User login

Sing In with your email

Email Address
Password
Forgot Password?

Not Account Yet? Create Your Free Account

Send

Recipients:
Message:

Share to your friends

Copy link:

    Our Price:

    Regular Price:

    Shipping:Tk. 50

    • Size:
    • Color:
    QTY:

    প্রিয় ,

    সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
    মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?

    Please Login to Continue!

    Our User Product Reviews

    Share your query and ideas with us!

    Customer Reviews

      By Asif ur Rahman

      17 Apr 2016 02:01 AM

      Was this review helpful to you?

      or

      Superb autobiography

      By Jahan-E-Noor

      10 Apr 2013 02:42 PM

      Was this review helpful to you?

      or

      আল মাহমুদ এর বইটা পড়ার পর থিকাই ভাবতেছিলাম যে, এইটা নিয়া লিখবো। কিন্তু লিখার কথাগুলি বলতেছিলাম পরিচিত মানুষজনকে তাই আর লিখা হইতেছিল না। যার ঠিক উল্টা কাজটা আল মাহমুদ করছেন বলে আমার মনে হইছে। তিনি বলার কথাগুলিরেই লিখিত করছেন। হয়তো বলা যায় যে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও সামাজিক না, সাহিত্যেরও নিজস্ব ঘটনা ও ইতিহাস আছে, এইগুলি যে কিভাবে সম্ভব হইতে পারে, তার একটা ধারণা হয়তো এই বইটা পড়লে টের পাওয়া যাইতে পারে ... অন্যদিক দিয়া মনে হইতে পারে যে, একটা ‘পাপ’ না করতে পারার সাফল্যই তারে বাঁচাইয়া দিছে। বইটাতে তিনি তাঁর বিয়া’র কয়দিন পরেই আরেক মেয়ের প্রতি তাঁর ’লোভ’ এর কথা বলছেন, এই ধরণের স্বীকারোক্তি করতে গেলেও বুকের পাটা লাগে; কারণ বিবাহ করা মানেই তো ’কাম’ এর নিবৃত্তি না, এই যে মনোগ্যামিতার অস্বীকার তাঁর আছে, এইটা একটা বড় ব্যাপার বলে মনে হইছে, যদিও আল্লাহ উনারে বারবারই বাঁচাইয়া দিছে ... এইটা ধরলেও তাঁর স্বীকারোক্তি অনেক কিছুই খোলাসা করে যৌনতা বিষয়ে ... আবার বিয়া’র পরপরই অন্য মেয়ের প্রতি ‘লোভ’ এর জন্যে তিনি যে চড়ও খাইছেন, সেইটাও তিনি বলে দিতে পারছেন ... আর এইটা পইড়া এইরমও মনে হইছে যে, সেই সময়ের তাঁর এই স্বচ্ছতার বোধই হয়তো সোনালী কাবিন এর জন্ম দিছে ... প্রথমেই বলতেছিলাম সাহিত্যের ঘটনা ও ইতিহাস এর কথা। আসলে এইটা তো তাঁর আত্মকথন, এইখানে ঘটনাগুলি তিনিই নির্বাচন করছেন এবং বর্ণনা দিছেন, একইসাথে তিনি নিজেও এই ঘটনা-প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন, তাই এই ঘটনা ও বর্ণনাগুলির নৈর্ব্যক্তিক হওয়ার কোন কারণই নাই, তাঁর অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি-ই এর মূল নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ যেইটা ন্যারেশন, সে-ই কিন্তু অনেকক্ষেত্রে ঘটনার ডিরেকশনটারে ঠিক কইরা দিতেছে ... যেমন ধরেন, উনি ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের কয়েকদিন আগে শামসুর রাহমানের সাথে দৈনিক পাকিস্তানের (বাংলার) সামনে এবং ২৫শে মার্চের পরে ইত্তেফাকের সামনে শহীদ কাদরী’র সাথে দেখা হওয়ার ঘটনার কথা, যেইখানে তিনি নিজেই উপস্থিত, সেই বর্ণনা দুইটা খেয়াল কইরা পইড়া দেখেন: কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রগতিবাদী কবিরা প্রকৃতপক্ষে শেখ সাহেবের পক্ষাবলম্বন করেননি। . . . এ সময়কার একটি ঘটনা আমি উল্লেখ করতে চাই। অন্যত্রও করেছি। সেটা হলো, রিকশায় আমি তখনকার দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। গেটে শামসুর রাহমানের সাথে দেখা হলে আমি রিকশা থেকে নেমে এলাম। শামসুর রাহমান বেশ উত্তেজিত হয়ে আমাকে বলতে লাগলেন, আমি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করি। শেখ মুজিবকে সমর্থন করি। তারপর তিনি যে মন্তব্য করেছিলেন তা এখানে আমি উল্লেখ করতে চাই না। অথচ আজকালের প্রেক্ষাপট কাকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। পৃষ্টা:৯১। এখানে একটা ঘটনার কথা উল্লেখ করি, আমি ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে ইত্তেফাকের ধ্বংসাবশেষ দেখার জন্য টিকাটুলি গিয়েছিলাম। মতিঝিলের যেখানে শেষ সেখানে একটি ওষুধের দোকানে জরুরি ওষুধ কিনে বাসায় ফিরে যাওয়ার সময় শহীদ কাদরীর সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। আমাকে দেখে তিনি উচ্চহাস্য করেছিলেন। সে হাসির অর্থ আমার কাছে তখনো যেমন দুর্বোধ্য ছিল আজও দুর্বোধ্য। পৃষ্টা:৯৫। এইটা আল মাহমুদেরই ন্যারেশন। শামসুর রাহমান বা শহীদ কাদরী একই ঘটনার কথা বললে হয়তো একইভাবে বলতেন না। কিন্তু মজার ব্যাপারটা হইতেছে, শামসুর রাহমান বা শহীদ কাদরী এই ঘটনাগুলিরে কখনোই লিখিত করেন নাই এবং সম্ভবত এইগুলারে সাহিত্যের বাইরের ব্যাপার বলেই মনে করতেন বা করেন। আর আল মাহমুদ তারে বলবার মতো মনে করছেন এবং বলছেন। এই বলতে পারটা যে কতোটা জরুরী তা তিনি তাঁর অস্তিত্ব দিয়াই জানছেন: . . . আমাদের অনেক অসাধারণ কাব্য প্রতিভা বক্তৃতা দিতে সারা জীবনেও সম্মত হননি। হয়তো এই ভেবে সম্মত হননি যে, এতে কবির ধ্যান ও জ্ঞানের নীরবতা অনেক সময় ব্যর্থ হয়ে যায়। আমি এটা এক সময় নিজেও ভাবতাম। কিন্তু আমি যদি বলতে না জানতাম তাহলে আমাকে শেয়াল ও শকুনের খাদ্য হতে হতো। পৃষ্টা:৮২। এই বইটা এই কারণেই বিশিষ্ট একটা ব্যাপার বলে মনে হইছে। কারণ, সাহিত্যে কতটুকু বলা হবে আর কতটুকু অব্যক্ত থাকতে হবে, বলা হবে কিন্তু লিখা হবে না - এই তর্কটারেও তা এক্সপ্লোর করতে পারে একভাবে। আবার ধরেন, আল মাহমুদ যে সব ঘটনাই বলছেন, এমনটাও কিন্তু না। যেমন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক ঘটনার কথাই তিনি বলছেন, কিন্তু সব ঘটনার কথা হয়তো বলবার মতো বলে মনে করেন নাই, মানে তিনি না-ই বলতে পারেন, সব ঘটনার কথাই যে বলতে হবে বা মনে রাখতে হবে এইটাও না ... বলার প্রসঙ্গটা হইতেছে যে, এইখানে হয়তো একটা নির্বাচন পদ্ধতিও তো আছে, ব্যক্তির অগোচরে, তাঁর ব্যক্তিত্বে, ব্যক্তি-প্রতিভাতে ... যেমন, আমি তো এইখানে আল মাহমুদের বইটার পুরাটাই বলতেছি না ... এই বলাবলির ক্ষেত্রেই আবার আল মাহমুদ ‘বেয়াদবি’র প্রসঙ্গ আনছেন: আমি তারুণ্যের স্বীকৃতি দিতে কখনো অস্বীকার করিনি। তরুণ কবিদের পদ্যের চেয়েও তাদের চেহারা আমার কাছে রহস্যময় বলে ধারণা হয়েছে। আমার কাছে সাহস করে কোনো তরুণ কবি এসে কথা বলতে চাইলে তাকে প্রশয় দিতে দ্বিধা করি না। তবে কিছু বেয়াদব তরুণ অসঙ্গতভাবে অগ্রজ কবিদের অপমান করতে চাইলে আমি এর জবাব দিতে ছাড়ি না। বেয়াদব তো শিল্পের সব ক্ষেত্রেই আত্মগোপন করে আছে। এরা সাহিত্য শিল্পের কোনো উপকার করে না। তবে অপকার এবং অসংযত আচরণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এরা সাহিত্যে থাকে না কিন্তু এদের দুর্ব্যবহার সাহিত্যের সমালোচকেরা বেশ কৌতূহলের সঙ্গে উল্লেখ করেন, যা আমি কোনোভাবেই সঙ্গত বলে মেনে নিতে পারি না। পৃষ্টা:১৮৮। কিন্তু আমার সন্দেহ, আল মাহমুদ এইখানে বেয়াদবি বলতে এক ধরণের অস্পষ্টতাও বোঝাইতে পারেন। যেমন আল মাহমুদ সিনিয়র বইলা উনার কবিতার সমালোচনা করতে গেলে, ইনাইয়া বিনাইয়া প্রথম উনারে বড় করতে হইবো, তারপর উনার ছোটখাট দোষ ধরতে হইবো ... এই টাইপ একটা আলোচনা-সমালোচনার ব্যাপার আমাদের দেশে চালু আছে। বিনয় আর অস্পষ্টতা এবং বেয়াদবি আর স্পষ্টতা যদি সমার্থক হয়া উঠে তাইলে সত্যি সত্যি সাহিত্যের বিপদ আরো আছে। যেমন ধরেন, আল মাহমুদের কবিতারে কেউ কইলো উনি ফেটিস্ট ধরণের কবিতা লিখেন, উনি বস্তুর অংশরে সমগ্র জ্ঞান করেন, তার উপর মহত্ত্ব আরোপ করেন ... আর এইভাবে তাঁর কবিতার একটা সমালোচনা যদি দাঁড় করান ... আমার ধারণা সেইটা বেয়াদবি ছাড়াই করা সম্ভব হইতে পারে... কিন্তু প্রশ্ন যেইটা দাঁড়ায়, কবিতার বিচারের ক্ষেত্রে এইধরণের মানদন্ড প্রয়োগ কি কইরা সম্ভব হয়া উঠে? অন্যভাবে দেখতে গেলে, কবিতার বিচার হয়তো সবসময় দাঁড়ায় তার অর্থবোধকতার সাপেক্ষে, অর্থাৎ, একটা কবিতা কি কি অর্থ উৎপাদন করতে পারে আর তার অর্থবোধকতাগুলি তৈরী হয় সমাজে বিদ্যমান জ্ঞান-কাঠামোগুলোর ভিতর দিয়াই আর সেই ক্ষেত্রে ধরেন, আমি বাঙ্গালী হয়া রাঙ্গামাটির চাকমাদের নিয়া কবিতা লিখলাম, সেইটার বিচারের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক নৃবিজ্ঞানের পরীক্ষায় পাশ করার বিষয়টা কি এড়াইয়া যাওয়া সম্ভব? ... একটা কবিতার কবিতা হওয়ার জন্য দর্শন ও সমাজিক বিজ্ঞানের আবশ্যিক শর্তগুলিকে পূরণ করা কতোটা জরুরী বিষয় হয়া উঠতে পারে? বা কবিতার লক্ষ্য কি সমাজের ভিতর নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলা, যেহেতু সে সমাজ-সংশ্লিষ্ট, সামাজিক জ্ঞান দিয়াই কি তাঁর বিচার স¤পন্ন হবে? ... এই তো গেলো ভিতরের বিবেচনা, এছাড়া মিডিয়া ও অনান্য সামাজিক সর্ম্পকের বিষয়গুলা তো আছেই। যেমন শক্তি চট্টোপধ্যায় বিষয়ে আল মাহমুদের বিচারটা উল্লেখ করা যাইতে পারে: অথচ শক্তি চট্টোপধ্যায় আমার সঙ্গে ছিলেন ঈর্ষাকাতর। আমার কবিতা সম্বন্ধে সুযোগ পেলেই অযথার্থ মন্তব্য করতেন। অথচ এই শক্তি চট্টোপধ্যায়ই মুক্তিযুদ্ধের কিছু দিন আগে পূর্ব বাংলার কবিতা বলে যে সংকলন বের করেছিলেন, তাতে আমার কবিতাকে এতটাই প্রাধান্য দিয়েছিলেন যে, আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কবিদের এই অর্ন্তবিরোধ অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমি শক্তির ব্যাপারে কোনো অবস্থাতেই অসহিষ্ঞু হতে পারিনি, কারণ পশ্চিমবঙ্গের কবি বলতে এখনো শক্তিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকি। তার ধারেকাছে কাউকে বিবেচনা করতে পারি না। আনন্দবাজার পত্রিকায় তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী কাউকে শীর্ষে তুলতে পারে, আবার কাউকে অন্যায়ভাবে স্তিমিত করে দিতে পারে। এটা অহরহ তারা করে থাকে। কিন্তু অকবিকে কবি বানানোর কোনো চেষ্টাই সফল হয় না, সফল যে হয় না শক্তি চট্টোপধ্যায়ই তার প্রমাণ। পৃষ্টা:১৮৭। আনন্দবাজার বহুত চেষ্টা কইরাও শক্তিরে অ-কবি বানাইতে পারে নাই। আবার শক্তি আল মাহমুদের কবিতারে পছন্দ না করলেও তৎকালীন সময়ের প্রেক্ষিতে কবিতার ক্রনল্যজিতে আল মাহমুদের কবিতারে অস্বীকার করতে পারেন নাই। তাই সাহিত্যের ইতিহাস সামাজিক, রাজনৈতিক ইতিহাসের বাইরের কোন ব্যাপার না। এইসবের প্রতিফলন সাহিত্যের ইতিহাসে আছে, খুব প্রাসঙ্গিকভাবে মনে পড়ে, স্পেনের গৃহযুদ্ধের কথা, সেইটা আর রাজনৈতিক থাকে নাই, সাহিত্যের ইতিহাসও প্রত্যক্ষভাবে তারে জড়িত করছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ, জাসদ ... এইসব সাহিত্যের ক্ষেত্রে খুবই প্রাসঙ্গিক ঘটনা। কিন্তু সাহিত্যেরও নিজস্ব ঘটনা ও ইতিহাস আছে, এইসবের বয়ান বেশিরভাগ সময়ই অব্যক্ততার ভিতর থাকে। কেউ তারে মিথ ও কাহিনির রূপ দিতে চায় এবং দিতে পারে, কেউ তারে পাশ ফিরায়, এড়ানোর পথগুলি তৈরী করে, কেউ নিজ নিজ বয়ানগুলিও হাজির করে ... বাংলাদেশের কবিতার ইতিহাস এর ক্ষেত্রে আল মাহমুদ তাঁর বয়ান হাজির করতে গিয়া তারে বলছেন ‘ষড়যন্ত্র, হিংস্রতা ও প্রতিভাকে অস্বীকারের ইতিহাস’: বাংলাদেশে কবিতার ইতিহাস হলো ষড়যন্ত্র, হিংস্রতা ও প্রতিভাকে অস্বীকারের ইতিহাস। এতে প্রকৃত কত কবি যে কাব্য রচনা ত্যাগ করে অন্ধকারে হারিয়ে গেলেন তার কে হিসাব রাখে। অনেকে প্রতিভার ফুৎকারে বাতাসে আগুন ধরিয়ে দিতে পেরেছিলেন। আমার মনে পড়ছে হাসান হাফিজুর রহমান, সাইয়ীদ আতিকুল্লাহ, বোরহানউদ্দীন খান জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, নিলুফার বানু, লতিফা হিলালী ও জিয়া হায়দারের কথা। মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কথাও আমি সাহস করে বলতে পারি। তিনি যে আড়ম্বর নিয়ে শুরু করেছিলেন তার কী পূর্ণতা পেয়েছে? হয়তো আমার এই বিবরণে বির্তক সৃষ্টি হবে। এটা জেনেই আমার জীবন দৃষ্টি আমি বর্ণনা করে ব্যাখ্যা করেছি। সমালোচনা তো থাকবেই। তবে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে আমি একজন কবির নাম উল্লেখ করব যিনি সাহিত্যের নিয়ম পূর্ণ করেও পূর্ণতার সম্মান এই হিংস্র দেশ থেকে আদায় করতে পারলেন না। অথচ কথাশিল্পী হিসেবে তিনি যদি গণ্য হতে চাইতেন তাহলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজে পাই না। জানি না তিনি কবি হতে চেয়েছিলেন কেন? তিনি তো গদ্যেই মহাকাব্য রচনা করেছেন। তার নাম আলাউদ্দীন আল আজাদ। পৃষ্টা:৭৪। যে নামগুলি তিনি বলছেন, তাতে তাঁর নিজস্ব পছন্দ তো আছেই, কিন্তু একটা পরিক্রমার কথা বা আঁচও কি নাই? কিভাবে একজন কবি সমকালে চিহ্নিত হন বা অচিহ্নিত হয়া থাকতে পারেন, তার একটা নমুনাও পাওয়া যায় কিনা, সেইটা বিবেচনায় রাখতে পারেন যে কোন পাঠক। এই প্রসঙ্গটা আরো স্পষ্ট হয় যখন তাঁর বয়ান আগাইতে থাকে: আমি কোনো উচ্চাকাক্সক্ষা নিয়ে ঢাকায় আসিনি। এসেছিলাম শুধু কবি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। একটু স্থান, কোথাও অনেকের ফাঁকে নিজের নাম ছাপা হয়েছে এতেই আমি তুষ্ট থাকতাম। কিন্তু ব্যর্থ কবির দল সব সময় প্রকৃত কবিকে চিনে ফেলে। তাকে আর মাথা তুলতে দেয় না। সবাই শুধু মাথায় আঘাত করতে চায়। আর পদের সঙ্গে আমার নাম উচ্চারিত হয়, যেমন শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী - তারা আমার সঙ্গী ছিলেন বটে। কিন্তু বন্ধু ছিলেন না। ছিলেন কঠোর ও নির্মম প্রতিদ্বন্দ্বী। সামান্যতম ছাড়া তারা আমাকে দেননি। তবে আমি গ্রাম্য লোক বলেই অনেক বিষয়ে কারো পথ আটকে দাঁড়িয়ে থাকিনি। পৃষ্টা:৮৯। এই জায়গাগুলিরে আসলে কে স্পষ্ট করে? কে কারে ধরে রাখে? বা কে কারে অ-নির্বাচিত করে? কিভাবেই বা করে? এইখানে হয়তো সমালোচনার একটা ঘটনা আছে। কিন্তু সত্যিকারভাবে কোন সমালোচনা সাহিত্য বাংলাদেশে দাঁড়াইছে বইলা আল মাহমুদও মনে করেন না। তাই সমালোচনায় অবিশ্বাসী তিনি নিজেই নিজের সমালোচনা করছেন: আমি দাবি করি, আমি জেলখানায় বসে ত্রিশের কবি স্বভাবের বিপরীতমুখী বাকচান্ঞল্য সৃষ্টিতে পারঙ্গম হয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয় এ নিয়ে কোনো বিস্তারিত আলোচনা করার মতো শক্তিধর কোনো সমালোচক বাংলাদেশে ছিল না। ফলে বাংলাদেশের আধুনিক কবিতা মূলত সমালোচনাহীন এক শিল্প তরঙ্গে নিজেকে ফোয়ার মতো ছড়িয়ে দেয়ার আয়োজন পূর্ণ করে তোলে। আর এখন আমি নিজেই কবিতার সমালোচনায় অবিশ্বাসী হয়ে উঠছি। পৃষ্টা:১৫৮। আমার ধারণা তাঁর সমালোচনাটা খারাপ হয় নাই। তবে তিরিশের স্বভাবরে তিনি কিভাবে দেখছেন, সেইটা বললে হয়তো আরো ভালোভাবে বোঝা যাইতো বিষয়টা। হয়তো তিনি বলছেনও অন্য কোথাও। কিন্তু যেইটা জরুরী উপলদ্ধি, তা হইতেছে সমালোচনাহীনতা। মনে হইতে পারে যে, অনুল্লেখ এর ভিতর দিয়াই বর্তমান সময়ে একজন কবি বা লেখকরে মাইরা ফেলা সম্ভব। কিন্তু একটা কবিতা যে কোন পরিস্থিতিতেই জেগে উঠার সম্ভাবনাকে যদি ধারণ করতে না পারে, তখন সেইটা আসলে কোন কবিতা-ই না। আবার যখন বিষয় হিসাবে বা বই হিসাবে এই বইটা অ-নির্বাচিত থাকে, ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হয় অথবা অন্য কোনকিছুকে জোর জবরদস্তি করে জরুরী করে তোলা হয়, তখনই সন্দেহ হয়, পথিক, ... তবে আল মাহমুদ নিজেও সমালোচনারে এড়াইছেন ‘কাম’ এর বশবর্তী হয়া। একটা ঘটনার কথা তিনি বলছেন, এইভাবে: ড. সুমিতা চক্রবর্তী বলে এক মহিলা আমার ওপর একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ রচনা করলেন। প্রবন্ধটিতে আমার তীব্র সমালোচনা থাকলেও আমার কবিতার যথেষ্ঠ প্রশংসা ছিল। এই প্রবন্ধটি প্রকাশের পরেই সুমিতা চক্রবর্তীর সঙ্গে আমার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে সাক্ষাত হয়েছিল। . . . সুমীতা যাদবপুর ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগের সম্ভবত তখন প্রধান ছিলেন। তিনি অনেক বিষয় আলোচনা করেছিলেন, যা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু সাক্ষাতে তার সঙ্গে আমি কোনো তর্কে যাইনি। এর একটা কারণ হতে পারে যে, তিনি আমার দৃষ্টিতে এক সুন্দরী যুবতী বলে প্রতিভাত হয়েছেন। আমি সু-রূপা, লাবণ্যময়ী কোনো ঈভের সঙ্গে বিতর্কে জড়াই না। পৃষ্টা:১৫৮। এই ঘটনা পড়ার পর আল মাহমুদ এর মিটিমিটি, হাসিহাসি চেহারা আমার সামনে ভাসতেছে ... কিন্তু পাঠক তো জানতেই চাইবেন, আল মাহমুদ এর এইসব কথা ও কাহিনি কতোটা সত্যি? তখনই এই প্রশ্নটা সামনে আসে যে, একজন কবি’র দায়িত্ব কি ‘সত্য’ কথা বলা বা ‘সত্য প্রকাশ’ই কি শিল্পের লক্ষ্য? ‘সত্য’ বিষয়ে ক্রিটিক্যাল না হইলেও ’সত্য-বলা' কে একটা কাজ হিসাবে দেখলে আল মাহমুদের একটা বয়ান এই প্রসঙ্গে হাজির করা যাইতে পারে: কবির জীবন কী রকম হয় তার কোনো দৃষ্টান্ত আমার কাছে নেই। অথচ অনেক কবির জীবন-কাহিনী বা স্মৃতিকথা আমি পাঠ করেছি। একবার এক বিদ্বান ব্যক্তি আমার বই ‘যেভাবে বেড়ে উঠি’ টিভিতে আলোচনা করতে গিয়ে আমাকে প্রশ্ন করেছেন - ‘লোকে বলে আপনার এই বইয়ের পন্ঞাশ ভাগ সত্য আর পন্ঞাশ ভাগ মিথ্যা।’ আমি হেসে বললাম, আপনি তো ইংরেজী সাহিত্যের তুখোড় ছাত্র ছিলেন। আধুনিক সাহিত্যের খোঁজ-খবর রাখেন। আপনিই বলুন, একটা বই সেটা আত্মজীবনী হোক বা উপন্যাসই হোক এর পন্ঞাশ ভাগ সত্য হলে এটা কি অকল্পনীয় সাহিত্যে সত্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা নয়? তিনি পাশ কাটিয়ে অন্যদিকে চলে গেলেন। কারণ আমার ধারণা এই বইয়ের দ্রুত গতি ও গদ্যের বিদ্যুৎ ওই ভদ্রলোকের আয়ত্তাধীন ছিল না। তিনি রাজনৈতিক পক্ষপাত থেকে আমাকে জব্দ করতে চেয়েছিলেন। হয়তো আজও চান। কিন্তু আমি তাকে একটা কথা বলতে পারি, পন্ঞাশ দশকের যে ক’জন কবি খ্যাতি-অখ্যাতি নিয়ে বেঁচে আছেন তাদের একটিমাত্র জীবন-কাহিনী। আর সেটি হলো ‘যেভাবে বেড়ে উঠি।’ কবিদের জীবন এরকমই হয়। কোনো কবিই তো সত্য রচনার প্রতিশ্র“তি দিয়ে সাহিত্যে আসেন না। কিন্তু লোকে তার মিথ্যাকে সত্য ধরে নিয়ে তাকে পুরস্কৃত করে এবং অমরতার মালায় তার নামটি গেঁথে নেয়। আমি অবশ্য অমর হওয়ার বাসনা থেকে কাব্য রচনা করিনি। পৃষ্টা:৭৮। প্রসঙ্গত বলা যায় ‘যেভাবে বেড়ে উঠি’র কথা, সেইটা কিন্তু সাহিত্যের ঘটনা হিসাবে এতোটা গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার মনে হয় নাই। হয়তো আবিদ আজাদ এর ‘কবিতার কথা’ (নামটা ঠিক আছে তো?) আমার আগেই পড়া ছিল বলে মোহিত হইতে পারি নাই। তবু আল মাহমুদ কথা বলতে চাইছেন এবং বলাটা জরুরী মনে করছেন, এই বোধটাই আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হইছে। মনে হইছে, তিনি একটা জীবনের পুরাটাই বেঁচে থাকতে চাইছেন শুধুমাত্র কবিতার জন্যই। ‘সত্য’ হোক বা ‘মিথ্যা’ হোক, এই কথাটাই তিনি বারবার বলার চেষ্টা করছেন, এই বইটাতে। কবি’র সেই কথাগুলা শোনা হোক। পাঠক, কান পাতেন, শোনেন, সাহিত্যের দুর্গের ভিতর বাজিতেছে যুদ্ধের দামামা, কৌশলী খেলা ... কেবল মৌন, মন্থর না, নানান বিভেদ, বিকাশ ও ঘটনার অন্তহীন পরিক্রমার একটা চ্যাপ্টার এই বইখানা।

    •  

    Recently Viewed


    Great offers, Direct to your inbox and stay one step ahead.
    • You can pay using


    JOIN US

    icon Download App

    Rokomari.com is now one of the leading e-commerce organizations in Bangladesh. It is indeed the biggest online bookshop or bookstore in Bangladesh that helps you save time and money. You can buy books online with a few clicks or a convenient phone call. With breathtaking discounts and offers you can buy anything from Bangla Upannash or English story books to academic, research or competitive exam books. Superfast cash on delivery service brings the products at your doorstep. Our customer support, return and replacement policies will surely add extra confidence in your online shopping experience. Happy Shopping with Rokomari.com!