User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বাংলা সাহিত্যের বিশাল একটা অংশ জুড়ে আছে গল্প। তার মাঝে ছোট গল্পের স্থান নেহায়েত কম নয়। বাঙালী যেমন আড্ডা দিতে পছন্দ করে তেমনি গল্প করতেও ভালোবাসে। গল্প প্রিয় বাঙালী লেখকদের অনেকে এখনও কবিতার চেয়ে গল্প লিখতেই বেশ সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ছোট গল্পের সংজ্ঞা নিয়ে অনেক মতবাদ রয়েছে তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আশির দশক পর্যন্ত গল্পের যে ধারা ছিল তার কিছুটা বদলে গিয়ে শূণ্য দশকের কিছু আগে থেকেই গল্প লেখার ধরণ বদলেছে এবং বর্তমানে নতুন সব আঙ্গিকে গল্প লেখা হচ্ছে যদিও সেখানে স্বার্থকতা ভাগ খুব বেশি নয় তারপরও গল্পের বর্ণনা শৈলী, শব্দচয়ন, পটভূমি, দৃশ্যকল্প ধারন বর্তমান ও পরবর্তী সময়ের পাঠকদের চাহিদা পূরণে অনেকটা সফল হবে বলে আশা করা যায়। এবারের একুশে বইমেলা-২০১৩ ব্লগারস ফোরাম থেকে গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো প্রকাশিত হয়েছে গল্প গ্রন্থ “নীড় গল্প গুচ্ছ”। গল্পগ্রন্থের লেখকবৃন্দ প্রায় সকলেই শূন্য দশকের পরবর্তী সময় থেকেই লেখালেখি শুরু করেছেন। নব্বই দশকের পরবর্তী সময়ের গল্পকারেরা অনেকেই নিরীক্ষাধর্মী গল্প লিখতেন এবং এখনও তার রেশ রয়েছে। যাতে গল্পের কাহিনীতে জটিলতা কিছুটা দুর্বোধ্যতার থাকে, তবে এই গ্রন্থে লেখকদ্বয় সেরকম আভা থেকে খানিকটা বেড়িয়ে এলেও অর্পনা মম্ময় এর লেখা গল্পটিতে তার আভা কিছুটা লক্ষ্য করা যায়। গল্পটিতে গদ্য ও কাব্যের সংমিশ্রণ রয়েছে। বিন্যাস, বচন, বিবৃতিতেও একরকমের আচ্ছন্নতা। দারুণ সব শব্দপ্রতিমা থাকা স্বত্বেও সাধারণ কিছু আলসে পাঠক গল্পটির মাঝখান অতিক্রম করতে গিয়ে থেমে যেতে পারেন। তবে সকল শ্রেণির পাঠকদের কথা ধরলে বিষয়টি উৎরে যাবে। চার জন নতুন লেখকের লেখা নিয়েই গল্প গ্রন্থটি করা হয়েছে। স্মৃতি, প্রেম, সমাজ ও বন্ধুত্ব ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে চার লেখকের মোট ৯টি গল্প এতে ঠাঁই পেয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের ৯টি গল্পে উঠে এসেছে সমাজের কথা, সংসারের কথা, প্রেম ও বন্ধুত্বের কথা। গল্প গুলো লিখেছেন, অপর্না মম্ময়, সৈয়দ আশরাফুল কবির রনি, শামীম সুজায়েত ও সকাল রয়। প্রত্যেক লেখকই তাদের নিজস্ব মুন্সিয়ানা ও প্রকাশ ভঙ্গি দেখিয়েছেন। বইটিতে অপর্না মম্ময় একটি, সৈয়দ আশরাফুল কবির রনি দুইটি, শামীম সুজায়েত ও সকাল রয় তিনটি করে গল্প লিখেছেন। গল্পগ্রন্থের প্রথম গল্পটি লেখিকা অপর্না মম্ময়ের গল্পের নাম ‘মিথিলা ও ছায়াচ্ছন্ন সৌরভ’ গল্পটি লেখা হয়েছে গল্প বলার ভঙ্গিমায়। গল্পের মুল চরিত্রে রয়েছে অরুপ ও মিথিলা। গল্পটি শুরু হয়েছে করিম গুন্ডার ভাই সুজন এর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে যদিও গল্পটা সেই উৎস থেকে সরে গিয়ে মুল গল্পে মিশেছে, মুল গল্পে দেখতে পাই অরুপের চেয়ে ক’বছরের বড় মিথিলাকে নিয়ে তার নিজস্ব ভাবনার মেলা। অরুপ মিথিলাকে মনে প্রাণে ভালোবাসে কিন্তু সেটার প্রকাশ শুধু মনের উঠোনেই পড়ে থাকে। মিথিলার সহচার্য তাকে পুলকিত করে। মিথিলার সব কিছুতেই অরুপ মোহগ্রস্ত পুরো গল্প জুড়েই এক রকমের আচ্ছন্নতা সুস্পষ্ট। গল্পটা অনেকটা একরোখা রাস্তার মতো। কাব্যকথা ও এক কেন্দ্রিক বশে আবিষ্ট। অরুপের ভালোলাগার প্রকাশ অন্তরালেই থেকে গেছে। সবশেষে মিথিলা যখন পিএইচডি করতে অষ্ট্রেলিয়া যাবার জন্য প্রস্তুত হয় ঠিক তখনই ঘটে পাড়াতো গুণ্ডার ভাই সুজন এর মৃত্যু যদিও গল্পের কোন চরিত্রের সাথে সে যুক্ত নয় তব্ওু সেই মৃত্যু অরুপকে ভাবায় আর সে উপলব্ধি করতে পারে মিথিলার মতো কেউ একজন থাকলে শেষ মুহুর্তে হয়তো সুজন মরতে না। প্রত্যেক পুরুষের পাশেই একজন নারীর উপস্থিতি একান্ত কাম্য সে কাম্যতাই লেখিকা গল্পের পরতে পরতে ছড়িয়েছেন আর তাতে খানিকটা সফলও হয়েছেন। ‘রাজকুমারী কঙ্কাবতী’ শিরোনামের গল্পটি লিখেছে সৈয়দ আশরাফুল কবির রনি। শিরোনাম দেখে যদিও মনে হতে পারে কোন রাজকুমারীর গল্প, কিন্তু গল্পে সে-রকমটি নেই। চেয়ারম্যান আলকাছ চৌধুরীর ছেলে হাসানকে নিয়ে গল্পটা শুরু হয়। হাসান একজন ছড়াকার বাজারে তার একশ’র উপরে ছড়ার বই থাকা সত্ত্বেও সে ছড়া লিখতে গিয়ে ব্যার্থ হয়। বাবার সাথে তার সম্পর্ক ভালো নয়। এলাকার প্রভাবশালী এই আলকাছ চেয়ারম্যান একদিন তার ঘনিষ্ট সহচর মিজান মিয়ার হাতে নিহত হন। হাসান তার বাবার মৃত লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন করতে নিয়ে গিয়ে বুঝতে পারে তার বাবাকে এলাকাবাসী রাক্ষুসে দানো মনে করতো। গল্পটির ভেতরে আরেকটি গল্প আছে সেটা হলো হাসানের স্ত্রী রুমীর গল্প। এই গল্পের দুর্দান্ত কিছু দৃশ্যকল্প লেখক দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন জনৈক রাজাকার সামসু মুন্সী রুমীর বাবাকে তারই সামনে জবাই করে হত্যা করে। এই অংশটি গল্পটাকে নতুন একটা আঙ্গিক দিয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে রুমী এক বিয়ে বাড়িতে গিয়ে সেই রাজাকারের সন্ধান পায়। গল্পের আরেক দিকে চার বছরের একটি প্রেমের দৃশ্যকল্প দেখতে পাই যেখানে রাসেল নামক ছেলেটি নিদারুণ ভাবে তার প্রেমকে হারায়। লেখক যদি গল্পের শেষাংশটা তাড়াহুড়ো করে শেষ না করতো তাহলে আরো ভালো হতো। গল্পটির প্রথম পরিচ্ছদ এর পর বাকী গুলোর শুরুর দিক তেমন গোছানো হয়নি। এরকম একটা গল্পের নাম কেন রাজকুমারী কঙ্কাবতী হলো সে প্রশ্নের উত্তর লেখক গল্পের শেষের লাইনগুলোতে তুলে ধরেছেন তবে সেটা আরেকটু পরিসরে প্রকাশ হলে লেখাটা সব শ্রেণির পাঠক বধে সক্ষম হতো। সৈয়দ আশরাফুল কবির রনি গল্প গ্রন্থে পরকীয়া নামে আরেকটি গল্প লিখেছেন। গল্পটি একটি সংসারের দাম্পত্য দন্ধের গল্প। গল্পের নায়ক মামুন। একদিন রিলিফে গিয়ে পরিচয় হয় রুমা নামের মেয়েটির সাথে তারপর ভালোলাগা ভালোবাসা এবং বিয়ে। যদিও প্রথম দিকে সরল অঙ্কের প্রেম এখানে দেখতে পাওয়া যায় কিন্তু তারপর গল্পের ভেতরকার দৃশ্যের দন্ধটা পরিচিত একটা গন্ধ নিয়ে আসে। মামুনের স্ত্রী রুমা, স্বামীর অলক্ষ্যে ভার্চুয়াল সম্পর্কে জড়িয়ে যায় অন্য পুরুষের সাথে এবং যার কারণে সংসারে অশান্তি এবং নিত্যকার ভাংচুর, মারপিট অমানুষিক নির্যাতন চলে রুমার উপর। মামুন নিজেও কিন্তু কম না, কলিগ মিতার সাথে তারও সখ্যতা চলে গোপনে গোপনে। গল্পের মাঝামাঝি দেখতে পাই সম্পর্কের দূরত্ব। মান-অভিমানে শুধু দুরত্ব বাড়ে আর এ হল আমাদের জীবনের পরিচিত একটা গল্প। গল্পের শেষে মামুন আবিস্কার করে রুমা ছিল শুদ্ধ আবেগের পূজারী কিন্তু মামুন প্রেম বলতে শুধু শরীর বোঝে শরীরের ভাষা বুঝেনা। গল্পে মামুন শেষ পর্যন্ত একজন ব্যার্থ পুরুষ হিসেবে নিজেকে আবিস্কার করে। গল্পটির বর্ণনা শৈলী চমৎকার। নীড় গল্প গুচ্ছে লেখক শামীম সুজায়েত এর গল্প গুলো সমাজ কেন্দ্রিক। এই গ্রন্থে তার প্রথম গল্পটির নাম “আমি প্রতিভার বাবা” শিরোনাম পড়ে যদিও মনে হতে পারে একজন জন্মদাতা পিতার গল্প কিন্তু আদতে তা নয় গল্পটি পালিত পিতার অন্যরকম একটি গল্প। গল্প বলার ঢংয়ে লেখক লিখেছেন গল্পটি। গল্পের মুল নায়ক সজীব, এনজিওতে চাকুরী করেন এইডস ওপর গণ সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কাজ করে বেড়ান। পেশাগত কারণে বিভিন্ন যৌন পল্লীতে তাকে ঘুরে বেড়াতে হয় যে কারণে বিয়ের বয়স হওয়া সত্বেও বিয়ে হয়না। গল্পের মাঝ উঠোনে লেখকের সাথে পতিতা পল্লীতে সখ্যতা গড়ে উঠে যৌনকর্মী নীলার। লেখক নীলা উপাখ্যানটি দারুণ ভাবে উপস্থাপন করলেও তাতে যত্নের কমতি আছে। যৌন কর্মী নীলার জবানিতে ফুটে উঠে কৃষক কন্যা সুফিয়া থেকে সমাজের পশুদের পাশবিক অত্যাচারে আজকের কিভাবে সে নীলা হয়। গল্পের এক পর্যায়ে নীলার মৃত্যু হয় এবং পরিশেষে নীলার রেখে যাওয়া একমাত্র মেয়ে প্রতিভাকে পালিত কন্যা হিসেবে সজীব দায়ভার নেয়, সমাজ আর সংস্কারের বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে নিজেকে গর্বিত বাবা হিসেবে উপস্থাপন করে। শামীম সুজায়েতের দ্বিতীয় গল্প ‘সত্ত্বা’ মৃত্যুর পর মানুষের অনুভূতি গুলোকে দৃশ্যকল্পের চতুর্মাত্রিক ফ্রেমে সাজিয়েছেন। সাংবাদিক আলিফের সন্ত্রাসীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর যে সমস্ত ঘটনা ঘটে, সেটাকে মৃত ব্যাক্তির চোখে কেমন হতে পারে সেরকম দৃশ্য কল্পেই গল্পটি সাজানো হয়েছে বেশ কিছু দৃশ্য খন্ড খন্ড ভাবে রূপায়িত হয়েছে গল্পে। দৃশ্যকল্প গুলোর বর্ণনা ভালো হয়েছে। এ রকম গল্প প্রতিনিয়তই ঘটছে আমাদের চারপাশে। সাংবাদিক হত্যার রহস্য এ দেশে উদঘাটন সহজে হয়না গল্পে সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে। নিজের হত্যাকারীকে মৃত আলিফ নিজের চোখের সামনেই ঘুড়ে বেড়াতে দেখে কিন্তু মৃত হওয়াতে তার কিছু করা হয়ে উঠে না। সমাজে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনা গুলোতে আমরা নিজেরাও অসহায় হতে পারি। লেখক সেটা সুকৌশলে তুলে ধরেছেন। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক স্বপ্নীল আহমেদকে নিয়ে শামীম সুজায়েত লিখেছেন “চিরচেনা” নামের গল্পটি। জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ান তিনি। ভালবাসতেন বাবার বন্ধুর মেয়ে অর্পনাকে। ভালবাসার সরল বর্ণনা গল্পে ফুলের মতো ফুটে উঠেছে। প্রেমের শুরুটা বেশির ভাগ সময়ই মিষ্টি থাকে আর শেষটা বেশিরভাগ সময়ই শেষ হয় তিতকুটে বিরহী ভাব নিয়ে। গল্পে সেই তিতকুটে ভাবটা একটু অন্যভাবে প্রকাশিত হয়েছে। গল্পের মাঝামাঝি এসে দেখতে পাই বিয়ের কয়েকদিন আগে বাসে করে যাবার সময় অপর্না ও তার বোন তন্দ্রা রোড এক্সিডেন্টে আহত হয় এবং পরবর্তীতে অপর্না হাসপাতালে মারা যায়। মাস চারেক পড়ে তন্দ্রা ভার্সিটিতে ভর্তি হলে স্বপ্নীল তন্দ্রার মাঝে অর্পনাকে খুজে পায়। সেই পুর্বের মতোই সে মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। লেখক গল্পে আরো কিছু খন্ড খন্ড দৃশ্যকল্প সংযোগ করেছেন যা গল্পকে মুল বিষয়বস্তু থেকে খানিকটা কুয়াশা করে দিয়েছে। গল্পটা শেষ হয়েছে যিনি গল্পটা বর্ণনা করেছেন তার ভাবনায়। শামীম সুজায়েতের গল্পে নতুনত্বের ছোয়া কম তারপরও সরল উপস্থাপনা অনেক পাঠককেই ভালো লাগা দেবে। গল্প গ্রন্থটির শেষ তিনটি গল্প লিখেছেন সকাল রয়। তার লেখা প্রথম গল্পটির নাম “যে নগরে কুড়ি থেকে কুড়ি হাজারে সম্ভ্রম কেনা যায়”। শিরেনামেই আচ করা যায় নির্যাতিত এক নারীর জীবন কথায় গাথাঁ কোন গল্প। সম্পুর্ন বাস্তবতা ও ঘুণে ধরা সমাজের প্রেক্ষাপটে চিত্রিত এই গল্পকথা। মিশুক প্রকৃতির মেয়ে সমুদ্রা কলেজ থেকে বাড়ি ফিরতে প্রতিদিন বখাটে ছেলেদের হাতে লাঞ্চিত হয় আর এভাবেই একদিন সে ধর্ষিত হয় পরিচিত কিছু বখাটে ছেলের দ্বারা। ধর্ষন শেষে তাকে হত্যা করে ঝিলের পাড়ে ফেলে যায়। তার মৃত দেহকে ঘিরে একদল কাক কর্কশ ডাকে আন্দোলিত করে তোলে মহল্লার আকাশ বাতাস। সামাজিক অস্তিরতা আর পারিবারিক আহাজারিতে গল্প এগিয়ে যায়। গল্পটির পার্শ্ব চরিত্রে আছে অবিনেশ নামের একজন ভিখেরি। আত্ম পরিহাস ও ভাগ্যদেবতা নির্মমতার দৃশ্য অদৃশ্য ভাবে ফুটে উঠেছে। সমাজের নিচু স্তরের মানুষ হয়েও সে উপলব্ধি করতে পারে মানবতা বোধ যা মুখোশধারী ভদ্র মানুষ গুলো পারে না। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় মুখোশ আটা মানুষ গুলোর বোধোদয় আর হয়না। “এই নগরের ছন্নছাড়া” শিরোনামে সকাল রয় লিখেছেন ২য় গল্পটি। ছন্নছাড়া নিশীথকে নিয়ে সরল অঙ্কের একটি গল্প। স্বকীয় বর্ণনা ভঙ্গি। গল্পের নায়ক নিশীথ অর্ধ বেকার চাল চুলোহীন স্বাধীনমনা এক মানুষ। সে নিজেকে ছন্নছাড়া ভাবে আর এতেই তার সুখ। যে ভাড়া বাড়িতে সে থাকে, সে বাড়িওয়ালার ছেলে মেয়েকে সে পড়ায় আর কোচিং সেন্টারে ছাত্র/ছাত্রী পড়িয়ে তার দিন কাটছিলো কিন্তু এই ছন্নছাড়াকে ঘরমুখো ঘরজামাই করতে একদল লোক সক্রিয় হয়ে উঠে। গল্পের নায়িকা চুমকী, তার মা ও বোন মিলে নিশীথকে ঘরজামাই করবার আপ্রাণ চেষ্টা চালায় কিন্তু নিশীথ তার সিদ্ধান্তে অনঢ় সে কিছুতেই সংসারি হবে না। বিয়েতে রাজী না হওয়া সত্ত্বেও সে বিয়ে করছে এই খবর রটে যায় মহল্লায় আর তখনই দারুন সব কথার ফুলঝুড়ি ফুটে গল্পের ভাজে ভাজে। আমরা এখনো নিশীথের মতো কিছু মানুষের সন্ধান পেয়ে থাকি জীবন পথের বাঁকে বাঁকে। গল্পটা যতটা আবেশ নিয়ে শুরু হয়েছিল তার শেষটা কিন্তু তেমনটা থাকেনি হঠাৎ করেই গল্পটার সমাপ্তি হয়ে গেছে যে কারণে পাঠক গল্পের চরম মুহুর্তে গিয়ে আশাহত হতে পারেন। নীড় গল্প গুচ্ছের শেষ গল্পটির নাম রুদ্রকিরন। সকাল রয়ের লেখা গল্পটির কথক বন্ধুপ্রিয় এক মেয়ের। মানব জীবনে বন্ধুর ভুমিকা অপরিহার্য। কোন কোন বন্ধু থাকে যারা জীবনকে নাড়া দিয়ে যায় সফলতার আকাশ বিছিয়ে দিয়ে। শেষ পর্যন্ত সে বন্ধু সেই আকাশে আর থাকেনা। গল্পে তেমনি এক বন্ধুর পরিচয় মেলে। রুদ্র নামের সে বন্ধুটি কখনো ঝগড়া কখনো উপদেশ দিয়ে তাকে আন্দোলিত করে তোলে। গল্পে একটা রুপ স্পষ্ট ভেসে উঠেছে কিছু বন্ধুত্ব প্রেমের চেয়েও শক্তিশালী। একমুখী গল্পটাতে দৃশ্যকল্প যতটাই না প্রসারিত হবার প্রয়োজন ছিল ততটা প্রসারিত হয়নি। গল্পের ভাষা সাবলীল, বর্ণনা গতানুগতিকের চেয়ে বাইরে, গল্পটা এক ঘেয়েমি দুর করার জন্য পারফেক্ট হতে পারতো যদি গল্পের ভেতরকার দৃশ্যকল্প প্রসারিত হতো এবং তখনই স্বার্থক একটি গল্প হতো। যারা এই গ্রন্থে গল্প লিখেছেন তারা প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব কক্ষপথ ধরে একদিন ঠিকই এগিয়ে যাবেন। যারা পাঠকের জন্য লিখেন বা লিখবেন তাদের প্রত্যেককেই বলবো আপনারা লেখার সাথে ভালো ভালো গল্পকারদের লেখা পড়েন মাথা থেকে ঠিক গল্প বেড়িয়ে আসবে। আর যারা নিজের জন্য লিখেন তাদের জন্য রইলো শুভকামনা। সকাল রয়