User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Jahan-E-Noor

      11 Apr 2013 03:54 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      (নেলসন ম্যান্ডেলার সাম্প্রতিক প্রকাশিত গ্রন্থ ‘কনভারসেশনস উইথ মাইসেলফ’ নিয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকার আন্তর্জালিক সংস্করণে ১৭ অক্টোবর, ২০১০ সাংবাদিক পিটার গডউইনের একটি রিভিউ প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য, তিনি ‘দি ফিয়ারঃ দি লাস্ট ডেইজ অফ রবার্ট মুগাবে’ গ্রন্থটির প্রণেতা। সেই রিভিউটি বাংলায় অনুবাদ করে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।) চুয়াল্লিশ বছর বয়সে কারান্তরীণ হয়ে নেলসন ম্যান্ডেলা লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গেলেন। পরবর্তী সিকি শতক ধরে, তিনি হয়ে গেলেন একজন রহস্যময় মানুষ, একজন হারিয়ে যাওয়া নেতা। অবশেষে ১৯৯০ সালে তিনি যখন বিজয়ীর বেশে ফিরে এলেন, মানুষ তাঁর কথা শোনার জন্য অবদমিত আকাঙ্খা নিয়ে ছুটলেন। তখন থেকেই, তাঁকে নিয়ে লেখা বই এবং তাঁর লেখা বই পরিনত হয়েছে একটি শিল্পে, বলতে গেলে তাদের একটি নিজস্ব সাহিত্য শাখাঃ বিপুল সংখ্যক আত্নজীবনী, অনুমোদিত এবং অননুমোদিত শিশুতোষ বই, তাঁর নেতৃত্ব শৈলী উপস্থাপন করে বই, বানিজ্যিক বই এবং শিল্পকলার বই বেরিয়েছে। সেখানে সত্যিকারভাবেই কি আরেকটি বই ম্যান্ডেলা নামক স্ফিত বইয়ের তাকে নিজের জায়গা করে নিতে পারবে? আর কিইবা বলার আছে নতুনকরে? এই বইটি পেরেছে, খুব ভালোভাবেই উতরে গেছে। ‘কনভারসেশনস উইথ মাইসেলফ’কে প্রথাগত বইয়ের চেয়ে বরং সাহিত্য সংকলন বলা ভালো, এতে আছে ম্যান্ডেলার জীবনের টুকরো টুকরো ঘটনার বর্ণনা, ডাইরীর পাতা, দিনপঞ্জি, চিঠি এবং এমনকি রিচার্ড স্টেনগেল, যিনি ম্যান্ডেলার আত্নজীবনী ‘লং ওয়ার্ক টু ফ্রিডম’ এর অনুলেখক ছিলেন (এবং বর্তমানে টাইম ম্যাগাজিনের সম্পাদক), তাঁকে দেওয়া প্রায় পঞ্চাশ ঘন্টার কথোপকথনের প্রতিলিপি। এতে আরো স্থান পেয়েছে ম্যান্ডেলার একটি আত্নজীবনীর কিছু অনুচ্ছেদ, যেটি থেকে তিনি নিজেই কিছু মুহূর্ত ইতঃস্ততভাবে বইটিতে সন্নিবেশ করেছেন, কিন্তু আবার চূড়ান্ত পর্যায়ে বাদ দিয়ে বইটি সংকলন করতে দিয়েছেন। সব বিষয় কিছুটা অগোছালো ও পরিপাটিহীনভাবে উপস্থাপিত হওয়ার আশঙ্কা থাকত, অদ্ভুত ব্যাপার এই যে, এতে করে এমনটি হয় নি। এই বইটি গভীরভাবে গতিময়, নৈসর্গিক এবং হস্তক্ষেপহীন, এতে প্রকৃত সময়কে তুলে ধরা হয়েছে পারিপার্শ্বিক সকল পরিবর্তনসহ, বছরের পর বছর, বিরস মুহূর্তগুলো মিশে গেছে অতীব গুরুত্বপূর্ন সময়ের সাথে। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিষয়, স্বপ্ন, রাজনৈতিক পদক্ষেপ সব একত্রে উঠে এসে, ম্যান্ডেলার এই পর্যন্ত সবচেয়ে পূর্নাঙ্গ জীবনের ছবি প্রকাশ করেছে। ভার্ন হ্যারিস, ম্যান্ডলা সেন্টার অব মেমরি অ্যান্ড ডায়ালগের পরিচালক, যিনি সংকলনের জন্য এই দলিলগুলো বাঁছাই ও সন্নিবেশিত করার প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি মুখবন্ধে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে, নতুন দক্ষিন আফ্রিকার কিংবদন্তীতূল্য বিনির্মানে ম্যান্ডেলা একটি অংশ হয়ে আছে। সর্বসাধারণে প্রচারিত তাঁর কথাগুলোর সবটুকুই তাঁর নিজের লেখা নয়, এমন কি তাঁর আত্নজীবনী ‘লং ওয়ার্ক টু ফ্রিডম’ এএনসির সহকর্মীদের তত্ত্বাবধানে সংকলিত হয়েছে, যারা অনুধাবন করতে পারত এই লেখাটি রাজনৈতিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। ‘কনভারসেশনস উইথ মাইসেলফ’ বইটিতে, ম্যান্ডেলার ‘লং ওয়ার্ক টু ফ্রিডম’ বইটির উপরে এএনসি নেতা আহমেদ ক্যাথরাডা’র চমৎকার কিছু খসড়া পঠন আলোচনার প্রতিলিপি সন্নিবেশিত আছে। ক্যাথরাডা পুস্তক প্রকাশক কর্তৃক প্রচারিত বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনকে উদ্ধৃত করে, ম্যান্ডেলার বিভিন্ন অন্তরঙ্গ সময়ের আরো অধিকতর ব্যক্তিগত মুহূর্তকে বইটিতে সন্নিবেশ করতে আহবান জানিয়েছিলেন। সেই বইটিতে, এক জন লৌহমানব পাথুরে ম্যান্ডেলাকে খুব কমই একজন মানবিক অনুভিতশীল ম্যান্ডেলায় দেখা গেছে। “কেমন লাগত সে দিনগুলোতে?” এই ধরনের প্রশ্ন উত্তর দিতে প্রায় সময় তাঁকে নির্লিপ্ত দেখা গেছে। এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, ম্যান্ডেলার এই চাপা স্বভাবই ‘কনভারসেশনস উইথ মাইসেলফ’ বইটিকে এমন একটি আবশ্যকীয় বইয়ে রূপ দিয়েছে। তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত নোটখাতাগুলো পড়ে, আমরা অবশেষে আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়া একজন মানুষকে যেন এক ঝলক দেখতে পাই। সৌভাগ্যক্রমে এমন হয়েছে যে, ম্যান্ডেলা প্রায় সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংরক্ষণ করে রাখতেন এবং প্রচুর নোট লিখতেন, যদিও পুলিশ তাঁর লেখা বহু নোটখাতা বছরের পর বছর ধরে জব্দ করে নিয়ে গেছে, যেগুলো আজ অনিবার্যভাবেই অন্ধকারের অতল গহবরে হারিয়ে গেছে। বন্দী দিনগুলোতে, এক জন ব্যক্তির প্রবল প্রত্যাশাগুলো স্বাভাবিকভাবেই ক্রমশ হারিয়ে যায়। ম্যান্ডেলা বলেছেন, “যত দিন আমি জেলে বন্দী ছিলাম, আমার স্মৃতি শক্তির ক্ষমতার উপর সেভাবে কখনই ভরসা করতে পারি নি”। তাঁর পরিবার পরিজন এবং বন্ধু বান্ধবদের কাছে থেকে, তাঁর লেখা কিছু চিঠির সারসংক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বইটিতে, অবশ্য সরকারী সেন্সরশীপে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে অনেক চিঠিই তার প্রাপকের কাছে পৌছাতে পারে নি। ম্যান্ডেলা তাঁর শক্ত বাঁধাই করা নোটখাতাটিতে, এই সব চিঠির একটি অনুলিপি লিখে রাখতেন ( এই নোটখাতাটিও কর্তৃপক্ষ চুরি করে নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু ২০০৪ সালে এক অনুতপ্ত সাবেক নিরাপত্তারক্ষী পুলিশ সদস্য এটি ফেরত দেন)। এই নোটখাতাটি এই বইয়ে সংযুক্ত করার ফলে, বন্দী নম্বর ও নোটখাতাটির উপরে ডানকোণের ডাকটিকিটসহ ম্যান্ডেলার নিখুত পরিপাটি লেখাগুলো দেখার সুযোগ আমরা পাই। বইটি আমাদের সংশোধনক্ষম প্রবনতার জন্য সহায়ক হবে, অতীত ঘটনাবলীকে পর্যালোচনা করে ইতিহাসকে দেখার, যা কিছু ঘটেছিল তার কতকটা অপরিহার্য ছিল, ভাবার। সেই সময়ের রুবেন দ্বীপের বন্দীদের কাছে, এক সময়ের প্রবল পরাক্রমশীল বর্ণবাদী রাষ্ট্রটিকে পরাজীত করা ছিল একটি দূরবর্তী স্বপ্ন, তথাপি সেদিনের মত আজকের দিনেও এটি একটি মর্যাদাশীল সংগ্রাম হিসেবে বিবেচিত। বইয়ের এই উজ্জ্বল পাতাগুলো প্রত্যেককে সেই সংগ্রামমুখর দিনগুলোকে মনে করিয়ে দেয়, যেমন, ৪৬৬/৬৪ নম্বর বন্দীটি কয়েক দশক আগেই মুক্তি পেতে পারত, যদি বন্দীকারীদের তৈরী কালো ‘স্বদেশভূমি’র যে কোনো একটিতে মুক্তি নিতে চাইতো এবং বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যাগ করত। কিন্তু সে এমনটি করেন নি। পরবর্তীতে, ১৯৮৭ সালে দক্ষিন আফ্রিকা বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর করা এক আবেদনে, ম্যান্ডেলা তাঁর আইন ডিগ্রী থেকে ল্যাটিন পেপারটি উঠিয়ে নিতে বলেন, তিনি নিরাবেগভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করে বলেন যে, তাঁর পক্ষ্যে কোনোভাবেই সত্যিকারের আইন ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়, “কেননা আমি যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাঁজা খাটছি”। নিজের প্রতি দয়া বিহীন এক জন মানুষ এভাবেই আবির্ভূত হয়েছেন এখানে, যিনি নিজের ক্ষমতা, বিত্ত ও মর্যাদা বৃদ্ধির প্রলোভন থেকে মুক্ত ছিলেন। একটা ক্ষেত্রে, তিনি তাঁর আত্নজীবনীর অনুলেখক রিচার্ড স্টেনগেলকে সতর্ক হওয়ার জন্য জোর দিয়েছিলেন, কেননা সামরিক প্রশিক্ষন নিয়ে আলোচনার সময়, তিনি নিয়মিতভাবেই তাঁর লক্ষ্য থেকে সরে যাচ্ছিলেন। বইটি প্রত্যককে আরো স্মরন করিয়ে দেয় যে, ম্যান্ডেলাকে ইতিহাসের কতটা খাড়া পথ পাড়ি দিতে হয়েছে, তিনি কতটা অবিসংবাদিত। তিনি সব ধরণের বই পড়তেন, ‘ওয়ার এন্ড পিস’ থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিতেন, যখনই কোনো ‘সংগ্রাম’ এর প্রস্তুতি শুরু করতেন, পরামর্শের জন্য নানা রকম বই যেমন ম্যাকিয়াভেলি, ক্ল’জওয়িটয, মাও জেদং এবং মেনাকেমের সাযায্য নিতেন। তিনি অ্যাংলো-বোয়ের যুদ্ধ সম্পর্কে সবিস্তারে পড়াশুনা করেছিলেন, এবং পরবর্তীকালে এটি তিনি তাঁর নিজস্ব কারারক্ষীদের বিপক্ষে আফ্রিকান্সভাষী-বিষয়ক যুক্তি-তর্কে ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু ম্যান্ডেলার ক্ষেত্রে, আমরা তাঁকে এখানে একজন রূঢ়ভাবে আত্নসমালোচনাকারী হিসেবেও দেখতে পাই। তাঁর স্ত্রী, উইনিকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি ‘অ্যাজ ইউ লাইক ইট’ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছিলেন, “মধুরতা দুঃখ যন্ত্রনা ভোগ থেকে আসে….”, এর পর তিনি বলেন, তিনি তাঁর পূর্বে দেওয়া কিছু ভাষণের প্রতিলিপি পরীক্ষা করে দেখেছেন, “এই ভাষণগুলোতে আনুষ্ঠানিকতার উপর অধিক মনোযোগ, কৃত্রিমতা এবং মৌলিকতার অভাব তাঁকে মর্মাহত করেছে। মানুষেকে মুগ্ধ করা ও নিজেকে প্রচারের বাসনা সেখানে খোলাখুলিভাবেই দৃশ্যমান”। বইটি একটি মূল্যবান দৃষ্টি সহায়ক কাঁচের মত, যাতে চোখ রেখে দেখা যায় কিভাবে ম্যান্ডেলা তাঁর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলেন – মার্কসীয় দর্শন, তাঁর খ্রিস্টিয় বিশ্বাস, সশস্ত্র সংগ্রাম এবং নিরীহ সমর্থনকারী ও অপরাধ সংঘটনকারীদের উপরে কর্তৃপক্ষের দুর্দমনীয় অত্যাচারী মনোভাব সম্পর্কে তিনি কি ভাবতেন। বলা হয়ে থাকে যে, তিনি রোল মডেল হিসেবে তিনি গান্ধীজির চেয়ে নেহুরুকেই বেশি পছন্দ করতেন। এটাও খোলাসা করে বলেন যে, তিনি অহিংস নীতিকে আদর্শ হিসেবে নয়, বরং কৌশল হিসেবেই বিশ্বাস করতেন, যদিও তাঁর বিচারের সময় এগুলো সে বলেন নি। তিনি আলোচনা করেছেন কিভাবে তিনি ঠিকভাবে অনুমান করতে পেরেছিলেন, তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে, কেমন লাগবে আপনার কাছে যখন আপনি চিন্তা করবেন, “এক জন বিচারক আপনার দিকে এগিয়ে আসবে এবং আপনাকে এখনি বলবে, ‘আপনার জীবনের শেষ সময় উপস্থিত’ – ”। বিষাদময় ব্যক্তিগত বিষয়গুলোও এখানে তুলে ধরা হয়েছে, – উদাহারন হিসেবে বলা যায়, তাঁর প্রথম স্ত্রী, এভিলিনকে একবার প্রহার করেছিলেন এই মর্মে তাঁর বিরূদ্ধে অভিযোগ, “তিনি তাঁর গলা টিপে ধরে ছিলেন”। (ম্যান্ডেলার নিজস্ব অভিমত হল, একবার তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে, এভিলিন চুলা থেকে লাল উত্তপ্ত খুন্তি বের করে তাঁর মুখের দিয়ে এগিয়ে আসছিল, এবং তিনি তাঁর হাত থেকে খুন্তিটি কেড়ে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিয়েছিল।) ১৯৬৮ সালে, তাঁর ৭৬ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা তাঁর গ্রাম ট্রানসকেই থেকে একাই রুবেন দ্বীপে তাঁকে দেখতে আসেন, ম্যান্ডেলা লিখেছেন, “আমার সাথে সাক্ষাত শেষ হলে, আমি তাঁকে ধীরে ধীরে নৌকার দিকে হেঁটে যেতে দেখি, যেটি তাঁকে মূল ভূখন্ডে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাবে, এবং তখনি আমার মনের মাঝে একটি চিন্তাই বার বার দোলা দিচ্ছিল যেন, আমি শেষ বারের মত আমার মাকে দেখছি”। ম্যান্ডেলার কথাই ঠিক হল – কয়েক মাস পরেই তাঁর মা মারা যান, এবং তাঁকে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া হয় নি, এমনকি নিরাপত্তাক্ষী দ্বারা বন্দী অবস্থায়ও নয়। দশ মাস পরে তাঁর বড় ছেলে, থেম্বি মোটরগাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। ১৩ জুলাই, ১৯৬৯ সালে রুবেন দ্বীপ কারাগারের কমান্ডিং অফিসার বরাবর, ম্যান্ডেলা তাঁর ছেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার অনুমতি চেয়ে চিঠি লিখেন, এটি পড়লে যে কারো হৃদয় ভেঙে যাবে কষ্টে। কর্তৃপক্ষ এটিও প্রত্যাখান করে। ‘কনভারসেশনস উইথ মাইসেলফ’ বইটিতে একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলোকে খাটো করে দেখা হয় নি (ম্যান্ডেলা বইটিকে নিয়ন্ত্রন করার কোনো চেষ্টা করেন নি) এবং পারিবারিক জীবনকে প্রারম্ভেই বড় করে তুলে ধরা হয়েছে। যখন উইনি তাঁর সাথে দেখা করতে আসতেন, তাঁর জন্য “কিছু সিল্কের পায়জামা এবং নাইট গাউন…” নিয়ে আসতেন। ম্যান্ডেলা সেগুলো ফিরিয়ে দিয়ে বলতেন, “এই পোষাক এই জায়গায় ব্যবহারের জন্য নয়”। জেলখানার বন্দী দিনগুলোতে, ম্যান্ডেলা ও স্টেনগেলের মধ্যে যৌনতা বিষয়ক প্রশ্ন এবং ঐসব দিনগুলোতে ম্যান্ডেলাকে না পেয়ে উইনি কি করত, তা নিয়ে ইতস্তত কথা হত, এই সময় ম্যান্ডেলাকে প্রচন্ডভাবে আত্ন সংযমী দেখা যেত। স্টেনগেল গভীরভাবে অনুসন্ধান করে বলতেন, “তাঁরও (উইনি) বাইরে আলাদা একটা জীবন আছে, সে অন্য পুরুষের সাথে মেলামেশা করে….”। কিন্তু ম্যান্ডেলার মাঝে কোনো ঈর্ষা প্রকাশ পেত না। পরবর্তীতে, উইনি যখন নিজেই জেলে অন্তরীণ হলেন, কিভাবে জেল জীবন মানিয়ে নিতে হয়, তা জানিয়ে ম্যান্ডেলা উপদেশ পাঠাতেন, বিছানায় ঘুমোতে যাওয়ার পনের মিনিট ধ্যান করার জন্য তাঁকে পরামর্শ দিতেন। কিন্তু উইনি ছিলেন তাঁর স্বামীর থেকে একেবারেই আলাদা ধাঁচের। যখন ম্যান্ডেলার স্বল্পবয়স্ক মেয়েরা তাঁর সাথে দেখা করে চলে যেত, তিনি তাঁর স্ত্রীকে চিঠি লিখে জানাতো, কত সুন্দরভাবে বেড়ে উঠছে মেয়েগুলো, তিনি স্মৃতিকাতর হয়ে বলেন যে, “এমন হত, আমি যেন বড় ধরণের বিশ্বাসঘাতকতা করেছি…..সে আমাকে মনে করিয়ে দিত, ‘তুমি নও, আমিই বড় করে তুলেছি এই বাচ্চাগুলোকে, যাদেরকে তুমি আমার চেয়েও বেশি প্রিয় ভাবছো!’ আমি বিষ্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যেতাম”। বইটিতে কিছু স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পরিজ্ঞানের উল্লেখ আছে, বিশেষকরে ম্যান্ডেলা কর্তৃক আলাপ আলোচনার বর্ণনা, যার মাধ্যমে বর্ণবাদনীতি বিলুপ্ত হয়। যখন কর্তৃপক্ষ তাঁকে তাঁর সহকর্মীদের থেকে আলাদা করে অন্য স্থানে নিয়ে এলেন, তাঁদের থেকে তাঁকে বিচ্ছিন্ন করে ফেললেন, তিনি এই অবস্থান্তরকে মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কেননা এটি তাঁকে খোলাখুলিভাবেই বর্ণবাদী কর্তৃপক্ষের সাথে গোপন আলোচনার সুযোগ প্রদান করবে, তাঁর সহকর্মীদের সাথে কোনো ধরণের পরামর্শ ছাড়াই। “আমি তাঁদের না জানিয়েই সেই মত আলাপ আলোচনা শুরু করলাম, এবং পরবর্তীতে তাঁদের মুখোমুখি হয়ে বলি, যা হবার হয়ে গেছে, এখন আর ফেরানোর পথ নেই”। তিনি অনেক বড় ঝুঁকি নিয়েছিলেন। ম্যান্ডেলার দিনপঞ্জি থেকে একটি বিষয় কুড়িয়ে তুলে আনা হয়েছে এখানে, যখন তাঁকে বন্দী করা হল, পৃথিবীর চারিদিকে তাঁকে ঘিরে সংঘঠিত পদক্ষেপগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাঁর কাছে। তাঁর মুক্তির জন্য জন সাধারণের আদালতে করা আবেদনপত্র, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাঁকে সম্মানজনক আচার্য্য করার উদ্যোগ, এমনকি জন্মদিনের কার্ড – যা প্রায়ই শিশুতোষভাবে ফেলে দেওয়া হত, নিষ্ফল আন্দোলন ও পদক্ষেপসমুহ – এগুলো পরিষ্কারভাবেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাঁর মনোবল ধরে রাখতে। বইটিতে অপ্রত্যাশিত কিছু আনন্দদায়ক মুহূর্তের বর্ণনাও আছে। আমরা ম্যান্ডেলাকে একজন চলচিত্র সমালোচক হিসেবে দেখতে পাই – তিনি ‘অ্যামাডিউস’ এর সমাপ্তীকে পেয়েছিলনে “কিছুটা বিরস” ও নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে খুব মিলে যায়, এবং “দি নার্ডস টেক রিভেঞ্জ” (আমার মনে হয়, তিনি অবশ্যই “রিভেঞ্জ অফ দি নার্ডস” এর কথা বলেছেন) চমৎকার। এখানেই শেষ নয়, এই বইটিতে আরো প্রকাশ পেয়েছে “ফ্রম দি ডেস্ক অফ ম্যান্ডেলা” নামক চিঠি লেখার খাতার মুদ্রিত ছবি, যার ডান কোণে শোভা পাচ্ছে একটি দেঁতো হাসির গার্ফিল্ড কার্টুনের ছবি।

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!