User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
মন খারাপ হয়ে যায় এ বই পড়লে। সবার পড়া দরকার।
Was this review helpful to you?
or
khub valo boi...shobar pora uchit...
Was this review helpful to you?
or
রশীদ হায়দার সম্পাদিত ১৯৭১: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শীর্ষক বইটি পড়ার পর মনে যে তীব্র যন্ত্রণাকর অনুভূতি হয়, তা রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার ভাষায় এ রকম: ‘আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,/ আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,/ ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি তন্দ্রার ভেতরে—/ এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?’ কিংবা ‘নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ,/ মুণ্ডুহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বীভৎস শরীর/ ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে—আমি ঘুমুতে পারি না, আমি/ ঘুমুতে পারি না…’। শুধু ২৫-২৬ মার্চের মধ্যবর্তী রাতটিই নয়, তখন থেকে ১৬ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত পুরো নয় মাসই যেন ছিল মুক্তিকামী বাঙালির জন্য এক দুঃস্বপ্নের কালরাত। গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারীর সম্ভ্রমহানি, বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন-নিপীড়ন প্রভৃতির মাধ্যমে পুরো দেশটি এক আতঙ্কগ্রস্ত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল। এসবই শুরু হয়েছিল ঢাকা থেকে এবং দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে। জেলা মহকুমা, থানার শহর বন্দর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালিত হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ-জেন্ডার-বয়স নির্বিশেষে ওই বর্বর বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। শান্তি কমিটি, রাজাকার এবং আলবদর ও আল শামস বাহিনী গঠনের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করেছে এ দেশের অবাঙালিরা এবং ধর্মোন্মাদ রাজনৈতিক দলগুলো। ১৯৭১-এর বাঙালি নিধন কোনো কোনো ক্ষেত্রে হিটলারের ইহুদি নিধনযজ্ঞকেও হার মানিয়েছে। এ বইটির বিশেষত্ব হলো, এটি কোনো শোনা কাহিনির সংকলন নয়, এর প্রতিটি লেখাই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মর্মস্তুদ বিবরণে ভাস্বর। এতে বিধৃত হয়েছে মৃত্যুপুরী থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর গভীর মর্মবেদনার জীবন্ত ভাষ্য। এ গ্রন্থের বিবরণী থেকে পাকিস্তানি বাহিনী ও তার এ দেশীয় দোসরদের বর্বর ও পাশবিক কর্মকাণ্ড এবং বাঙালিদের প্রতি তাদের ঘৃণার পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের মনে স্বাধীনতার স্পৃহা কেন এত তীব্র হয়ে উঠেছিল, তারও স্বরূপ উপলব্ধি করা যায়। এ গ্রন্থ পাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃসাহসিক অভিযানের কাহিনি যেমন অবহিত হওয়া যায়, তেমনি দেখা যায়, ভয়াবহ মৃত্যুভীতি উপেক্ষা করে শত্রুর কাছে সঠিক তথ্য গোপন রাখার ব্যাপারে তারা কতটা অবিচল ছিল। এ গ্রন্থে ব্যক্ত হয়েছে হানাদারদের নিষ্ঠুর আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য সাধারণ মানুষের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে নির্বান্ধর পরিবেশে পলায়নপরতার দুঃসহ সব স্মৃতি। একই সঙ্গে বর্বরতার বিপরীতে উপস্থাপিত হয়েছে সাধারণ মানুষের পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস্য সহানুভূতি ও অপার মানবিক মহিমার প্রাণস্পর্শী সব আখ্যান। এ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে পঞ্চাশ ব্যক্তির নির্মম অভিজ্ঞতার চিত্র। ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর এই নয় মাসেরই চিত্র এসব লেখার মধ্যে বিভিন্নভাবে পরস্ফুিটিত। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, নরসিংদী, নেত্রকোনা প্রভৃতি অঞ্চলের বিক্ষিপ্ত চিত্র পরিবেশিত হয়েছে। লেখক তালিকায় রয়েছেন নীলিমা ইব্রাহীম, জাহানারা ইমাম, হাসান আজিজুল হক, সেলিনা হোসেন, হুমায়ূন আহমেদ, কে এম সফিউল্লাহ, শমসের মবিন চৌধুরী, ইয়াফেস ওসমান, আবুল বার্ক আলভী, মাকিদ হায়দার প্রমুখ। এঁদের লেখায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে সেই মৃত্যুপুরীর বাস্তবতা। তবে এ গ্রন্থ নিশ্চয়ই ওই নয় মাসের কোনো সামগ্রিক চিত্র নয়, খণ্ডচিত্র মাত্র। সামগ্রিক চিত্র পরিবেশনের কোনো লক্ষ্যও ছিল না লেখকদের কিংবা সম্পাদকের। কিন্তু পাঠক এসব খণ্ডচিত্র থেকে সামগ্রিকতাকে অনুধাবন করতে পারেন। এই বিন্দুর মধ্যে থেকেই তাঁরা বৃত্তকে ভরাট করে তুলতে পারেন কিংবা পারেন সিন্ধুর গভীরতাকে উপলব্ধি করতে। পাকিস্তানি বাহিনী ও তার এ দেশীয় দোসরদের বর্বরতাকে অনুধাবনের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য গ্রন্থ।
Was this review helpful to you?
or
রশীদ হায়দার সম্পাদিত ১৯৭১: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শীর্ষক বইটি পড়ার পর মনে যে তীব্র যন্ত্রণাকর অনুভূতি হয়, তা রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার ভাষায় এ রকম: ‘আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই,/ আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,/ ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি তন্দ্রার ভেতরে—/ এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?’ কিংবা ‘নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ,/ মুণ্ডুহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বীভৎস শরীর/ ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে—আমি ঘুমুতে পারি না, আমি/ ঘুমুতে পারি না…’। শুধু ২৫-২৬ মার্চের মধ্যবর্তী রাতটিই নয়, তখন থেকে ১৬ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত পুরো নয় মাসই যেন ছিল মুক্তিকামী বাঙালির জন্য এক দুঃস্বপ্নের কালরাত। গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারীর সম্ভ্রমহানি, বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন-নিপীড়ন প্রভৃতির মাধ্যমে পুরো দেশটি এক আতঙ্কগ্রস্ত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল। এসবই শুরু হয়েছিল ঢাকা থেকে এবং দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে। জেলা মহকুমা, থানার শহর বন্দর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালিত হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ-জেন্ডার-বয়স নির্বিশেষে ওই বর্বর বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। শান্তি কমিটি, রাজাকার এবং আলবদর ও আল শামস বাহিনী গঠনের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করেছে এ দেশের অবাঙালিরা এবং ধর্মোন্মাদ রাজনৈতিক দলগুলো। ১৯৭১-এর বাঙালি নিধন কোনো কোনো ক্ষেত্রে হিটলারের ইহুদি নিধনযজ্ঞকেও হার মানিয়েছে। এ বইটির বিশেষত্ব হলো, এটি কোনো শোনা কাহিনির সংকলন নয়, এর প্রতিটি লেখাই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মর্মস্তুদ বিবরণে ভাস্বর। এতে বিধৃত হয়েছে মৃত্যুপুরী থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর গভীর মর্মবেদনার জীবন্ত ভাষ্য। এ গ্রন্থের বিবরণী থেকে পাকিস্তানি বাহিনী ও তার এ দেশীয় দোসরদের বর্বর ও পাশবিক কর্মকাণ্ড এবং বাঙালিদের প্রতি তাদের ঘৃণার পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের মনে স্বাধীনতার স্পৃহা কেন এত তীব্র হয়ে উঠেছিল, তারও স্বরূপ উপলব্ধি করা যায়। এ গ্রন্থ পাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃসাহসিক অভিযানের কাহিনি যেমন অবহিত হওয়া যায়, তেমনি দেখা যায়, ভয়াবহ মৃত্যুভীতি উপেক্ষা করে শত্রুর কাছে সঠিক তথ্য গোপন রাখার ব্যাপারে তারা কতটা অবিচল ছিল। এ গ্রন্থে ব্যক্ত হয়েছে হানাদারদের নিষ্ঠুর আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য সাধারণ মানুষের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে নির্বান্ধর পরিবেশে পলায়নপরতার দুঃসহ সব স্মৃতি। একই সঙ্গে বর্বরতার বিপরীতে উপস্থাপিত হয়েছে সাধারণ মানুষের পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস্য সহানুভূতি ও অপার মানবিক মহিমার প্রাণস্পর্শী সব আখ্যান। এ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে পঞ্চাশ ব্যক্তির নির্মম অভিজ্ঞতার চিত্র। ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর এই নয় মাসেরই চিত্র এসব লেখার মধ্যে বিভিন্নভাবে পরস্ফুিটিত। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, নরসিংদী, নেত্রকোনা প্রভৃতি অঞ্চলের বিক্ষিপ্ত চিত্র পরিবেশিত হয়েছে। লেখক তালিকায় রয়েছেন নীলিমা ইব্রাহীম, জাহানারা ইমাম, হাসান আজিজুল হক, সেলিনা হোসেন, হুমায়ূন আহমেদ, কে এম সফিউল্লাহ, শমসের মবিন চৌধুরী, ইয়াফেস ওসমান, আবুল বার্ক আলভী, মাকিদ হায়দার প্রমুখ। এঁদের লেখায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে সেই মৃত্যুপুরীর বাস্তবতা। তবে এ গ্রন্থ নিশ্চয়ই ওই নয় মাসের কোনো সামগ্রিক চিত্র নয়, খণ্ডচিত্র মাত্র। সামগ্রিক চিত্র পরিবেশনের কোনো লক্ষ্যও ছিল না লেখকদের কিংবা সম্পাদকের। কিন্তু পাঠক এসব খণ্ডচিত্র থেকে সামগ্রিকতাকে অনুধাবন করতে পারেন। এই বিন্দুর মধ্যে থেকেই তাঁরা বৃত্তকে ভরাট করে তুলতে পারেন কিংবা পারেন সিন্ধুর গভীরতাকে উপলব্ধি করতে। পাকিস্তানি বাহিনী ও তার এ দেশীয় দোসরদের বর্বরতাকে অনুধাবনের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য গ্রন্থ।
Was this review helpful to you?
or
পদ্মার গভীরে আমার বাবা জীবন কাহিনী