Our User Product Reviews

ভালো বই

আবুল বাশার ফিরোজের লেখা ‘আমাদের কৃষক ও কৃষি’।কৃষি বাংলাদেশের প্রাণ। এখনও কৃষি দেশের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশের মত মানুষের কর্মসংস্থান প্রদান করে। দেশের সত্তর শতাংশ মানুষের জীবন-যাপন কৃষিকে কেন্দ্র করে। কৃষক তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে আমাদের আহার যোগাচ্ছেন। অথচ আমরা স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও তাদের পরিশ্রমের সঠিক মূল্য দিতে ব্যর্থ হয়েছি। অন্য যে কোনো পেশা থেকে কৃষকের আয় অনেক কম বাংলাদেশে। আর্থিক দৈনতার কারণে তাদের জীবন যাপন অত্যন্ত সাদাসিধে অথবা অত্যন্ত নিম্নমানের। কৃষকরা তাদের উত্পাদিত পণ্যের মূল্য পান না- যা তাদের কায়িক পরিশ্রম ও বিনিয়োগকে মূল্যায়ন করেই হওয়া উচিত। কৃষিকে অন্য হাজারো শিল্পের মত শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যে যাই বলুক না কেন সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে হলে কৃষকদের উন্নয়ন জরুরি। কৃষি রফতানি বাজার সৃষ্টি করার জন্য যথাযথ বাব্যস্থা নেয়া দরকার। ভালো ব্যবস্থাপনা চর্চা পদ্ধতির প্রচলন করা আবশ্যক। রফতানির জন্য লবিস্ট ও বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে আরো বেশি কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। প্রয়োজনবোধে দূতাবাসগুলোতে কৃষি বাণিজ্য প্রতিনিধির পদও সৃষ্টি করা যেতে পারে। সঠিক পদ্ধতি আর নীতি নির্ধারণ করতে পারলে কৃষি রফতানিও বছরে কয়েক বিলিয়ন করা সম্ভব। আর মুখ্য বিষয় এতে করে কৃষকের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।গ-বালাইয়ের প্রাদুর্ভাব খুব বেশি তাই কৃষি শিক্ষায় ও ব্যবস্থাপনায় জরুরি প্রস্তুতিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা দরকার। কৃষকের অসংখ্য সমস্যা থাকা সত্ত্বেও তারা পরম মমতায় আগলে রেখেছে এ খাতটি। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির শিখরে নিতে হলে অবশ্যই অন্যান্য বিকাশমান খাতের মত কৃষিকেও দিতে হবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব।

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ । এদেশের মূল চালিকাশক্তি বলা যেতে পারে কৃষিকেই । কিন্তু আমাদের দেশের কৃষি ব্যবস্থা এখনও অনগ্রসর । আধুনিকতার ছোঁয়ায় অন্য দেশগুলোর কৃষি উত্‍পাদন যখন উন্নতির শিখরে তখন আমরাই পিছিয়ে পড়েছি অনেক । আবুল বাশার ফিরোজের "আমাদের কৃষক ও কৃষি" মূলত কৃষির উন্নয়নে দিকনির্দেশনামূলক এবং তথ্যবহুল একটি বই । অসাধারণ এ বইটিতে অধ্যায়ভিত্তিকভাবে বাংলাদেশ ও কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে । প্রথম অধ্যায়ের আলোচনা বাংলাদেশ নিয়ে । বাংলাদেশের ভৌগলিক,অর্থনৈতিক,সামাজিক তথ্য সহ নাধাবিধ তথ্য এ অধ্যায়ে আছে । দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে কৃষি খাতের বর্তমান অবস্থা,বাংলাদেশের কৃষির সমস্যা এবং তার সমাধান নিয়ে । তৃতীয় অধ্যায়ের আলোচনা দেশের পানিসম্পদ এবং পানিসেচ নিয়ে । চতুর্থ অধ্যায়ের আলোচনা "সার" এবং বিভিন্ন সারের উপকারিতা এবং তাদের প্রয়োগ নিয়ে । পঞ্চম অধ্যায়ে আলোচনা হয়েছে দেশের মত্‍স্য ও প্রাণীজ সম্পদ নিয়ে । ষষ্ঠ অধ্যায়ের বিষয়ভিত্তিক আলোচনা দেশের বনজ সম্পদ এবং পরিবেশ নিয়ে । সপ্তম অধ্যায়ের আলোচনা কিছুটা ভিন্নধর্মী । এখানে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা,শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিসংখ্যান,জাতীয় শিক্ষানীতি, শিক্ষার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে । বাংলাদেশের সমকালীন বিভিন্ন অগ্রগতি,বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান ইত্যাদি জানতে আবুল বাশার ফিরোজের এ বইটি একটি উত্‍কৃষ্ট মানের সহায়ক বই ।