User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
পথের পাঁচালী হলো প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলার গ্রামে দুই ভাইবোন অপু আর দুর্গার বেড়ে ওঠা নিয়েই বিখ্যাত এই উপন্যাস।সমগ্র উপন্যাসটি তিনটি খণ্ড ও মোট পঁয়ত্রিশটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। খণ্ড তিনটি যথাক্রমে বল্লালী বালাই (এখানে ইন্দির ঠাকরূনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে), আম-আঁটির ভেঁপু (এখানে অপু-দুর্গার একসাথে বেড়ে ওঠা, চঞ্চল শৈশব, দুর্গার মৃত্যু, অপুর সপরিবারে কাশীযাত্রার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে) এবং অক্রূর সংবাদ।এই খন্ডে অপুদের কাশীজীবন, হরিহরের মৃত্যু, সর্বজয়ার কাজের জন্য কাশীত্যাগ এবং পরিশেষে নিশ্চিন্দিপুরে ফিরে আসার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।বইটিতে পাঠের মাধ্যমে একজন পাঠক প্রাচীনকালের সমাজ ব্যবস্থা,পল্লী প্রকৃতি,সামাজিক ত্রুটি যেমন: বাল্যবিবাহ ও যৌতুক প্রথা,স্বামীহারা নারীদের জীবন সংগ্রাম,গ্রামের মানুষের সরলতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবে।বইটি অামাদের অাবার শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।বইটি পড়ে আমি অনেক সচেতন হয়েছি এবং অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য আরেকটু অনুপ্রেরণা পেয়েছি ।খুবই চমৎকার ছিলো উপন্যাসটি। পরবর্তী কালে বিখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাসটি অবলম্বনে পথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র) নির্মান করেন যা দর্শকদের কাছে ব্যাপক সাড়া পায়। তাই পাঠক দেরি না করে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা এই উপন্যাসটি এখনোই পড়ে ফেলুন।
Was this review helpful to you?
or
ছেলেবেলা থেকেই প্রচুর বই পড়ি। আমার স্কুলে একটি লাইব্রেরি ছিল। সেখান থেকেই ধার নিয়ে আমার বই পড়া শুরু। তারপর যে কত জায়গা থেকে জোগাড় করে কত বই পড়েছি, তার হিসাব নেই। বাংলা- ইংরেজি সব ভাষার বইই পড়তাম। প্রিয় বইয়ের তালিকাটিও তাই বেশ দীর্ঘ। তবে বারবার মনে পড়ে যায় এমন বইয়ের কথা বলতে গেলে, পথের পাঁচালীর নামই বলব। কারণ, এই বইটি আমার ছেলেবেলাকে এক ধরনের মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। এখনো রেখেছে। আমার ছেলেবেলা কেটেছে গ্রামে। গ্রামের ধুলো-মাটির সঙ্গে যে আমার গভীর মিতালি। যারা গ্রাম দেখেছে তারা এই বইয়ে নিজেকে খুঁজে পাবে। তাই আমি যেন নিজেকে খুঁজে পেতাম পথের পাঁচালীর অপু চরিত্রে। বারবার মনে হতো অপু মানে আমি। দুর্গা যেন আমারই বোন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা এই বইটি যখন পড়লাম আমি তখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। ১৯৬০ বা '৬১ সালের কথা। স্কুলের লাইব্রেরি থেকে এনেই পড়েছিলাম। তারপর কেমন যেন একটা ঘোর লেগে গেল। নিজেকে অপু ভাবতে খুব ভালো লাগত। সারা দিন অপু অপু ভাব নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। শুধু আমি না, সে সময়ের আরো যারা বইটি পড়েছিল, তারাও মুগ্ধ হয়ে থাকত। কারণ, গ্রামের কোনো এক কিশোরের জন্য অপু যে স্বপ্নের চরিত্র। পথের পাঁচালীর প্রত্যেকটি লাইনে যে আবেগ, অনুভূতি আর আপনজনের প্রতি ভালোবাসা, তাতে মুগ্ধ না হয়ে কি উপায় আছে! তবে যখন স্বপ্নটা ভেঙে যেত, বুঝতাম আমি আসলে অপু নই; তখন মনটাই কেমন খারাপ হয়ে যেত। অতৃপ্তি ঘিরে ধরত চারদিক থেকে। বারবার মনে হতো, ইশ, আমি যদি অপুর মতো হতে পারতাম! এই আক্ষেপটা আজও রয়ে গেছে মনে। রয়ে গেছে সেই কান্নার অনুভূতিগুলোও। অপুর কষ্টে কত বুক ভাসিয়ে কেঁদেছি ছেলেবেলায়। দুর্গা মারা যাওয়ার পর অপু যখন বোনের চুরি করে আনা মালাটি খুঁজে পেল তখন তার মনের যে অনুভূতি, তা আমাকে দারুণ আলোড়িত করে। আমি এখনো কাঁদি। সেই ছেলেবেলার আবেগটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কারণ, পথের পাঁচালী তো সব বয়সীদের বই। বয়স যতই হোক, এই বই একবার পড়লে যেকোনো বয়সী পাঠকের মনে একটা অনুভূতি জেগে উঠবেই। বয়সভেদে যদিও সেটি একেক রকম হতে পারে। শেষবার বইটি পড়েছি, তাও বহু আগের কথা। এখন আর পড়া হয় না। তবে পথের পাঁচালী নিয়ে বানানো সত্যজিৎ রায়ের ছবিটি প্রায়ই দেখি। এই তো সেদিনও দেখলাম। বই পড়লে যেমন মনে হতো, ছবি দেখলেও ঠিক তেমন অনুভূতিই জেগে ওঠে। ইশ, আমি কেন অপু হতে পারলাম না! সুত্র- কালের কণ্ঠ