this review helpful to you?
or
ফাউল
Was this review helpful to you?
or
বইয়ের নামঃযারা ভোর এনেছিল লেখকঃআনিসুল হক প্রকাশনীঃপ্রথমা প্রকাশন মূল্যঃ৪২৫টা। যারা ভোর এনেছিল' মূলত দেশ ভাগ এর কিছু সময় পূর্ব থেকে ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন এই সময় এর উপর একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস। যেখানে হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী, আবুল হাশিম, কামরুদ্দিন আহমদ, তাজউদ্দীন আহমদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ আরো অনেক সংগ্রামী মানুষদের সংগ্রাম এর কথা উঠে এসেছে। এটি সেই সব মহান নেতাদের গল্প। ঘোর অমানিশায় যারা দেখতে পেয়েছিলো আলোর রেখা, যারা জীবন বাজি রেখে আলোর পথ দেখিয়েছে এই বাংলার মানুষদের।গল্পোচ্ছলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান আর তাজউদ্দিন আহমেদের শৈশব থেকে যৌবন পর্যন্ত বর্ণনা করেছে লেখক আনিসুল হক। বৃটিশ ভারত, দেশভাগ আর দেশভাগ পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানে এই দুই ব্যাক্তি ও তাদের সহকর্মীরা কিভাবে একে একে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে নিজেদের ব্যাক্তিত্ব দিয়ে জয় করে নিয়েছিল সাধারণ জনগণের মন আর উপেক্ষা করেছিল শাসকদের রক্তচক্ষু তার গল্প পাওয়া যাবে এ উপন্যাসে।বইটা পরে খুবই ভালো লেগেছে আমার। জানা হয়েছে অনেক অজানা তথ্য, সাথে জেগেছে অনেক প্রশ্নও, অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি আবার কিছু প্রশ্নের উত্তর এর জন্য আরো পড়তে হবে । আমাদের ভাষা আন্দোলন যে শুধু একদিনের সংগ্রাম নয় বহু আগেই যার বীজ বপন করা হয়েছে আর সংগ্রামী মানুষগুলা একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে গেছে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে। তারই বর্ণনা ফুটে উঠেছে এই বইতে। অত্যন্ত সরল স্বাভাবিক ভাষায় লেখা হয়েছে বইটি।সবশেষে সেই সংগ্রামী মানুষগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা, যাদের সংগ্রামের কারণে আমাদের এই বাংলা ভাষা। আর ধন্যবাদ আনিসুল হক স্যার কে এতো চমৎকার একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস লেখার জন্য এবং এতো অজানা তথ্য জানার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
যারা ভোর এনেছিল' সেই সব মহান নেতাদের গল্প। ঘোর অমানিশায় যারা দেখতে পেয়েছিলো আলোর রেখা, যারা জীবন বাজি রেখে আলোর পথ দেখিয়েছে এই বাংলার মানুষদের। গল্পোচ্ছলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান আর তাজউদ্দিন আহমেদের শৈশব থেকে যৌবন পর্যন্ত বর্ণনা করেছে লেখক আনিসুল হক। বৃটিশ ভারত, দেশভাগ আর দেশভাগ পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানে এই দুই ব্যাক্তি ও তাদের সহকর্মীরা কিভাবে একে একে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে নিজেদের ব্যাক্তিত্ব দিয়ে জয় করে নিয়েছিল সাধারণ জনগণের মন আর উপেক্ষা করেছিল শাসকদের রক্তচক্ষু তার গল্প পাওয়া যাবে এ উপন্যাসে।
Was this review helpful to you?
or
‘যারা ভোর এনেছিল’ আনিসুল হকের লেখা ইতিহাস আশ্রয়ী আরেকটি অসাধারণ উপন্যাস। এখানে লেখক শেখ মুজিবর রহমানের জন্মের সময় থেকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পর্যন্ত মোটামুটি ত্রিশ বছর সময়কালের ইতিহাস গল্পের ছলে অত্যন্ত মানবিক ভাবে তুলে এনেছেন। বইটি প্রথমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী হাজরা। বইটি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বইমেলায় প্রথম প্রকাশিত হয়। ‘যারা ভোর এনেছিল’ মূলত একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাসত্রয়ের প্রথম উপন্যাস। এর পরবর্তী খণ্ড ‘উষার দুয়ারে’ ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়ে গেছে। যেখানে ১৯৬৬ সালের ছয় দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস উঠে এসেছে। ‘যারা ভোর এনেছিল’ একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস হলেও আমাদের মনে রাখতে হবে এটা সরাসরি কোন ইতিহাসের বই নয়। তাই এখানে ইতিহাসের সাথে লেখকের কল্পনা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। যে কারণেই এখানে ইতিহাসের কিংবদন্তি চরিত্রগুলো আমাদের সামনে রক্ত-মাংসময় হয়ে উঠেছে। আর বইটি লাভ করেছে আমাদের হৃদয়কে নাড়া দিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা। এই বইয়ের মূল চরিত্র শেখ মুজিবর রহমান। এখানে শেখ মুজিবর রহমানের জন্ম থেকে শুরু করে বেড়ে উঠা খুব কাছে থেকে দেখানো হয়েছে। তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ সৃষ্টিতে তাঁর গৃহশিক্ষক আবদুল হামিদের অবদানের কথা বার বার এসেছে। তারপর শেখ সাহেব যখন কলকাতায় এসে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লেন তখন থেকেই মূলত উপন্যাসটির ইতিহাসের সাথে সরাসরি সংযোগ হয়ে গেল। পরবর্তীতে দ্বি-জাতি তত্ত্ব নিয়ে বিতর্ক, রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবি আদায়ের আন্দোলন এবং সেই আন্দোলনে শেখ মুজিবর রহমানের পাশাপাশি তাজউদ্দীনের অংশগ্রহণ এই সব ঘটনাই ‘যারা ভোর এনেছিল’ বইয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে ফুটে উঠেছে। আর ওদিকে লেখক অসাধারণ দক্ষতায় ব্যক্তি মুজিবের জীবনের গল্পও বলে গেছেন। বলে গেছেন, তাঁর স্ত্রী রেনুর টুঙ্গিপাড়ার জীবনের গল্প। যেখানে স্বামীকে কাছে না পাওয়ার বেদনাকে ছাপিয়ে উঠেছে স্বামীকে দেশের জন্যে উৎসর্গ করার মহানুভবতা। মোটকথা, ‘যারা ভোর এনেছিল’ উপন্যাসটি সে সব মানুষের গল্প যাদের হাত ধরেই এদেশে নতুন ভোর এসেছিল। ইতিহাসের চরিত্রগুলো সবসময়ই সাধারণ মানুষের কাছে থেকে অনেক দূরে থাকে। সেই দূরের মানুষগুলোকে একেবারে রক্ত-মাংসের জীবন্ত মানুষ হিসেবে ‘যারা ভোর এনেছিল’ উপন্যাসে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে লেখক আনিসুল হককে কৃতিত্ব দিতেই হবে। ইতিহাস অনুরাগী আর সাহিত্য অনুরাগী এই দুই শ্রেণীর পাঠকের কাছেই ‘যারা ভোর এনেছিল’ উপন্যাসটি ভালো লাগবে বলেই আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস।
Was this review helpful to you?
or
কলকাতার সিরাজউদ্দৌলা হোস্টেলে শেখ মুজিব ডাকলেন সবাইকে। ব্রিটিশরা বিদায় নিচ্ছে, পাকিস্তান ও ভারত আলাদা আলাদাভাবে স্বাধীন হচ্ছে। এখন কী করা যাবে? ঢাকায় ফিরেই শেখ মুজিব ঝাঁপিয়ে পড়লেন রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে। এমনি প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় আসে ১৯৫২ সাল, আসে একুশে ফেব্রুয়ারি। যাঁরা ইতিহাস নির্মাণ করেছেন, তাঁরাই এ উপন্যাসের চরিত্র। ইতিহাসে সন-তারিখ থাকে; থাকে না ব্যক্তিমানুষের হূদয়ের সংবাদ। যারা ভোর এনেছিল একটি ট্রিলজির প্রথম খণ্ড, যা পাঠকের সামনে রক্ত-মাংসের মানুষ হিসেবে হাজির করবে আমাদের ইতিহাস-নির্মাতাদের। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এক দিনে অর্জিত হয়নি, এর পেছনে আছে দীর্ঘদিনের লড়াই-সংগ্রাম। এই আখ্যান আমাদের জানাবে সে কথাই, কিন্তু তা নিছক ইতিহাস হয়ে রইবে না; হয়ে উঠবে কতগুলো মানবচরিত্রের গল্প।
Was this review helpful to you?
or
আনিসুল হক, তার এই বই এর মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে এনেছেন তাদের; যারা আমাদের দেশের ইতিহাস গড়েছিল। খুব চমৎকার একটি বই।
Was this review helpful to you?
or
যারা ভোর এনেছিল লেখক- আনিসুল হক প্রকাশক- প্রথমা প্রকাশন প্রচ্ছদ ও অলংকরণ- সব্যসাচী হাজরা পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৩০৪ মূল্য- ৫০০ টাকা প্রকাশকাল- ফেব্রুয়ারি ২০১২ ‘এক ছিল ব্যাঙ্গমা । আরেক ছিল ব্যাঙ্গমি। একটা আমগাছের ডালে ছিল তাদের বাস।’ রূপ কথার গল্পের এই ত্রিকালদর্শী বিহঙ্গদ্বয় দিয়ে উপন্যাসের শুরু হলেও ঠিক পরক্ষণেই লেখক আর সেই রূপ কথায় রইলেন না। সরাসরি চলে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ব পাকিস্তান । কাল নিয়ে আসেন ১৯৫২ এর পূর্ব পর্যন্ত আর উপন্যাসের মূল চরিত্রে বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দিন, তিন নেতা সহ অসংখ্য সংগ্রামী নেতাদের নিয়ে আসেন ঘটনাক্রমে। যেসব ঘটনা সত্য ও সামান্য কল্পনার মিশেল এবং বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস। বাংলা সাহিত্যে ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস নেহায়েত কম নয়। এই লেখকের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস ‘মা’ বাংলা সাহিত্যে এক মূল্যবান সংযোজন। লেখক হয়তো ‘মা’ লিখে এই ধারার লেখায় প্রাণিত হয়েছেন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের মহানায়কদের জীবনাশ্রয়ী উপন্যাসের প্রথম খন্ড ‘ যারা ভোর এনেছিল’ লিখেছেন। ‘মা’ উপন্যাসের মত এবারো লেখক উপন্যাসের পাত্র-পাত্রীর নাম প্রকৃত নামে লিখেছেন। ফলে মোটামুটি ইতিহাস জানা পাঠকের পাত্র-পাত্রির চরিত্র ও ঘটনার পরিণতির বিষয়ে পূর্ব ধারণা থাকায় উপন্যাসটি যেমন সহজ বোধ্য হয়েছে আবার ইতিহাস না জানা পাঠকের মনে এ উপন্যাসে বাস্তব চরিত্রগুলো ভিন্ন মানবিক ছাপ ফেলতে পারবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম থেকে শুরু করে তাঁকে অনুসরণ করে লেখক ঘটনার স্থান-কালে পাঠককে নিয়ে গিয়েছেন । পাশাপাশি তিনি আর এক কিংবদন্তি তাজউদ্দিন আহমেদকে সাথে নিয়ে অগ্রসর হয়েছেন। এই দুই ধারার মধ্য দিয়ে ছাত্র রাজনীতির ধারা-ভাবনা-ধরণ-প্রকরণ বর্ণনা করেছেন। উপ-মহাদের প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের আন্দোলনের গতিবিধি,তত্ত্ব, উদ্দেশ্য, কর্মসূচি একনকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্ত লেখক অতি যত্নে, অল্প কথায়, সুনিপুন সমসাময়িক ভাষাপ্রবাহে ফুটিয়ে তুলেছেন। গুরুগম্ভীর ঘটনার ঘনঘটায় পাঠক যখন প্রায় ক্লান্ত ঠিক তখনি লেখক ঐ বিহঙ্গদ্বয়ের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। তাদেরকে দিয়ে তখনি কথা বলিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের পুরোনো ঐতিহ্য পুঁথির ছন্দে। বর্তমান সাধারণ ঘটনাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পাঠককে সজাগ করতে ভবিষ্যতের ঘটনার আভাস দিয়েছেন। এটা বাংলা সাহিত্যে একটি নতুন সংযোজন। মহাননেতা বা ইতিহাসের মহানায়কেরা একদিনে এমন বড় নেতা হয়ে ওঠেনি । তারাও মাঠে ঘাটে মিছিলে মিটিংএ পিকেটিংএ অংশ নিয়েছেন।সাইকেল চালিয়েছেন। তাঁরাও সিনিয়র লিডারদের নির্দেশ-আদেশ-উপদেশ অনুসরণ করেছেন আবার একমত হতে না পারলে নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছেন ।আবার ক্রমান্বয়ে স্বতন্ত্র ভাবনা-চেতনা-উদ্দেশ্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করেছেন। ফলে তারাও হয়ে উঠছিলেন আপামর জনসাধারণের প্রণের নেতা । নেতা হয়ে ওঠার এই যে ভাঙ্গা-গড়ার ইতিহাস, বিশুদ্ধ নেতা হয়ে ওঠার ইতিহাস ‘যারা ভোর এনেছিল’ গ্রন্থে পাওয়া যাবে। এই গন্থ নতুন প্রজন্মের জন্য একারণেই অবশ্যপাঠ্য । এই অর্থে গ্রন্থটি নেতৃত্ব বিকাশের প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল বললে অতিরঞ্জিত বলা হবে না। শিশু মুজিবের রাজনৈতিক মানষ গঠনে গৃহশিক্ষক আবদুল হামিদের কথা এসেছে ঘুরেফিরে।লেখক তাঁর কলকাতায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পরা এবং সোহরাওয়ার্দীর শিষ্যত্ব গ্রহণের মধ্যদিয়ে ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের মূলধারায় প্রবেশ করেছেন ।এরপরে ব্রিটিশরা পাকিস্তান ও ভারতকে স্বাধীন করে দিচ্ছে।দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে নাকি অখন্ড বাংলা- তা নিয়ে বিতর্ক, রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তরুণতর তাজউদ্দীন আহমদের অংশগ্রহণ। মওলানা ভাসানী, সোহরাওয়ার্দীর ঢাকা আগমণ। জনপ্রিয় তরুণ মুজিবের বারবার গ্রেপ্তার ও কারাবরণ অত:পর মুক্তি, ইত্যাদি ঘটনার প্রাঞ্জল উপস্থাপনায় এগিয়ে চলে উপন্যাস। ওদিকে টুঙ্গিপাড়ায় রেনুর প্রথম সন্তানের মৃত্যু পরবর্তী দুই সন্তানকে নিয়ে জীবন যাপন ও মুজিবের শূন্যতার হাহাকারকে ছাঁপিয়ে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তাঁর স্বামীকে দেশের জন্ উৎসর্গ করে দেয়ার দৃষ্টান্ত । এমনই প্রেক্ষাপটে আসে একুশে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২র ভাষা আন্দোলন। আর ট্রিলজির এই প্রথম খণ্ডে ভাষা আন্দোলনের বর্ণনা পূর্ণাঙ্গরূপ লাভ করেছে। ‘যাঁরা ইতিহাস নির্মাণ করেছেন, তাঁরাই এই উপন্যাসের চরিত্র।‘ ‘আনিসুল হক গভীর মমতায় তাঁদেরকে আমাদের হৃদয়ের কাছাকাছি নিয়ে এসেছেন।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যে এক দিনে বা এক বছরে বা শুধু যুদ্ধের মাধ্যমে আসে নি তা এই গ্রন্থ পাঠে বারবার মনে হয়েছে। এই বইয়ে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে। অনশনের কারণে মুজিবের কারামুক্তিতে শেষ হয়েছে এই প্রথম খন্ড। বাংলাদেশের ইতিহাসের মূল স্তম্ভ ১৯৬২, ৬৬, এর জন্য লেখক ইতোমধ্যে ‘উষার দুয়ারে’ লিখেছেন। আমরা আশা করি দেখতে পাবো ৬৯, ৭০ ও অনন্য ৭১ এবং ১৯৭৫ সালের বেদনাদায়ক ঘটনার মধ্যদিয়ে এই ট্রিজলি উপন্যাসের সফল সমাপ্তি। নিঃসন্দেহে বলা যায় ‘যারা ভোর এনেছিল’ ইতিহাসে আগ্রহীদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাসকে স্বচ্ছ করে তুলবে, আর সাহিত্যানুরাগীদের ইতিহাস জানতে সহায়তা করবে।