User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
ভাবছেন... ভাবছেন... এবং ভাবছেন... আর ক্রমশই ডুবে যাচ্ছেন গল্পের গহীনতায়। এমন করতে করতে হঠাৎই হয়তো ধাক্কা খেয়ে গেলেন আর ঘটনার আকস্মিকতায় থেমে গেলো কাহিনীর প্রবাহ। এটাই শামসুল হকের লেখার অন্যতম একটা বৈশিষ্ট্য। এক অন্যরকম বৈশিষ্ট্য-সমগ্র গল্পের চিন্তাচেতনা যেখানে শেষে এসে আলাদারকম ভাষা পায়। ‘ফেরি জাহাজের গল্প’ তার তেমন অনেকগুলো ছোটগল্পের সংকলন, মাঝে দুটি বড়গল্পও রয়েছে। বইরের নামশীর্ষক গল্পটির কথা দিয়েই শুরু করি। প্রেক্ষাপট ফেরির জন্য অপেক্ষারত একজন মানুষ। সে মানুষটির চরিত্রকে বিশ্লেষণ করতে করতে প্রথমপুরুষেই তিনি গল্পটি বলেছেন। বর্ণনা পড়ে পাঠকের হয়তো মনে হবে যে মানুষটি চিরাচরিত জৈবিক কামনা বাসনাকে অবদমন করতে না পেরে এইভাবে মেয়ে ও মেয়েশরীরের দিকে নিপাট কপট দৃষ্টি নিক্ষেপ করছেন। পাঠকের সে ধারণাই বড় ধরনের ধাক্কা খাবে শেষে। বলে দিয়ে ধাক্কার মজাটাকে আর নষ্ট করে দিলাম না। একইরকম ধাক্কা খেয়েছি ‘প্রেমিকের জন্যে জন্মদিন’ পড়তে গিয়ে। গতানুগতিক একজন মধ্যবিত্ত প্রেমিকের যা হাল এই প্রেমিকও তার বাইরে নয়। তার বড় আশা প্রেমিকার জন্য নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে একটা সুন্দর উপহার কিনে দেবে। টাকা যোগাড় করে কিনতেও সে যায়। ভাগ্যবিধাতা কিন্তু এদিকে মিটিমিটি হাসছিলেন। সে হাসি ক্রুর হয়ে বিধলো এবার প্রেমিকের কাছে। কেন? সে ধাক্কার কথাটা এখানে বলবো না। শেহ লাইনটি শুধু বলি- “বিভ্রমই তো ভালবাসার ভেতরে!! যদি না খুজে পাই! যদি না আসে! যদি তার ভালোবাসার মানুষটাই আকস্মাৎ ... একদিন... ” ‘তিতি ও ভিকিরি’ অনেকটা মজারই গল্প। গল্পের তিতির পাখির মতো নায়িকাটি নিজের অজান্তেই এক আগন্তুকের প্রেমে পড়ে গেছে যাকে যে ঘৃণা করে বলেই জানতো। তার স্বরূপ উদঘাটিত হয় নিজের মায়ের কাছে। সাথে সাথে পাঠক এখানে মায়ের মাঝেও এক অদ্ভুত মিল খুজে পাবেন। ‘ভালোবাসার গল্প’ এক বিবাহিত মেয়ের কল্পনার স্মৃতিতে লেখা। সে স্মৃতি থেকে আমরা দেখতে পাই তার গোপন এক প্রিয়ার খোঁজ। সেই ছেলেটি মেয়েটির কাছেও ছিলো, এমনকি বিয়ের সময় সাক্ষী হিসেবেও। আজও সে ততটা প্রিয় হিসেবেই আছে, অনেক দূরে গিয়েও। শ্রাবনী তা ভাবতে ভাবতে নস্টালজিক হয়ে যায়, নিজের কাউকে পেয়ে হারানোর যন্ত্রণার থেকে না পেয়ে হারানোর ব্যথায় কাতর হয়ে থাকে সে। ‘যদি গাবতলীতে দেখা হতো’ সে অর্থে একটু অন্য ধাঁচের গল্প। কল্পনার প্রেমে গল্পের নায়ক নিজেকে নিয়ে অনেক কিছুই ভেবে বসে থাকে। একসাথেও অনেকখানি পাশে থাকা আর সামান্য স্পর্শের অল্প একটু বাসনায় সে কাল্পনিক প্রেমিকাকে নিয়ে যায় স্বপ্নের বাস্তবতায়। আর পাঠক হিসেবে আমাদের স্বপ্ন ভাঙ্গে হঠাতই, একটা ধাক্কা খেয়ে। এরকম প্রতিটি গল্পেই শামসুল হক তার সব্যসাচিতার পরিচয় রেখেছেন। তার ভাষা যেমন প্রাঞ্জল তেমনি কবি বলে তার বলার ধরণেও স্পষ্ট একরকমের মাধুর্য। পড়ে মজা পেয়েছে এটা তাই যেমন স্বীকার করবো তেমনি কল্পনার দ্বারো খুলে গিয়েছে অনেকটুকু সেটাও তার লেখা থেকে সত্যি বলেই মানি।